কুর’আনে প্রযুক্তি [পর্ব- ১০] ::বায়ুমন্ডলের স্তর

আসসালামুআলাইকুম ও  আন্তরিক শুভেচ্ছা  জানাচ্ছি সবাইকে 🙂

কুর’আনে প্রযুক্তি [পর্ব- ১০] ::বায়ুমন্ডলের স্তর

১৪০০ বছর পূর্বে যখন আকাশকে একটি অখন্ড অংশ হিসেবে মনে করা হতো কোরআনে অলৌকিকভাবে তখনি বলা হলো যে এটি সাতটি ভিন্ন ভিন্ন স্তরে গঠিত। অন্য দিকে অতি সম্প্রতি আধুনিক বিজ্ঞান এ সত্যটি উদঘাটন করেছে যে পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বায়ুমন্ডল সাতটি স্তর নিয়ে গঠিত। আমরা এই সূত্রে স্তরগুলোর সংখ্যা যদি হিসেব করে দেখি তবে দেখব যে, আয়াতে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে ঠিক তেমন করেই বায়ুমন্ডল সাতটি স্তর নিয়ে গঠিতঃ

১. ট্রপোস্ফিয়ার

২. স্ট্রাটোস্ফিয়ার

৩. ওযোনোস্ফিয়ার

৪. মেসোস্ফিয়ার

৫. থার্মোস্ফিয়ার

৬. আয়নোস্ফিয়ার

৭. এক্সোস্ফিয়ার

মহাবিশ্ব সম্পর্কে কোরআনের তথ্যগুলোর একটি হলো যে, আকাশ সাতটি স্তর নিয়ে গঠিত।

002.029 هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُمْ مَا فِي الأرْضِ جَمِيعًا ثُمَّ اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ فَسَوَّاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

তিনি এমন যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের কল্যাণের জন্য পৃথিবীর সবকিছু। তারপর তিনি মনোযোগ দিলেন আকাশের প্রতি এবং বিণ্যস্ত করলেন তা সাত আসমানরূপে। আর তিনি সর্ববিষয়ে সবিশেষ অবহিত।

Al-Qur'an, 002.029 (Al-Baqara [The Cow])

041.011 ثُمَّ اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ وَهِيَ دُخَانٌ فَقَالَ لَهَا وَلِلأرْضِ اِئْتِيَا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا قَالَتَا أَتَيْنَا طَائِعِينَ

041.012 فَقَضَاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ فِي يَوْمَيْنِ وَأَوْحَى فِي كُلِّ سَمَاءٍ أَمْرَهَا وَزَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَحِفْظًا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ

অতঃপর তিনি আসমানের প্রতি মনোনিবেশ করলেন, তখন তা ছিল ধূম্রবৎ। তারপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেনঃ তোমরা উভয়ে আস স্বে‪ছায় কিংবা অনি‪ছায়। তারা উভয়ে বললঃআমরা স্বে‪ছায় ও সানন্দে আসলাম। তারপর তিনি আকাশমন্ডলকে দু’দিনে সাত আসমানে পরিণত করলেন এবং প্রত্যেক আসমানে তার জন্য আদেশ প্রেরণ করলেন। আর আমি নিকটবর্তী আসমানকে সুশোভিত করেছি নক্ষত্ররাজি দিয়ে এবং তাকে হেফাজত করেছি। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবপনা।

Al-Qur'an, 041.011-012 (Fussilat [Explained in Detail])

কোরআনের বহু আয়াতে যে “Heavens” শব্দটি এসেছে তা দ্বারা পৃথিবীর উপরের আকাশ তথা মহাবিশ্বকে বুঝানো হয়ে থাকে। এ শব্দটির এমন অর্থ হলে দেখা যায় যে পৃথিবীর আকাশ কিংবা বায়ুমন্ডল সাতটি স্তর নিয়ে গঠিত। বাস্তবিকই এখন জানা গিয়েছে যে, পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের রয়েছে জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে পৃথিবীর। এগুলোরই একটি হলো বায়ুমন্ডল, যা জীব জগৎকে রক্ষা করার কাজে বর্ম হিসেবে কাজ করে। আজ এটি একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য যে, বায়ুমন্ডল একটির উপর অন্যটি অবস্থিত – এমনভাবে সাতটি স্তর নিয়ে গঠিত। ঠিক কোরআনের বর্ণনার মতোই এটি ঠিক সাতটি স্তর নিয়ে গঠিত। অবশ্যই এটি কোরআনের একটি অলৌকিকত্ব। কয়েকটি স্তর যেগুলোর একটি আরেকটির উপর অবস্থিত । তেমনি ঠিক সাতটি স্তর নিয়ে বায়ুমন্ডল গঠিত। বৈজ্ঞানিক সূত্রমতে বিষয়টি নিম্নরূপে বর্ণিত হয়ে থাকেঃ-

