টাকা কিভাবে তৈরি হয়ঃ আমাদের সবার একটা কৌতূহল

১: টাকার মেশিন ও শুরুর কিছু কথা

টাকার মেশিন রিলেটেড কিছু গল্প কম বেশী সবাই শুনেছি। আপনাকে একটা টাকার মেশিন দেয়া হলে আপনি কী করবেন? ইচ্ছামতো টাকা প্রিন্ট করবেন আর তা দিয়ে অন্যজনের সম্পদ কিনতে থাকবেন। এভাবে কয়েক বছরের মধ্যে আপনিই হয়ে যাবেন দেশের বেশিরভাগ সম্পদের মালিক। কিন্তু এই পদ্ধতি ভালো না। কিছুদিন পরই দেশের মানুষ বিদ্রোহ করবে এই বলে যে, তাদের সবাইকে একটা করে টাকার মেশিন দিতে হবে। কিন্তু! এ কী করে সম্ভব?

মেশিনে কিভাবে টাকা তৈরি হয় সেটার ভিডিও নিচে দেখুনঃ

সরকার তখন আপনাকে বলল, ওকে বাপু! তুমি আর এভাবে টাকা ছাপিওনা। তুমি শুধু বছরে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকাই ছাপাবে আর তা দিয়ে সরাসরি মানুষের ধন-সম্পদ কিনতে পারবেনা, মানুষকে লোন দিবে। ১০০ টাকা লোন দিলে তারা তোমাকে ১৫ টাকা সুদ দিবে। এই ১৫ টাকা দিয়ে তুমি সম্পদ কিনবে। সরকার এই রেগুলেশনের নাম দিলো ‘ব্যাংকিং এক্ট’। মানুষতো বেজায় খুশি, তারা এখন সহজে লোন পাচ্ছে। আপনাকে শুধু সুদের সামান্য টাকা দিতে হচ্ছে! আপনিও টাকা ছাপিয়ে মানুষের ধন-সম্পদ কিনতে থাকলেন। তবে একটু ধীরে সুস্থে, সময় নিয়ে, যেহেতু সুদ কিছু সময় পরই নিতে হয়! মানুষও এখন আর বিদ্রোহ করবেনা, তারাতো লোন পাচ্ছে। আর আপনিও যেহেতু চালাক হয়ে গিয়েছেন তাই তাড়াহুড়া করে মানুষের সব সম্পদ কিনছেন না। সুদের মাধ্যমে অল্প অল্প করে কিনছেন, এর থেকে সরকারকে কিছু টাকাও দিচ্ছেন। আপনিও খুশী, সরকার, জনগণ সবাই খুশি! সুদ হচ্ছে ঝোঁকের মতো, রক্ত চোষার সময় মানুষ টের পায়না, রক্ত চোষা বন্ধ করলেই টের পায়। কেন বিশ্বের ৬৫১ জন ধনী বাকী বিশ্বের সব মানুষ থেকে বেশি সম্পদের মালিক। কেন ফুট ওভার ব্রীজের নিচ্ছে শীতে থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে মানুষ শুয়ে রাত পার করে তা বুঝতে এতক্ষণে আপনার কষ্ট হওয়ার কথা নয়। কুরআনের নিচের আয়াতটির সাথে উপরের সিস্টেমটির মিল পাচ্ছেন কিনা দেখুন তো।

“তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না। এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আত্নসাৎ করার উদ্দেশে শাসন কতৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না”। (আল কুরআন ২:১৮৮)

আপনি কি জানেন বাংলাদেশের ৫০ এর বেশী ব্যাংকের কাছে এই রকম মেশিন দেয়া হয়েছে? এরা ঝোঁকের মতো আমার আপনার সম্পদ চুষে নিয়ে তাদের রক্ষক দের হাতে তুলে দিচ্ছে?

