হ্যালো টেকটিউনস কমিউনিটির সদস্যরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালোই আছেন, সুস্থ আছেন। বরাবরের মতোই আজও নিয়ে এসেছি একটা টিউন। থাম্বনেইল দেখে আপনারা হয়তো নিশ্চয় বুঝতে পারছেন যে এটা একটা রিভিউ টিউন। এটি একটি মোটামুটি বাজেটের বেস্ট ফোন নিয়ে তৈরি করা একটি টিউন। ফোনটি আপনাদের কাছে ভালো লাগতে পারে। হতে পারে আপনি বাজারে গিয়ে এই ফোনটিই কিনে ফেললেন। তাই কথা না বাড়িয়ে আপনাদের বলেই ফেলি কি ফোন নিয়ে টিউনটি লিখেছি। Xiaomi এর ফোন Redmi note 10 সম্পর্কে আপনারা জানতে চলেছেন। কিছুক্ষন সময় দিয়ে জেনে নিন ফোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত কি না?
Xiaomi এর Redmi সিরিজের ফোনগুলো বাজারে কতটা আলোরন সৃষ্টি করেছে তা আপনারা নিশ্চয় জানেন। তার চেয়ে বেশি সারা ফেলেছে Redmi note সিরিজের ফোনগুলো। আমাদের দেশে সর্বশেষ যে ফোনটি এসেছে Redmi note সিরিজের তা হলো Redmi note 10। এটি চমৎকার সুন্দর একটা স্মার্টফোন। আমার কাছে তো ভালোই লেগেছে।
আপনাদের কি Redmi note 7 এর কথা মাথায় আছে? বাজারে এটির অভাব দেখা দিয়েছিলো। তাহলে ভাবুন কতটা জনপ্রিয় ছিলো বা চাহিদা ছিলো ফোনটির। আমি আমার বন্ধুর জন্য শহরে গিয়েছিলাম Redmi note 7 কিনতে। আমাদের ৭ দিনের মধ্যে ফোনটি এনে দেবে এ কথা বলেছিলো। কিন্তু ৭ দিন পরে ফোনটির লাল কালারেরটা নিয়ে এসেছিলো তাই নেয়া হয় নাই। পরে Redmi note 8 lite কিনে নিয়ে এসেছিলাম। হয়তো বিভিন্ন ইউটিউবারের ভিডিও তে এই ফোন গুলো সম্পর্কে জেনেছেন। তারপর Redmi note 8 ও Redmi note 9 ও বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। আর এখন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে Redmi note 10 ফোনটি। কেন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তা জেনে নেওয়া যাক।
বাংলাদেশের মার্কেটে 2021 সালের 16 ই মার্চ প্রথম রিলিজ হয় এই ফোনটি। তাই আপনাদের জন্য নিয়ে আসলাম এই টিউন। যারা ফোনটি কিনেছেন তারাও টিউনটি দেখতে পারেন যেন যাচাই করতে পারেন কেমন ফোন কিনলেন। কিন্তু যারা আসলে নতুন ফোন কিনতে চাচ্ছেন তাদের সহায়তা করতে আজকের এ টিউনের প্রকাশ। নিচের ভিডিওটা টা দেখলে স্পষ্ট ধারণা হবে ফোনটি সম্পর্কে।
Video Source mi officials website
নিত্যান্তই ভালো ফোন বলেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে বা মার্কেটে এসে সহজেই সারা ফেলেছে। এইটা মার্কেটের পূর্ববর্তী ফোনগুলোর মতোই বেশ উন্নত করে তৈরি করা একটি ফোন। আজেবাজে কথা আর না বলে বিস্তারিত জানতে চলুন মুল টিউনে চলে যাই। আজকে এই টিউনের মাধ্যমে আপনাকে ফোনটি সম্পর্কে পুরোপুরি একটি ধারনা দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
Xiaomi এর ফোন গুলো মার্কেটে নিত্যান্তই ভালো বলে তারা আরো ভালো ফোন আমাদের দেবার চেষ্টায় রয়েছ। ফোনটির দাম নিয়ে কথা বলতে চাইলে এটা একটা মধ্যম বাজেটের ফোন। এরকম একটা ফোনের এ প্রাইজ জনগনের মানতে কষ্ট হবে না। পূর্ববর্তী ফোন গুলোর চাইতেও উন্নত একটি ফোন। দেখতে ভয়ানক রকমের সুন্দর আর সেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এর চিপসেট। আর কিছু চাই আপনার? আমার মনে হয় না। চলুন প্রথমেই জেনে নিই এই ফোনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে।
আর এসব বিষয় এই ফোনটিকে কিলার বানিয়েছে।
Redmi note 10 এর বাজারে আসার পর চমৎকার এক উত্তেজনা যে এই ফোনটা কিনবো নাকি। ফোনটি হাতে নেবার পর ব্যবহারকারী বেশ খুশি হবে। কারণ এই ফোনটিতে কোন কিছু ঘাটতি নেই বললেই চলে এবং বেশ কিছু কিলার ফিচারস রয়েছে। এই ফোনটিতে ব্যবহার করেছে ভালো মানের একটি প্রসেসর যার নাম Snapdragon qualcomm 678 যা সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রসেসর। এই প্রসেসর এর পারফরম্যান্স নিয়ে ভালো আশা রাখছে ব্যবহারকারীরা। রেগুলার ইউজারস দের জন্য মোটামুটি ভালো মানের ফোন হতে পারে এই ফোনটি।
সহজ কথায় বলতে গেলে এর সুবিধা অসুবিধা অনুযায়ী এর দাম কিছুটা বেশি নিচ্ছে বলে মনে হয়। যদিও এই ফোনটা ইন্ডিয়াতে কম দামে লঞ্চ হয়েছে। আশাকরি যে ইন্ডিয়ান ভার্সন টা যদি বাংলাদেশের চলে আসে তাহলে এর দামটা কিছুটা ড্রপ করবে।
ফোনটি আমি কিছুক্ষণ চলানোর পর যদিও মেজর কোন প্রবলেম পাইনি তারপরেও কিছু সমস্যা তো পেয়েছি। হাই গেমিং এর ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স স্মুথ চলছিল না এমনটা লাগছিল। কিছু কিছু সময় অ্যাপ ক্লোজিং এর ক্ষেত্রে ল্যাক এর দেখা পেয়েছি। ক্যামেরায় ছবি তোলার ক্ষেত্রে ফোকাস জনিত কিছুটা সমস্যা পাচ্ছিলাম রাতের বেলায়। আশাকরি এই সমস্যাগুলো পরবর্তী আপডেটের মাধ্যমে ঠিক করা হবে। পিছনে টপ লেফট কর্ণারে Quad Ultra Premium ক্যামেরার অবস্থান এবং পাশেই একটি ফ্লাশ লাইট এর অবস্থান। যা নিঃসন্দেহে সবার কাছে ভালো লাগবে।
আপডেট অপারেটিং সিস্টেম (Andoroid 11) ব্যবহার করা হয়েছে ফোনটিতে। ফোনটিতে Android 11 ভার্সনের MIUI 12 ব্যবহার করা হয়েছে। তাই বলা যায় Redmi এর একটা ফোন মানে বাজারে নতুন আকর্ষণীয় কোনো এক ফোন। যা বাজারে নিমিষেই জনপ্রিয়তা সৃষ্টি করতে পারে।
এই ফোনটির সাথে থাকছে বড় মাপের একটি সুপার অ্যামোলড ডিসপ্লে এবং ডিসপ্লে এর সাথে থাকছে একটা কর্নিং গরিলা গ্লাস। তবে এটা কি ধরনের গরিলা গ্লাস সে সম্পর্কে কোন ইনফরমেশন পাওয়া যায়নি। তবে Redmi এর পূর্ববর্তী ফোন Redmi note 9 এ যেহেতু কর্নিং গরিলা গ্লাস 5 ব্যবহার করেছে। তাই বলা যায় যে এটাতে তার চেয়ে খারাপ কোন গরিলা গ্লাসের ব্যবহার অন্তত করবে না। তবে কিছু কিছু ওয়েব সাইটে কর্নিং গরিলা গ্লাস 3 এর ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।
এখানে একটি বলার বিষয় এই বাজেটের মধ্যে কর্নিং গোরিলা গ্লাস সহ এতো বড় মাপের সুপার অ্যামোলেড এবং সেই সাথে HD+ ডিসপ্লে আর কোন ফোনে আপনারা পাবেন না। দুটি নেনো সিম ব্যবহার করতে পারবেন এবং একটি মাইক্রো এসডিকার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। ফোনটিতে আমি নেটওয়ার্ক জনিত কোন দুর্বলতা বা কথা আদান-প্রদানে কোন সমস্যা খুঁজে পাইনি।
Redmi note 10 এমন একটি ফোন যা Punch-hole স্টাইলে তৈরি করা হয়েছে। আপনি যদি এই ফোন হাতে নিয়ে দেখেন তাহলে আপনিও নিঃসন্দেহে এটাকে একটা চমৎকার ফোন হিসেবে স্বীকার করবে। যদি বলেন এই ফোনটা দেখতে কেমন? তাহলে আমি বলব এই ফোনটা দেখতে Gorgeous। Redmi note 10 এর এই ডিজাইনটি পুর্বের Redmi Mi মোবাইলের সাথে কিছুটা তুলনা করা যায়। হয়তো Mi সিরিজের এই ফোনগুলোর নকল স্টাইল এটা।
এর তিনটি কালার বাংলাদেশের বাজারে লঞ্চ করা হয়েছে। এগুলো হলো Shadow Black (Onyx Gray), Frost White (Pebble White), Aqua Green (Lake Green)। এগুলোর বিভিন্ন কালারের ফোনের মধ্যে আমি নিয়েছি Frost White (Pebble White)। Shadow Black (Onyx Gray) এই কালারের ফোনটাও অনেক সুন্দর। সবগুলো কালারের ফোনের একটা ছবি নিচে দেওয়া হলো।
তবে বর্তমান এ যুগে সবাই চায় যে আমার ফোনটা সবার ফোন থেকে আলাদা বা উন্নত স্টাইলের হোক। আর সেই কথাটাই চিন্তা করে হয়তো Redmi এই ফোনটা বাজারে নিয়ে এসেছে। তবে যাই হোক ফোনটা সত্যিই চমৎকার। ফোনটির পিছনে থাকছে প্লাস্টিকের বডি যা খুবই মসৃণ। তবে প্লাস্টিকের বডি হওয়ার কারণে এতে ক্রাচ পরতে পারে। তাই পরামর্শ হচ্ছে আপনারা সব সময় কভারটি ব্যবহার করবেন। সামনে কর্নিং গরিলা গ্লাস সহ সুপার অ্যামোলেট এর HD + ডিসপ্লে।
ফোনটি নিচের অংশে প্রাইমারি স্পিকার অবস্থিত। ফোনটিতে দেয়া হয়েছে টাইপ সি পোর্ট। বর্তমানে ফোনগুলোতে টাইপ সি পোর্ট একটি ইম্পরট্যান্ট বিষয়। কারণ আমরা জানি যে মাইক্রো ইউএসবি পোর্ট এর একটি সমস্যা আছে। আর তা হলো এটা খুব সাবধানতা পূর্বক একপাশ দিয়ে চার্জ দেওয়া যায়। কিন্তু টাইপ সি পোর্ট এর সুবিধা হচ্ছে এটা দুই দিকের যেকোনো একদিকে ঢুকিয়ে দিলেই চার্জ হয়। অর্থাৎ এক্ষেত্রে ফোনকে চার্জ দেওয়ার জন্য টাইপ সি পোর্ট এর উল্টা ব্যবহারের প্রশ্নই আসে না। ফোনটিতে 3.5 nm এর ইয়ারফোন জ্যাক ব্যবহার করা হয়েছে।
এই ফোনটির উপরের অংশে আরো একটি মজার বিষয় রয়েছে। সেটা হচ্ছে যেমনটা আমরা জেনে থাকি যে রেডমি এর ফোনগুলোতে সাধারণত আই আর ব্লাস্টার থাকে অর্থাৎ টিভিকে কনট্রোল করার জন্য যে আই আর ব্লাস্টার ব্যবহার হয়। আর সেই সাথে উপরের দিকে আরেকটি স্পিকার রয়েছে যা সেকেন্ডারি স্পিকার হিসেবে পরিচিত।
