আসসালাম ওয়ালাইকুম,
আশাকরি ভালই আছেন সবাই।সামনে পরিক্ষা তাই টিউন করতে পারছিনা বলে দুঃখিত।
অনেকদিন পর আমার বাবার ব্লগ (Science with Quran)-এর দুটি পোস্ট নিয়ে এলাম।
মানুষই বানরের পূর্বপুরুষ-Human is the ancestor of Monkey
সূধী পাঠক,মহান আল্লাহর সৃষ্টি কুলে নানা প্রজাতির অভুদ্বয় ঘটেছে; প্রাণ,নিস্প্রাণ সকল বস্তুর মধ্যে রয়েছে প্রজাতির সমাহার। আবার একই প্রজাতির মধ্যে রয়েছে নানা ভাগ; বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে রয়েছে নানা মিল। যেমন ধরুন, বাঘে বিড়ালের চেহারার মিল, মানুষ ও বানরের শুধু চেহারাই নয় বৈশিষ্টেরও অনেক মিল। এই মিল দেখে ভাবুকদের মনে প্রশ্ন জাগল বানর আর মানুষের মধ্যে কি প্রকৃত পক্ষেই কোন গাঠনিক মিল রয়েছে? শুরু হল চিন্তাভাবনা ও গবেষনা। নানা পরীক্ষা পর্যোবেক্ষণের পরে তারা বললেন বানরই হল মানুষের পূর্ব পুরুষ। বিতর্কের ঝড় উঠল বটে, কিন্তু বিজ্ঞান জগৎ সহজেই তা মেনে নিল। বিশেষ করে ডারউনের বিবর্তনবাদ প্রচারিত হওয়ার পর নানা যৌক্তিক কারণে বিজ্ঞানীরা মেনে নিলেন যে, বিবর্তনের ধারায় বানর থেকেই মানব প্রজাতির সৃষ্টি হয়েছে। বিজ্ঞানীদেরকে আরও বিশ্বাসী করে তুলেছে উভয় প্রজাতির কঙ্কাল। একসময় বিজ্ঞান আবিস্কার করল, বানরের পূরানো ফসিল, যা থেকে বিজ্ঞান সিদ্ধান্ত নিল পৃথিবীর বুকে এই প্রজাতির অভুদ্বয় ঘটেছে প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন বছর আগে। বিতর্কিত ধারনা অনেকটাই পাকাপোক্ত হয়ে গেল এই কারণে যে, মানব সভ্যতার ইতিহাস খুব বেশী দিনের নয়, বিংশতাব্দীর প্রথমদিকেও মানুষের ধারনা ছিল যে, মানব ইতিহাস খুব বেশী হলে ৩০ কি ৩৫ হাজার বছরের। বিভিন্ন লুপ্ত সভ্যতার প্রাপ্ত নিদর্শন থেকে মানুষ এমনটা অনুমান করত। বানর প্রজাতিকে তার চেয়েও অনেক পুরোনো অনুমান করে বিজ্ঞান তার সেই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল, তার প্রমাণ স্বরূপ বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সময়ে প্রাপ্ত বাণরের ফসিল পরীক্ষার ফলাফল থেকে এমন ধারণা করতে উদ্ভূদ্ধ হয়েছিল। আর তারই ধারাহিকতায় এক সময় বিজ্ঞান বানরকে প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন বছর আগেকার প্রজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিল। সময়ের ক্রম পরিবর্তনে দেখাগেল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে প্রাপ্ত মানুষের ফসিল পরীক্ষায় মানব ইতিহাস ক্রমশঃ দীর্ঘায়িত হতে লাগল, দেখা গেল কোথাও ৫০ হাজার বছরের পুরানে, কোথাও ৭০ হাজার বছরের পুরানো আবার কোথাও লক্ষ বছরের পুরানো ফসিল পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বিজ্ঞান স্থির হতে পারলোনা মানুষের প্রকৃত বয়স কত; কিন্তু তাই বলে মানুষকে বানরের বয়োজ্যাষ্ঠও ভাবতে পারলোনা।এমনি ভাবে মানুষের প্রকৃত ইতিহাস রহস্যের মধ্যেই লুকিয়ে রইল। কিন্তু বিজ্ঞানীদের মধ্যে আসল সত্য নিয়ে দুদোল্যমানতার জন্মনিল- মানুষ আলাদা কোন প্রজাতি কিনা? এই সত্য উদঘাটনের জন্যে চলতে লাগলো জোড় প্রচেষ্ঠা।দেখা গেল বানর আর মানুষের ডি এন এর মধ্যে প্রচুর মিল; বিজ্ঞান যেন কুঞেলিকার মধ্যে পড়ে গেল।আসুন এ বিষয়ে আমরা বিজ্ঞানের কিছু ধারনা জেনে নেই।
