আসসালামু আলাইকুম। টেকটিউনস ওয়েবসাইটের নতুন আরো একটি টিউনে আপনাকে স্বাগতম। আমি স্বপন আছি আপনাদের সাথে, আশাকরি সকলেই অনেক অনেক ভালো আছেন। স্বাগতম সবাইকে স্মার্টওয়াচ কী? স্মার্টওয়াচ কেনার সময় যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে নিয়ে নতুন আরো একটি টিউনে। বর্তমানে ডিজিটাল যুগে আমরা সকল মানুষ খুব তাড়াতাড়ি নিজেদেরকে ডিজিটালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা বর্তমান সময়ে এসে কতোটা ডিজিটাল হয়েছি তার সবচেয়ে ভালো একটি উদাহরণ হলো স্মার্টওয়াচ ব্যবহার করা। প্রাচিন কালে মানুষ সূর্য উদয় থেকে শুরু করে সূর্য অস্থ যাওয়া পযন্ত তারা শুধুমাত্র সূর্যকে কেন্দ্র করেই সময় নির্ধারণ করতো। প্রাচিন কালের সময় নির্ধারনের এমন উপায়কে বলা হতো এনালগ পদ্ধতি।
তারপর প্রযুক্তির কিছুটা উন্নয়নের ফলে বানানো হলো ডিজিটাল সময় দেখার মেশিন। যাকে আমরা সবাই ডিজিটাল ঘড়ি বলেই চিনি, যা সময়কে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংখ্যা আকারে আমাদের সামনে উপস্থাপন করে। ডিজিটাল সময় দেখার এই সিস্টেমটি এক সময় অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে যাতে। কারণ ছিলো এই ডিজিটাল ঘড়িকে সহজ ভাবেই বহন করা যেতো তাও আবার হাতে পড়িতে থাকা যেতো। যা সময় দেখাতে এবং নিজের সৌন্দয্য বৃদ্ধিতেও কার্যকর ভূমিকা রাখতো। যার কারণে একটা সময় প্রতিটি ঘর ঘরেই ডিজিটাল ঘড়ি হাত ঘড়ি হিসাবে রাজত্ব পেয়ে গেলো।
ডিজিটাল ঘড়ির উত্থান এখানেই শেষ নয়। প্রযুক্তির আরো বেশি উন্নয়নের ফলে ডিজিটাল ঘড়িকে স্মাট ঘড়িতে রুপান্তর করা হলো। যাকে আমরা সবাই স্মার্টওয়াচ বলে জানি। ডিজিটাল ঘড়িকে স্মার্টওয়াচ রুপান্তর করার কারণে আমরা বেশ কিছু সুবিধা একজায়গায় পেয়ে যাচ্ছি। স্মার্টওয়াচে আপনি একসাথে ঘড়ির সময় দেখতে পারবেন এবং মোবাইলের মতো ব্যবহার করতে পারবেন। সবচেয়ে মজার যে ব্যাপার তা হলো আপনি এই স্মার্টওয়াচকে ঘড়ির মতোই হাতে পড়িয়ে থাকতে পারবেন। যা আপনাকে আরো অনেক বেশি স্মাট করে তুলবে। আজকে আমরা এই স্মার্টওয়াচ নিয়েই ধাপে ধাপে আরো বিস্তারিত জানতে পারবো। তো আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক আমাদের আজকের টিউন - স্মার্টওয়াচ কী? স্মার্টওয়াচ কেনার সময় যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে!
