বিজ্ঞান বই রিভিউঃ ভঙ্গুর পৃথিবী ছেড়ে নক্ষত্রের পানে

আজ এবার বইমেলায় প্রকাশিত একটা বিজ্ঞান বইয়ের রিভিউ নিয়ে হাজির হচ্ছি। বইটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। এটাকে সচেতনাতা মূলক বইও বলা যায়। তো দেখা যাক রিভিউটা।

বই রিভিউ
বইয়ের নামঃ ভঙ্গুর পৃথিবী ছেড়ে নক্ষত্রের পানে
লেখকঃ ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী
প্রকাশকঃ প্রথমা প্রকাশন
১৭০ টাকা
ISBN 978 984 91201 0 0

পৃথিবীই আমাদের একমাত্র বাসস্থান। এখানেই আমাদের আবির্ভাব আর এখানেই আমাদের বিকশিত হওয়া। এই পৃথিবীটা কতই না আদর যত্ন করে আমাদের লালন করেছে তার গর্ভে, থাকতে দিয়েছে, খেতে দিয়েছে, তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে দিয়েছে। কিন্তু আমরা অকৃতজ্ঞের মত নির্মম ভাবে আমাদের এই উপকারি পৃথিবীর অপকার করে যাচ্ছি। আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনে ভোগ বিলাসিতা আনার জন্য ধ্বংস করছি পৃথিবীর পরিবেশ। এতে কিন্তু আমাদেরই ক্ষতি হচ্ছে। আমরা ধীরে ধীরে পৃথিবীকে করে যাচ্ছি বাসের অযোগ্য। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে যাচ্ছি একটা দগ্ধ গ্রহ, যেখানে চারিদিকে শুধু আবর্জনা। এতে করে কিন্তু আমাদের ভবিষ্যতের অস্তিত্ব আশঙ্কার মধ্যে পরে যাচ্ছে। সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে বিলুপ্তির।
মানব সৃষ্টি এসব সমস্যা ছাড়া পৃথিবী বাসের অযোগ্য হবার জন্য আরও অনেক কারনই আছে সেসব এই বইতে বিস্তারিত বলা হয়েচে করেছেন। পৃথিবীতে ৫৪ কোটি বছর আগে বহুকোষী জীবের আবির্ভাব হয়েছে। তখন থেকে প্রাকৃতিক বিভিন্ন কারনে হয়ে এসেছে অনেক গন বিলুপ্তি। প্রায় একেবারে সমূলে উৎপাটিত হয়েছে প্রান। কি কারনে,কখন এবং কিভাবে সেসব গন বিলুপ্তি হয়েছে তার বর্ণনা করা হয়েছে গল্পের মত করে। কালের আবর্তনে বিভিন্ন সভ্যতার ধ্বংসের কারন, এছাড়াও কিভাবে পৃথিবী বাসের অযোগ্য হয়ে যেতে পারে এবং এর থেকে নিস্তারের উপায় কি তার সমাধান এখানে দেখান হয়েছে। প্রান উপযোগী গ্রহ, গ্রহের আয়ুষ্কাল, গোল্ডিলক্স গ্রহের সম্ভাবনা এবং সেটি কি তার বিস্তারিত বিবরন জানা যাবে বইয়ে। ভবিষ্যতে কোন একসময় হয়ত আমাদের এই পৃথিবী ছাড়তেই হবে এমনকি এই সৌরজগতও ছাড়তে হবে এবং ছাড়ার পর আমরা কোথায় যেতে পারি এবং কিভাবে, কোন ধরনের প্রযুক্তি দরকার তার একটি সুন্দর উপস্থাপনা রয়েছে বইটিতে। মূলত এই বইয়ের মূল উদ্দেশ্য হল পৃথিবীর প্রতি আমাদের সহনশীল হওয়া এবং এর যত্ন করা। কারন আমাদের এই পৃথিবীটা অত্যন্ত সংবেদনশীল একটা আবদ্ধ সিস্টেম। তাই অনেক সহজেই এটা আক্রান্ত হতে পারে। বইটা আমাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভাবনার খোরাক যোগাবে। জানতে পারবেন পৃথিবীর অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অবস্থার তুলনামূলক বিশ্লেষণ। এই বইয়ে উল্লেখিত লেখকের আমার ভালো লাগা সবচেয়ে সুন্দর উক্তিটি হল, “ঋণ করে হলেও ঘি দিয়ে ভাত খান”।
বইয়ের বাহ্যিক দিক নিয়ে কিছু বলা দরকার। বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন সাব্যসাচী হাজরা। প্রচ্ছদটা অসাধারন লেগেছে আমার কাছে। এখানে পৃথিবীর ভঙ্গুরতা আর পাখি ধারা নক্ষত্র পানে যাত্রা বোঝানো হয়েছে। প্রথমা প্রকাশনী থেকে বের হওয়া এই বইটির পৃষ্ঠা গুলোও অনেক সুন্দর। বইয়ে উল্লেখিত বিভিন্ন ছবি সহজ ও সুন্দর বাংলায় বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আর বিশেষ করে পুরো বইয়ে কোন প্রিন্ট মিস্টেক নেই। আশা করি সবাই বইটা পড়বেন আর আমাদের স্বাদের পৃথিবীটার কিছুটাও হলেও যত্ন নিতে আগ্রহী হবেন।

Level 0

আমি কামরুজ্জামান ইমন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 33 টি টিউন ও 124 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।

বিজ্ঞানকে ভালবাসি। চাই দেশে বিজ্ঞান চর্চা হোক। দেশের ঘরে ঘরে যেন বিজ্ঞান চর্চা হয় সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

“ঋণ করে হলেও ঘি দিয়ে ভাত খান” চরম মূর্খতাপূর্ণ উক্তি।

    @সরদার ফেরদৌস ইবনে মতিউর ইবনে জব্বার:কথাটা মূর্খতাপূর্ণ ঠিকাছে। কিন্তু এটা কিসের পরিপেক্ষিতে বলা হয়েছে তা আপনি জানলে হয়ত এমন মন্তব্য করতে পারতেননা। এটা কিছু লোকের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে। যারা বর্তমানের সুখ নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দেয়।

আপনার পূর্ববর্তী কিছু টিউন পড়েছি কিন্তু সবচেয়ে বেশি যেটা খারাপ লেগেছে এবং যার জন্য আসলে কমেন্ট করতে ইচ্ছা হয়নি সেটা হল- বানান ভুলের সমাহার……ভেবেছিলাম নিজেই সামলে নেবেন কিন্তু এই টিউনেও ভাষার ব্যবহারে যথেচ্ছাচার দেখলাম…..টেকি টিউন করা মানে এই না যে ভাষার কিংবা ব্যাকরণের ধর্ষণ করে ছাড়বেন!!!

*** এতাকে, সচেতনাতা, পরিবেষ, ব্যাসের, আশঙ্কার মধ্যে পরে, মানব সৃষ্টি, যানা, সাব্বশাচি হাজরা (নামের বানানটা মালিকের অনুমতি নিয়ে দূষিত করবেন!!)…….এগুলোক স্রেফ টাইপো বলে পার পাবার চেষ্টা করবেন না কারণ এগুলো নেহায়েতই অবহেলা- যত কষ্ট করে টিউন করেন তার অর্ধেকটা যত্ন তো ভাষাটার প্রাপ্য নাকি??……আপনি ভুল বানানের টিউন করতে করতে যখন সেলিব্রিটি হয়ে যাবেন তখন অনুজ টিউনারদের জন্য কি ধ্বংসাত্নক বর্ণমালা রেখে যাবেন চিন্তা করতে পারছেন??

*** কড়া মন্তব্যের জন্য দু:খিত……কিন্তু এত কষ্ট করে শোধরানোর এই প্রচেষ্টাতে নিশ্চয়ই তিক্তার পাশাপাশি অনুরাগের মিষ্টতাও উপলব্ধি করতে পারছেন 🙂

    @নিওফাইট নিটোল: আমি আপনার কড়া কথার জন্য মোটেও দুঃখিত নই। বরং দুঃখিত এই জন্য যে, আপনি পূর্বে আমাকে সচেতন না করার বদলে এড়িয়ে গিয়েছেন।

    আসলে আমি এই ব্যাপারটা খেয়াল করি নি। নিজের ভুল নিজেই ধরাটা একটু মুশকিল কিনা। তাছাড়া এই বিষয়ে আগে আমাকে কেউই সতর্ক করেনি। তাই আমিও কিছু বুঝতে পারি নি। এখন যেহেতু সতর্ক করলেন তাই আমি পরবর্তীতে নিশ্চই বানানের ব্যাপারে লক্ষ রাখব।

    আর একটা বিষয় নিশ্চই দেখেছেন যে আমার টিউনগুলো সবই ফেব্রুয়ারি মাসে করা। আমার এখন এসএসসি পরীক্ষা চলছে। এর মধ্যেই টিউন করার জন্য ভুলের পরিমান বেশি। অবশ্য পরীক্ষার পরে টিউন করতে পারতাম। কিন্তু ততদিনে টপিকস গুলো ভুলে যেতাম। আর আমি যেহেতু নতুন লেখক তাই ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। আপনারা না শুধরে দিলে কে শুধরে দিবে? আশা করি ভবিষ্যতে আর এমন হবে না। আর পূর্বের ভুলগুলোও সময় পেলে শুধরে নিব।

    সর্বোপরি আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।