শিমপাঞ্জির জিন চক্রে ৮৮৫৯ টি, ডি এন এ অনুক্রমে প্রায় ১.৯ মিলিয়ন খার জোড়ের সাথে মানুষের অনুরূপ সংখ্যক এন এর অনুক্রমের সাথে তুলনা করে দেখা গেছে যে, গড় পার্থক্য অত্যান্ত কম, যা প্রায় ১.২৪%। প্রায় ১.২৪%। মনে করা হচ্ছে শিমপাঞ্জী ও মানুষ একই পূর্ব পুরুষের বংশধর এবং ৪.৬-৬.২ মিলিয়ন বছর আগে এই দুই প্রজাতির অভুদ্বয় ঘটেছে। ফলে মানুষের জিনে নিউইক্লিওটাইড গবেষণায় অননুরূপ প্রতিস্থাপনের জন্যে শিমপাঞ্জি হল সর্ব উত্তম ; কারণ এই দুটি প্রজাতির মধ্যে রয়েছে ঘণিষ্ট মিল। দীর্ঘদিন ধরেই এ নিয়ে গবেষণা চলছে প্রথম দিকে ব্যবধান ১.৬% থাকলেও অতি সম্প্রতি তা ১.২৪% এ নেমে এসেছে।
সূধী পাঠক আসুন, এবার আমরা আরও কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য জেনে নেই,
টিম হোয়াইট, বারহেন আসফহ্ এবং জেন সূয়া (Tim White, Berhane Asfaw, and Gen Suwa) আফ্রিকায় দীর্ঘদিন ফসিল সংগ্রহ ও তা পরীক্ষা নীরিক্ষার কাজে আছন, তারা ১৯৯৩ সালে হঠাৎ করে এক উল্লেখ যোগ্য আবিস্কার করে বসেন; তারা ইথিওপিয়ায় একটি হোমিনিড স্কাল বা মাথার খুলি, চোয়াল, বাহুর হাড়ও কিছু দাঁত খুঁজে পান,যা পরীক্ষা করে মোটামুটি ৪.৪ মিলিয়ন বছরের পুরানো বলে সনাক্ত করেন। একে এ পর্যোন্ত আবিস্কৃত ফসিলের মধ্যে সবচেয়ে পুরানো মানব প্রজাতির ফসিল বলে গণ্য করা হয়। ১৯৯৪ সালে এই ফসিল আবিস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং এই প্রজাতির নাম করণ করা হয় অষ্ট্রালোপিথিকাস র্যামিডাস (Australopithecus ramidus) যা পূর্বের আবিস্কৃত ১.৭৫ মিলিয়ন বছরের পুরানো অষ্ট্রালোপিথিকাস বায়োসি (Australopithecus boisei ), ও ৩ মিলিয়ন বছরের পুরানো লুসির (Lucy) প্রজাতি। এই ঘোষনার পরেও গেবেষকদের মনে একে মানব প্রজাতির বলে সন্দেহ থেকে যায় এবং উপযুক্ত যুক্তির অভাবে তার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় আরডিপিথিকাস র্যামিডাস (Ardipithecus ramidus) যার প্রজাতি ভিন্ন তবে এই পরিবর্তনের কারণ তারা ব্যাখ্যা করেনি কারণ এই প্রাণীটি দুই পাঁয়ে ভর দিয়ে হাঁটা নিয়ে তাদের সন্দেহ ছিল;তারা মনে করলেন এই প্রাণীটি আফ্রিকার পুরানো বানর ও অস্ট্রালোপিথেকাস এর যোগসূত্র। তাদের আকৃতি সম্ভবত উভয় প্রজাতির সাথে মিল ছিল। এই আবিস্কার এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করলো। বিজ্ঞানীরা মনে করলেন সম্ভবত এটি বানর ও মানুষের মধ্যকার মিসিংলিঙ্ক; কিন্ত তাদের প্রাক্কলিত হিসেব অনুযায়ী বিষয়টা হয়ে যায় উল্টো; কারণ বাণর যদি ৩.৫ মিলিয়ন বছরের পূরানো হয় তবে মানুষ ৪.৪ মিলিয়ন বছরের পুরানো; আর এই তথ্য মানুষকে বাণরের পূর্ব পুরুষ হিসেব সনাক্ত করে আলোচনা চলতে থাকে- অরডিপিথিকাস টি মানুষ প্রজাতির কি না, এটি দুই পায়ে হাঁটতো কি না,,, ইত্যাদি। বিবিজ্ঞানীদের এই দোদুল্যমানতার অবসান ঘটলো ১৯৯৫ সালে মেভ লিকি ও এলান ওযাকার যখন কেনীয়াতে আরেকটি নতুন ফসিল উদ্ধার করলেন; যার নামকরণ করা হল অস্ট্রালোপেথিকাস এনামেনসিস (Australepithecus anamensis)। এই ফসিলটির বয়স প্রায় ৩.৯ থেকে ৪.২ মিলিয়ন বছর। গবেষণায় পরিস্কার ভাবে বুঝা গেল যে প্রানিটি দু’পায়ে ভর দিয়ে মেরুদণ্ড সোজা করে হাঁটতো ও কাষ্ঠ সমৃদ্ধ অঞ্চলে বাস করতো । সাম্প্রতিক এই আবিস্কার হয়তো একদিন মানুষকে তার মূল খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