মানুষের মধ্যে স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই তালিকায় স্মার্টওয়াচের নামও রয়েছে, যা তরুণদের মধ্যে অনেক বেশী জনপ্রিয়। আপনিও নিশ্চয়ই কোনো না কোনো সময়ে স্মার্টওয়াচ সম্পর্কে শুনেছেন বা পড়েছেন। স্মার্টওয়াচ হল একটি আধুনিক যুগের ঘড়ি, যা মানুষের প্রতিদিনের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে। আপনারা সবাই বিভিন্ন ধরনের ঘড়ি সম্পর্কে জানেন, যেমন- দেয়াল ঘড়ি, হাত ঘড়ি, অ্যালার্ম ঘড়ি, স্টপওয়াচ ইত্যাদি। কিন্তু এই ঘড়িগুলোকে স্মার্ট বলার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হল এর আকর্ষণীয় সব ফিচার।
স্মার্টওয়াচ হল একটি ডিজিটাল পোর্টেবল ডিভাইস, যা কম্পিউটারের মতোই স্মার্ট এবং হাতে পরার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। আরও সহজভাবে বললে, স্মার্টওয়াচ হল এক ধরনের ডিজিটাল ঘড়ি, যা স্মার্টফোনের মতো কাজ করে। স্মার্টফোনের মতো, প্রয়োজনীয় ফিচার এবং প্রযুক্তি থাকার কারণে এটিকে স্মার্টওয়াচ বলা হয়। এটি আপনার হাতে বাঁধা এক ধরনের ছোট কম্পিউটার। প্রথম দিকের স্মার্টওয়াচ গুলোতে নরমাল গ্লাস থাকত, আর বর্তমানের স্মার্টওয়াচগুলোতে টাচ স্ক্রিন থাকে।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, স্মার্টওয়াচ হল, টাচস্ক্রিন ডিসপ্লে সহ একটি মোবাইল ডিভাইস, যা হাতের কব্জিতে পরার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ব্যবহারকারীর সুবিধার জন্য, এই আধুনিক ডিজিটাল ঘড়ি অর্থাৎ স্মার্টওয়াচে একটি টাচস্ক্রিন ডিসপ্লে থাকে এবং এটি মোবাইল অ্যাপের সাহায্যে সহজেই স্মার্টফোনের সাথে কানেক্ট করা যায়। স্মার্টফোন এবং স্মার্টওয়াচ একে অপরের সাথে সংযোগ স্থাপন করে, ব্যবহারকারীকে বিভিন্ন কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণে সহায়তা করে।
প্রতিটি জিনিস তাদের নিজস্ব মান ও দামের দিক থেকে ভিন্ন হয়ে থাকে। নিম্ন মানের জিনিসের দাম কম হয়ে থাকে অন্যদিকে ভালো মানের জিনিসের দাম তুলনামূলক ভাবেই অনেক বেশি হয়ে থাকে। যার কারণে দাম ও মানের দিক থেকে বিবেচনা করে প্রতিটি জিনিসের প্রকারভেদ চলে আসে। স্মার্টওয়াচের সময়েও ঠিক এমন আপনি যতো দামে স্মার্টওয়াচ কিনবেন ততো ভালো স্মার্টওয়াচ পাবেন এবং সেই সাথে ততো-বেশি ফিচার সম্পুর্ন স্মার্টওয়াচ পাবেন। আর আপনি যতো কম দামে স্মার্টওয়াচ কিনবেন, ততো নিম্ন মানের স্মার্টওয়াচ পাবেন। দাম, মান ও স্মার্টওয়াচের বৈশিষ্ট্য উপর ভিত্তি করে স্মার্টওয়াচ ৫ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
ক্লাসিক স্মার্টওয়াচগুলোর ডিজাইন খুব সাধারণ। এটি দেখতে অনেকটা পুরানো ঘড়ি-গুলির মত, যেখানে শুধুমাত্র কিছু আধুনিক ফিচার যুক্ত করা হয়। এই ধরনের স্মার্টওয়াচ দামে সস্তা এবং সাশ্রয়ী মূল্যের। এই ঘড়িগুলোর ক্ষমতা তুলনামূলক অনেক কম। এই ঘড়িগুলোর দাম তুলনা মূলক কম হওয়ায়, সব ধরনের মানুষই এই ঘড়িগুলো ব্যবহার করতে পারে। এই ঘড়িগুলোর ইউজার ইন্টারফেস খুবই সাধারণ ভাবে তৈরি করা হয়। বর্তমান সময়ে এগুলোর ব্যবহার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