বিজ্ঞানীগণ পর্যবেক্ষন করেছেন যে, বায়ুমন্ডল বিভিন্ন স্তর নিয়ে গঠিত। চাপ ও গ্যাসের প্রকারের মত ভৌত গুণাবলী দ্বারা স্তরসমূহ ভিন্নতা প্রদর্শন করে। ভূপৃষ্ঠের সবচেয়ে নিকটতম স্তর হলোট্রপোস্ফিয়ার। বায়ুমন্ডলের ৯০ শতাংশ নিয়ে এই স্তর গঠিত। ট্রপোস্ফিয়ারের উপরের স্তরটিকে বলা হয় স্ট্রাটোস্ফিয়ার। ওযোন স্তর স্ট্রাটোস্ফিয়ারেরই একটি অংশ যেখানে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি শোষিত হয়ে থাকে। স্ট্রাটোস্ফিয়ারের উপরের স্তরটিকে বলা হয় মেসোস্ফিয়ার। মেসোস্ফিয়ারের উপরে থাকে থার্মোস্ফিয়ার। এই স্তরে আয়নে পরিণত গ্যাসগুলো একটি স্তর তৈরী করে যাকে বলা হয় আয়নোস্ফিয়ার। পৃথিবীর বাযুমন্ডলের সবচেয়ে বাইরের স্তরটি ৪৮০ কিলোমিটার থেকে ৯৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এই স্তরটিকে বলা হয় এক্সোস্ফিয়ার।

এ বিষয়ে আরেকটি গুরত্বপূর্ণ অলৌকিক ব্যাপার এ উক্তিতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ

 

041.022 وَمَا كُنْتُمْ تَسْتَتِرُونَ أَنْ يَشْهَدَ عَلَيْكُمْ سَمْعُكُمْ وَلا أَبْصَارُكُمْ وَلا جُلُودُكُمْ وَلَكِنْ ظَنَنْتُمْ أَنَّ اللَّهَ لا يَعْلَمُ كَثِيرًا مِمَّا تَعْمَلُونَ

 অতঃপর তিনি আকাশ মন্ডলকে দুদিনে সাত আসমানে পরিণত করলেন এবং প্রত্যেক আসমানে তার জন্য আদেশ প্রেরণ করলেন। ...........। (কোরআন, ৪১ : ২২)

Al-Qur'an, 041.022 (Fussilat [Explained in Detail])

অন্য কথায় বলা যায় যে আয়াতটিতে আল্লাহ তাআলা এটাই উল্লেখ করেছেন যে, তিনি প্রতিটি আসমানের জন্য তাদের করণীয় কাজ বন্টন করে দিয়েছেন। সত্যিই পূর্বের আয়াতগুলোতে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, ভূ-পৃষ্ঠে বসবাসকারী অন্যান্য প্রাণীসহ মানবজাতির উপকারার্থে প্রতিটি স্তরই অতিপ্রয়োজনীয় কাজ করে যাচ্ছে। বৃষ্টি উৎপন্ন করা থেকে শুর
 করে ক্ষতিকর রশ্মিসমূহকে বাধা দান, বেতারতরঙ্গ প্রতিফলিত করা, উল্কা পিন্ডসমূহের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাধা দেয়া বা নিরোধ করা পর্যন্ত বিশেষ

বিশেষ কাজগুলো ভিন্ন ভিন্ন স্তর ভিন্ন ভিন্নভাবে সম্পন্ন করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, বৈজ্ঞানিক সূত্রে এগুলোর একটি কাজের কথা নিম্নে উল্লেখ করা হয়েছেঃ

ভূপৃষ্ঠের বায়ুমন্ডলের রয়েছে সাতটি স্তর। সর্বনিম্ন স্তরটি হলো ট্রপোস্ফিয়ার। বৃষ্টি, বরফ আর বাতাস কেবল এ স্তরটিতেই ঘটে থাকে।এটি একটি বড় ধরণের অলৌকিক ব্যাপার যে, এই যে বিষয়গুলো বিংশ শতাব্দীর টেকনোলজী ব্যতীত উদঘাটন করা সম্ভব হওয়ার কথা ছিল না, সেগুলোই কোরআনে ১৪০০ বছর পূর্বে স্পষ্টভাবেউল্লেখ করা হয়েছিল।

**"Numerical Prediction Models used by NWS," Integrated Publishing; http://www.tpub.com/weather3/4-27.htm

** "The Incredible Design of the Earth and Our Solar System;"

http://www.godandscience.org/apologetics/designss.html

শাহরিয়ার আজম

B.Sc.IT (S.M University,India),/ M.A & Ph.D (Paris University, France), DEW, Brussels,Belgium

http://www.facebook.com/pages/Al-Quran-Modern-Science/140069416050931

http://muslim.zohosites.com/ http://www.quranic-science.blogspot.com/

Level 0

আমি Sharear Azam। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 42 টি টিউন ও 365 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

আসসালামু-আলাইকুম ভাইয়া, আসলেই অনেক দারুন হইছে। তাসারা আপনার ধারাবাহিক টিউন অনেক সুন্দর হচ্ছে। চালাই যান বস……………
ধন্যবাদ ভাইয়া।

vai jan akkothay darun