সূত্র-ওয়ভসাইট ` A science odyssey’
সূধী পাঠক,বিজ্ঞানের মূল দাবীর প্রেক্ষিতে ধর্মানুরাগীদের মধ্যে বিতর্কের ঝড় উঠে, তাদের দাবী কোন উপায়েই বানর মানুষের পূর্ব পুরুষ হতে পারেনা, মহান আল্লাহ প্রত্যেককে আলাদা আলাদা ভাবে তৈরী করেছেন। বিজ্ঞান মানতে নারাজ, বিজ্ঞানীরা উঠেপড়ে লাগলেন প্রমানের জন্যে কারণ ১৫শ শতাব্দীর মাঝামাঝি ডারউইনের এই তত্ত্ব প্রকাশিত হওয়ার সময় বিজ্ঞানের হাতে তার স্বপক্ষে তেমন কোন প্রমাণ ছিলনা; তখনো বিজ্ঞান ডি এন এ জ্ঞান অর্জন করতে পারেনি। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ডি এন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পর বিতর্কের মোড় ঘুরে গেল, ক্ষোদ বিজ্ঞানীরাই বলতে লাগলেন যে, প্রাকৃতিরক নির্বাচনে ডি এন এ কোন উপায়েই বিবর্তীত হতে পারেনা। এটি তৈরী হয় সুপরিকল্পিত কাঠামো অনুযায়ী। অনেক বিজ্ঞানী তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তারা গবেষনা করে বানরকে মানুষের পিত্রিপুরুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে লেগে রইলেন। উভয় প্রজাতির ডি এন এর মিল খুঁজতে গিয়ে তারা ক্রমান্বয়েই তাদের লক্ষের কাছা কাছি এসে পৌঁছুতে লাগলেন। এক সময় দেখা গেল এই দুই প্রজাতির মধ্যে তেমন কোন পার্থক্যই নেই। তারা সোল্লাসে তাদের দাবীর স্বীকৃতি দিয়ে দিলেন। ধর্মানুরাগীরা বেকায়দায় পড়লেও তারা তাদের দাবীর স্বপক্ষেই রয়ে গেলেন। বিশ্বাসের হাতিয়ার হিসেবে পরিচিত বিজ্ঞানের দাবীকে মেনে নিলেননা। কারণ পবিত্র কোরআন মানব সৃষ্টি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে। মহান আল্লাহ বিজ্ঞানের এই তত্ত্ব প্রচারে প্রায় ১৪ শত বছর আগেই মানব সৃষ্টি এবং তার বংশ বিস্তারের পরিপূর্ণ ইতিহাস বর্ণনা করে রেখেছেন। যে গুলোকে আধুনিক বিজ্ঞান পর্যোন্ত অস্বীকার করতে পারছেনা। মহান আল্লাহ তাঁর বাণীতে পরিস্কার ভাবে জানিয়েছেন যে তিনি মানুষকে কাঁদামাটি থেকে তৈরী করেছেন।
আমরা উপরের আলোচনা থেকে দেখলাম যে, এ পর্যোন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মানুষের বয়স প্রায় ৪.৪ মিলিয়ন বছর। বিজ্ঞানের সেই পুরানো দাবী বিজ্ঞানেরই আবিস্কৃত তথ্যের দ্বারা মিথ্যে প্রমানিত হয়ে যায়। বিজ্ঞান আরও দাবী করেছিল প্রাথরের যুগ থেকে এ পর্যোন্ত আসতে মানুষকে খুব বেশী সময় নষ্ট করতে হয়নি। বিজ্ঞান এও দাবী করেছিল যে প্রাকৃতিক নির্বাচণের মাধ্যামে বিবর্তনের ধারায় বানরের একটা দল এক সময় মানুষ হয়ে যায় এবং তার বংশগতি চলতে চলতে বর্তমানে এসে পৌঁছেছে। বিজ্ঞানের এই দাবীর পিছনে তারা বহু বৈজ্ঞানিক কারণ দেখিয়েছেন, যথেষ্ট যুক্তি প্রমানের সাহায্যে তাদের বক্তব্যকে সত্য বলে প্রমান করতে চেয়েছেন, তারা বানর ও মানুষের ডি এন