এই ধরনের স্মার্টওয়াচকে স্মার্টফোনের সাথে কানেক্ট করার কোন প্রয়োজন হয় না। কারণ, এই ধরনের স্মার্টওয়াচ নিজেই এর সমস্ত কাজ করতে সক্ষম। এই স্মার্টওয়াচে আপনি, কল বা মেসেজ করার জন্য সিম কার্ড ইউজ করতে পারবেন। অনেক ইনডিপেন্ডেন্ট স্মার্টওয়াচে ফিটনেস ট্র্যাকিং, হার্ট রেট মনিটরিং এবং জিপিএস নেভিগেশনের মতো আধুনিক ফিচার যুক্ত করা হয়। এইগুলোর ব্যবহার পদ্ধতি অনেক সহজ।
আধুনিক বিভিন্ন ফিচার থাকে এবং এটির ডিজাইন অনেক স্টাইলিশ করে তৈরি করা হয়। হাইব্রিড স্মার্টওয়াচে আপনি, ব্লুটুথ কানেকশন ফিচার দেখতে পাবেন। যার সাহায্যে আপনি এটিকে যে কোন ব্লুটুথ ডিভাইস বা ফোনের সাথে সংযুক্ত করতে পারবেন। এটিতে ফিটনেস এক্টিভিটি ট্র্যাক করার বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। অনেক হাইব্রিড স্মার্টওয়াচ, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট সাপোর্ট করে। বর্তমানে এই মডেলের ঘড়ি গুলো খুবই জনপ্রিয়।
এই স্মার্টওয়াচগুলির ডিজাইন খুব স্টাইলিশ এবং আধুনিক বিভিন্ন ফিচার থাকে। আপনি এই স্মার্টওয়াচটিকে আপনার স্মার্ট ফোনের সাথে কানেক্ট করতে পারবেন এবং আপনার স্মার্ট ঘড়ির সাহায্যে ফোনের কল, মেসেজ এবং বিভিন্ন নোটিফিকেশন এর সাথে সাথে ফিটনেস ট্র্যাকিং, হার্টবিট মনিটরিং এবং ব্লাড প্রেশার মেজার-মেন্টের মত ফিচার গুলো উপভোগ করতে পারবেন। এগুলোর সাধারণত একটু দামী হয়ে থাকে।
এই ধরনের স্মার্টওয়াচগুলো, ফিটনেস ট্র্যাকার হিসেবে কাজ করে। এটি আপনার সার্বক্ষণিক গতিবিধি ট্র্যাক করে। এই স্মার্টওয়াচে, আপনি কত ধাপ হাঁটছেন, কত দূরত্ব অতিক্রম করেছেন ইত্যাদি পরিমাপ করার ফিচার দেওয়া হয়েছে। অনেক ফিটনেস স্মার্টওয়াচে সিম কার্ড ব্যবহার করার অপশন দেওয়া হয়। এগুলো ব্যবহার করা একদম সহজ এবং যারা নিয়মিত ব্যায়াম বা জিম করেন তাদের জন্য এটি খুবই উপকারী।
1972 সালে, হ্যামিল্টন ঘড়ি কোম্পানি এবং electro/DATA Inc প্রথম ডিজিটাল ঘড়ি তৈরি করে, যা ছিল একটি LED প্রোটোটাইপ। আর এর নাম দেওয়া হয়েছিল Pulser। এই ঘড়ির ব্যবহারকারীকে সময় দেখার জন্য একটি বোতাম টিপতে হত। 1980 সালে, জাপানি SEIKO কোম্পানি, T001 নামে একটি ঘড়ি তৈরি করে। এই ঘড়ির সাথে DATA 2000, RC1000 এবং সেই সময়ের সবচেয়ে উন্নত ঘড়ি RC-20 যার 8 বিট, Z 80 মাইক্রোপ্রসেসর এবং 2KB RAM এবং 8KB মেমোরি ছিল।
2001 সালে আইবিএম কোম্পানি, ওয়াচ প্যাড 1.5 তৈরি করেছিল। যাতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ছিল এবং এটি লিনাক্স 2.2 অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে কাজ করত। এছাড়াও এই ঘড়িতে ব্লুটুথ, 8 মেগাবাইট র্যাম এবং 16 মেগাবাইট ফ্ল্যাশ মেমরি ছিল। এই ঘড়িটি সেই সময়ের সবচেয়ে আধুনিক ঘড়ি ছিল। আর এভাবেই, স্মার্টওয়াচ প্রতিনিয়ত বিকশিত হতে হতে বর্তমান পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে।