২: ব্যাংককে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়

ব্যাংক বা ব্যাংকিং কি? পশ্চিমাদের লিখিত যে কোন বইতে সোজা উত্তর: পাবেন, ব্যাংক হচ্ছে একটা ইন্টারমিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান যা জনগণ থেকে ডিপোজিট নেয় একটা নির্দিষ্ট সুদের হারে এবং লোন দেয় নির্দিষ্ট সুদের হারে। এই দুই (ডিপোজিট রেট ও লেন্ডিং রেট) সুদের হারকে বলে স্প্রেড, যা ব্যাংকের প্রফিট। তারা আপনাকে একাউন্টিং এর মাধ্যমে দেখিয়েও দিবে। চলুন তাদের হিসাব নিকাশ দেখা যাক।

ধরুণ, কোন এক ব্যক্তি ব্যাংকে ১০০০ টাকা ডিপোজিট করল। ব্যাংকের ব্যালেন্সশীট তখন হবে এই রকম।

ছকের বাম পাশে ১০০০ টাকা হলো সম্পদ, এটা এখন ব্যাংকের হাতে আছে আর ডান পাশের ডিপোজিট ১০০০ টাকা দায়, যেহেতু এই টাকা ডিপোজিটরদেরকে ফেরত দিতে হবে। ব্যাংক ডিপোজিট এর একটা অংশ জমা রাখে। এটার হার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঠিক করে দেয়, ধরুণ এই হার ১০%। এখন ব্যাংক ডিপোজিট এর ১০% রেখে বাকী টাকা লোন দিবে।

এখন লোনের ওপর সুদ ১০% এবং ডিপোজিট এর ওপর সুদ ৫% হলে (ডিপোজিট রেট লেন্ডিং রেট এর চেয়ে সাধারণত কম হয়ে থাকে), ব্যাংকের ফাইনান্সিয়াল স্টেটমেন্ট হবে নিম্নরুপ। (সুদ সহ ক্যালকুলেশন)

এই যে ক্যালকুলেশন তা আপনি ব্যাংকিং সংক্রান্ত যে কোন বইতে পাবেন। এই যে গল্পটা বলা হয় তা এই যাবৎ ব্যাংক সম্পর্কে সবচেয়ে বড় মিথ্যা! ব্যাংক ইন্টারমিডিয়ারি, জনগণের টাকায় ব্যবসা করে, এসব খুব সাজানো গোছানো মিথ্যা কথা। এসবই আমাদের পশ্চিমা শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে, স্কুল, কলেজ, ভার্সিটিতে গলাধঃকরণ করানো হয়। মূল কথা হলো ব্যাংক টাকা ক্রিয়েট করে। লোন দেয়ার জন্য ব্যাংকের পাবলিক ডিপোজিট দরকার নেই। বরং লোন দিয়েই ব্যাংক ডিপোজিট ক্রিয়েট করে। পাবলিকের কাছ থেকে ডিপোজিট দরকার লিকুইডিটি মেইনটেইনেন্স এর জন্য।

: বর্তমান সেক্যুলার ইকোনমির বৈশিষ্ট্য

বর্তমান মানিটারি সিস্টেম সম্পর্কে একটু ধারণা পাওয়া যাক।

ফিয়াট মানিঃ বিশ্বের অলমোস্ট সব মানিই এখন ফিয়াট মানি। সংক্ষেপে যে মানির বিপরীতে গোল্ড জমা থাকেনা তাই ফিয়াট মানি। কিছু লোক বলতে পারেন, বাংলাদেশে টাকার বিপরীতে গোল্ড জমা থাকে। যদি বলা হয়, আচ্ছা আমার কাছে ১ লক্ষ টাকা আছে, এই টাকার বিনিময়ে ব্যাংকে গেলে ব্যাংক কি আমাকে গোল্ড দিবে? কি পরিমাণ দিবে? উত্তর: দিবেনা। এটাই ফিয়াট মানি। ব্যাপারটা এমনঃ কেউ বলল, আমার কাছে ২ আউন্স স্বর্ণ আছে, তাই আমি আনলিমিটেড টাকা ছাপাতে পারব! যদি নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে নির্দিষ্ট স্বর্ণ ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা যায়, তবেই তা ফিয়াট হবেনা। কারণ তখন প্রত্যেকের টাকার বিনিময়ে গোল্ড জমা থাকছে। ঐটাও ফিয়াট নয় যার নিজস্ব ভ্যালু আছে যেমনঃ অতীতে ব্যবহৃত গোল্ড দিনার বা সিলভার দিরহাম।

ফিয়াট মানির সমস্যাটা কি? সমস্যাটা হলো, সরকার বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইচ্ছা করলেই টাকা ছাপাতে পারে। কমার্শিয়াল ব্যাংক গুলোও ক্রেডিট ক্রিয়েশন এর মাধ্যমে টাকা ক্রিয়েট করতে পারে। কিন্তু ইচ্ছা করলেও আর গোল্ড বানানো যায়না।

ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ ব্যাংকিং: এক কথায় ব্যাংক ডিপোজিট এর পুরোটা ক্যাশ রিজার্ভ না রেখে, একটা নির্দিষ্ট অংশ জমা রাখে, এই নির্দিষ্ট অংশকে স্ট্যাটিউটোরি লিকুইডিটি রিজার্ভ বলা হয়। এর হার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঠিক করে দেয়। বাংলাদেশে বর্তমানে এর হার ১৯.৫%। এই আর্টিকেলে আমি ১০% রিজার্ভ রিকার্মেন্ট ধরেছি, ক্যালকুলেশন এর সুবিধার জন্য।

৪: ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ ব্যাংকিং এর ইতিহাস

ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ ব্যাংকিং এর ইতিহাসটা একটু সংক্ষেপে আলোচনা করা প্রয়োজন। স্বর্ণকার এর আবির্ভাবের পর, মানুষ স্বর্ণকার এর নিকট নিরাপত্তার (সেফ কিপিং) জন্য গোল্ড জমা রাখত। অতীতে গোল্ডই ছিল মানি। দৈনন্দিন যেটুকু গোল্ড প্রয়োজন শুধু তা উত্তোলন করত। সবর্ণের বিপরীতে গোল্ড স্মিথ (সবর্ণকার) মানুষকে একটা স্লিপ দিত, লিখা থাকত, ‘I owe You’, মানে আমি আপনার কাছে ঋণী। সবাই জানত এই স্লিপের বিপরীতে গোল্ড জমা আছে। মানুষজন স্বর্ণ বাদ দিয়ে দিন দিন এই স্লিপ দিয়েই ট্রানজেকশন শুরু করে দিল। স্বর্ণকার দেখলো দৈনিক স্বর্ণ উত্তোলন এর পরিমাণ খুবই কম। মোট রিজার্ভের/ডিপোজিটের একটা ক্ষুদ্রাংশ। মানুষ এই স্লিপ দিয়েই লেনদেন করছে। স্বর্ণকার এখন ইচ্ছা মতো স্লিপ ছাপাতে থাকে আর লোন দিতে শুরু করে। এই স্বর্ণকার এর পন্থাই এখন ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ ব্যাংকিং বলে পরিচিত। পার্থক্য হলো ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ ব্যাংকিং কে বর্তমানে বৈধতা দেয়া হয়েছে!

৫: ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ ব্যাংকিং; ব্যাংক কীভাবে টাকা তৈরী করে?

চলুন দেখা যাক, ব্যাংক কীভাবে কাজ করে। পূর্বের উদাহরণেই যাওয়া যাক। বুঝার সুবিধার্থে ধরে নেই পুরো দেশে একটিই ব্যাংক আছে কিংবা দেশের সব ব্যাংক একসাথে মার্জ করেছে।

এক ব্যক্তি ব্যাংকে ১০০০ টাকা ডিপোজিট দিল। ব্যাংকের ফাইনান্সিয়াল রেকর্ড নিম্নরুপ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেট করল, ব্যাংককে ডিপোজিটের ১০% ক্যাশ রিজার্ভ রাখতে হবে। এই ক্যাশ রিজার্ভ রাখা হয় দৈনন্দিন উত্তোলন এর জন্য। এখন ব্যাংকের ফাইনাইন্সিয়াল স্টেটমেন্ট এর দিকে তাকান। ক্যাশ রিজার্ভ আছে ১০০%। ১০০০ টাকা ডিপোজিট এর বিপরীতে ১০০০ টাকা ক্যাশ রিজার্ভ। যেহেতু ডিপোজিটের শুধুমাত্র ১০% ক্যাশ রিজার্ভ রাখা লাগবে, তাই ব্যাংক ডিপোজিট বৃদ্ধি করতে থাকবে যতক্ষণ না ক্যাশ রিজার্ভ ১০০০ ডিপোজিটের ১০% না হয়। এখন কীভাবে ব্যাংক ডিপোজিট বৃদ্ধি করবে? উত্তর: লোন এর মাধ্যমে! কেউ যখন লোন নিতে আসবে, তখন ব্যাংক  লোন বৃদ্ধি করবে আর ডিপোজিটও সম পরিমাণ বৃদ্ধি করে দিবে। এই কাজটা ব্যাংক করে প্রতিবার লোন দেয়ার সময়। চলুন ব্যাংকের ফাইনান্সিয়াল স্টেটমেন্ট এইবার দেখে আসি।