এ পরীক্ষা করে প্রায় ৯৯ শতাংশ মিল খুঁজে পেয়ে যখন তাদের দাবীর স্বপক্ষে একশত ভাগ প্রমাণ তুলে ধরতে চাইলেন, ঠিক তখনই এই আবিস্কার ইতিহাসের পাঁতাকে উল্টে দিয়ে বিষ্ময়কর ভাবে তুলে ধরলো যে, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই’। বিজ্ঞান আজ বিনম্র স্বরে বলছে,বানর ও মানুষের পিতৃ পুরুষ একই। অষ্ট্রালোপিথিকাস বায়োসি এর ফসিল আবিস্কারের পূর্বে বানর ওমানুষের মধ্যে যে সম্পর্ক ছিল তা নড়বড়ে হয়ে পড়লো; এই ফসিল দিয়ে লিঙ্ক গ্যাপের শূণ্যতাকে পূরণ করা গেলনা এ কারণে যে, এই ফসিলের বয়স বানরের চেয়ে বেশী। ডারউইনের বিবর্তনবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে বিজ্ঞান এ দাবী করে আসছিল। যদিও বিশ্বাসীদের মনে বিজ্ঞানের এই দাবী রেখাপাত করতে পারেনি,তথাপি নিরপেক্ষ মানুষের দল বিজ্ঞানের দিকেই ঝুকে পড়ছিল বেশী, কারণ বিজ্ঞান কখনো মিথ্যে কথা বলেনা। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি, তবে তাদের গবেষণা পূর্ণাঙ্গ রূপ না পেতেই তারা শুধুমাত্র পর্যোবেক্ষণ লব্দ ফলাফল থেকে মন্তব্য করে ছিল। আজকের বিজ্ঞান সর্বশেষ যে ধারণা দিচ্ছে তার স্বপক্ষে পবিত্র কোরআন ১৪০০ বছর আগেই পরিপূর্ণ ধারণা দিয়ে রেখেছে। মহান আল্লাহ সূরা আল মুমিনুন এর ১২ নং আয়াতে বলছেন,
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ مِن سُلَالَةٍ مِّن طِينٍ
২৩:১২ আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।
ثُمَّ جَعَلْنَاهُ نُطْفَةً فِي قَرَارٍ مَّكِينٍ
২৩:১৩ অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দু রূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি।
সূরা আন নিসার ১ম আয়াতে মহান আল্লাহ লেছেন,
يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُواْ رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالاً كَثِيرًا وَنِسَاء وَاتَّقُواْ اللّهَ الَّذِي تَسَاءلُونَ بِهِ وَالأَرْحَامَ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا
৪:১ মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। আর আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচ্ঞা করে থাক এবং আত্নীয় জ্ঞাতিদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে সচেতন রয়েছেন।
মানুষ সৃষ্টি ও তার বংশবিস্তারের পূর্ণ ইতিহাস কত সুন্দরভাবে বর্ণিত হয়েছে। আমরা বিজ্ঞানের ধারণা মতে ডি এন এ’র আলোচনায় দেখেছি যে, পরিবেশের প্রভাবে ও প্রাণীর মনঃষ্কামনায় কোনভাবেই ডি এন এ স্থিত জিন পরিবর্তীত হয়ে প্রজাতির পরিবর্ণ ঘটতে পারেনা। প্রতিটি প্রজাতি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাঝে সৃষ্টি হয়েছে। বিজ্ঞান আরও বলছে কাঁদা মাটিতে বিভিন্ন আর এন এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে; আর অধিকাংশ প্রজাতিই জলজ অঞ্চল ঘিরে আবিভূত হয়েছে। পবিত্র কোরআনের ধারণা মতে দেখা যাচ্ছে মানুষের কোন পূর্ব পুরুষ নেই; সম্পূর্ণ আলাদা প্রজাতি রূপেই আবিভূত হয়েছে। এখন প্রশ্ন হল বিজ্ঞান তাহলে কিশের ভিত্তিতে দাবী করছে মানুষের পূর্ব পুরুষ বানর?