স্মার্টফোনের পর স্মার্টওয়াচ, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক কাজকে সহজ করে দিয়েছে। প্রযুক্তির যুগে এটি আমুল পরিবর্তন এনেছে, যেখানে হাতে বাধা একটি ঘরির সাহায্যে, মানুষের সাথে কথা বলা, মেসেজিং, ফাইল শেয়ারিং, প্রতিদিনের বিভিন্ন অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাক করা, ই-মেইল করা ইত্যাদি সম্ভব হয়েছে। প্রত্যেকটি স্মার্টওয়াচে কিছু কমন ফিচার এবং কিছু ইউনিক ফিচার বা বৈশিষ্ট্য থাকে। স্মার্ট ওয়াচের কিছু বিশেষ এবং কমন বৈশিষ্ট্য নিচে দেওয়া হল –
ঘড়ি যতই স্মার্ট হোক না কেন, এটির প্রথম এবং প্রধান কাজ হল সময় দেখানো। যাইহোক, একটি ঘড়িতে যদি সময় দেখা না যায়, তাহলে সেটিকে ঘড়ি বলা যাবে না। তাই স্মার্ট ওয়াচের প্রধান ফিচার হল সময় দেখানো।
কিছু কিছু স্মার্টওয়াচে জিপিএস ফিচার দেওয়া হয়। এর সাহায্যে আপনি আপনার বর্তমান অবস্থান জানতে পারবেন। এছাড়াও যে কোনও জায়গা খুঁজে বের করতে পারবেন এবং সেখানে সহজে পৌঁছানোর দিকনির্দেশনা পাবেন।
নতুন প্রজন্মের স্মার্টওয়াচগুলোর ব্যাটারির ব্যাকআপ অনেক ভালো। কিছু কিছু স্মার্টওয়াচে একবার চার্জ দিলে তা ১০ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। (সাধারণ ভাবে ব্যবহার করলে)।
বর্তমান সময়ের স্মার্টওয়াচে ব্লুটুথ ফিচার ও রয়েছে। যার সাহায্যে ফাইল শেয়ার করা যায়, ব্লুটুথ হেডফোন এর সাথে কানেক্ট করা সহ স্মার্টফোনের সাথেও কানেক্ট করা যায়। ব্লুটুথ এর সাহায্যে ফাইল ট্রান্সফারও করা যায়।
কিছু কিছু স্মার্টওয়াচে বিভিন্ন ধরনের ফিটনেস ফিচার থাকে। এটিকে সাধারনত স্পোর্টস মোড বলা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, ট্রেডমিল, আউটডোর রানিং, সুইমিং, অন ফুট, ওয়াকিং ইত্যাদি।
এছাড়াও আপনি, স্মার্টওয়াচে ভয়েস রেকর্ডের ফিচার পাবেন, যার সাহায্যে আপনি ভয়েস রেকর্ড করতে পারবেন। যখন আপনাকে দ্রুত কোন কিছু রেকর্ড করতে হবে এবং পকেট থেকে ফোন বের করার মতো সময় নেই, তখন এই ফিচারটি খুব কাজে লাগে।
পানিতে ভিজলেও কোন সমস্যা হয় না এবং পানির নিচেও সহজেই ব্যবহার করা যায়।
স্মার্টওয়াচ আপনার ব্যক্তিগত সহকারীর মত কাজ করে। আপনি স্মার্টওয়াচে যে কোন কিছুর রিমাইন্ডার সেট করতে পারবেন। তারপর এটি আপনাকে কিছু সময় পর পর আপনার কাজের কথা মনে করিয়ে দেবে।
স্মার্টওয়াচের অনেক ধরনের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেগুলো দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন, যেমন- ব্যায়ামের সময়, অফিসে, গাড়ি বা বাইক চালানোর সময়। এছাড়া আরো অনেক ধরনের ফিচারে ভরপুর থাকে বর্তমানে উন্নত মানের এই স্মার্টওয়াচগুলো। তবে আমি আমার পার্সোনাল অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি একটি উন্নত মানের স্মার্টওয়াচের মাঝে যা যা বৈশিষ্ট্য অথবা ফিচার থাকে তা একজন সাধারন মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সকল ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন।
বর্তমান সময়ের প্রায় সব স্মার্টওয়াচগুলিতে আপনি একটি টাচ স্ক্রিন পাবেন, যার সাহায্যে আপনি স্মার্টওয়াচকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। যেকোনো স্মার্টওয়াচকে সঠিকভাবে ইউজ করার জন্য, প্রথমে এটিকে আপনার স্মার্টফোনের সাথে কানেক্ট করতে হবে। স্মার্টফোনের সাথে সংযুক্ত করার জন্য, প্রয়োজনীয় অ্যাপসটি গুগল প্লে-স্টোর থেকে ডাউনলোড করে ইনস্টল করে নিতে হবে। আপনার স্মার্ট ওয়াচের জন্য কোন অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে, সেই তথ্য আপনি ইউজার ম্যানুয়াল থেকে সহজেই জানতে পারবেন।
আপনি যদি স্মার্টওয়াচ অপারেট করতে না জানেন বা স্মার্টওয়াচ অপারেট করতে কোন সমস্যা হয়, তাহলে ইউটিউবে আপনার স্মার্টওয়াচের ব্র্যান্ডের নাম লিখে সার্চ করুন। তাহলে আপনি সেই স্মার্টওয়াচ রিলেটেড ভিডিও পাবেন। এই ভিডিও গুলো দেখে আপনি সহজেই আপনার স্মার্টওয়াচ অপারেট করতে পারবেন। স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করা কোন কঠিন বিষয় না। বর্তমান সময়ে সব ধরনের মানুষই স্মার্টফোন ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছে। স্মার্টওয়াচগুলিতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করা হচ্ছে, যার ফলে এর কার্যকারিতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ব্র্যান্ডের স্মার্টওয়াচ গুলোর দাম বেশী হওয়ার কারণে, আমরা অনেকেই লোকাল স্মার্টওয়াচ কিনে থাকি। কিন্তু এই স্মার্টওয়াচ গুলোর ফিচার অনেক কম থাকে। আবার ফিচার থাকলেও সেগুলোর একিউরেসি ঠিক থাকে না। এমন পরিস্থিতিতে, একটু বেশী দাম দিয়ে হলেও, আপনাদের একটি ভালো ব্র্যান্ডের প্রিমিয়াম স্মার্টওয়াচ কেনা উচিত। এতে আপনার ব্যবহার করা স্মার্টওয়াচটি অনেক বেশি টেকসই এবং দীর্ঘমেয়াদি হবে। সাধারণত বাজারে আমরা যে স্মার্টওয়াচগুলো দেখে থাকি তা হলোঃ
কিন্তু কেনার পর আমরা আমাদের ভুলটা বুঝতে পারি। তাই স্মার্টওয়াচ কেনার আগে কিছু বিষয় আপনাদের মাথায় রাখতে হবে, যেমন – স্মার্টওয়াচটি কোন কোম্পানির, ব্যাটারি ব্যাকআপ কেমন, স্মার্টওয়াচে কী কী ফিচার রয়েছে, স্মার্টওয়াচটি ওয়াটারপ্রুফ কি না ইত্যাদি। যে কোন স্মার্টওয়াচ কেনার আগে, সেই স্মার্টওয়াচ সম্পর্কে ইন্টারনেটে সার্চ করুন এবং তথ্য নিন। তাহলে আপনি একটি ভালো মানের স্মার্ট ওয়াচ কিনতে পারবেন।
স্মার্টওয়াচ একটি খুব দরকারী গ্যাজেট, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে। স্মার্টওয়াচে ফিটনেস ট্র্যাকিং, ব্লাড প্রেশার চেক এবং হার্ট রেট পর্যবেক্ষণের মত বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যার দ্বারা আপনি আপনার স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি একটি রিমাইন্ডার সেট করতে পারেন যে -আপনাকে ঠিক রাত ১০ টার সময় ওষুধ খেতে হবে। আপনার সেট করার সময়ে আপনাকে সতর্ক বার্তা দিয়ে জানিয়ে দেবে। স্মার্টওয়াচগুলোর মূলত এই কাজগুলোর জন্য অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
আপনি আপনার স্মার্টওয়াচ থেকে আপনার ফোনে বাজানো গান নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, অর্থাৎ গান চেঞ্জ, গানের ভলিউম বাড়ানো কমানো ইত্যাদি করতে পারবেন। এগুলো হল স্মার্টওয়াচের কিছু সুবিধা। আপনি যখন একটি স্মার্টওয়াচ ব্যবহার করবেন, তখন আপনার অবশ্যই এর উপযোগিতা সম্পর্কে জ্ঞান থাকা জরুরী। আপনি যদি ইতিমধ্যেই একটি স্মার্টওয়াচ ইউজ করে থাকেন, তাহলে টিউমেন্ট আপনার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানান। আপনি যদি স্মার্টওয়াচ সম্পর্কে আগে থেকে অনেক ভালোভাবে বিস্তারিত জেনে নেন তাহলে এর ব্যবহারবিধি আপনার কাছে অনেক বেশি সহজ হয়ে যাবে।
বর্তমানে বাজারে অনেক ধরনের স্মার্টওয়াচ রয়েছে এবং সেগুলির বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এমন অবস্থায়, ভালো স্মার্টওয়াচ বেছে নেওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। আপনার এই সমস্যা দূর করতে, স্মার্টওয়াচ কেনার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরী, যা আপনাদের সঠিক স্মার্টওয়াচ বেছে নিতে সহায়তা করবে। স্মার্টওয়াচের ক্ষেত্রে ব্যাটারি লাইফ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেক স্মার্টওয়াচ ১০ থেকে ২০ দিন ব্যাটারি লাইফ অফার করে এবং কিছু কিছু স্মার্টওয়াচ ১ বা ২ দিন পরেই চার্জ করতে হয়। তাই স্মার্টওয়াচ কেনার আগে, সেই স্মার্ট ওয়াচের ব্যাটারী ব্যাকআপ কতটুকু তা জেনে নিন।
সব স্মার্টওয়াচের বিভিন্ন ধরনের ফিচার রয়েছে। আপনি যখন একটি স্মার্টওয়াচ কিনবেন, তখন আপনাকে অবশ্যই দেখে নিতে হবে যে, সেই স্মার্টওয়াচে কি কি ফিচার রয়েছে। সেই সাথে এই ফিচার গুলো কতটুকু নির্ভুল রেজাল্ট দিচ্ছে। আপনি যদি আপনার স্মার্টওয়াচটি পড়ে বৃষ্টিতে ভিজতে চান বা সাঁতার কাটতে চান, তাহলে আপনার স্মার্ট ঘড়িটি ওয়াটার প্রুফ হওয়া জরুরী। এমন অবস্থায় স্মার্টওয়াচ কেনার আগে জেনে নিন, ঘড়ি টি ওয়াটারপ্রুফ কি না।
আপনি যে স্মার্টওয়াচটি কিনতে চাচ্ছেন, তা আপনার স্মার্টফোনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা চেক করে নিন। যদি আপনার স্মার্টফোন বা স্মার্টওয়াচ একে অপরকে সাপোর্ট না করে, তাহলে আপনি আপনার স্মার্টওয়াচটি সঠিকভাবে ইউজ করতে পারবেন না। তাই একটি স্মার্টওয়াচ কেনার আগে, সবকিছু ভালোভাবে চেক করে নিন। তবে বর্তমানের স্মার্টওয়াচগুলো প্রায় সব ধরনের স্মার্টফোনেই সাপোর্ট করে।
উন্নত ফিচার থাকার পাশাপাশি, আপনার স্মার্টওয়াচের ডিজাইন এবং লুক ভালো হওয়া প্রয়োজন। তবে এই বিষয়টি সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করে। কারণ, আপনি কোন রঙ এবং ডিজাইনের স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করবেন সেটা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করে। স্মার্টওয়াচের ক্ষেত্রে ডিসপ্লে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্মার্ট ওয়াচ এর ডিসপ্লের উপরে অনেক কিছু নির্ভর করে, যেমন- টাচ রেসপন্স, ব্রাইটনেস ইত্যাদি। বর্তমানে সময়ে অ্যামুলেড ডিসপ্লে সহ স্মার্টওয়াচ বেশী জনপ্রিয়, ব্যবহারকারীদের কাছে।
স্মার্টওয়াচ ভবিষ্যতে আপনার দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ হয়ে উঠতে চলেছে। স্মার্টওয়াচ হল বর্তমান সময়ের একটি প্রয়োজনীয় গ্যাজেট, যা আপনার দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী হতে পারে। স্মার্টওয়াচের সাহায্যে আপনি আপনার ফোনে যে কাজগুলি করেন, তার অনেক কিছুই করতে পারবেন ৷ আমরা আশা করছি, আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা, স্মার্টওয়াচ কী তা বুঝতে পেরেছেন। এছাড়াও আমরা, স্মার্টওয়াচের বৈশিষ্ট্য এবং স্মার্টওয়াচ কেনার আগে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখা দরকার সে বিষয়ে জানানোর চেষ্টা করেছি।
আজকের টিউনে আলোচনা করা স্মার্টওয়াচ সম্পর্কে বিস্তারিত নানা রকম তথ্য আশাকরি আপনাদের জন্য অনেক হেল্পফুল হবে। কারণ বর্তমান সময়ে আমরা যারা স্মার্টওয়াচ কিনতে চাই অথবা কিনেছি তারা অনেকেই জানিনা আসলে স্মার্টওয়াচ কীভাবে ব্যবহার করবেন অথবা কেনো ব্যবহার করবেন? স্মার্টওয়াচ অনেক টাকা খরচ করে কেনার পর এ থেকে আপনার কি উপকার হবে এই প্রশ্নটি শুধু আপনার মনে ঘুরতে থাকে। আপনার মনেও যদি আমার মত এ ধরনের কোন প্রশ্ন উঠে থাকে তাহলে আশাকরি আজকের স্মার্টওয়াচ নিয়ে পোস্টটি আপনার সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে।
এছাড়াও আপনি যদি স্মার্টওয়াচ নিয়ে আরো নানা ধরনের প্রশ্ন জানতে চান, অথবা আপনার মনের মধ্যে আছে এমন প্রশ্ন যা আজকে টিউনে আলোচনা করা হয়নি তাহলে আপনার সেই প্রশ্নটি অবশ্যই টিউমেন্ট বক্সে টিউমেন্ট করে জানিয়ে যাবেন। পরবর্তী টিউন আপনার সেই প্রশ্নের উত্তর ভিত্তি করেই হবে। এছাড়াও আজকের টিউন নিয়ে আপনার মনে যদি কোন মন্তব্য থেকে আগে তাহলে অবশ্যই তা টিউমেন্ট করে জানাবেন। আপনার করা মন্তব্যটি গঠনমূলক হলে তা অবশ্যই আমি আমার টিউনে যুক্ত করে নেব।
তো বন্ধুরা, এই ছিল আমাদের আজকের টিউন, স্মার্টওয়াচ কি? স্মার্টওয়াচ কেনার সময় যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে! আশাকরি টিউন টি আপনাদের একটু হলেও হেল্পফুল হবে। আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি, দেখা হবে পরবর্তী টিউনে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ অবধি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং টেকটিউনস এর সাথেই থাকবেন।
আমি স্বপন মিয়া। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 107 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
টেকনোলজি বিষয়ে জানতে শিখতে ও যেটুকু পারি তা অন্যর মাঝে তুলে ধরতে অনেক ভালো লাগে। এই ভালো লাগা থেকেই আমি নিয়মিত রাইটিং করি। আশা করি নতুন অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারবেন।