Realme C15 এর বিস্তারিত রিভিউ

Level 7
২য় বর্ষ, বগুড়া আজিজুল হক কলেজ, গাইবান্ধা

হ্যালো টিউডার বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করছি সবাই ভালোই আছেন। তো বরাবরের মতোই আজও নিয়ে এসেছি একটা টিউন। থাম্বনেইল দেখে আপনারা হয়তো বুঝতে পারছেন যে এটা একটা রিভিউ টিউন। আগামি দিনগুলোতে এ ধরনের টিউন নিয়ে আসব ইনশাআল্লাহ।

Realme এর ফোন গুলো বর্তমানে সবার জন্য নতুন কোন এক কিছু। Realme c3 এবং Realme 5i এই ফোন গুলোর কথা কি আপনাদের মনে আছে?

আপনারা হয়তো বিভিন্ন ইউটিউবারের ভিডিও তে এই ফোন গুলো সম্পর্কে জেনেছেন। অনেকেই হয়তো ব্যবহার করেছেন এবং অনকেই এখনো করছেন। Realme c12 এর মতোই দেখতে Realme c15 নামক একটা ফোন লঞ্চ করেছে Realme। এটা মার্কেটে বেশ সারা ফেলেছে।

এটা বাংলাদেশের মার্কেটে 2020 সালের 29 এ অক্টোবর প্রথম রিলিজ হয়। তাই আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি এই টিউন। যারা ফোনটি কিনেছেন তাদের টিউনটি দেখার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যারা ফোন কিনবেন তাদের সহায়তা করতে আজকের এ টিউন।

ফোনটি সম্পর্কে ব্যাসিক ধারণা পেতে নিচের শেয়ার করা ভিডিও টি দেখুন।

ভিডিও এর সুত্রঃ Realme এর অফিসিয়াল ওয়েব পেইজ।

জনপ্রিয়তার শীর্ষে না হলেও ফোনটি মার্কেটে এসে সারা ফেলেছে। এইটা মার্কেটে বিভিন্ন ফোনের উপর ভিত্তি করে তৈরি করেছে। আজেবাজে কথা আর না বলে বিস্তারিত জানতে চলুন মুল টিউনে চলে যাই। আজকে এই টিউনের মাধ্যমে আপনাকে ফোনটি সম্পর্কে পুরোপুরি একটি ধারনা দেয়ার চেষ্টা করবো।

Realme এর ফোন গুলো মার্কেটে ভালো কোন কিছু করতে চেষ্টা করছে। Realme c3 কতটা ভালো ফোন সেটা আমি জানি না।

Realme 5i কতটা ভালো ফোন তাও আমি জানি না।

তবে এটা মার্কেটে এতোটাই সারা ফেলেছে যে ফোনটিকে মার্কেটে পাওয়াই যাচ্ছে না। এরপর তারা Realme c12 এর মতো দেখতে Realme c15 নিয়ে এসেছে। সাথে ফোনটিকে তৈরি করা হয়েছে বেশি ব্যাটারি ক্যাপাসিটি দিয়ে। ফোনটির দাম তেমন একটা বেশি ধরে নাই। স্বাভাবিক বলা যায়। বাজেটের দিক দিয়ে বিবেচনা করলে বলা যায় এর বাজার দখল করতে সময় লাগবে না।

সুবিধাঃ

  • বাজেট হিসেবে অবিশ্বাস্য বেশি mAh এর ব্যাটারি।
  • মোটামুটি ভালো মানের HD ডিসপ্লে এবং সাথে কর্নিং গরিলা গ্লাস।
  • বাজেট হিসেবে আশানুরূপ Ram ও Rom।
  • Realme এর টাচ রিসপনস ইমপ্রুভ।

অসুবিধাঃ

  • হাইগেমিং এর জন্য এই ফোন না কারণ প্রসেসর Quawlacom snapdragon 460।
  • টাইপ সি পোর্ট নেই এবং জাইরোস্কোপ সেন্সর ভালোভাবে কাজ করে না।
  • ফোনটি বড় মানের এবং মোটা হওয়ায় কমফোর্টঅ্যাবল না।