সূধী পাঠক,সকল বিতর্কের মাঝে একটা কথা আমাদেরকে ভূলে গেলে চলবেন যে, বিজ্ঞান সত্যের সাধক,বিজ্ঞানের কোন ধারনা আমাদের সাধারনের আবেগ অনুভূতি দিয়ে তৈরী হয়না। তাদের যেকোন পরিকল্পনা পরীক্ষা নীরিক্ষার মধ্য দিয়ে তত্ত্ব হয়ে উঠে। এ ক্ষেত্রেও তাদের কাছে রয়েছে যথেষ্ট যৌক্তিক ধারনা; বিশেষ করে ডারউইনের চিন্তাধারা মানুষকে যখন বিবর্তনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল তখন বিজ্ঞানীরা বানর ও মানুষের দৈহিক কাঠামোর সাদৃশ্যতা থেকে উভয় প্রজাতির ঘনিষ্টতা অনুমান করে নেয়। তারপর শুরু হয় পরীক্ষা নীরিক্ষা, বিংশ শতাব্দীতে এসে ডি এন এ আবিস্কারের মধ্য দিয়ে এই গবেষণার অগ্রযাত্রা ত্বরাণ্বিত হয়; হালে এসে আবিস্কার করে বসে যে, বানর ও মানুষের ডি এন এ প্রায় হুবহু মিল। বিবর্তন বাদীরা হাতে চাঁদ পেয়ে গেল, বানর আর মানুষ একই বংশোদ্ভূত বলতে আর কোন বাধা রইলোন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়াল বিজ্ঞানের ফসিল আবিস্কার । বিজ্ঞান যখন মাটি খুঁড়ে ৪.৪ মিলিয়ন বছরের পুরানো মানব দেহের হাড়গোড় খুঁজে পেল, তখন কে কার বংশধর এ নিয়ে খোদ বিজ্ঞানই সমস্যায় পড়ে গেল। এখন বানরকে আর সেই মর্যাদায় ভূষিত করা যাচ্ছেনা এই কারণে যে, ৪.৪ মিলিয়ন বছরের চেয়ে পুরানো কোন বানরে ফসিল এখনও খ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে পাওয়া যাবেনা বলেও হলফ করে কিছু বলা যায়ন। সে যাই হোক; এবার লক্ষ্য করুন পবিত্র কোরআনের বিষ্ময়কর দু’টি আয়াত,
قُلْ هَلْ أُنَبِّئُكُم بِشَرٍّ مِّن ذَلِكَ مَثُوبَةً عِندَ اللّهِ مَن لَّعَنَهُ اللّهُ وَغَضِبَ عَلَيْهِ وَجَعَلَ مِنْهُمُ الْقِرَدَةَ وَالْخَنَازِيرَ وَعَبَدَ الطَّاغُوتَ أُوْلَـئِكَ شَرٌّ مَّكَاناً وَأَضَلُّ عَن سَوَاء السَّبِيلِ
5:60 বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি, তাদের মধ্যে কার মন্দ প্রতিফল রয়েছে আল্লাহর কাছে? যাদের প্রতি আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন, যাদের প্রতি তিনি ক্রোধাম্বিত হয়েছেন, যাদের কতককে বানর ও শুকরে রূপান্তরিত করে দিয়েছেন এবং যারা শয়তানের আরাধনা করেছে, তারাই মর্যাদার দিক দিয়ে নিকৃষ্টতর এবং সত্যপথ থেকেও অনেক দূরে। সূরা আল মায়েদাহ
فَلَمَّا عَتَوْاْ عَن مَّا نُهُواْ عَنْهُ قُلْنَا لَهُمْ كُونُواْ قِرَدَةً خَاسِئِينَ
৭:১৬৬ তারপর যখন তারা এগিয়ে যেতে লাগল সে কর্মে যা থেকে তাদের বারণ করা হয়েছিল, তখন আমি নির্দেশ দিলাম যে, তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও -সূরা আল আরাফ
উপরের আয়াত দু’টি দেখে কি মনে হয়না যে, বানর মানুষের পূর্ব পুরুষ নয় বরং মানুষই বানরের পূর্ব পুরুষ? না! সূধী পাঠক,আমরা জানিনা তার আসল উত্তর, কারণ,আমরা জানিনা বানর আগে সৃষ্টি হয়েছে না মানুষ। পবিত্র কোরআনেও তার সুস্পষ্ট কোন ইঙ্গিত নেই। আয়াত দু’টিতে শুধু বলা হয়েছে আল্লাহপাক একদল মানুষকে শাস্তি স্বরূপ বানর ও শুকরে রূপান্তরিত করে দিয়েছেন। আয়াত ৫:৬০ এ বর্ণিত অংশে (কতককে বানর ও শুকরে রূপান্তরিত করে দিয়েছেন) যদিও মানুষ থেকে বানর ও শুকরের রূপান্তর করণের কথা বলা হয়েছে তথাপি একে বিবর্তনের ইঙ্গিত বলে মনে হয়না; কিন্তু ৭:১৬৬ আয়াতটি ভিন্ন প্রসঙ্গ টেনে আনে। এখানে পরিস্কারই বুঝা যায় (তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও) যে, মহান আল্লাহ একদল মানুষকে বানরে