ফোনটির ডান পাশে প্রথমে ভলিউম বাটন এবং একটু নিচে পাওয়ার বাটন দেওয়া হয়েছে। পাওয়ার বাটন টি তে রয়েছে সিকিউরিটি সিস্টেমের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর। যা নিঃসন্দেহে একটি উন্নত বৈশিষ্ট। পাওয়ার বাটনের উপরে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এর কারনে আমাদেরকে আলাদা করে কোন জায়গায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর টি বসাতে হয় নি বা মোবাইল ফোনকে আনলক করতে আলাদা জায়গায় ট্যাপ করতে হয় না। আসলে এটি একটি মোবাইল ফোনের কিলার সিস্টেম। ফোনটির ফিঙ্গার প্রিন্ট সেন্সর এর কথা বলতে গেলে এটা বলা যায় যে, এটি সঠিক স্থানে আছে এবং ফোনকে সহজেই আনলক করা যায়।
ফোনটির বাম পাশে রয়েছে দুটি ন্যানো সিম ব্যবহারের ব্যবস্থা এবং সেইসাথে একটি মাইক্রো এসডি কার্ড স্লট। যা নিঃসন্দেহে প্রতিটি ফোনের জন্যই জরুরী। সাধারণত ফোনের বাম পাশে এই স্লট থেকে থাকে।
প্লাস্টিক বডি টাইপের ফোন হলেও ফোনটি দেখতে অসম্ভব সুন্দর। ফোনটির বাহ্যিক সকল উপকরণ যেমন- ক্যামেরা, পাওয়ার বাটন, সিম স্লট, প্রাইমারি স্পিকার, সেকেন্ডারি স্পিকার, আই আর ব্লাস্টার ইত্যাদি সবকিছুর সাজানো গোছানো রুপ ফোনটিকে সত্যিই ইউনিক বানিয়েছে।
একটা ফোনের জন্য কানেকটিভিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অপশন। এই ফোনটিতে নেটওয়ার্কের জেনারেশন হিসেবে রয়েছে 2G, 3G এবং 4G।
দুটি ন্যানো সিম কার্ড ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে সেই সাথে একটি মাইক্রো এসডি কার্ড স্লট। সেই সাথে ওয়াইফাই-হটস্পট ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। ডিভাইসটিতে 5.2 ভার্সনের ব্লুটুথ সংযোগ আছে। ডিভাইসটিতে জিপিএস এর সংযুক্তি রয়েছে। এছাড়াও ডিভাইসটিতে রয়েছে এফএম রেডিও যা বর্তমান অনেক ফোনেই কেন জানি দেওয়া হচ্ছে না। ডিভাইসটিতে রয়েছে 2.0 ভার্সনের ইউএসবি টাইপ সি। ডিভাইসটিতে রয়েছে OTG বা On the go। এই ফোনটির আরেকটি সুবিধা হচ্ছে ডিভাইসটিতে ইনফ্রারেড এর ব্যবহার ও করা যাবে। বন্ধুরা এই ছিল এই ফোনটির কানেক্টিভিটি সংক্রান্ত কিছু তথ্য।
Redmi note 10 এর ডিসপ্লে সম্পর্কে অনেক কথা বলার আছে। Redmi note সিরিজের কোন ফোনেই এরকম ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়নি। এই ফোনটি ব্যবহার করা 6.43 inches ডিসপ্লে যা Full HD+ 1080x2400 pixels (409 ppi) রেজুলেশনের, সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে যা মাল্টিটাচ এবং প্রটেকশন হিসেবে আছে কর্নিং গরিলা গ্লাস 3।
আকার হিসেবে ডিসপ্লে অনেক বড় যা
6.43 ইঞ্চির। উচ্চ রেজুলেশন যা মোটামুটি ভালো অর্থাৎ 1080×2400 pixles এবং ইহা 409 ppi।
এই ফোনটির সাথে যে কর্নিং গরিলা গ্লাস দিয়েছে তা Corning gorilla glass 3 যা আপনার ডিসপ্লের নিরাপত্তা অনেকটা নিশ্চিত করে।
এই ডিসপ্লে এর সাহায্যে আপনি সকল দৃশ্য চমৎকার সুন্দর ভাবে দেখতে পাবেন। সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে এর দৃশ্যের ধরন সকল ডিসপ্লের দৃশ্যের চেয়ে ভালো। এই ডিসপ্লে তে আপনি পিওর ব্ল্যাক কালার দেখতে পাবেন। যা সাধারণত অন্য কোন ডিসপ্লে তে দেখতে পাওয়া যায় না। যদিও সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে এর সবকিছু কিছুটা ব্রাইট দেখায় তারপরেও সাধারণ লোক সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে পছন্দ করে। তবে Redmi note 10 এর সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে টা বেশ প্রকৃত কালার দেখায়। আর এই ডিসপ্লে রাত্রেবেলা ব্যবহার করলেও চোখের ক্ষতি হবে না।
ফোনটির ক্যামেরা ডিজাইন নিয়ে যদি বলি তাহলে বলতে হবে ক্যামেরা সেটআপ খুব চমৎকার। ফোনটির পিছন থেকে Top-Left কর্নারে Quad 48+8+2+2 Megapixels ক্যামেরার সেটাপ রয়েছে। ফিচার হিসেবে রয়েছে PDAF, LED flash, HDR, 180° ultrawide, depth, macro & more। মানে আপনি বেশ কয়টি মুড এ ছবি তুলতে পারবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। ক্যামেরা দারা ভিডিও রেকর্ডিং করতে পারবেন @1080 রেজুলেশন নিয়ে 30/60 fps সহকারে। এছাড়া @4K রেজুলেশন নিয়ে 30 fps সহকারে ভিডিও রেকর্ডিং করতে পারবেন। অর্থাৎ ভিডিও রেকর্ডিং হবে Ultra HD 2160p রেজুলেশনে।