২ মিনিট রিভিউঃ

Realme c15 এর বাজারে আসার পর চমৎকার এক উত্তেজনা যে এই ফোনটা কিনবো নাকি। ফোনটি হাতে নেবার পর ইউজারের বেশ কয়েকটি বিষয়ে ঘাটতির উদ্ভব হয়। এর আগের ভিভাইস গুলো সম্ভাবনাময় হলেও বর্তামানে প্রসেসর এর জন্য মাত্রাতিরিক্ত ইউজের জন্য উপযুক্ত না বলে আমার মনে হয়। তবে রেগুলার ইউজারস দের জন্য মোটামুটি ভালো মানের ফোন বলা যেতে পারে।

সহজ কথায় বলতে গেলে এর সুবিধা অসুবিধা অনুযায়ী এর দাম কিছুটা বেশি নিচ্ছে বলে মনে হয়। এবার যদি অসুবিধার কথা বলা হয় তাহলে এটা বলা যায় যে, ফোনটির মোটামুটি আকারে বড়, বড় ব্যাটারির কারনে হালকা মোটা। ফোনটার ডিজাইন এমন ছিলো যে, এই ফোনটা অনেকের কাছে আনকমফোর্টঅ্যাবল লাগতে পারে। এই ফোনটি Minimal Notch স্টাইলে তৈরি করা একটি ফোন।

পিছনের Quad ক্যামেরা একটি ফ্লাশ সহ এবং আপডেট অপারেটিং সিস্টেম  (Andoroid 10) ব্যবহার করা হয়েছে। ফোনটিতে 10 ভার্সিটির Realme U.I 1.0 ব্যবহার করা হয়েছে।

তবুও বলা যায় Realme এর একটা ফোন মানে বাজারে নতুন কোন কিছু। যা বাজারে নিমিষেই আলোরণ সৃষ্টি করতে পারে।

এই ফোনটির সাথে থাকছে বড় মাপের একটি ডিসপ্লে এবং ডিসপ্লে এর সাথে থাকছে একটা কর্নিং গরিলা গ্লাস। তবে এটা কি ধরনের গরিলা গ্লাস সে সম্পর্কে কিছু বলেনি Realme।

এখানে একটি বলার বিষয় এই বাজেটের মধ্যে কর্নিং গোরিলা গ্লাস সহ এতো বড় মাপের HD+ ডিসপ্লে আর কোন ফোনে আপনারা পাবেন না। দুটি নেনো সিম ব্যবহার করতে পারবেন এবং একটি মাইক্রো এসডিকার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। তাই আমি সিম কার্ডের পারফর্মেন্স পরীক্ষামূলক ভাবে যাচাই করে দেখে বলছি যে নেটওয়ার্ক রিসিভে ফোনটি কোন দুর্বলতা প্রকাশ করেনি।

ডিজাইনঃ

Realme c15 এমন একটি ফোন যা Minimal Notch স্টাইলে তৈরি করা হয়েছে। Realme c15 এর এই ডিজাইনটি পুর্বের Realme মোবাইলের মতো মোটামুটি ভালো একটা ডিজাইন। Realme 2020 সালের 14 ই আগস্ট আরেকটা ফোন Realme c12 লঞ্চ করেছে যার এই ফোনটির সাথে কোন অমিল নেই বললে ভুল হবে না। এই রকম দুটি ফোনের একই স্টাইলের কারণ বা জবাব Realme ই দিতে পারবে।

তবে বর্তমান এ যুগে সবাই চায় যে আমার ফোনটা সবার ফোন থেকে আলাদা বা উন্নত হোক। এই কথা মাথায় রেখে Realme এর দুটি ফোনের মধ্যে মিল রাখা ঠিক হয় নি।

তবে যাই হোক সেটা একান্তই Realme এর নিজস্ব ব্যাপার। ফোনটির পিছনে থাকছে প্লাস্টিকের বডি। সামনে কর্নিং গরিলা গ্লাস সহ HD + এর ডিসপ্লে।

ফোনটিতে দেয়া হয়েছে মাইক্রো ইউএসবি পোর্ট। কেন যে ফোনটিতে টাইপ সি পোর্ট দেওয়া হলো না তা Realme ই বলতে পারবে।

এই ফোনটির ডান পাশে প্রথমে ভলিউম বাটন এবং একটু নিচে পাওয়ার বাটন দেওয়া হয়েছে। যদিও এটা ব্যাতিক্রম কিছু না তবুও মানতেই হয় মিডিয়া কন্ট্রোল বা সেলফি তুলার জন্য বোতাম গুলা ব্যবহার এর জন্য সঠিক জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে।