পরিবর্তীত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন; বলা হয়েছে ‘তোমরা লাঞ্ছিতবানর হয়ে যাও’। এই বর্ণনায় সুস্পষ্ট ভাবেই বুঝা যায় যে, ঘৃণিত বা অভিশপ্ত এক প্রজাতিতে পরিনত হতে নির্দেশ দিয়েছে। এই আয়াতে দ’টিতে বর্ণিত ঘটনার কাল অত্যান্ত জরূরী। আয়াত ৫:৬০ এ বর্ণিত ঘটনার সময়কাল সুনির্দিষ্ট নয়। আর এই বর্ণনা পদ্ধতি কোরআন মণিষার এক বিশেষ ও তাৎপর্যোময় কৌশল। তিঁনি ঘটনার সময়কে সুনির্দিষ্ট করতে পারতেন যেমনটা অন্যত্র বহু স্থানেই করেছেন; কিন্তু এখানে তা করেননি কারণ এখানে রয়েছে গবেষণার এক উন্মুক্ত দিগন্ত যেখানে সন্তরণ করছে বিজ্ঞানী ডারউইন,ওয়াটসন, ক্রীক(ডি এন এ বিজ্ঞানী),টিম হোয়াইট, বারহেন আসফহ্ এবং জেন সূয়া (ফসিল গবেষক) আরও অনেকে। এই সময়কাল নির্ধারণের দ্বায়িত্ব মহান আল্লাহ তাদেরকেই দিয়েছেন যারা চিন্তা বাবনা করে। আয়াত দু’টিতে শব্দ চয়ন আরেকটি বিশেষ বিষ্ময়, লক্ষ্য করুন
আয়াত ৫:৬০ এর ১৫ নং শব্ধ ‘وَجَعَلَ’ অর্থ বানিয়ে দিলেন, একটা থেকে আরেকটায় পরিবর্তন বা রূপান্তর করে দিলেন।এখন প্রশ্ন হল এই পরিবর্তনের কর্যোপ্রনালী কিরকম ছিল। আমরা জানিনা কি পদ্ধতিতে সেই পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল, হতে পারে তা আমাদের তৎক্ষণাত হয়েছিল অথবা মহান আল্লার সময়ের তৎক্ষণাত হয়েছিল বা ধীর লয়ে হয়েছিল। আমরা যদি ধরে নেই আমাদের সময়ের ‘তৎক্ষণাত’ অর্থাৎ এক সেকেন্ডে হয়েছিল, তবে অবশ্যই তা মহান আল্লাহর এক সেকেন্ডের অতি ক্ষুদ্র সময়ে ঘটেছিল, আবার যদি ধরে নেই আল্লাহর সময়ের ‘তৎক্ষণাত’ ঘটেছিল তবে তা আমাদের সময়ের বিশাল পরিসরকে বুঝায়। আবার হতেপারে তা মহান আল্লাহর সময়ে ধীর লয়ে ঘটেছিল যা আমাদের সময়ে অনন্ত কাল। মহান আল্লাহ তা কোন ভাবে ঘটিয়েছিলেন তার সুস্পষ্ট কোন বর্ণনা পবিত্র কোরআনে উল্লেখ না থাকলেও আয়াত ৭:১৬৬ একটু ভিন্ন প্রকৃতির বর্ণনা দিয়েছে। এখানে ‘জায়ালা’ শব্দের পরিবর্তে كُونُو শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, যার অর্থ ‘হও’; এটি একটি অনুজ্ঞা বা আদেশ সূচক ক্রিয়া; এখানে কর্মের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ক্রিয়ার কাল বেধে দেওয়া হয়নি। যেখানে وَجَعَلَ শব্দটি পুরাঘটিত ক্রিয়া। তাহলে দেখা যাচ্ছে ৭: ১৬৬ আয়াতে বানরে রুপান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন অনির্দিষ্ট সময়ের পরিধীতে (আমরা জানিনা এই শব্দগুলোর প্রকৃত বেধ কি, একমাত্র মহান আল্লাহই জানেন আসল বিষয়, আমরা আমাদের ক্ষুদ্রজ্ঞানে শব্দদু’টির বাজ্যিক ব্যবহারিক দিকটি আলোচনার চেষ্টা করছি আর সেই সাথে মহান প্রভুর কাছে নত শিরে অজ্ঞানতার ত্রুটি থেকে ক্ষমা ভিক্ষা করছি)। যদি এমনটা হয়ে থাকে তবে আমরা কি বলতে পারিনা যে, মানুষ থেকে বিবর্তনের মধ্য দিয়ে বানর প্রজাতির অভুদ্বয় ঘটেছে। আর ঠিক সেকারণেই মানষ ও বানরের গঠনশৈলী এত কাছাকাছি। এমনাটা ভাবার কারণ হল, আমরা পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে দেখেছি মহান আল্লাহ যখন কোন কিছু সৃষ্টি করতে চান তখন এই ‘কুন’ শব্দটি ব্যবহার করেন,আরে এ ধারনা থেকে অনুমেয় হয় যে এখানে মহান আল্লাহ মানুষকে রূপান্তরের মাধ্যামে বানর প্রজাতির অভূদ্বয় ঘটিয়েছেন। থেক্ আজকের বিজ্ঞান ফসিল আবিস্কারের মধ্য দিয়ে হয়তোবা তেমনি কোন ঘটনার প্রমাণ যোগার করছে। সূধী পাঠক, আমরা যদি বাস্তবতার দিকে লক্ষ্য করি তাহলে এমনটাই চোখে পড়বে,মনযোগ দিয়ে আজকের