আসসালামুআলাইকুম ও শুভেচ্ছা সবাইকে 🙂
সর্বপ্রথম স্যার বানার্ড প্যালেসি ১৫৮০ সালে পানি-চক্রের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা প্রদান করেন-পানি কিভাবে বাস্প হয়ে উপরে উঠে, মেঘ হয়,ঠান্ডা বাতাসের স্পর্শে এসে বৃষ্টি হয়ে পড়ে ইত্যাদি। সম্প্রতি বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার ফলে আজ আমরা জানতে পারছি আকাশ শুধু পানিকেই ফিরিয়ে নেয় না। উপরন্তু আকাশ যোগাযোগের তরঙ্গ, মোবাইল তরঙ্গ, মানুষের কথার তরঙ্গ, যানবাহনের শব্দের তরঙ্গ ইত্যাদি ফিরিয়ে নেয়। এবং আকাশ সূর্য থেকে আসা বেশিরভাগ রশ্মি (আলট্রা-ভায়োলেট) ফিরিয়ে দেয় আয়নোস্কিয়ারের মাধ্যমে। পবিত্র কোরআনে সূরা তারিকের ১১নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা আকাশের প্রত্যাবর্তন কার্যাবলীর কথাটি উল্লেখ করেছেন :
086.011 وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الرَّجْعِ
কসম আসমানের, যা আবর্তনশীল হয়।
Al-Qur'an, 086.011 (At-Tariq [The Morning Star, The Nightcomer])
কোরআন অনুবাদের বেলায় এই আবর্তনশীল (Cyclical) শব্দটি আরো কটি অর্থ বুঝিয়ে থাকে ; যেমন, “ফেরৎ পাঠানো”, কিংবা “ফিরে আসা” বা “প্রত্যাবর্তন”।সবারই জানা আছে যে, পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বায়ুমন্ডল বেশ কটি স্তর নিয়ে গঠিত। এর প্রতিটি স্তরই জীবনের কল্যানে বিবিধ প্রকার গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে যাচ্ছে। গবেষণায় উন্মোচিত হয়েছে যে, স্তরগুলোয় যে সমস্ত বস্তু কিংবা রশ্মি এসে পৌঁছে সেগুলোকে আকাশে কিংবা ভুপৃষ্ঠে ফেরৎ পাঠিয়ে দেয় এই বায়ুমণ্ডল। এখন চলুন পৃথিবীকে পরিবেষ্টনকারী এই স্তরগুলোর ”আবর্তন” বা প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া কিছু দৃষ্টান্তের মাধ্যমে পর্যবেক্ষন করি-
(১) ভূ-পৃষ্ঠের ১৩-১৫ কিলোমিটার উপরে ট্রপোস্ফিয়ার নামক স্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে উত্থিত পানি বাষ্পকে ঘনীভূত করে বৃষ্টিরূপে ফেরৎ পাঠায়।
(২) ২৫ কিলোমিটার উপরিস্থিত ওযোন স্তরটি মহাশূণ্য থেকে আসা ক্ষতিকর রশ্মি আর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি উভয়কেই প্রতিফলিত করে মহাশূণ্যেই ফেরৎ পাঠায়।
(৩) আয়নোস্ফিয়ার বেতার তরঙ্গ সম্প্রচারকে অপ্রতিরোধী যোগাযোগকারী উপগ্রহের (Passive Communication Satellite) ন্যায় প্রতিফলিত করে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ফেরৎ পাঠায়। আর এভাবেই তা অতি দূর দূরান্তে ওয়ারলেস যোগাযোগ, রেডিও, টেলিভিশন সম্প্রচারকে সম্ভব করে তুলে।
(৪) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার সূর্য ও অন্যান্য নক্ষত্র থেকে নির্গত ক্ষতিকর রেডিও একটিভ কণা (Radio Active Particle) কে ভূ-পৃষ্ঠে পৌঁছুবার পূর্বেই মহাশূণ্যে ফেরৎ পাঠায়। প্রকৃত ব্যাপারটি হলো যে, বায়ুমন্ডলের এই স্তরগুলোর বৈশিষ্ট্যাবলী যা নিকট অতীতে উন্মোচিত হয়েছে - সেগুলোই পবিত্র কোরআনে শত শত বছর আগে ঘোষিত হয়েছিল - আর এটিই আবারো প্রমাণ করে যে, কোরআন আল্লাহ তাআলারই বাণী ।
পৃথিবীতে জীবসমূহের বেঁচে থাকার জন্য পানির প্রয়োজন অপরিহার্য। ট্রপোস্ফিয়ার স্তরটি পানি উৎপন্নের কাজে সাহায্য করে ; ভূপৃষ্ঠ থেকে উত্থিত বাষ্পকে ট্রপোস্ফিয়ার ঘনীভূত করে বৃষ্টি হিসেবে পৃথিবীতে ফেরৎ পাঠায়। ওযোনোস্ফিয়ার এমন একটি স্তর যা ভূ-পৃষ্ঠের জীবসমূহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এমন সব রশ্মির আগমনে বাধা দেয়। আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির ন্যায় ক্ষতিকর কসমিক রশ্মিগুলোকে মহাশূণ্যে ফেরৎ পাঠিয়ে দিয়ে
ওযোনোস্ফিয়ার পৃথিবীর জীবসমূহকে রশ্মিসমূহের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে থাকে।
বায়ুমন্ডলের প্রতিটি স্তরেরই রয়েছে মানব জাতির জন্য উপকারী বৈশিষ্ট্যাবলী। দৃষ্টান্ত স্বরূপ আয়নোস্ফিয়ার স্তরটি কোন নির্দিষ্ট কেন্দ্র হতে সম্প্রচারিত বেতার তরঙ্গকে প্রতিফলিত করে নিম্নে পৃথিবীতে ফেরৎ পাঠায়। এভাবেই স্তরটি দূর-দূরান্তে সম্প্রচারকে সম্ভব করে তুলেছে।আল্লাহ বলেন- নুর-২৪ আয়াত-৪৩-
024.043 أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يُزْجِي سَحَابًا ثُمَّ يُؤَلِّفُ بَيْنَهُ ثُمَّ يَجْعَلُهُ رُكَامًا فَتَرَى الْوَدْقَ يَخْرُجُ مِنْ خِلالِهِ وَيُنَزِّلُ مِنَ السَّمَاءِ مِنْ جِبَالٍ فِيهَا مِنْ بَرَدٍ فَيُصِيبُ بِهِ مَنْ يَشَاءُ وَيَصْرِفُهُ عَنْ مَنْ يَشَاءُ يَكَادُ سَنَا بَرْقِهِ يَذْهَبُ بِالأبْصَارِ
তুমি কি দেখ না , আল্লাহ মেঘমালাকে ধীর গতিতে সঞ্চালন করেন, তারপর তার খন্ডগুলোকে পরস্পর সংযুক্ত করেন, তারপর তাকে একত্র করে একটি ঘন মেঘে পরিণত করেন, তারপর তুমি দেখতে পাও তার খোল থেকে বৃষ্টি বিন্দু একাধারে ঝরে পড়ছে৷ আর তিনি আকাশ থেকে তার মধ্যে সমুন্নত পাহাড়গুলোর বদৌলতে শিলা বর্ষণ করেন…
Al-Qur'an, 024.043 (An-Noor [The Light])
এতথ্য আরও রয়েছে-সূরা রুম-৩০, আয়াত-৪৮/ সূরা জুমার-৩৯, আয়াত-২১ ।
আপনাকে ধন্যবাদ সময় নিয়ে পোষ্টটি পড়ার জন্য।
শাহরিয়ার আজম
B.Sc.IT (S. M University,India),/ M.A & Ph.D (Paris University, France), DEW, Belgium
http://www.facebook.com/pages/Al-Quran-Modern-Science/140069416050931
http://muslim.zohosites.com/ http://www.quranic-science.blogspot.com/
আমি Sharear Azam। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 42 টি টিউন ও 365 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
splendid as always……..keep up the good work brother…….and try to do some tunes on the work of muslim scientists on science ……….