ফোনটির ফিঙ্গার প্রিন্ট সেন্সর এর কথা বলতে গেলে এটা বলা যায় যে, এটি যথাযথ স্থানে আছে এবং ফোন সহজেই আনলক করা যায়।

ফোনটিতে 3.5 nm এর ইয়ারফোন জ্যাক ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও বর্তমান এ যুগে ফোনগুলোতে মাইক্রো ইউএসবি পোর্ট এটা কি ধরনের কথা ভাই সি-পোর্ট দিলে ভালো হতো।

এর ডিজাইনের কথা বলতে গেলে আমি একটা কথাই বলবো যে এটা বহন করা বেশি একটা সুবিধা জনক না। কারণ এই ফোনের বিশাল আকার ও মোটা এবং তুলনামুলক ওজন ও একটু বেশি। আর বর্তমানের ছেলেদের জিন্সের যে পকেট তাতে Andoroid মোবাইল ধরতেই চায় না।

কানেকটিভিটিঃ

একটা ফোনের জন্য কানেকটিভিটি অবিচ্ছেদ্দ বিষয়। এই ফোনটিতে নেটওয়ার্কের জেনারেশন হিসেবে রয়েছে 2G, 3G এবং 4G।

দুটি ন্যানো সিম কার্ড ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। সেই সাথে ওয়াইফাই-হটস্পট ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। ডিভাইসটিতে 4.2 ভার্সনের ব্লুটুথ সংযোগ রয়েছে। ডিভাইসটিতে জিপিএস এর সংযোগ রয়েছে। এছাড়াও ডিভাইসটিতে রয়েছে এফএম রেডিও।

ডিসপ্লেঃ

Realme c15 এ ডিসপ্লে বাজেট হিসেবে কেউ নিন্দা করতে পারবে না। ডিসপ্লে হিসেবে এই ফোনটি ব্যবহার করেছে 6.5 ইঞ্চির HD+ 720 x 1600 pixels (270 ppi) রেজুলেশনের, IPS LCD ডিসপ্লে যা মাল্টিটাচ এবং প্রটেকশন হিসেবে আছে কর্নিং গরিলা গ্লাস।

এখানে কয়েকটি কথা বলব যে, এই বাজেটের কোন ফোনেই HD+ ডিসপ্লে ব্যবহার করে নাই।

আকার হিসেবে ডিসপ্লে অনেক বড় যা
6.5 ইঞ্চি। রেজুলেশন ও মোটামুটি ভালো যা 720×1600 pixle এবং ইহা 270 ppi।

আর সাথে যে কর্নিং গরিলা গ্লাস দিয়েছে তাতে আপনার ডিসপ্লের নিরাপত্তা অনেকটা নিশ্চিত হয়েছে।

বিভিন্ন কাজ যেমন- মুভি দেখা, নাটক দেখা, অনলাইন ক্লাস করা গেমিং করা ইত্যাদির জন্য বেটার একটা ফোন।

ক্যামেরাঃ

ফোনটির ক্যামেরা ডিজাইন নিয়ে যদি বলি তাহলে বলতে হবে ক্যামেরা সেটআপ মোটামুটি ভালো তবে তা ব্যতিক্রম কোন কিছুর উদাহরণ নয়।

ফোনটির পিছন থেকে Top-Left কর্নারে Quad 13+8+2+2 ক্যামেরার সেটাপ রয়েছে। ফিচার হিসেবে রয়েছে PDAF, LED flash, HDR, ultrawide, depth, macro & more। মানে আপনি বেশ কয়টি মুড এ ছবি তুলতে পারবেন। ক্যামেরা দারা ভিডিও রেকর্ডিং করতে পারবেন @1080 রেজুলেশন নিয়ে 30 fps সহকারে।

এখানে আমরা ফোনটি দিয়ে বেশ কয়টি ছবি তুলেছি আপনারা দেখে নিন।

ডে-লাইটে নরমাল মুড এ তোলা ছবি-

Portrait মুড এ তোলা ছবি-

pro মুড এ তোলা ছবি-

রাত্রি বেলা ফ্লাস দিয়ে তোলা ছবি-

Night মুড দিয়ে তোলা ছবি-

দিনের আলোর ছবি তোলার ক্ষেত্রে Realme এর ক্যামেরা ভালোই ছিলো। এতে ছবি গুলো সুন্দর ভাবে স্মুথ হচ্ছে যা অনেকের কাছে ভালো লাগতেও পারে আবার অনেক এর কাছে নাও লাগতে পারে।