Redmi note 10 ফোনটি দিয়ে বেশ কয়টি ছবি তুলেছি আপনারা দেখে নিন।
ডে-লাইটে প্রো মুড এ তোলা ছবি-
Photo মুড এ তোলা ছবি-
Portrait মুড এ তোলা ছবি-
রাত্রি বেলা ফ্লাস দিয়ে তোলা ছবি-
Low light এ Night মুড দিয়ে তোলা ছবি-
হালকা আলোয় night মুড দিয়ে তোলা ছবি-
দিনের আলোর ছবি তোলার ক্ষেত্রে Redmi note 10 বেশ ভালো ছবি দিচ্ছে। এতে ছবি গুলো সুন্দর ভাবে প্রকৃত ছবি দিচ্ছে যা অনেকের কাছে ভালো লাগতেও পারে আবার অনেক এর কাছে নাও লাগতে পারে। রাতে ফ্লাস দিয়ে তোলা ছবি মোটামুটি ভালোই। তবে একেবারেই যে ভালো তাও না।
তবে নাইট ভিশন এর ছবি লো-লাইটে খুব একটা ভালো তাও না। কারণ আমি একটা ছবি তুলেছি যাতে কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না ঠিকমতো। তবে হালকা আলোয় বেশ ভালো কাজ করছিলো।
Redmi note 10 এর সামনে ছোট্ট গোলাকার আকৃতিতে একটি 13 মেগাপিক্সেল এর ক্যামেরা অবস্থিত। ক্যামেরাটা সত্যিই যথাযথ স্থানে অবস্থিত।
কারণ সব ফোনে একই রকমই ডিসপ্লে ব্যবহার করা হচ্ছে বর্তমান কালে। ফিচার হিসেবে রয়েছে F/2.5, HDR, 1/3.06″, 1.12µm & more ইত্যাদি। ফোনটির ফ্রন্ট ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও রেকর্ডিং করা যাচ্ছে @1080 রেজুলেশন এ 30 fps সহকারে। Redmi note 10 এর ক্যামেরা নিয়ে আমার কোন আপত্তি নেই। কারণ বেশ ভালো মানের ক্যামেরা তারা পিছনে এবং সামনে ফিট করেছে।
দিনের বেলা photo মুড এ তোলা সেলফি-
দিনের বেলা pro মুড এ তোলা সেলফি-
রাতে ডিসপ্লে ফ্লাস এ pro মুড এ তোলা সেলফি-
রাতে ডিসপ্লে ফ্লাস এ photo মুড এ তোলা সেলফি-
Redmi note10 এর ফ্রন্ট ক্যামেরাটি 13 মেগাপিক্সেল এবং এটা দিনের বেলা যথেষ্ট ভালো সেলফি দেয় বলে আমি মনে করি। রাতের বেলা ডিসপ্লে ফ্লাস এ বেশ ভালো সেলফি পাওয়া যাচ্ছিল। তবে পিছনে বা সামনের ক্যামেরা যেটার কথাই বলুন না কেন Pro এবং Photo মুডে ছবির কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। pro মুড এর ছবিগুলো বেশ বাস্তববাদী মনে হচ্ছে। আর ফটো মোডে তোলা ছবিগুলো বেশ স্মুথ মনে হচ্ছিল।
Redmi note 10 এর ক্যামেরা নিয়ে আমার কোন সমস্যা নেই। যদিও এই ফোনটার রাতের বেলা ফোকাস জনিত কিছুটা সমস্যা দেখাচ্ছিলো। আশাকরি পরবর্তী সফটওয়্যার আপডেট এই সমস্যাটার সমাধান। আপনারা যদি এই ফোনটি কিনেন তাহলে এই ফোনের ক্যামেরা নিয়ে কমপ্লেইন করার কোন সুযোগ পাবেন না। বন্ধুরা এই ছিল ক্যামেরা নিয়ে সামান্য কিছু কথা।
Redmi note 10 ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে 5000mAh এর ব্যাটারি। ফোনটির সাথে দেয়া হয়েছে 30W ফাস্ট চার্জার এবং সেইসাথে একটি ইউএসবি Type-A থেকে ইউএসবি Type-C পোর্ট। আমি আমার ফোনটিকে চালু অবস্থায় সম্পূর্ণ চার্জ দিতে চাই।
তাই আমি প্রথমে আমার ফোনটির সব চার্জ শেষ করে নিয়েছিলাম। তারপর বন্ধ অবস্থায় ফোনটিকে চার্জে লাগিয়ে ছিলাম। আনুমানিক মিনিট খানেক সময় চার্জ দেবার পর ফোনটিকে আমি চালু করেছিলাম। তখন চার্জ ছিলো ৩%। ৩.৪৪ সেকেন্ডে ফোনটির চার্জ হয়েছিল ৭%। ফোনটি সেই সময় বলছিল যে আর ৪১ মিনিট সময় লাগবে পরিপুর্ণ চার্জ হতে।
এরপর আমি ৩৫.৪৮ মিনিট পর ফোনের চার্জ পেয়েছি ৩৯%। তাহলে আপনারা নিশ্চয়ই দেখতে পারছেন যে এক মিনিটে ১% এর চেয়েও বেশি চার্জ হচ্ছে। তারপর আনুমানিক ৫৬.১০ মিনিট আমার ফোনটি চার্জ হয়েছিল ৬২%। অর্থাৎ আপনি সময় অনুযায়ী চার্জ দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে এই ফোনটি কোন মতেই এক ঘন্টার নিচে চার্জ ফুল হওয়ার সম্ভব নয়।
তারপর আমি যখন ফোনটি চেক করি তখন ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট সময় এবং মোট চার্জ হয়েছিল ৮১%। যা মোটামুটি ভালই ছিল। তারপর যখন ফোনটা ফুল চার্জ হয় তখন সময় ছিল ১ ঘন্টা ৫১ মিনিট। যা অনেকটাই বেশি সময়। মোবাইল ফোনটা বলছিল চার্জ হতে সময় নিয়েছে এক ঘন্টা ৪৩ মিনিট। এখানে একটা বলার মত কথা হচ্ছে ফোনটি চার্জ হতে খুব বেশি একটা গরম হয় নাই। অর্থাৎ মেজর হিটিং প্রবলেম দেখতে পাওয়া যায় না এই ফোনটি চার্জ দেওয়ার সময়। আমি ফোনটা চার্জ হতে দেখলাম প্রথমদিকে চার্জ বেশ তাড়াতাড়ি হচ্ছিল কিন্তু লাস্ট ৫% খুব দেরিতে হচ্ছিলো।
এবার আমরা দেখতে চলেছি কিভাবে আমাদের ফোনটির চার্জ শেষ হয়। প্রথমেই আমি আমার মোবাইল ফোনটির চার্জ যেভাবে খরচ করতে শুরু করেছিলাম তা বলে নিই। আমি আমার ফোনের ওয়াইফাই অন রেখেছিলাম আর সবকিছু অফ ছিল। ব্রাইটনেস একদম ফুল ছিল সেই সাথে ভলিউম ও ফুল ছিল। প্রথমেই আমি ইউটিউবে প্রবেশ করেছিলাম এবং সেখানে ভিডিও কোয়ালিটি হিসেবে Full HD কোয়ালিটি নির্ধারণ করেছিলাম। ১ ঘন্টা ৭ মিনিট ইউটিউব চালানোর পর আমার চার্জ কমে ৯০% হয়েছিল অর্থাৎ ব্যাটারি ড্রেইন হয়েছে ১০%। কিছুটা বেশি চার্জ ড্রেইন হয়েছে বলে আমার মনে হয়। কারণে আমি এর আগে স্মার্টফোনগুলোর ব্যাটারি ড্রেইন টেস্ট এভাবেই করেছিলাম কিন্ত সেক্ষেত্রে ৭-৮% চার্জ খরচ হয়েছিল। আমরা জানি যে প্রথমদিকে স্মার্টফোনগুলোর চার্জ খুব কম খরচ হয়। তাই আমরা আরো একঘন্টা ইউটিউবে ভিডিও প্লে করতে থাকবো।
যখন সময় ২ ঘন্টা ৬ মিনিট তখন চার্জ পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে ৮১% অর্থাৎ ব্যাটারি খরচ হয়েছে ৯%। যদি এখনো মোবাইল ফোনের পরের বারের এক ঘন্টা হয়নাই তাই বলা যায় এই ফোনটিতে আমরা যদি এক ঘন্টা ইউটিউব চালাই তাহলে ব্যাটারি খরচ হবে ১০%। এরপর আমি পাবজি খেলার জন্য ফোনটিকে চালাচ্ছিলাম। যেহেতু আমার পাবজি ইনস্টল বা সেটাপ করার ছিল না তাই সেটাপ করে নিতে আমার সময় লাগলো ১৫ মিনিট।
এক্ষেত্রে চার্জ শেষ হয়েছে ২%। সময় পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে ২ ঘন্টা ২৪ মিনিট। এক্ষেত্রে ফোনটা কিছুটা গরম হয়ে গিয়েছিল। এরপর আমি এক ঘণ্টা পাবজি খেলার পর আমার ফোনের চার্জ খরচ হয়েছিল ১৪% অর্থাৎ চার্জের পরিবর্তিত রুপ ছিল ৬৫%। এক্ষেত্রে ফোন তেমন একটা গরম হয় নাই। এক্ষেত্রে ফোনের গ্রাফিক্স ছিলো স্মুথ এবং আলট্রা। যদি ও এই ফোনটিতে HD + Ultra খেলা যায়।
অন্যান্য ফোন ও ১ ঘন্টা পাবজি খেলতে ১৩-১৪% ব্যাটারি খরচ করে। তাই পাবজির ক্ষেত্রে ফোনটি ঠিকঠাক চার্জ খরচ করেছে। ফোন চালানোর মোট সময় হয়েছিল ৩ ঘন্টা ২৫ মিনিট। এর পর আমি আরো এক ঘন্টা পাবজি খেলেছি এবং সময় পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে ৪ ঘন্টা ২৯ মিনিট। চার্জ খরচ হয়ে ১৩% অর্থাৎ পরিবর্তিত চার্জ ৫২%। পাবজির ক্ষেত্রে ফোনটি ভালো পারফরম্যান্স দেখাচ্ছে অর্থাৎ হিটিং প্রবলেম ও নাই বেশি ব্যাটারি খরচ ও নাই। তারপর আমি মোবাইল ফোনের প্রয়োজনীয় কিছু সফটওয়্যার ইন্সটল দিচ্ছিলাম এবং সেগুলো নিয়ে ঘাটছিলাম। এটে ৫৭ মিনিট সময় শেষ হয়েছে চার্জ শেষ হয়েছে ৪%। চার্জের পরিবর্তিত রুপ ৪৩%। সময়ের পরিবর্তিত রুপ হচ্ছে ৫ ঘন্টা ২৭ মিনিট।
এরপর আমি ইউটিউবে ভিডিও প্লে করার সাথে ১ ঘন্টা স্ক্রিন রেকর্ড করেছি। এক্ষেত্রে হাই রেজুলেশন এর সাথে 30 fps ব্যবহার করেছি। ৬ ঘন্টা ৩৩ মিনিট সময়ে ১২% চার্জ শেষ হয়ে হয়েছে ৩১%। ৩০ fps এ ১০৮০ রেজুলেশনে ৭ ঘন্টা ৬ মিনিট পর্যন্ত প্রায় আধ ঘন্টা ভিডিও রেকর্ডিং এর পর ১০% চার্জ খরচ হয়ে চার্জ হয়েছিল ২১%। এক্ষেত্রে তাপমাত্রা বেরে ৫০° সেলসিয়াস হয়েছিলো। এক্ষেত্রে আমরা হাই হিটিং দেখতে পেলাম।
বেশি গরম হওয়ার আমি আবার ইউটিউব চালাই ৫৭ মিনিট এবং এতে চার্জ শেষ হয়ে হয়েছে ১২% অর্থাৎ এতে চার্জ খরচ হয়েছে ৯%। সর্বোমোট সময় হয়েছে ৮ ঘন্টা ৩ মিনিট। এর পর এই ভাবেই আমি ইউটিউব চালালাম অর্থাৎ মুভি দেখলাম। যখন সর্বোমোট সময় ৯ ঘন্টা ৩৮ মিনিট তখন ফোনটি বন্ধ হয়ে গেলো। অর্থাৎ ফোনাটি আরো ১ ঘন্টা ৩৫ মিনিট চললো। শেষে ফোনের চার্জ এতটাই ধীরে শেষ হচ্ছিলো যে আমার মনে হচ্ছিলো আজকে আমি এর চার্জ শেষ করতেই পারবো না। সবশেষে বলা যায় ব্যাটারিতে Redmi note 10 এর পারফরম্যান্স দুর্দান্ত।
Redmi note 10 এর 3 টি ভ্যারিয়েশন বাংলাদেশের বাজারে এসেছে। একটিতে 4 জিবি র্যাম এবং 64 জিবি রম ব্যবহার করা হয়েছে এবং অন্যটিতে 4 জিবি র্যাম এবং 128 জিবি রম ব্যবহার করা হয়েছে। আর অন্যটিতে 6 জিবি র্যামের সাথে 128 জিবি রমের ব্যবহার করা হয়েছে। যেহেতু একই ফোনের তিনটি ভ্যারিয়েশন তাই দামও তিন রকমের।
Redmi note 10 এর 4/64 ভ্যারিয়েশন টির বাংলাদেশি অফিসিয়াল প্রাইজ বর্তমানে 19999 টাকা এবং 4/128 ভ্যারিয়েশন টির বাংলাদেশি অফিসিয়াল প্রাইজ 20999 টাকা। 6/128 ভ্যারিয়েশন টির অফিসিয়াল মুল্য 21999 টাকা।
বিভিন্ন ইউটিউবার এবং জনগনের মতে Redmi note 10 এর দাম একটু বেশি ধরা হয়েছে। অধিকাংশ জনগণের মতামত এই ফোনটির দাম অনেকটা বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইন্ডিয়াতে ফোনটি আসলে যে দামে লঞ্চ হচ্ছে সেটা অনুযায়ী বাংলাদেশের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তা অনেকটাই বেশি। বাংলাদেশের প্রতিটি ভেরিয়েশন প্রতি দুই থেকে তিন হাজার টাকা কম হওয়া উচিত ছিল।
Redmi এর ফোনগুলো বাজারে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে বলে এদের দাম একটু বেশি রাখে Redmi। সত্যি কথা বলতে আমরা যখন যে ফোনের দাম যত কম ভাবি আসলে তত কম হয়না। দেখা যায় যে প্রত্যেক ফোনের ক্ষেত্রে তারা দুই থেকে তিন হাজার টাকা বেশি রাখছে।
প্রতিটি ফোন লঞ্চ কারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব একটা বিষয় হয়তো থাকে। কেননা যদি আইফোনের কথা বলি তাহলে তারা তাদের ফোনগুলোর সর্বোচ্চ দাম নিচ্চে। আপনারা কি একবার ভাবতে পারেন সত্যিই কি ওই ফোনের দাম এতটা হতে পারে? বা আপনি ইচ্ছা করলে Samsung কোম্পানির ফোন গুলোর কথা ভাবতে পারেন।
তারা খুব বেশি পরিমাণ টাকায় অল্প অল্প করে সব দিচ্ছে। তবে তা নিতান্তই ভালো মানের হার্ডওয়ার সমৃদ্ধ একটি ফোন সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এই Redmi এর ফোনগুলোতে ঠিক একই বিষয় ঘটে থাকবে হয়তো। ফোনগুলো অন্যান্য কোম্পানি গুলো থেকে কিছুটা ভালো হওয়ায় এর দাম টা এরকম বেশি নেই। তবে কিছুদিনের মধ্যে ফোনটির দাম কিছুটা ড্রপ করবে বলে আশা করা যায়। তাছাড়া এই ফোনগুলো আনঅফিসিয়াল নিলে অনেকটাই কম দামে পাওয়া যায়। যেমন- 6/128 ভ্যারিয়েশন টির আনঅফিসিয়াল দাম বর্তমানে 19800 টাকা। তো বন্ধুরা এখানে 20 হাজার টাকা হলে আপনি ফোনের যেকোন ভ্যারিয়েশন নিতে পারছেন। তো আপনার ফোনটি পছন্দ হলে যেকোনো মুহূর্তে নিকটস্থ স্টোর রুমে গিয়ে ফোনটি কিনে নিতে পারেন।
Redmi note 10 ফোনটি অন্যান্য Redmi এর অন্যান্য ফোন এর মতোই শক্তিশালী। যদিও এর দাম অন্যান্য ফোন থেকে একটু বেশি। এই ফোনটি নরমাল ইউজে হ্যাং করে না। তবে হেভি ইউজেও তেমন একটা সমস্যা দেখা পাওয়া যায়নি। তবে হেভি গেমিং এ একটু ল্যাক করে বটে তবে তা আহামরি কিছু না। ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে Qualcomm Snapdragon 678 এবং সেই সাথে Andoroid 11 এর MIUI 12। এর প্রসেসর Qualcomm Snapdragon 675 এর চেয়ে ভালো পারফরম্যান্স করে। অর্থাৎ এই প্রসেসরটি Qualcomm Snapdragon 675 এর চেয়ে উন্নত একটি ভার্সন।
আমরা হয়তো জানি যে, MIUI 12 এ এখনো কিছু বাগ রয়েছে, যার জন্যই হয়তো আমি আমার ফোনটিতে ইউটিউব ব্যবহারে বেশ কয়েকবার ক্রাশ পেয়েছি। ক্যামেরার ব্যবহাররে ও বেশ কয়েকবার ক্রাশ পেয়েছি। অ্যাপ ক্লোজিং এর ক্ষেত্রেও বেশ কয়েকবার ক্রাশ পেয়েছিলাম। অ্যাপ্লিকেশনটি অটোমেটিক কেটে যাচ্ছিল। আশাকরি MIUI 12 এর বাগ ফিক্স হওয়ার সাথে সাথে এ সমস্যাগুলোও দূর হবে।
ফোনটিকে আমি ঘরের ভিতরে এবং ঘরের বাইরে ব্যবহার করেছি। ব্রাইটনেস জনিত কোন সমস্যা আমি এই ফোনটিতে পাই নাই। এই ফোনটিতে ১১০০ nits ব্রাইটনেস ব্যবহার করা হয়েছে ফলে আউটডোরেও কোন সমস্যা হয় না। তবে পঁচিশ হাজার টাকা দামের ফোনের সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে যতটা কালার ব্রাইট করছিল এ ফোনটা ততটা কালার ব্রাইট করছিল না। কিছুটা ন্যাচারাল কালার শো করছিলো যা আমার কাছে ভালো লেগেছে।
ফোনটি বেসিক কাজ করার জন্য পারফেক্ট এবং গেমিং এর জন্য দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। কিন্তু হেভি গেমিং এর ক্ষেত্রে ল্যাক এর দেখা অবশ্যই পাবেন তবে তাতে মেজর কোন হিটিং প্রবলেম নেই। পাবজিতে Ultra মুড এবং HD তে হালকা ল্যাক প্রবলেম এর দেখা পেয়েছি। তবে মেজর কোন হিটিং ইস্যু দেখাচ্ছিলো না। তাছাড়া স্মুথ অবস্থায় ল্যাক ছাড়াই খেলা যাচ্ছিলো। পাবজিতে স্মুথ এর সাথে আলট্রা খেললেও কোন সমস্যায় হয় না। সর্বোচ্চ HD +Ultra তে পাবজি খেলা যায় এই ফোনটিতে।
এই ফোনটি রাত্র বেলা ছবি তুলতে ফোকাস করতে সময় নিচ্ছিলো। তবে এটা ধরার মতো একটা সমস্যা না কারণ এই বাজেটের অন্যান্য ফোন এরকমই করে। এই ফোনটির ক্যামেরার পারফরম্যান্স বেশ ভালো ছিলো। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য ব্যাটারি পারফরম্যান্স বেশ ভালো ছিলো।
বেশ ভালো টাচ রিসপন্স পাওয়া যাচ্ছিলো এই ফোনটিতে যা পারফেক্ট ছিলো বলা চলে। ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে Android 11 এর MIUI 12 যার ফলে আপনি স্বাভাবিক ভাবেই নতুন ভার্সন এর কিছু অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন। ব্যবহার করতে পারবেন নতুন ভার্সন এর বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা যা কার্যকরীও হতে পারে।
এই ফোনটির সর্বোচ্চ সাউন্ড এ ও মিউজিক ভালো ভাবে নয়েজ ছাড়া শোনা যাচ্ছিলো। এ কিছু কিছু মিউজিক ফুল সাউন্ডে নয়েজ ছিল। আমার মনে হয় এসব মিউজিকের কোয়ালিটি ভাল ছিলনা। এছাড়াও কাউকে কল দিয়ে কথা বলার সময় নয়েজ ছাড়া ভয়েস শোনা যায়। সেকেন্ডারি স্পিকার এর কারণে মিউজিক এ আলাদা একটা মজা পাওয়া যাচ্ছিল। সাউন্ড টা সাধারণত অন্যান্য ফোন থেকে কিছুটা উন্নত এবং একটু বেশি।
আর যদি সিকিউরিটি এর কথা যদি বলি তো ফোনটিতে রয়েছে ফিঙ্গার প্রিন্ট সেন্সর যা Side mounted এবং ইহা ফাস্ট কাজ করে। পাওয়ার বাটন এর উপরে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর হওয়ায় অন্য কোন জায়গায় টাচ করার প্রয়োজন পড়ে না ফলে খুব সহজেই দ্রুত আনলক করা যায়।
এছাড়াও এতে রয়েছে ফেইস রিকগনিশন সিকিউরিটি সিস্টেম এবং পিন, প্যাটার্ন ও পাসওয়ার্ড তো আছেই। ফেস রিকগনিশন খুব দ্রুত কাজ করছিল। এটি চোখের রেটিনা স্ক্যান করে অবশ্য।
ফোনটিতে সেন্সর হিসেবে রয়েছে Fingerprint, Accelerometer, Gyroscope, Proximity, E-Compass ইত্যাদি। তবে ফোনটির Proximity সেনসর টি কেন জানি কাজ করছিল না। কেননা কল আসার সময় যখন আমি ফোনটি কানে নিয়েছিলাম তখন ডিসপ্লের আলো নিভে যাচ্ছিল না।
পাবজি খেলার সময় জাইরোস্কোপ সেন্সর এর উপস্থিতি দেখা যায়। এটা পারফরম্যান্স বেশ ভালো অর্থাৎ সঠিকভাবে কাজ করে বলে আমি মনে করি।
১. আপনি যদি সত্যিই একটি গর্জিয়াস লুকিং ফোন পেতে চান।
২. যদি আপনি একজন রেগুলার ফোন ইউজারস হয়ে থাকেন অর্থাৎ টুকটাক নেট চালানো, কথা বলা, ভিডিও দেখা, ছবি ইডিট করা ও কিছু কিছু মুহুর্তের ছবি তোলা ইত্যাদি কাজের জন্য ফোন কিনতে চান। আপনি চাইলে কিছু সময়ের জন্য নরমাল গেমিং বা হেভি গেমিং করতে পারেন।
৩. যদি আপনি কম ওজনের বড় মানের একটি কম্ফোর্টেবল ফোন পেতে চান।
৪. ফোনটি ঐ সমস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য যারা মিডিয়াম বাজেটে একটি ভালো মানের ফোনের আশাবাদী। যারা শর্ট টাইম হেভি গেমিং পছন্দ করেন বা ছবি তোলা পছন্দ করেন তাদের জন্য।
৫. যারা সত্যিই একটি গর্জিয়াস ফোন এবং সেই সাথে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স যুক্ত ফোন পেতে চান তাদের জন্য হতে পারে এই ফোনটি শোভাবর্ধক।
১. যদি আপনি ভিডিও রেকর্ডিং এর জন্য একটি ভালো ফোন পেতে চান।
২. যদি আপনি খুব বেশি ভালোমানের গ্রাফিক্স পারফরম্যান্স এর আশা নিয়ে কিনতে চান।
৩. যদি আপনি তুলনামূলক আরো ছোট এবং কম ওজনের ফোন কিন্তু দুর্দান্ত পারফরম্যান্স যুক্ত ফোন পেতে চান।
৪. যদি আপনি এই ফোনটির সমস্ত দুর্বলতা মুক্ত ফোন পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে Redmi note 10 pro max কিনতে হবে।
Launch Date | March 16, 2021 |
Colors | Shadow Black (Onyx Gray), Frost White (Pebble White), Aqua Green (Lake Green) |
Connectivity | |
---|---|
Network | 2G, 3G, 4G LTE |
Sim Slot | Duel Nano Sim Supported |
Wlan | ✅ dual-band, Wi-Fi direct, Wi-Fi hotspot |
Blutooth | ✅ v5.0, A2DP, LE |
GPS | ✅ A-GPS, GLONASS, BDS, GALILEO |
Radio | ✅ FM |
USB | v2.0 |
OTG | ✅Supported |
NFC | ❎ not supported |
infrared | ✅ Supported |
USB Type-C | ✅ Supported |
Body | |
Style | Punch-hole |
Material | Gorilla Glass 3 front, plastic body |
Water Resistance | ✅ IP53, dust and splash protection (market/region dependent) |
Dimensions | 160.5 x 74.5 x 8.3 millimeters |
Weight | 178.8 g |
Display | |
Size | 6.43 inches |
Resolution | Full HD+ 1080 x 2400 pixels (409 ppi)) |
Technology | Super AMOLED Touchscreen |
Fetchers | ✅ Corning Gorilla Glass 3 |
Technology | Multitouch, 450 nits / 1100 nits |
Back Camera | |
Resolution | Quad 48+8+2+2 Megapixel |
Features | PDAF, LED flash, HDR, 118º ultrawide, macro, depth & more |
Video Recording | Ultra HD (2160p) |
FrontCamera | |
Resolution | 13 Megapixel |
Features | F/2.5, HDR, 1/3.06″, 1.12µm & more |
Video Recording | Full HD (1080p) |
Battery | |
Type and Capacity | Lithium-polymer 5000 mAh (non-removable) |
Charging | ✅ 33W Fast Charging (50% in 25 min, 100% in 74 min) |
Performance | |
Operating System | Android 11 MIUI 12 |
Chipset | Qualcomm Snapdragon 678 (11 nm) |
RAM | 4/6 GB |
Processor | Octa core, up to 2.0 GHz |
GPU | Adreo 612 |
Storage | |
ROM | 64 / 128 GB (UFS 2.2) |
MicroSD Slot | ✅ Dedicated slot |
Sound | |
3.5mm Jack | ✅ |
Features | Loudspeaker (stereo speakers), 24-bit/192kHz audio |
Security | |
Fingerprint | ✅ Side-mounted |
Face Unlock | ✅ |
Others | |
Sensors | Fingerprint, Accelerometer, Gyroscope, Proximity, E-Compass |
Manufactured by | Xiaomi |
Price Official ✭ | ৳19, 999 4/64 GB ৳20, 999 4/128 GB ৳21, 999 6/128 GB |
এবার এই ফোনটি সম্পর্কে যদি আমি ব্যক্তিগত ভাবে কিছু বলি তাহলে আমি বলবো Redmi note 10 এর ডিজাইন আমার কাছে অনেকটাই ভালো লেগেছে। কারণ ফোনটি প্লাস্টিক বডি হলেও ওয়েল ফিনিশ একটা ফোন। এই ফোনটির ওজন মাত্র ১৭৮.৮ গ্রাম যা নিত্যান্তই কম। ফোনটি হাতে নিয়ে আমি বেশ কম্ফোর্টেবল ফিল করছিলাম।
এধরনের চমৎকার ডিজাইনের জন্য আমি Redmi কে ধন্যবাদ জানাবো। কারণ এরকম ফোনের স্টাইল আসলে Redmi একমাত্র করতে পারে। আর আপনাকে তো এটা বুঝতে হবে যে এটা রেডমি নোট সিরিজের বাংলাদেশে আসা আরেকটি ফোন যা বাদবাকি ফোনগুলো থেকে কাজে এবং দেখতে অবশ্যই ভালো হতে হবে। আমি যেরকম বললাম ফোনটা দেখতে যে রকম সুন্দর কাজেও বা পারফরম্যান্সেও দুর্দান্ত।
আমার ফোনটির সবচেয়ে বেশি পছন্দের বিষয় হচ্ছে ফোনটির সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে যা Redmi note সিরিজের কোন ফোনে ব্যবহার করা হয়নি। তারা ফোনটিতে Qualcomm Snapdragon 678 নামক নতুন একটি প্রসেসর ব্যবহার করেছে যার পারফরম্যান্স বেশ ভালো আমি লক্ষ করলাম।
যদিও হেভি গেমিং এর ক্ষেত্রে মেজর হিটিং প্রবলেম পাওয়া যায়নি তবে ফোনটি ভিডিও রেকর্ডিং এর ক্ষেত্রে খুব বেশি গরম হচ্ছিল। যাদের দীর্ঘক্ষন ভিডিও রেকর্ডিং এর প্রয়োজন পড়ে তাদের ক্ষেত্রে আমি বলব তারা আরেকটু উন্নত মানের ফোন নিলেই ভালো হয়। তবে ফোনটি বেশ কিছুকাল সময় পর হেভি গেমিং এর ক্ষেত্রে তার চরিত্র পাল্টে ফেলতে পারে। অর্থাৎ ফোনটি তিন চার মাস পর গরম হয়ে যেতে পারে হেভিগ্যামিং এর ক্ষেত্রে। এটা শুধুমাত্র একটা ধারণা এছাড়া আর কিছুনা।
নর্মাল গেমিং এর ক্ষেত্রে বা নরমাল ইউজ এর ক্ষেত্রে আপনি এই ফোনটির কোন সমস্যায় বের করতে পারবেন না। সত্যি কথা বলতে হেভি গেমিং এবং হেভি ইউজের জন্য কোন ফোনই আসলে পারফেক্ট নয়। এক্ষেত্রে যত উন্নত মানের ফোনই আপনার হোক না কেন কিছু না কিছু সমস্য দেখা দিবেই।
তো আমার এই রিভিউ টিউনটি কেমন লাগলো তা আমাকে টিউমেন্ট এ জানাতে পারেন। আপনাদের ভাল লাগলে জোসস দিবেন যাতে করে আমি সামনে আরো কিছু ফোনের রিভিউ ভালো ভাবে করতে পারি। আমার টিউনটি সবার প্রথমে দেখতে চাইলে আমাকে ফলো করুন। এতক্ষন আমার টিউন মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। দেখা হয়েছে পরবর্তী কোন এক টিউনে। আল্লাহ হাফেজ।
আমি মো তানজিন প্রধান। ২য় বর্ষ, বগুড়া আজিজুল হক কলেজ, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 91 টি টিউন ও 65 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।
কখনো কখনো হারিয়ে যাই চিন্তার আসরে, কখনোবা ভালোবাসি শিখতে, কখনোবা ভালোবাসি শিখাতে, হয়তো চিন্তাগুলো একদিন হারিয়ে যাবে ব্যাস্ততার ভীরে। তারপর ব্যাস্ততার ঘোর নিয়েই একদিন চলে যাব কবরে।