এখন ১০০০০ ডিপোজিট এর ১০% ক্যাশ রিজার্ভ আছে ১০০০। এইভাবেই ব্যাংক তৈরী করলো ৯০০০ টাকা। এইভাবে ১০০০ টাকা ডিপোজিট নিয়ে ব্যাংক আরো ৯০০০ টাকা ডিপোজিট ক্রিয়েট করতে পারে, (১০০০/.১০)। লক্ষণীয় এই ৯০০০ টাকা ইকোনমিতে প্রবেশ করলো সম্পূর্ণ লোন হিসেবে যার ওপর সুদ চার্জ করা হবে। ধরলাম ডিপোজিট এর ওপর সুদ এর হার ৫% আর লোন এর ওপর ১০%। এই দুই সুদের ব্যবধানটাই ব্যাংকের প্রফিট।  চলুন, আবার ফাইনান্সিয়াল স্টেটমেন্টে ফিরে যাই।

৯০০০ টাকা লোন এর ওপর ১০% সুদ  ৯০০ টাকা এবং ডিপোজিট ১০০০০ এর ওপর ৫% সুদ ৫০০ টাকা। ব্যাংকের প্রফিট (৯০০-৫০০) = ৪০০ টাকা। ব্যাংকের মুনাফা ৪০০ টাকা প্রকৃত ডিপোজিট ১০০০ এর ৪০%! এইবার ব্যাংকের ডেফিনেশন দেয়া যাক। ব্যাংক কি করে? ব্যাংক হাওয়া থেকে টাকা তৈরী করে মানুষকে লোন দেয় এবং এর ওপর সুদ চার্জ করে। ও হ্যাঁ! পাবলিকের ডিপোজিট জমা রাখে লিকুইডিটি মেইনটেইনেন্স এর জন্য!

অনেকেই এই ব্যাপারটা ধরতে পারেন না। কীভাবে ব্যাংক ১০০০ টাকার বিপরীতে ৯০০০ টাকা লোন দেয়! আমি লোন নিলে তো পুরো টাকা তুলে খরচ করব। ব্যাংক তো আমাকে প্রকৃত টাকাই দিতে হবে। ধরুণ, আপনি লোনের টাকা দিয়ে ১ কেজি কমলালেবু কিনেছেন। এখন আপনি যার কাছ থেকে কিনলেন, সেও তার টাকা ব্যাংকেই ডিপোজিট করবে। এইবার একটু বড় লেভেলে চিন্তা করুন। ১০০০ টাকা নয় ১০০০ কোটি টাকা। কেউ কি এই টাকা নিজের হাতে রাখবে? না। এই টাকা ব্যাংকে জমা দিবে, আর নিজের প্রয়োজনে উত্তোলন করবে প্রতিদিন কিছু অংশ। পুরো ইকোনমিতে এই অংশটা হলো ১০%, মোট ডিপোজিটের। এই টাকাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছাপায় বা ইস্যু করে। ইকোনমিতে যেই টাকা একজনের হাত থেকে অন্যজনের হাতে লেনদেন হয়, আমরা দেখি, তা হলো ১০%। বাকী ৯০% টাকার, যা ব্যাংক তৈরী করে, আসলে কোন অস্তিত্বই নেই, এমনকি তা পেপার মানিও নয়। ব্যাংক যা তৈরী করে তা কম্পিউটারের এক্সেল শীটে কিছু একাউন্টিং রেকর্ড। কিন্তু এই একাউন্টিং রেকর্ডই মানুষ লোন নেয় এবং এর ওপর ইন্টারেস্ট দেয়! স্বর্ণকার এর ইতিহাসের সাথে মিল পাচ্ছেন তো!