তুলনামূলক ভাবে রাতে ফ্লাস দিয়ে তোলা ছবি একটু খারাপ। তবে একেবারেই যে চলে না তাও নয়।

তবে নাইট ভিশন কাজ করে কিনা এটা নিয়ে আমিই কনফিউশন এ আছি। কারণ আমি একটা ছবি তুলেছি যাতে কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না। আমার মনে হয় নাইট মুড অতটাও কাজের না। কারণ আপনারা নিশ্চয় বুঝে গেছেন উপরের নাইট ভীষণ এর ছবি দেখে।

Realme c15 এর সামনে ইউ সেপে একটি 8 মেগাপিক্সেল এর ক্যামেরা অবস্থিত। এটা ব্যাতিক্রম কিছু না। কারণ সব ফোনে একই রকমই প্রায়। ফিচার হিসেবে রয়েছে HDR, more ইত্যাদি। ফোনটির ফ্রন্ট ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও রেকর্ডিং করা যাচ্ছে @1080 রেজুলেশন এ 30 fps সহকারে।

দিনের বেলা তোলা সেলফি-

রাতে ডিসপ্লে ফ্লাস এ তোলা সেলফি-

Realme c15 এর ফ্রন্ট ক্যামেরাটি 8 মেগাপিক্সেল এবং এটা দিনের বেলা যথেষ্ট ভালো সেলফি দেয়। বাজেটের কথা ভাবলে এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করা যায় না।

রাতের বেলা ডিসপ্লে ফ্লাস এ মোটামুটি চলে এরকম ছবি পাওয়া যায়।

Realme c15 এর ক্যামেরার ভেতরের ফিচার গুলো Realme এর অন্য ফোন গুলোর মত একই। যেমন- photo portrait, pro, night ইত্যাদি।

ব্যাটারি টেস্টঃ

ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে 6000 mAh এর ব্যাটারি। আমি প্রথমে আমার ফোনটিকে 100% চার্জ করে নিয়েছি।

এরপর আমি আমার ফোনটির ব্রাইটনেস মিডিয়ার লেভেলে রেখেছিলাম। এক্ষেত্রে আমার ব্লুটুথ এবং জিপিএস অন ছিলো।

তারপর আমি আমার ফোনটিকে ওয়ার্ম আপ করার জন্য 30 মিনিট চেপেছিলাম। এতে আমার চার্জ কমে 96% এ এসেছিলো।

এর পর 2 ঘন্টা একটা ছবি দেখেছি এবং এতে চার্জ এসেছিলো 79%। অর্থাৎ ব্যাটারির চার্জ খরচ হয়েছে 17%।

এরপর আমি 1 ঘন্টা ভিডিও রেকর্ডিং করেছি এবং এতে চার্জ পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে 71%। এর পর আমি ইউটিউব এ মিউজিক শুনেছি 1.5 ঘন্টা এবং এতে চার্জ পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে 63%।

এরপর আমি 1 ঘন্টা নরমাল গেমিং করেছি অর্থাৎ টেম্পল রান খেলেছি এবং এতে চার্জ পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে 56%।

এরপর alphat 9 খেলেছি 1.5 ঘন্টা এবং এতে ব্যাটারি ড্রেইন হয়েছে 17% অর্থাৎ চার্জ পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে 39%। আপনারা হয়তো জানেন যে এই গেম সবচেয়ে বেশি চার্জ খায়।

এর পর 1.5 ঘন্টা পাবজি খেলেছি এবং এতে চার্জ পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে 14%।
এরপরে গানা অ্যাপে গান শুনেছি 1 ঘন্টা এবং এতে চার্জ পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে 9%। এখানে 10 ঘন্টা মোট হয়ে গেছে। এর পর 22 মিনিট ফোনটি চালানোর পর ফোনটি সুইচ অফ হয়।

তো বন্ধুরা আমার ফোনটির ইউজের তথ্য দেখে আপনারা নিশ্চই বুঝতে পারছেন ব্যাটারি পারফরম্যান্স কেমন?

নিঃসন্দেহে ইহা খুব ভালো ছিলো।

এছাড়াও ফোনটির সাথে ছিলো 18 W ফাস্ট চার্জার। যা সত্যিই একটা পজেটিভ বিষয়। ফোনটি আমি 20% চার্জ থাকা অবস্থায় চার্জে দিয়েছিলাম এবং এটা 1 ঘন্টা 10 মিনিট এ 85% চার্জ হয়েছিলো। তাহলে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে কতটা ফাস্ট চার্জার ছিলো এটা।

দাম বিশ্লেষণঃ

Realme c15 এর দুটি ভ্যারিয়েশন বাংলাদেশের বাজারে এসেছে। একটিতে 4 জিবি র‍্যাম এবং 64 জিবে রম ব্যবহার করা হয়েছে এবং অন্যটিতে 4 জিবি র‍্যাম এবং 128 জিবি রম ব্যবহার হয়েছে। যেহেতু একই ফোনের দুট ভ্যারিয়েশন তাই দামও দুরকমের।

Realme c15 এর 4/64 ভ্যারিয়েশন টির বাংলাদেশি অফিসিয়াল প্রাইজ 12990 টাকা এবং 4/128 ভ্যারিয়েশন টির বাংলাদেশি অফিসিয়াল প্রাইজ 14490 টাকা।

বিভিন্ন ইউটিউবার এবং জনগনের মতে Realme c15 এর দাম যথাযথ হয়েছে। অর্থাৎ 80% লোক এর দাম যথাযথ মেনে নিয়েছে বাকি 20% বলেছে ফোনটির দাম আরেকটু কম হলে ভালো হতো বা ফোনটিকে আরেকটু উন্নত করলে ভালো হতো এরকম বলেছে।

ফোনটি বাংলাদেশে দুটি কালার নিয়ে লঞ্চ হয় একটা সিলভার কালার আরেকটা নীল। দুটো কালারই মোটামুটি দেখতে।

আমি মনে করি Realme c15 এর দাম নিয়ে জনগনের তেমন কোন ক্লেইম নেই। তবে একটা বিষয়ে অবশ্যই বলবো ফোন এর ক্যাপাসিটি শুধু 64 জিবি বাড়িয়ে 1500 টাকা কিভাবে বাড়াতে পারে?

হ্যা তবে এটা হলে ভালো হতো যে, 6/128 ভ্যারিয়েশন এর দাম 15000 টাকা।

তবে এই বাজেটের অন্য কোন ফোনে এমন কিছু দেয়নি। তবে Realme এর অন্যান্য কিছু ফোনে দিয়েছে, তবে তাতে আবার বেশ কিছু বিষয়ে কম দিয়েছে।

তবে প্রতিটা কোম্পানি না আপনাকে পারফেক্ট ফোন কখনোই দিবেনা। কারণ কোম্পানি বুদ্ধিমান। আপনাকে পারফেক্ট ফোন দিলে আপনার কাছে আরেকটা ফোন বিক্রি করবে কিভাবে।

কোন ফোনের দেখবেন ফোন ক্যাপাসিটি কম। আপনি সেটা আপনার জন্য যথেষ্ট ভেবে কিনলেও সেটা আপনার কাছে একদিন সমস্যার কারণ হয়ে দাড়াবে। এরকম আপনি দেখবেন কোন ফোনের র‍্যাম কম আবার কোন ফোনের ক্যামেরা ভালো না, আবার দেখবেন কোন ফোনে ওটিজি নাই, আবার দেখবেন কোন ফোনে রেডিও নাই, আবার দেখবেন কোন ফোনে প্রসেসর দুর্বল, আবার দেখবেন কোন ফোনে মাইক্রো এসডি কার্ড স্লোট নেই। দেখবেন এরকম কোন না কোন সমস্য আপনার ফোনে আছেই।

এক্ষেত্রে আপনারা হয়তো আমাকে বলতে পারেন বাজেট কম দেখে এরকম। আরে ভাই না, মোটামুটি ভালো বাজেটের ফোনেও এ ব্যাপারটি আছে।

কোম্পানি ফোনের দুর্বলতা রেখে ফোন কম বাজেটে বিক্রি করে। আরে ভাই এই সামন্য দুর্বলতা রাখার কি দরকার।

কর্মক্ষমতাঃ

Realme c15 ফোনটি অন্যান্য Realme এর অন্যান্য ফোন থেকে কম শক্তিশালী। যদিও এর দাম অন্যান্য ফোন থেকে বেশি না। যদিও এই ফোনটি নরমাল ইউজে হ্যাং করে না। তবে হেভি গেমিং এ একটু ল্যাক করে বটে। যা Realme এর অন্যান্য ফোন যেমন Realme c3 এবং Realme 5i এ দেখা যায় নি। কারণ Realme c3 এবং Realme 5i এর প্রসেসর যথাক্রমে Mediatek Helio G70 এবং Qualcomm Snapdragon 665 যা Realme c15 এর প্রসেসর Qualcomm Snapdragon 460 এর চেয়ে ভালো পারফরম্যান্স করে।

ফোনটি বেসিক কাজ করার জন্য পারফেক্ট এবং টুকটাক গেমিং এর জন্য ও। কিন্তু হেভি গেমিং এর ক্ষেত্রে ল্যাক এর দেখা অবশ্যই পাবেন। পাবজিতে Ultra মুড এ হালকা হিটিং প্রবলেম সহ ল্যাক এর দেখা পেয়েছি। তাছাড়া স্মুথ অবস্থায় মোটামুটি খেলা যাচ্ছিলো। পাবজিতে স্মুথ এর সাথে আলট্রা খেলা যায়।

এই ফোনটি ফ্লাস দিয়ে ছবি তুলতে সময় নিচ্ছিলো। তবে এটা ধরার মতো একটা সমস্যা না কারণ এই বাজেটের অন্যান্য ফোন ও তাই করে।

এই ফোনটির ক্যামেরার পারফরম্যান্স মোটামুটি ভালো ছিলো। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য ব্যাটারি পারফরম্যান্স বেস্ট ছিলো।

এছাড়াও আমরা শুনেছি যে Realme এর আগের ফোনগুলো টাচ রিসপন্স এর সমস্যা ছিলো। কিন্তু এই ফোনটির মোটামুটি হেভি ইউজে আমি সেরকম কোন সমস্যা পাই নি। যদিও এই ফোনটি হেভি ইউজের জন্য না।

আরেকটি সুবিধা হচ্ছে এর অপারেটিং সিস্টেম নির্বাচন। ফোনটি Android 10 Realme UI 1.0 দিয়ে তৈরি। আমি মনে করি 2020 সালে অক্টোবরে ফোনটি রিলিজ হবার পরে এন্ড্রয়েডের ল্যার্জেস্ট ভার্সন Android 10 দেয়া সত্যিই ভালো একটা কাজ। যদিও সব ফোনেই তাই দিচ্ছে।

স্বাভাবিক ভাবেই আপনি নতুন ভার্সন এর কিছু অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন। ব্যবহার করতে পারবেন নতুন ভার্সন এর বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা।

এই ফোনটির  লাউডলি মিউজিক এ ভালো ভাবে নয়েজ ছাড়া মিউজিক শোনা যায়। এছাড়াও কাউকে কল দিয়ে কথা বলার সময় নয়েজ ছাড়া ভয়েস শোনা যায়। তবে আমার কেন জানি মনে হয় আমার এই ফোনের লাউডস্পিকার সাউন্ড একটু কম। অবশ্য মনের ভুল ও হতে পারে।

আর যদি সিকিউরিটি এর কথা যদি বলি তো ফোনটিতে রয়েছে ফিঙ্গার প্রিন্ট সেন্সর যা On The Back এবং ইহা খুব ফাস্ট কাজ করে।

এছাড়াও এতে রয়েছে ফেইস রিকগনিশন সিকিউরিটি সিস্টেম এবং পিন, প্যাটার্ন ও পাসওয়ার্ড তো আছেই।

ফোনটিতে সেন্সর হিসেবে রয়েছে Fingerprint (rear-mounted), accelerometer, proximity, Compass ইত্যাদি।

পাবজি খেলার সময় জাইরোস্কোপ সেন্সর এর উপস্থিতি দেখা যায়। তবে এটা সঠিকভাবে কাজ করে না।

কেন এই ফোন কিনবেনঃ

১. আপনি যদি টুকটাক গেমিং এর জন্য ফোন কিনতে চান।

২. যদি আপনি একজন রেগুলার ফোন ইউজারস হয়ে থাকেন। অর্থাৎ টুকটাক নেট চালানো, কথা বলা, ভিডিও দেখা, ছবি ইডিট করা ও কিছু কিছু মুহুর্তের ছবি তোলা ইত্যাদি কাজের জন্য ফোন কিনতে চান।

৩. যাদি আপনি ফোনের ভালো ব্যাটারি পারফরম্যান্স পেতে চান।

৪. ফোন গুলো ওই সমস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য যাদের স্মার্ট ফোনের চাহিদা কিন্তু মোটেও অতিরিক্ত ব্যবহার এর জন্য নয়।

৫. যারা ভালোবাসেন মোবাইলটা পরিমিত যত্ন সহকারে ব্যবহার করতে।

কেন ফোনটি কিনবেন নাঃ

১. আপনি যদি একটা হেভি গেমিং ফোন চান।

২. আপনি যদি সুন্দর ডিজাইনের একটা ফোন চান।

৩. যদি আপনার কমফোর্টঅ্যাবল একটা ছোট এবং কম ওজনের ফোনের আশা থেকে থাকে।

৪. Realme ফোনের একটা বড় সমস্য হলো এর কিছু কিছু ফোনের একই ডিজাইন। যা আপনার ভালো নাও লাগতে পারে।

৫. যদি অত্যাধিক ভালো মানে ছবি পেতে চান।

৬. ফোনটির ক্যামেরা ভাল মোটামুটি ভালো ছিল। এর নাইট ভীষণ ক্যামেরা থেকে পাওয়া ছবি স্বাভাবিক ভাবে ডিসপ্লে ফ্লাস দিয়ে তোলা ছবি অপেক্ষা বাজে। এই ফোন যেহেতু ১২৮ জিবি ভেরিয়েশনের জন্য ১৫০০ টাকা বারানো হয়েছে। লো লাইটে ছবি পারফরম্যান্স তেমন ভালো লাগেনি আমার।

আমার ব্যক্তিগত কিছু কথাঃ

এবার এই ফোনটি সম্পর্কে যদি আমি ব্যক্তিগত ভাবে কিছু বলি তাহলে আমি বলবো Realme c15 এর ডিজাইন আমার কাছে তেমন একটা ভালো লাগেনি। কারণ ফোনটাতে আসলে চেহারার দিকে তেমন একটা নজর দেয়নি। আর এটা তো বুঝতে হবে যে এটা একটা লো বাজেট ফোন কিন্তু সফল ফোনের উদাহরণ।

এধরনের ডিজাইনের জন্য আমি টাকা বা লো বাজেট কেই দায়ী করবো। আর বুঝতে হবে যে যত নামকরা ব্রান্ডই হোক না কেন ফোনের কিছু ত্রুটি কোম্পানি রাখবেই আর তা মানুষ নামক প্রানীটি ধরবেই। আর হয়তো এটাই স্বাভাবিক। তবে ধীরে ধীরে Realme এর ফোন, ব্যবহার কারীদের মন জয় করে নিচ্ছে।

আমার ফোনটির যে বিষয় পছন্দ হয়নি তা হচ্ছে ফোনটি একটু মোটা। কেন জানি ফোনটি কমফোর্টঅ্যাবল লাগেনা। এছাড়া এর প্রসেসর এর কথা যদি বলি তা আরেকটু ভালো দিলে পারতো। তারা snapdragon 460 এর পরিবর্তে helio G70 দিলে সবচেয়ে ভালো করতো।

যদিও হেভি গেমিং ফোন না তারপরেও যাইরো সেন্সর দিলে ভালো হতো। তবে যারা ভালো ব্যাটারি ব্যাক-আপ পেতে চান এবং টুকটাক হালকা গেমিং করেন তাদের জন্য ঠিকঠাক একটা ফোন। তবে হেভি গেমিং এর জন্য্য মোটেও এই ফোনটি সঠিক নয়।

যে অভাব গুলো আছে সেগুলো না থাকলে এই দামে সেরা ফোন হতো। যা তারা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে আমার ধারণা।

তো আমার এই রিভিউ টিউনটি কেমন লাগলো তা আমাকে টিউমেন্ট এ জানাতে পারেন। আপনাদের ভাল লাগলে জোসস দিবেন, যাতে করে আমি সামনে আরো কিছু ফোনের ভালো রিভিউ করতে পারি। এতক্ষন আমার টিউন পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আসসালামু আলাইকুম।

Level 7

আমি মো তানজিন প্রধান। ২য় বর্ষ, বগুড়া আজিজুল হক কলেজ, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 91 টি টিউন ও 65 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।

কখনো কখনো হারিয়ে যাই চিন্তার আসরে, কখনোবা ভালোবাসি শিখতে, কখনোবা ভালোবাসি শিখাতে, হয়তো চিন্তাগুলো একদিন হারিয়ে যাবে ব্যাস্ততার ভীরে। তারপর ব্যাস্ততার ঘোর নিয়েই একদিন চলে যাব কবরে।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস