যদিও আমার ডাকনাম ইমতিয়াজ কিন্তু ক্লাসে সবাই আমাকে বিজ্ঞানী বলে ডাকে। হয়তো তার কারণ একটাই তা হলো আমি তাদের থেকে বেশী জানি বা না জানি, অন্তত জানার চেষ্টা করি। হতে পারে আমার এই জানার তাগিদ থেকেই আমার সাথে তাদের কিছু কিছু ক্ষেত্রে মতের ভিন্নতাই আমাকে ক্লাসের বিজ্ঞানী করে তুলেছে। আমার সম্পর্কে যেটা না বললেই নয় তা হলো আমি সাধারণত আমার স্কুলে ক্লাসের বাইরে লাইব্রেরীতেই বেশী সময় থাকি। তখনই অনেকের সাথে কথা হয়, অধিকাংশই আমার থেকে অনেক ছোট। তারা আমাকে তাদের মনে থাকা বিভিন্ন ধরণের প্রশ্ন করে, অনেক কিছু জানতে চায়; আর আমি আমার সাধ্যমত তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করি। যেনো আমি রীতিমত একটা স্কুল খুলে বসেছি।
তা একদিন আমার সাথে ক্লাস এইটের একজন ছাত্রের মহাকর্ষ নিয়ে কথা হয়। এখন, একদিক দিয়ে সে শুধু নিউটনিয়ান গ্রাভিটি সম্পর্কেই জেনে বসে আছে আরেকদিকে আজকে স্কুল কোনো কারণে হাফক্লাস হয়ে ছুটি তাই হাতে টাইমের অভাব নাই। সেইজন্যে জন্যে একদম আটঘাট বেধে লেগে পড়লাম তাকে মহাকর্ষের আধুনিক ব্যাখ্যাটা হালকা কিছু হলেও জানাতে। দেখেন আমাদের কনভারসেশন থেকে আপনার কোনো লাভ হয় কীনা। হ্যাপী রিডিং।
ছাত্র : ভাইয়া ফিজিক্সের কোন চ্যাপ্টার আপনার কাছে পড়তে সবচাইতে ভালো লাগে? আমার কাছে মহাকর্ষ অধ্যায়।
আমি : তাই নাকি। আমারও মহাকর্ষের যেকোনো ধরণের টপিক পড়তে বা আলোচনা করতে ভালো লাগে। মহাকর্ষ সম্পর্কে তোমার ধারণা কী অর্থাৎ এ সম্পর্কে তুমি ঠিক কী কী জানো?
ছাত্র : আমাদের বইতে যতটুকু আছে ততটুকুই জানি। যেমন, আমরা যদি দুইটি বস্তুকে মহাকাশে স্থাপন করি তাহলে তারা একে অপরকে নিজেদের দিকে টানবে মানে আকর্ষণ করবে। এই আকর্ষণই মহাকর্ষ।
আমি : ওহ! তার মানে তুমি শুধু নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্ব সম্পর্কেই জানো?
ছাত্র : কেন? মহাকর্ষের কী অনেকগুলো তত্ত্ব আছে?
আমি : হ্যা। মহাকর্ষ নিয়ে সর্বমোট দুইটা তত্ত্ব আছে। একটা হলো, নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্ব মানে তোমরা যেটা জানো। আরেকটা হলো, আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব বা জেনারেল থিওরি অফ রিলেটিভিটি। আসলে ১৯০৫ সালের আগে নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্বকে নিয়ে কোনো সমস্যা ছিলো না। কিন্তু ১৯০৫ সালে আইনস্টাইন যখন তার স্পেশাল থিওরি অফ রিলেটিভিটিতে বলেছিলো যে, এই মহাবিশ্বে আলোর বেগই সর্বোচ্চ বেগ অর্থাৎ কোনো কিছুর বেগই আলোর বেগকে অতিক্রম করতে পারবে না, তখনই নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্বের মধ্যে কিছু সমস্যা দেখা দেয়।
ছাত্র : ঠিক কী রকম সমস্যা?
আমি : এটা সহজে বোঝার জন্য একটু কল্পনা করতে হবে। আমরা জানি যে, সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো পৌছাতে মোট সময় লাগে ৮ মিনিট ২০ সেকেন্ড। এখন ধরি যে, কোনো কারণে হঠাৎ সূর্য ধ্বংস বা গায়েব হয়ে গেলো তাহলে এক্ষেত্রে সূর্য থেকে আলোর পৃথিবীতে পৌছাতে লাগবে প্রায় ৮ মিনিট। এখন নিউটনের মতবাদ অনুযায়ী, সূর্যের গায়েব হবার সাথে সাথেই তাৎক্ষণিকভাবে পৃথিবীর উপর সূর্যের মহাকর্ষ বল ক্রিয়া করা বন্ধ করে দেবে। এখানেই আসল সমস্যা। কারণ যে দূরত্ব অতিক্রমে আলোর লাগে প্রায় ৮ মিনিট, সেখানে মহাকর্ষের কোনো সময়ই লাগে না। তাহলে তো একটি বস্তুর উপর মহাকর্ষের প্রভাব তাৎক্ষণিকভাবে ক্রিয়া করে; দূরত্ব যাই হোক না কেন!! এখানেই বাধলো সমস্যা। কারণ বিশেষ আপেক্ষিকতায় আইনস্টাইন বলেই দিয়েছে যে, আলোর বেগই সর্বোচ্চ বেগ; এর থেকে বেশী গতি পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্ব যদি সঠিক হয় তাহলে তো মহাকর্ষ অনেক সহজেই আলোর গতিকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। কারণ যে দূরত্ব অতিক্রমে আলোর লাগে ৮ মিনিট, সেখানে মহাকর্ষের কোনো সময়ই লাগে না!! সুতরাং অবশ্যই নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্ব পুরোপুরি সঠিক নয়। এছাড়াও আরো অনেক টেকনিকাল এরর থাকার কারণে (সবগুলো জানালাম না; শুধু ধারণা দেওয়ার জন্য উপরে একটা দিলাম) আইনস্টাইন নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্বের সীমাবদ্ধতা আর সমস্যাগুলো দূর করার জন্য কাজ শুরু করলেন। আর ফলস্বরুপ ১৯১৫ সালে তিনি আবিষ্কার করেন সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব। আর এই হলো সাধারণ আপেক্ষিকতা আবিষ্কারের ইতিহাস।
ছাত্র : মোটামুটি বুঝছি। এখন জেনারেল থিওরি অফ রিলেটিভিটি অনুযায়ী আসলে মহাকর্ষটা কী?
আমি : এটা বোঝার জন্য আগে জানতে হবে স্থানকাল বা স্পেস-টাইম কী? এখন, আগে আমরা সবাই ভাবতাম যে আমাদের পুরো মহাবিশ্বটা হলো ত্রিমাত্রিক মানে শুধু দৈর্ঘ্য, প্রস্থ আর উচ্চতাবিশিষ্ট। কিন্তু আইনস্টাইনের মতে আমাদের মহাবিশ্ব হলো চতুর্মাত্রিক অর্থাৎ দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা আর সময়কে নিয়ে গঠিত। আর এই স্থানের তিন মাত্রা আর সময়ের একমাত্রাকে মিলিতভাবে একসাথে বলে স্থানকাল বা স্পেস-টাইম। সোজা কথায় চতুর্মাত্রিক এই মহাবিশ্বের প্রতিটা অংশই হলো স্থানকাল (Space-time)।
ছাত্র : উমম। ঠিক আছে। এতে কোনো প্রবলেম নেই। মোটামুটি কিছুটা ধারণা হয়েছে।
আমি : ঠিক আছে কিছুটা ধারণাই যথেষ্ট। এখন যখন একটা বস্তুকে আমরা মহাকাশে স্থাপন করব তখন সেই বস্তুটা তার চারপাশের স্থানকালকে বাকিয়ে ফেলবে। কোনো একটি বস্তুর কারণে স্থানকালের যে ধরণের বক্রতা তৈরী হয় তাকেই বলে স্থানকালের বক্রতা বা Space-time Curvature। জেনারেল থিওরি অফ রিলেটিভিটি অনুযায়ী, কোনো বস্তুর উপর স্থানকালের বক্রতার প্রভাবই হলো মহাকর্ষ আর এই প্রভাব কোনো প্রকার আকর্ষণবল নয়। কোনো একটি বস্তুকে মহাকাশে স্থাপন করলে বস্তুটি শুধুমাত্র তার চারপাশের স্থান বা স্পেসকেই বাকিয়ে ফেলে না বরং সময়কেও বাকিয়ে ফেলে। এইকারণে স্থানকালের বক্রতার কারণে সময় ধীরে চলে, একে বলা হয় মহাকর্ষীয় কাল দীর্ঘায়ন বা Gravitational Time dilation। আবার একইভাবে কোনো একটি বস্তুর স্থানকালের বক্রতার ফলে বস্তুটির চারপাশের স্পেস বা স্থানও বেকে যায়। এখন যদি কোনো বস্তু যথেষ্ট শক্তিশালী স্থানকালের বক্রতা তৈরী করতে পারে তাহলে বস্তুটি তার চারপাশের স্থানকে বা স্পেসকে এমনভাবে বাকিয়ে দেয় যে, কোনোকিছু এমনকি আলোও তা থেকে বের হতে পারে না। কারন তখন বস্তুটির চারপাশের স্পেস এমনভাবে বেকে যায় যে, যাই এর ভেতরে একবার ঢোকে তা বার বার একই জায়গায় ফিরে আসে; ফলে তা কখনো বের হতে পারে না। যেমন ব্ল্যাকহোলের ক্ষেত্রে হয়। ব্ল্যাকহোল তার চারপাশের স্পেসকে এমনভাবে বাকিয়ে দেয় যে, যা এর ভেতরে একবার ঢোকে তা কখনো বের হতে পারে না।
ছাত্র : আমরা তো জানি, বল প্রয়োগ ছাড়া কোনো বস্তুকে গতিশীল করা সম্ভব নয়। এখন মহাকর্ষ যদি কোনো আকর্ষণবল না হয় তাহলে সূর্য কীভাবে বল প্রয়োগ না করে পৃথিবীকে এর চারপাশে অনবরত ঘুরাচ্ছে??
আমি : হুম। তুমি হয়তো নিউটনের গতির ১ম সূত্রটার কথা শুনেছ। সেখানে বলা হয়েছে যে, যদি বাহ্যিক কোনো বল প্রয়োগ করা না হয় তাহলে গতিশীল বস্তু চিরকাল সুষম গতিতে চলতেই থাকবে। এখন, আমরা জানি যে পৃথিবী গতিশীল; এই গতিটা হবার কথা ছিল সরলরৈখিক বা সোজা। কিন্তু যেহেতু সূর্যের স্থানকালের বক্রতার জন্য সৌরজগতের স্পেস বেকে গেছে, সেই জন্য পৃথিবীর গতিও হয়েছে বাকা বা বক্র। এখন যেহেতু জেনারেল থিওরি অফ রিলেটিভিটি অনুযায়ী, মহাকর্ষ কোনো আকর্ষণবল নয় সেহেতু পৃথিবীর উপর কোনো বাহ্যিক বল কাজ করছে না। এখন, অতীতে যে পরিমাণ বল পৃথিবীকে সূর্যের স্থানকালের বক্রতার ভেতরে নিয়ে এসেছে, সেই বলই এখন পৃথিবীকে সূর্যের চারপাশে ঘুরতে বাধ্য করছে কারণ এখনো সেই বলটি কার্যকর রয়েছে যেহেতু বলটিকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য সেখানে কোনো বাহ্যিক বল নেই। আমরা এখনো বলি যে, সূর্যের আকর্ষণের কারণে পৃথিবী তার চারপাশে ঘোরে এটা ভূল। কারন সূর্যের স্থানকালের প্রভাবের কারণেই পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘোরে। এখন বুঝেছ মহাকর্ষ কী আর কীভাবে বল প্রয়োগ না করে মহাকর্ষ কোনো বস্তুকে এর চারপাশে ঘুরতে বাধ্য করে।
ছাত্র : হ্যা বুঝছি। কোনো একটি বস্তুর স্থানকালের বক্রতার ভেতরে যদি অন্য কোনো বস্তু প্রবেশ করে তাহলে বস্তুটি স্থানকালের বক্রতার প্রভাবে ১ম বস্তুটির চারপাশে ঘুরতে থাকে। আর এক্ষেত্রে ২য় বস্তুটির উপর যেহেতু কোনো বাহ্যিক বল কাজ করেনা সেহেতু প্রথমে বস্তুটি যে প্রযুক্ত বলের কারণে ১ম বস্তুর স্থানকালের বক্রতায় প্রবেশ করেছিলো সেই বলই ২য় বস্তুটিকে গতিশীল করে এবং যেহেতু স্থানকালের বক্রতার ভেতর স্থান বা স্পেস হয় বাকা সেই জন্যই ২য় বস্তুটি ১ম বস্তুর চারপাশে ঘুরতে বাধ্য হয়। এখন, কোনো বস্তুর উপর স্থানকালের বক্রতার প্রভাবই হলো মহাকর্ষ। ঠিক আছে?
আমি : পুরোপুরিই ঠিক আছে। আর একটা কথা, দুটি বস্তুর মধ্যে যার ভর বেশী হবে তার স্থানকালের বক্রতার প্রভাবও আরো শক্তিশালী বা বেশী হবে। আর যদি ২য় বস্তুকে ১ম বস্তু ঘোরাতে চায় তাহলে ১ম বস্তুর যথেষ্ট শক্তিশালী স্থানকালের বক্রতা থাকতে হবে।
ছাত্র : স্থানকালের বক্রতার প্রভাব কী সবকিছুর উপরই কার্যকর?
আমি : হ্যা। বস্তুর ভর হোক বা হোক, প্রতিটা বস্তুই স্থানকালের প্রভাবে প্রভাবিত হবে। যেমন আলো। আলোর কোনো ভর নেই তবু আলোও স্থানকালের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে সরলপথের জায়গায় বক্র পথে যায়। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, যখন অন্য কোনো নক্ষত্রের আলো সূর্যের পাশ দিয়ে যায় তখন সামান্য হলেও সূর্যের স্থানকালের বক্রতার প্রভাবে আলো বাকা পথে যায়। স্থানকালের বক্রতার প্রভাবে আলোর এই সরলপথের জায়গায় বক্রপথে যাওয়াকে গ্রাভিটেশনাল লেন্সিং বলে। এই গ্র্যাভিটেশনাল লেন্সিং এর জন্য আমরা মহাকাশে কোনো বস্তুর প্রকৃত অবস্থান দেখতে পারি না; অর্থাৎ মহাকাশে আমরা কোনো বস্তুর যে অবস্থান পর্যবেক্ষণ করি তা সেই বস্তুটির প্রকৃত অবস্থান নয়!!
ছাত্র : কিন্তু আমরা তো পড়েছি যে আলো সবসময় সরলপথেই যায়। তাহলে আবার আলো বাকা পথে কীভাবে যেতে পারে?
আমি : আরে। সূর্যের স্থানকালের বক্রতার প্রভাবে এর চারপাশের স্পেসও বেকে গেছে। এখন কোনো আলো যখন সূর্যের পাশ দিয়ে যাবে তখন তার কাছে সূর্যের চারপাশের ওই বাকা স্পেস বা স্থান দিয়ে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায়ই নাই। এইজন্য এক্ষেত্রে বাকা বা বক্র পথে যেতে আলো বাধ্য। এখন ঠিক আছে?
ছাত্র : হ্যা, মোটামুটি পুরোপুরিই বুঝছি। কনসেপ্টটা সত্যিই ইন্টারেস্টিং।
আমি : আহারে, অনেক দেরী হয়ে গেছে; আমাকে এখন বাসায় যেতে হবে। আমি ভাই গেলাম। আর একটা কথা, জেনারেল রিলেটিভিটির আলোচনা কিন্তু এখনো শেষ হয় নাই, এখনো অনেক কিছু বাকী আছে। পরে না হয় একদিন আবার আলোচনা করবো।
ছাত্র : ঠিক আছে ভাইয়া পরে আবার কথা হবে।
শেষ কথা: যারা মনোযোগ দিয়ে এতটুকু পুরোপুরি পড়েছে আশা করি তারা জেনারেল রিলেটিভিটি সম্পর্কে মোটামুটি বেসিক হিসেবে অনেক কিছুই বুঝে ফেলেছে। কিন্তু এখানেই শেষ না, জেনারেল রিলেটিভিটি সম্পর্কে এখনো অনেক কিছু জানার বাকী আছে। বাকীগুলো নিয়ে না হয় পরে একদিন লেখব। আজ না হয় এতটুকুই থাক। ২য় পর্ব যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব লিখে আপনাদের কাছে পৌছে দেবার চেষ্টা করবো ততক্ষণ পর্যন্ত হ্যাপী লার্নিং।
যোগাযোগঃ তোমরা/আপনারা চাইলে আমার সাথে ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন, আর অতি উৎসাহিত কেও থাকলে ফেসবুকে অন্তত একটু নক দিতে পারেন।
Email: [email protected] /Facebook profile: http://www.facebook.com/mdiakhan
আমি ইমতিয়াজ আহম্মদ খান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Awesome writing bro..
Love you.. I understood everything you wrote..