হালের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোসিয়্যাল কম্যুনিটি "ফেসবুক"। এই ব্যাপারে মোটামুটি আমরা সবাই একমত। দিন দিন বেড়েই চলেছে এর জনপ্রিয়তা। আর এই জনপ্রিয়তার মূলে রয়েছে তাদের অ্যাপ্লিকেশান গুলো। এই অ্যাপ্লিকেশান গুলো ফেসবুকে এক আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। এই অ্যাপ্লিকেশান গুলোই ফেসবুককে অন্নান্য সোসিয়্যাল কম্যুনিটি থেকে আলাদা করেছে।
আমাদের টেকটিউনস এ ও ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা কম নয়। তারাও কম বেশী অনেক অ্যাপ্লিকেশান এর সাথে পরিচিত।
আজ আমি আপনাদের কাছে ফেসবুকের জনপ্রিয় কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশান তুলে ধরার চেষ্টা করব।
ফ্রি গিফট : ফেসবুকে যে অ্যাপ্লিকেশানটি সবচেয়ে জনপ্রিয় সবার আগে তার কথাই বলি। মনে হয় আমার মত আপনাদের অনেকেরই এই ফ্রি গিফট অ্যাপ্লিকেশানটি খুব প্রিয়। এর মাধ্যমে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে গিফট গ্রহন ও গিফট প্রদান করতে পারবেন। ফ্রি গিফট অ্যাপ্লিকেশান এ আছে একটি গিফট শপ, যেখানে আপনি আপনার পছন্দমত গিফট বেছে নিতে পারবেন। গিফটগুলো তেমন আহামরি কিছুই না, যেমন- লাল গোলাপ, টেডি বিয়ার, ছোট্ট হাতি, খেলনা গাড়ি, হাত ঘড়ি.....এই গিফট গুলো যদিও ভার্চুয়াল তারপরেও বিভিন্ন উপলক্ষে বন্ধুদের গিফট করার একটা নতুন পদ্ধতি।
বক্স.নেট: এটি ফেসবুক প্লাটফর্মের একটি বিল্টইন অ্যাপ্লিকেশান। জনপ্রিয় ফাইল শেয়ারিং সার্ভিস বক্স.নেট আমরা অনেকেই ব্যবহার করি। আর যারা করেন না তাদের বলে রাখি, বক্স.নেট এ আপনি এক গিগা পর্যন্ত আপনা প্রয়োজনীয় ফাইলগুলো রাখতে পারবেন অনায়াসে। আর এই ফাইলগুলো ফেসবুকে শেয়ার করতে পারবেন এই বক্স.নেট এর অ্যাপ্লিকেশান এর মাধ্যমে।
ভার্চুয়াল অ্যাকুরিয়াম: আমাদের অনেকেরই অ্যাকুরিয়ামে মাছ পোষার শখ রয়েছে। অ্যাকুরিয়ামের ভেতর রঙ্গীন মাছ দেখতে কার না ভালো লাগে। ফেসবুকের জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশানের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে এই অ্যাকুরিয়াম। এখানে আপনি আপনার প্রোফাইলে একটি অ্যাকুরিয়াম বানিয়ে ভার্চুয়াল মাছ পালন ও আপনার বন্ধুদের সেখান থেকে উপহার হিসেবে সেই মাছ পাঠাতে ও পারবেন। সবেচেয় মজার ব্যাপার হল আপনি এখানে মাছের পাশাপাশি অক্টোপাস ও রাখতে পারবেন এবং বন্ধুদের ও সেই অক্টোপাস উপহার হিসেবে পাঠাতে পারবেন।
গ্রাফিটি: এটি ফেসবুকের অন্যতম জনপ্রিয় একটি অ্যাপ্লিকেশন। কারন এর মাধ্যমে মানুষ সৃজনশীল কিছু সৃষ্টি করার সুযোগ পায়। আপনি আপনার প্রোফাইলে এই গ্রাফিটি অ্যিপ্লিকেশান অ্যাড করার পর, যখন আপনার কোন বন্ধু আপনার প্রোফাইলটি ঘুরে যাবে তখন সে আপনার গ্রাফিটি ওয়ালে তার মছন্দমত কোন ছবি অথবা কমেন্ট দিয়ে যেতে পারবে। এতে আপনি আপনার বন্ধুটির জন্য কিছু পেইন্ট করেও এই গ্রাফিটি অ্যাপ্লিকেশান এ তুলে ধরতে পারেন।
আই লাইক: এই অ্যাপ্লিকেশানটি জনপ্রিয়তার তালিকায় আসার মূল কারন হল এটি একটি মিউজিক্যাল অ্যাপ্লিকেশান। আমাদের অনেকেরই অনলাইন এ গান শোনার বাতিক আছে। তাদের জন্যই মূলত এই সফটওয়্যার। এতে আপনি আপনার পছন্দমত গান সংযোজন করেত পারবেন এবং আপনার বন্ধুদের মধ্য কে কে এই গানগুলো কে পছন্দ করছে আপনি তা ও জানতে পারবেন। এর মাধ্যমে আপনি কোন কোন কনসার্ট এ উপস্থিত থাকবেন তার একটি তালিকা ও কনসার্ট বন্ধুদের নিমন্ত্রন ও করতে পারবেন। এর সবচেয়ে আকর্ষনীয় অংশটি হচ্ছে এর "চ্যালেন্জ" অপশনটি। এর মাধ্যমে অ্যাপ্লিকেশানটি গান বাজাবে এবং আপনাকে বলতে হবে এটি কার গান...ইত্যাদী। এই অ্যাপ্লিকেশানটি গান পাগল ফেসবুক উইজারদের মধ্যে এডিকশানের মতো ছড়াচ্ছে।
স্ক্র্যাপ ব্লগ: ফেসবুকের অন্যতম জনপ্রিয় ও ব্যবহৃত আরেকটি অ্যাপ্লিকশান হল "স্ক্র্যাপ ব্লগ"। আমারা অনেকেই হয়ত ছোট বেলায় স্ক্র্যাপবুক বানিয়েছি। আমাদের অনেকে হয়ত এখনও স্ক্র্যাপবুক বানিয়ে থাকি। কিন্তু ফেসবুকের এই অ্যাপ্লকেশান স্ক্র্যাপবুক ব্যবহারকারীদের এক আলাদা মজা এনে দিয়েছে। এর মাধ্যমে আপনি অনলাইনে মাল্টিমিডিয়া স্ক্র্যাপবুক বানাতে পারবেন। স্ক্র্যাপবুকে সংযোজন করতে পারবেন আপনার পছন্দমত গান,ছবি, মিউজিক ভিডিও।
জোহো - অনলাইন অফিস: জোহোর অনলাইর অফিস সেবার বেপারে আমরা খুব কম মানুষই জানি, কিন্তু জোহো এইবার ফেসবুকে আসেছে অ্যাপ্লিকেশান আকারে। এর মাধ্যমে আপনি অনলাইনে আপনি আপনার জোহো অনলাইন ডকুমেন্ট, স্প্রেডশীট, প্রেসেন্টেশান তৈরী এবং ডাটাবেস ভিত্তিক কিছু কাজও করতে পারবেন। যদিও এতে কিছু বাগ রয়ে গেছে, ডেভলোপাররা এই বিষয় নিয়ে কাজ করছে। নিঃসন্দেহে এই সফটওয়্যারটি জনপ্রিয়তা লাভ করবে।
ব্রেইন স্ক্যানার: সম্প্রতি আমি এই অ্যাপ্লিকেশানটি ব্যবহার করে দেখেছি। এর ইউজার সংখ্যা হু হু করে বেড়েই চলেছে। তবে এই অ্যাপ্লিকেশান এর ফলাফল কতটা বাস্তবসম্মত তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। এমআইটি র কিছু গবেষক নাকি এই অ্যাপ্লিকেশান এর সাথে জরিত। অ্যাপ্লিকেশানটি আপনার প্রোফাইল এ দেয়া ইনফরমেশানগুলো নিয়ে কাজ করে থাকে। এবং আপনার মিস্তস্কের কোন অংশটি কোন ব্যাপার নিয়ে চিন্তা করছে সেটি গ্রাফিক্যালি আপনার প্রোফাইলে আপলোড করে দেয়া হয়।
মাই পারসোনালিটি: এটি ফেসবুকের আরও একটি জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশান। এটি ফেসবুকের প্রথম দিকের অ্যাপ্লিকেশান। এই অ্যাপ্লিকেশানে প্রথমত আপনাকে কয়েকটি মনস্তাত্তিক কিছু প্রশ্নোত্তর পর্বের সন্মুখীন হতে হবে। সেই প্রশ্ন সমূহের উত্তরের উপর ভিত্তি করে আপনার ব্যক্তিত্ত নির্ধারন করা হবে এবং আপনার প্রোফাইলে আপলোড করে দেয়া হবে।
ফ্যাশান IV: এটি ফ্যাশান সচেতন ফেসবুক উইজারদের মধ্যে তুমুলভাবে সাড়া জাগানো একটি অ্যাপ্লিকেশান। এর মাধ্যমে আপনি হালের ফ্যাশানের সমস্ত খবরাখবর রাখতে পারবেন এবং এবং মডেলদের ব্যাপারে ইনফরমেশান পাবেন।
অ্যাপ্লিকেশান ডেভলোপার সার্ভিস: এতক্ষন এতগুলো অ্যাপ্লিকেশান এর ফিচার পড়ে হয়ত আপনি ভাবছেন যদি আপনার অ্যাপ্লিকেশানটি ও ফেসবুকের একটি জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশানে পরিনত হয়? হ্যাঁ, এটা মোটেও অসম্ভব কোন ব্যাপার না। আপনি যদি একজন অ্যাপ্লিকেশান ডেভলোপার হয়ে থাকেন এবং ফেসবুক এ আপনার অ্যাপ্লিকেশান সবার জন্যে তুলে ধরতে চান তাহলে আপনি এই অ্যাপ্লিকেশানটি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এ সংযোজন করতে পারেন। এখানে আপনি আপনার ফেসবুক অ্যাপ্লিকেশান তৈরীর যাবতীয় তথ্য এবং উপকরন পাবেন।
আপনি কোন আপ্লিকেশান এর ফ্যান? মন্তব্য করে জানাবেন।
আমি দুঃসাহসী টিনটিন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 200 টি টিউন ও 1531 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 34 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মানুষ হিসেবে তেমন আহামরি কেউ নই আমি। সাটামাটা জীবনটাই বেশী ভালো লাগে। আবার মাঝে মাঝে একটু আউলা হতে মন চায়। ভালো লাগে নিজেকে টিনটিন ভাবতে .... তার মত দুঃসাহসী হতে মন চায় ..... কিন্তু ব্যক্তি জীবনে অনেকটা ভীতুই বটে ..... অনেক কিছুই হাতছাড়া হয়ে গেছে জীবনে এই কারনে ..... আবার...
ভাই ফেসবুকের প্রতি একদম ফেডআপ হয়ে গেছি, আর ভাল লাগে না। তবে আপনার লেখা থেকে অনেকে উপকৃত হবে। বিশেষ করে যারা ফেকবুকে নতুন।
ভাই আমার একজন বন্ধু আছে ফেসবুকে সে সব সময় অনবরত বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে থাকে সে কিছু লিখলে আমি পাই, কিন্তু আমি এটা কি ভাবে করব বিস্তারিত জানাবেন কি…………………….01818086231
দারুন একটি টিউন লেখলেন দাদা। চালিয়ে যান।