বিজ্ঞানের আবিস্কার গুলোকে লক্ষ্য করি দেখতে পাব এক ধীরলয়ের পরিবর্তন চলছে চারিদিকে। মহাকাশের দিকে তাকান, আপনার চোখটি যদি হয় আধুনিক যন্ত্রচোখ তাহলে দেখতে পাবেন মহাকাশের ধূম্ররাশি থেকে কি করে উৎপন্ন হচ্ছে নক্ষত্র সমুহ। তাতে সময় লাগছে মিলিয়ন বিলিয়ন বছর। কিন্তু আমরা জানি মহান আল্লাহ কোন কিছু সৃষ্টির ইচ্ছে করলে বলেন ‘হও’ আর তা হয়ে যায়। এখানে বাস্তবতার সাথে আমাদের ধারণার একটা বিরোধ ঘটছে। সূধী পাঠক,এটা আসলে বিরোধ নয় আমাদের অনুভূতির রহস্যময় বহিঃপ্রকাশ। পবিত্র কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী মহান আল্লাহর অতি ক্ষুদ্র সময়ও আমাদের সময়ের বিশাল পরিসর, তাই সৃষ্টির স্বাভাবিক ধারাবাহিকতায় আমরা এই বিশাল সময়কে অবলোকন করি। আর সে কারণেই হয়তোবা একই প্রজাতি থেকে পৃথক হয়ে যাওয়া বানর ও তার পূর্ব পুরুষ মানুষের পূর্ণাঙগতা পেতে এত সময়ের ব্যবধান। বিজ্ঞানের ধারণা মতে আদি বানরের অভুদ্বয় ৩.৫ মিলিয়ন বছর আগে, আর সদ্য প্রাপ্ত Australopithecus ramidus, এর বয়স প্রায় ৪.৪ মিলিয়ন বছর; যাকে বিজ্ঞান মানুষ ও বানরের মাঝামাঝি ধরে নিচ্ছে।
সূধী পাঠক, আমাদের আলোচনার মৌলিক বিষয় বানর ও মানুষের মধ্যে কে প্রাচীণতম তা বের করা নয়, বিজ্ঞানের সদ্য আবিস্কৃত বানর ও মানুষের ডি এন এর এত গভীর সান্যিধ্যতা খুঁজে দেখা। হয়তো তারা একই প্রজাতির দুই ভিন্নরূপ হওয়ার সুবাদে এতটা কাছাকাছি। প্রাচীণতর হওয়ার জয়মাল্যটি না হয় বিজ্ঞানই পড়িয়ে দেবে। আমরা অপেক্ষা করে দেখি কার গলায় ঝুলে এই বিজয় মাল্য। এখানে আরও একটি প্রশ্ন নিবৃতে জেগে উঠছে, কেন বিজ্ঞানের এই অগ্র যাত্রা? প্রতি নিয়ত মহাকাশের দূর দূরান্তে রহস্যময় সব আবিস্কার, ব্যাখ্যাতিত সব ঘটনা অবলোকন, প্রাচীন থেকে প্রাচীন তর ফসিল আবিস্কার! সবকিছু কেমন যেন রহস্যের ঘনঘটা। হয়তো বলবেন, এটা বিজ্ঞানের অগ্রগতি, আমিও স্বাভাবিক ভাবে তাই বলি; বিজ্ঞান নতুনের সন্ধানে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফলে নতুন নতুন আবিস্কারতো হবেই। এটাই স্বাভাবিক। এমন প্রশ্নের অবতারনা করতামনা যদি বিজ্ঞানের আবিস্কারের ঘটনাগুলো কিছু বিরূদ্ধ চিন্তার পাশাপাশি না ঘটতো; রহস্যময়তার সংযোগ না থকতো। যেমন ধরুন, একসময় বিজ্ঞানের বদ্ধমূল ধারনা ছিল অনড় পৃথিবীর চারিদিকে মহাবিশ্ব ঘুরে বেড়াচ্চে। আবিস্কার হল পাগল বৈজ্ঞানিক গ্যালিরিওর দূরবীক্ষণ যন্ত্র। পূর্ববর্তী বিজ্ঞানের সকল ধারণা ভেঙে চুরমার হয়ে গেল, নড়ে উঠল সমগ্র মহাবিশ্ব এক সাথ। প্রতিষ্ঠিত হল পবিত্র কোরআনের বানী ‘ মহাবিশ্বে সকল বস্তুই ঘুরছে নিজ নিজ পথে’। বিজ্ঞান ধূলিস্যাৎ হল খোঁদ বিজ্ঞানেরই হাতে। মহাকাশের বিপত্তি কাটতে না কাটতেই বিপর্যয় নেমে এল ধূলির ধরায়। বিশ্ব নন্দিত বিজ্ঞানী ডারউইন মহান স্রষ্টাকে অস্বীকার করে বসলেন, বললেন ‘এই সৃষ্টি জগতে যা কিছু আবির্ভূত হয়েছে তা প্রকৃতির কল্যাণে প্রকৃতিরই নিয়মে,নাড়িয়ে দিতে চাইলেন মাহান আল্লাহর তখত যিঁনি তাঁর স্বাধীন ইচ্ছায় সুচিন্তি কাঠামোতে গড়ে তুলেছেন তাঁর এই সখের সাম্রাজ্য। যাদেরকে তিঁনি ভাববার দ্বায়িত্ব দিয়েছেন তারাই গিয়ে সাড়ি বাঁধল সেই অবিশ্বাসী বিজ্ঞানীর পিছনে। হয়তো মহান আল্লাহ অবাকই হয়েছিলেন এই ভেবে যে, অতি আদরের ভাবুক সম্প্রদায় এতটাই বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে যে স্বয়ং তাদের স্রষ্টাকেই অস্বীকার করে বসেছে! বিজ্ঞান নানা প্রকার যুক্তি প্রমাণ দিয়ে দেখিয়ে দিল প্রকৃতিতে সৃষ্টির জন্যে স্রষ্টার কোন প্রয়োজন নেই, আপনাতেই পদার্থের জন্ম হয়, আর অজৈব অনু মিলে আপনাআপনিই বায়ো অণুর সৃষ্টি করে, এই প্রকৃতি সৃষ্টি হয়েছে শুধুমাত্র প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যামে। অবিশ্বাসীদের দল বড় হতে লাগলো,কারণ ওখানে ধর্মের কোন বিধিবদ্ধ নিয়ম নেই; স্রষ্টাকে অস্বীকার করতে পারলেই যেন আত্মতৃপ্তিতে মন ভরে উঠে। বিশ্বাসী ভাবুকরা যেন অকুলে বাসতে লাগলেন, এতবড় ভূল তত্ত্বকে ভেঙে ফেলার কোন হাতিয়ার পাওয়া যাচ্ছেনা। এমনি এক ক্রান্তিলগ্নে মহান আল্লাহ সেই অবিশ্বাসীদেরকে দিয়েই বিশ্বাসের সূচনা করলেন। আবিস্কৃত হল ডি এন এ, প্রাণী জগৎ সৃষ্টির মৌলিক সফট্ অয়ার। গবেষণায় দেখা গেল কোন প্রাণীর দেহসৌষ্ঠব গড়ে উঠার,তার বংশরক্ষার,তার জীবন চলার সকল বিধান রচিত হয়ে আছে ঐ ডি এন এ’র মধ্যে। দীর্ঘ দিনের অহমিকার পতন ঘটলো। তথাপি তারা মরিয়া হয়ে প্রমান করতে চাইলো ‘বানরই মানুষের পিতৃপুরুষ’।প্রমাণ করে দিল বানর ও মানুষের ডি এন এ’র মধ্যে ৯৯ শতাংশ মিল। এই মিলের কারণ হিসেবে তারা বলল,‘যেহেতু বানর বিবর্তীত হয়ে মানুষ হয়েছে তাই এত মিল’। অথচ এই মিলের কারণ মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআণে ১৪০০ বছর আগেই বলে রেখেছেন। তারা মানলোনা পবিত্র কোরআনকে, প্রমাণ চাইলো,চাইলো নিদর্শন। মহান আল্লাহ সেই নিদর্শনও দেখিয়ে দিলেন লুসিকে আবিস্কারের মধ্য দিয়ে, তাতেও মন বড়লনা,বলল বানর তারচেয়েও পুরানো। মহান আল্লাহ সে নিদর্শনও দেখিয়ে দিলেন ১৯৯৩ সালে Australopithecus ramidus কে প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে, যার বযস ৪.৪ মিলিয়ন। অবিশ্বাসীরা এখন আরও পুরানো বানরের ফসিল খুঁজছে। তার জবাবে মহান আল্লাহ নয় খোদ বিজ্ঞানীরাই বলছে যে মানব ইতিহাস শত শত মিলিয়ন বছরের পুরানো হতে পারে। অবিশ্বাসীরা মানুক আর নাই মানুক একটা সামান্য নিদর্শণের শধ্য দিয়ে মহান আল্লাহর বাণী চিরন্তন সত্যের রূপ নিল। হয়তো সেজন্যেই মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে সূরা হা’মীম এর ৫৩ নং আয়াতে বলছেন,
سَنُرِيهِمْ آيَاتِنَا فِي الْآفَاقِ وَفِي أَنفُسِهِمْ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُ الْحَقُّ أَوَلَمْ يَكْفِ بِرَبِّكَ أَنَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ
৪১:৫৩ এখন আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী প্রদর্শন করাব দৃষ্টি সীমানার মধ্যে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে; ফলে তাদের কাছে ফুটে উঠবে যে, উহাই সত্য। এটা কি যথেষ্ট নয় যে,আপনার পালনকর্তা সর্ববিষয়ের সাক্ষী?
সূত্র- answering Christianity.com ও বিভিন্ন ওয়েভসাইট
: “We will soon show them Our signs in the Horizons and inside their selves, until it will become quite clear to them that it is the truth. Is it not sufficient as regards your Lord that He is a witness over all things?
সূধী পাঠক, এর পরেও কি বলার সুযোগ রয়েছে যে, মহান আল্লাহর প্রদত্ত নিদর্শন আমাদের কাছে পৌঁছানি?
আবদুল আজিজ খন্দকার
প্রথম প্রকাশিতঃ http://sciencewithquran.wordpress.com/
আমি হৃদয় খন্দকার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 35 টি টিউন ও 60 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
nice post