৬: সলিউশান ও শেষ কথা

দুঃখ জনক হলেও সত্য, বর্তমান সিস্টেমে চলা ইসলামিক ব্যাংক গুলোও একই কাজ করে। শুধু তাদের ফাইনান্সিয়াল স্টেটমেন্ট এ লোন এর জায়গায় একাউন্ট রিসিভএবলস বা দেনাদার লিখা থাকে। এক্ষেত্রে করণীয় কী?

শর্টটার্ম সলিউশন

০১। সুদী ব্যাংকগুলো থেকে লোন নেয়া অফ করে দিতে হবে। ডিপোজিট দেয়াও অফ করে দিতে হবে।

লংটার্ম সলিউশন

০২। ফিয়াট মানির জায়গায় গোল্ড দিনার বা দিরহাম এর প্রবর্তন করতে হবে, যা অনেক স্কলারের নিকট শার’ঈ মানি।

অনেকেই হয়তো ইসলামিক ব্যাংকগুলোর ১০০% রিজার্ভ রিকারমেন্ট এর কথা বলবেন। তবে সমস্যা হলে ইসলামিক ব্যাংকগুলো যদি ১০০% রিজার্ভ রিকারমেন্ট মেইনটেইন করে এবং অন্য সুদী ব্যাংকগুলো এই ভাবে লোন দিতে থাকে, আর মানি ক্রিয়েট করতে থাকে, তবে ইসলামিক ব্যাংকগুলো কম্পিটিশনে পিছিয়ে যাবে, এবং ইকোনমিতে তাদের টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়বে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মুসলিমরা(?) কি সুদী ব্যাংকে ডিপোজিট কিংবা লোন দেয়া সম্পূর্ণরুপে পরিহার করে ইসলামিক ব্যাংকগুলোতে ট্রান্সজেকশন শুরু করবে? সমস্যার মূল উৎস ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ ব্যাংকিং নয়, মূল উৎস ফিয়াট মানি। কারণ, মানি যদি গোল্ড দিনার হয়, তবে ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ ব্যাংকিং এর দ্বারাও ব্যাংক গুলো টাকা তৈরী করতে পারবেনা। একাউন্টিং এ ডেবিট ক্রেডিট করেতো আর গোল্ড সৃষ্টি হয়না!

বর্তমানে এই রকম আনজাস্ট মানিটারি সিস্টেমের ওপর ইসলামিক ব্যাংকগুলো চলতে পারেনা। তবে সমস্যা অবশ্যই দুই’দিনে সমাধান হবেনা। ইসলামিক ব্যাংকিং সিস্টেম হচ্ছে প্রথম স্টেপ যা ইকোনমিকে ইসলামিক ইকোনমিতে রুপান্তর করবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে আমাদের করণীয় সম্পূর্ণরুপে সুদী ব্যাংক এবং নন-ব্যাংক ফাইনান্সিয়াল কোম্পানী গুলোকে পরিহার করা এবং মানুষকে এই বিষয়ে এডুকেট করা, ইসলামিক ইকোনমি নিয়ে সেমিনার কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।

গ্রন্থ বিবরণীঃ

০১। আহামেদ কামাল মাইদীন মীরা (২০০২) দ্যা ইসলামিক গোল্ড দিনার । সিলাঙ্গুরঃ পিলান্ডুক পাবলিকেশন্স।

০২। আহামেদ কামাল মাইদীন মীরা (২০০৪) দ্যা থেফট অব নেশন্সঃ রিটার্নিং টু গোল্ড । সিলাঙ্গুরঃ পিলান্ডুক পাবলিকেশন্স।

০৩। আহামেদ কামাল মাইদীন মীরা এবং এম, লারবানী (২০০৯) ওনারশীফ ইফেক্টস অব ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ সিস্টেম

০৪। এম ডি সানী এবং এস আরফা এবং এ কে এম মীরা এবং এ আজীউদ্দীন (২০১০) ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ ব্যাংকিং এবং মাকাসীদ আল শরীয়াহঃ এন ইনকম্প্যাটিবল প্রাক্টিস। কুয়ালালাম্পুরঃ ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া

০৫। এম এ হানিফ এবং ই আর বারাকাত (২০০৬) মাস্ট মানি বি লিমিটেড টু অনলি গোল্ড এন্ড সিলভার

Level 0

আমি ফিন্টেক্স সফট। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 7 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস