আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে জানাই দুর্গা পুজার শুভেচ্ছা। আবার আপনাদের মাঝে ফিরে আসলাম। কিছু দিন আগে পুরনো টিউন গুলো দেখতে গিয়ে আবিস্কার করলাম আমার পুরনো টিউনের কিছু কিছু পিকচার নতুন টিউনের পিকচার দিয়ে রিপ্লেস হয়ে গিয়েছে মানে আগের কিছু টিউন গুলো প্রায় পুরোটাই বাদ,
বিশেষ করে আমার হ্যাকিং টিউটোরিয়াল গুলো। সংশ্লিষ্ট এডমিনকে সাথে সাথে জানিয়ে ছিলাম। বাট কাজ হয়নি। টিটির এডমিন বলে কথা! যাই হোক আর কিছু বলে তিক্ততা বাড়াতে চাই না। এই টিউনটি তাই পুনরায় এডিট করতে হয়েছে। কতটুকু আগের মত হয়েছে বলতে পারবো না।
কস্টের টিউন নস্ট হলে তা যে কত কস্টের বিষয় তা সংশ্লিষ্ট টিউনারই জানেন। যাই হোক কস্টের কথা বলে আর পরিবেশ ভারী করতে চাইনা। পুরোনো মদ নতুন বোতলে কেমন লাগে সেটাই দেখার বিষয়। যাই হোক ফিরে যাই টিউনে।
নিশ্চয় খেয়াল করেছেন কুকুর মুখ হাঁ করে জিহ্বা বের করে হাঁপাচ্ছে।
মাঝেমধ্যেই পাখির পালক ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টাও কারও চোখ এড়িয়ে যাওয়ার কথা নয়।
ব্যাঙের শীতনিদ্রার কথাও তো অনেকেই জানেন। নায়ক ভিন্ন ভিন্ন, তারপরও কি এই ঘটনাগুলোর মধ্যে কোনো মিল আছে? আছে, সেই মিলটার নামই হলো তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা।
পৃথিবীর সর্বত্র তাপমাত্রা সমান নয়। এন্টার্কটিকা মহাদেশে যেমন হিমশীতল ঠান্ডা, তেমনি মরুভূমি অঞ্চলে দুঃসহ গরম। আবার ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কোনো নির্দিষ্ট এলাকার তাপমাত্রা ও আর্দ্রতায় পরিবর্তন আসে। মরুভূমিতে দিনের বেলায় প্রচণ্ড গরম, রাতে কনকনে শীত। পরিবেশের এই বৈচিত্র্যে টিকে থাকতে প্রাণিজগতের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণব্যবস্থায় তৈরি হয়েছে বিশাল বৈচিত্র্য। প্রতিটি প্রজাতির ক্ষেত্রে শারীরিক তাপমাত্রার একটি নির্দিষ্ট সীমা আছে, যার মধ্যে শরীরের সব জৈবিক ক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে সম্পন্ন হতে পারে। যে উপায়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়, সেটার নামই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা।
কিছু প্রাণীর দেহের তাপমাত্রা পরিবেশের ওপর নির্ভরশীল নয়। পরিবেশের তাপমাত্রা যা-ই হোক না কেন, তাদের বেঁচে থাকার জন্য তাপমাত্রা একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে হয়।
এসব প্রাণী উষ্ণ রক্তের প্রাণীর নামে পরিচিত।
তাপমাত্রা সব সময় একই রকম থাকে বলে এদের সমোষ্ণ প্রাণী বলে।
কোষীয় বিপাকের মাধ্যমে শরীরের ভেতর থেকে তাপ উৎপাদন করে বলে এরা এন্ডোথার্ম নামেও পরিচিত।
অন্যদিকে শীতল রক্তের প্রাণীদের তাপমাত্রা সরাসরি পরিবেশের ওপর নির্ভরশীল।
এদের শরীরের তাপমাত্রা পরিবেশের তাপমাত্রার সমান হয়ে থাকে।
উষ্ণ থাকার জন্য এরা পরিবেশের বিভিন্ন নিয়ামককে ব্যবহার করে।
এদের শরীরের ভেতরে কোষীয় বিপাকের ফলে কোনো তাপ উৎপন্ন হয় না বললেই চলে।
এরা এক্টোথার্ম নামে পরিচিত। যেসব প্রাণীর শরীরের তাপমাত্রা পরিবেশভেদে একেক সময় একেক রকম থাকে, তাদের বলে বিষমোষ্ণ।
বেশির ভাগ স্থলচর প্রকৃতপক্ষে বিষমোষ্ণ। সব স্তন্যপায়ী ও পাখি সমোষ্ণ; আর সব প্রাণী বিষমোষ্ণ।
বিষমোষ্ণদের বিপাকক্রিয়ায় যেহেতু কোনো উল্লেখযোগ্য তাপ উৎপন্ন হয় না, তাদের প্রধান সমস্যা হলো কী করে তাপ ধরে রাখা যায়, সেটা নিয়ে।
সমোষ্ণদের বিপাকক্রিয়ায় যেহেতু যথেষ্ট পরিমাণ তাপ এমনিতেই উৎপন্ন হয়, তাই তাদের সমস্যাটি মূলত শরীর থেকে তাপ কী করে বের করা যায়, সেটা নিয়ে।
সমোষ্ণ এবং বিষমোষ্ণদের বিপাকক্রিয়ার মূল পার্থক্যের কারণ হলো দেহের কোষে থাকা মাইটোকন্ড্রিয়া।
মাইটোকন্ড্রিয়া হলো কোষের শক্তিকেন্দ্র। খাবার পুড়িয়ে তাপ উৎপন্ন করার কাজটা এখানেই হয়।
সমোষ্ণদের কোষে মাইটোকন্ড্রিয়ার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি।
সব মিলিয়ে সমোষ্ণদের দেহে বিষমোষ্ণদের তুলনায় চার থেকে আট গুণ বেশি তাপ উৎপন্ন হয়।
কোনো প্রাণীর শরীরে যে হারে তাপ উৎপন্ন হয়, তা বিপাকক্রিয়ায় উৎপাদিত শক্তির সমানুপাতিক। আর বিপাকক্রিয়ার পরিমাণ দেহের কোষের সংখ্যার সমানুপাতিক, যা কি না দেহের আয়তনের সমানুপাতিক। প্রাণী শরীর থেকে যে হারে তাপ হারায় তা শরীরের পৃষ্ঠতলের সমানুপাতিক, কারণ প্রাণী তাপ হারাতে পারে কেবল পৃষ্ঠ আর পরিবেশের মধ্যে তাপীয় আদান-প্রদানের ফলে।
কোনো ঘন বস্তুর আকার যত বড় হয়, তার আয়তন তত বাড়ে।
কিন্তু তার পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল সে অনুপাতে বাড়ে না।
যেমন: একটি গোলকের ব্যাসার্ধ দ্বিগুণ করলে তার আয়তন আটগুণ হয় কিন্তু পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল হয় চার গুণ। ব্যাসার্ধ যদি হয় তিন গুণ, তবে আয়তন হবে ২৭ গুণ, যেখানে পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল হবে মাত্র নয় গুণ। তাই কোনো প্রাণীর আয়তন যত বেশি হবে, তার শরীরে তাপ তত বেশি উৎপন্ন হবে কিন্তু সে অনুপাতে ক্ষেত্রফল কম হওয়ায় প্রাণীটি পরিবেশে তাপ ছাড়বে কম। তাই প্রাণীর আকার যত ছোট হয়, তাপ ধরে রাখা তার জন্য তত কঠিন। আর বড় প্রাণীর পক্ষে তাপ ত্যাগ করা কঠিন।
টিকটিকি এবং সাপ সকালে রোদ পোহায়, দুপুরে ছায়ায় আশ্রয় নেয় এবং সন্ধ্যায় অস্তগামী সূর্যের নিস্তেজ আলোয় আবার বেরিয়ে আসে।
মৌমাছিসহ অনেক পোকামাকড় না উড়েও কখনো কখনো প্রচণ্ডভাবে পাখা ঝাপটায়। এতে তাদের পাখার সঙ্গে যুক্ত পেশিতে তাপ উৎপন্ন হয় এবং বাতাসে মৌচাক শীতল হয়। আবার শীতে মৌমাছিরা মৌচাকের মধ্যে একজায়গায় জড়ো হয়ে কাঁপতে থাকে। তখন সম্মিলিত কাঁপুনিতে যে তাপ উৎপন্ন হয়, তা চাকের তাপমাত্রা বাড়ায়।
কিছু পোকা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পুরো সময় কম্পাসের মতো উত্তর-দক্ষিণমুখী হয়ে থাকে। এতে করে সকাল ও সন্ধ্যায় সূর্যালোক তীর্যকভাবে পড়ায় তারা যথেষ্ট তাপ পায় কিন্তু দুপুরে লম্বভাবে পড়ে বলে তাপ সহজে হারায় না।
গরমে এরা অধিক উষ্ণতা থেকে বাঁচতে শরীরের বিপাকের হার কমিয়ে ফেলে, বেশি অলস থাকে।
এ অবস্থায় ঘুম একটি উল্লেখযোগ্য পন্থা।
অনেক প্রাণী এ সময় আবার মুখ হাঁ করে দেয় (জলহস্তী)
অথবা জিহ্বা বের করে দেয় (কুকুর)।
পাখিরাও একইভাবে ঠোঁট ফাঁক করে হাঁপায়। ফলে শরীরের অতিরিক্ত তাপ পরিবেশে চলে যায়।
তা ছাড়া পাখিরা তাদের পাখা ও পালক এমনভাবে মেলে ধরে, যাতে তাদের শরীরের অধিক পরিমাণ পৃষ্ঠ বাতাসের সরাসরি সংস্পর্শে আসতে পারে।
অধিকাংশ স্তন্যপায়ী প্রাণীর দেহে ঘামগ্রন্থি থাকে। তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বাড়লে ঘাম হয় এবং দেহ শীতল থাকে। পাখিরা সমোষ্ণ হলেও তারা ঘামে না।
পানিতে যেসব প্রাণী বাস করে, তাদের জন্য কিন্তু ঠান্ডা থাকার চেয়ে উষ্ণ থাকাটাই চ্যালেঞ্জিং। কারণ, সাগরের যত নিচে যাওয়া যায়, তাপমাত্রা ততই কমতে থাকে।
পানির আপেক্ষিক তাপ বা তাপ পরিবহন ক্ষমতা অনেক বেশি। ফলে সমোষ্ণ প্রাণীরা সাগরে, বাতাসের চেয়ে ২৫ গুণ দ্রুত তাপ নির্গত করে। তাই উষ্ণ থাকার জন্য জলজ প্রাণীদের বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হয়।
যেমন: ছোট তিমি, সি-লায়ন, ডলফিন, সিল ইত্যাদি প্রাণীর দেহে চামড়ার পরেই মোটা চর্বির স্তর থাকে। ফলে তাপ সহজে বের হতে পারে না।
যেসব প্রাণী নিম্ন তাপমাত্রার এলাকায় বাস করে, তাদের দেহের পানি জমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সাগরের বেশ কিছু মাছ ও প্রাণীর শরীরে শৈত্যরোধী জাতীয় পদার্থ থাকে। যার ফলে তাদের দেহে পানি জমাট বাঁধে না বা বরফে পরিণত হয় না।
পাখিদের ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে দেখা যায় যে তারা পালক ছড়িয়ে দেয়। তাদের শরীরে এক ধরনের গ্রন্থি থাকে, যা পালকের লুব্রিকেশনের কাজ করে। এ কারণে পাখির পালক একটু তুলতুলে এবং শরীর থেকে তাপ বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে।
মানুষের ক্ষেত্রে চামড়ার ঠিক নিচে চর্বির একটি স্তর শরীরে তাপ ধরে রাখার এক রকমের অন্তরক হিসেবে কাজ করে। তা ছাড়া শীতে লোম দাঁড়িয়ে যাওয়াটাও তাপ ধরে রাখার একটি পদ্ধতি। এতে লোমগুলোর মধ্যে বাতাসের একটি স্তর আটকা পড়ে। আমরা সোয়েটার পরলে একইভাবে উলের বুনটের মধ্যে বাতাস আটকে গিয়ে আমাদের উষ্ণ রাখে। শীতে কাঁপুনি আসলে মাংসপেশিগুলোর দ্রুত ও অনিয়মিত সংকোচন-প্রসারণ। এর ফলে মাংসপেশিতে বিপাক-হার বেড়ে যায় এবং বেশি তাপ উৎপন্ন হয়। গরমে যেমন চামড়ার ঠিক নিচে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়, তেমনি ঠান্ডায় এর উল্টোটা ঘটে। ফলে শরীর থেকে তাপক্ষয় হ্রাস পায়।
শীতকালীন সুরক্ষা ব্যবস্থা। এদের এই ব্যবস্থার নাম হাইবারনেশন। অনেক প্রাণীই শীত থেকে বাঁচতে হাইবারনেশন পদ্ধতির আশ্রয় নেয়। হাইবারনেশন হচ্ছে শীতকালে প্রাণীদের লম্বা, গভীর এক ঘুমের নাম। প্রাণীরা সুবিধামতো একটা গর্ত খুঁজে নিয়ে একটানা অনেকদিন ঘুমিয়ে থাকে।এসময় প্রানীদের দেহের তাপমাত্রা কমে যায়। শ্বাস প্রশ্বাসের গতি ও রক্ত চলাচল এতোই কমে যায় যে, দেখলে মনে হবে প্রাণীটি বোধহয় মারা গেছে। কিন্তু আসলে এসব প্রাণী এসময় ঘুমিয়ে থাকে। খুব কম তাপমাত্রায় অনেক সময় বিষমোষ্ণদের বিপাক ক্রিয়ার হার এতই কমে যায় যে তারা এক রকম জীবন্মৃত অবস্থায় চলে যায়। এটাই তাদের শীতনিদ্রা।
সমোষ্ণদের মধ্যে সাধারণত ইঁদুরজাতীয় প্রাণী ও ছোট পাখিতে শীতনিদ্রা দেখা যায়। প্রয়োজনীয় তাপ উৎপাদনের জন্য বিপাকক্রিয়ার হার উচ্চমাত্রায় রাখার জন্য যে হারে খাওয়াদাওয়া করা উচিত, সেটা তাদের পক্ষে কুলিয়ে ওঠা সম্ভব হয় না।
এ অবস্থায় তারা শরীরের অন্য সব কাজ বন্ধ করে বিপাকক্রিয়ায় উৎপন্ন সমস্ত শক্তি ব্যয় করে তাপশক্তি উৎপাদনে এবং জীবনরক্ষাকারী ব্যবস্থাগুলো কোনো রকমে চালিয়ে রাখতে। ছোট আকারের যেসব সমোষ্ণ প্রাণীতে শীতনিদ্রার বৈশিষ্ট্যটি উদ্ভূত হয়েছে, তারাই টিকে আছে, বাকিরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সাধারনত শীতল রক্তের প্রাণীরা (যেমন ব্যাঙ, সাপ) শীতকালে এ পদ্ধতির আশ্রয় নিয়ে থাকে। তাই এসময় বাইরে ব্যাঙ বা সাপ তেমন একটা দেখা যায় না। তবে উষ্ণ রক্তের প্রাণীদের অনেকেও শীতকালে হাইবারনেশনের আশ্রয় নেয়।
কাঠবিড়াল, বাদুড়, ধেড়ে ইদুর, ছোট ইদুর, সাদা গলার পোরউইল পাখি ইত্যাদি হাইবারনেশনের মাধ্যমে শীত থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখে। শীতনিদ্রার সময় প্রাণীরা শরীরের জমানো চর্বি পুড়িয়ে কোনরকমে বেঁচে থাকে। এ দলে সরীসৃপ প্রাণী যেমন গিরগিটি, কচ্ছপ এবং বেশ কিছু পোকামাকড় আছে।
বিষমোষ্ণদের বিপাকক্রিয়ার হার খুব কম। তাই তাদের আয়তন যা-ই হোক, তাপ উৎপাদনের পক্ষে তা খুব একটা পার্থক্য তৈরি করে না। এ জন্য তাপ নিয়ন্ত্রণের বেলায় তাদের ক্ষেত্রফলটাই জরুরি, আয়তন নিয়ে মাথা না ঘামালেও চলে। বিভিন্ন তাপমাত্রায় টিকে থাকার দিক দিয়ে বিষমোষ্ণরা যেমন সুবিধা পায়, তেমনি বিপাকক্রিয়ার হার কম হওয়ায় তারা অসুবিধায়ও পড়ে।
তারা সমোষ্ণদের মতো একটানা পরিশ্রম করতে পারে না। লক্ষ করলে দেখবেন, টিকটিকি একটানা অল্পসময় ছুটে গিয়ে হঠাৎ দাঁড়িয়ে যায়। তারপর আবার একটু ছোটে এবং আবার দাঁড়ায়।
এই সীমাবদ্ধতার কারণে বিষমোষ্ণরা এমন অনেক কাজ করতে পারে না, যা সমোষ্ণরা সহজেই পারে। যেমন: শিকারের পেছনে অনেকক্ষণ ধরে ছোটা বা শিকারির কাছ থেকে অনেকক্ষণ ধরে পালানো। কম তাপমাত্রায় এনজাইমের কাজ তথা বিক্রিয়ার হার কমে যায় বলে বিষমোষ্ণদের কাজকর্মের গতিও কমে যায়।
যেমন: শীতকালে মশা দ্রুত উড়তে পারে না। আবার বিপাক কম বলে বিষমোষ্ণদের খাদ্যের চাহিদা একই আকারের একটি সমোষ্ণদের তুলনায় অর্ধেক থেকে এক-দশমাংশ।
বিষমোষ্ণদের যেগুলো অসুবিধা, সমোষ্ণদের সেগুলোই সুবিধা। আবার, সমোষ্ণদের যেগুলো অসুবিধা, বিষমোষ্ণদের সেগুলোই সুবিধা। বিষমোষ্ণ থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে সমোষ্ণদের উদ্ভব হওয়ার সময় এমনটাই ঘটেছে। সমোষ্ণদের উদ্ভব বিবর্তনের ধারায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কারণ এটি ছাড়া পাখি ও স্তন্যপায়ীদের উদ্ভব ঘটা সম্ভব হতো না। তাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন প্রাণী যেসব বিচিত্র আচরণ করে তা আপাতদৃষ্টিতে বেশ বুদ্ধিদীপ্ত মনে হলেও এগুলো সবই আসলে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মতো একটি অন্ধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিবর্তনের ফল।
শীত এলেই সবার মধ্যে নানারকম প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। অতিরিক্ত শীত থেকে বাঁচতে মানুষ লেপ কম্বল, সোয়েটার, জ্যাকেট বা অন্যান্য গরম পোষাক ব্যবহার শুরু করে। আবার ভেসলিন, লোশন ও নানারকম তেল হাতে পায়ে গায়ে মেখে মানুষ শীতের কামড় থেকে দেহকে রক্ষা করতে চেষ্টা করে। ফলে হাত পা বা ঠোঁটের চামড়া ফাটে না।
এতো গেল মানুষের শীত থেকে বাঁচার প্রস্তুতির কথা। কিন্তু, কোন রকম সোয়েটার-জ্যাকেট বা লেপ-কম্বল গায়ে না দিয়েও প্রাণীরা দিব্যি বেঁচে থাকে কীভাবে?
শীত থেকে বাঁচার জন্য প্রাণীদের রয়েছে প্রকৃতি প্রদত্ত নিজস্ব কিছু পদ্ধতি। আর এসব পদ্ধতির কারণেই তারা এমনকি বরফের দেশে তীব্র শীতেও বেঁচে থাকে। একেক প্রাণী শীত থেকে বাঁচতে একেক পদ্ধতির আশ্রয় নেয়। তাদের এইসব পদ্ধতিকে মোটামুটি তিন ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলো হলো-
আসুন এগুলো সম্পর্কে একটু জেনে নেয়া যাক।
হয়তো খেয়াল করে দেখেছেন, প্রতি বছর শীতকালে অনেক নাম না জানা পাখিতে ভরে যায় আমাদের আশপাশের খাল-বিল ও জলাশয়গুলো।
সুদুর উত্তরমেরু, সাইবেরিয়া থেকে এসব যাযাবর পাখি হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আমাদের দেশে আসে। এদের বলে মাইগ্রেটরি বার্ডস বা পরিযায়ী পাখি।
এসব পাখিদের মধ্যে বালি হাঁস, খয়রা চকাচকি, কার্লিউ, কাদাখোচা, গডউইত উল্লেখযোগ্য।
শীতপ্রধান অঞ্চলের হলেও শীতকালের প্রচন্ড শীত এসব পাখি সহ্য করতে পারে না। আবার তাদের এলাকায় এসময় খাদ্যাভাবও দেখা যায়। তাই এসব পাখি দলবল নিয়ে অন্য দেশে চলে আসে, যেখানে ঠান্ডা একটু কম।
আমাদের দেশের মানুষগুলো বেশী অতিথিপরায়ন বলে এসব পাখিকে আদর করে অতিথি পাখি নাম দেয়া হয়েছে। এসব অতিথি পাখি বসন্ত এলে আবার নিজের দেশে ফিরে যায়।
অতিথি পাখিদের সঙ্গে এই অমানবিক আচরণের কিছু কুফলও আছে। সংক্ষেপে বললে, নির্বিচারে অতিথি পাখি মারার কারণে আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নানাভাবে নষ্ট হয়। যেমন, অতিথি পাখি খাদ্য হিসেবে অনেক পোকামাকড় ও ছোট ছোট জলজ উদ্ভিদ খায়। এতে পোকামাকড় প্রাকৃতিকভাবেই অনেকটা নিয়ন্ত্রনে চলে আসে। আবার অতিথিপাখির মল জলাশয়ের মাছেদের প্রিয় খাবার।
আবার অনেক সময় অতিথি পাখিরা শিকারীর ভয়ে কোন কোন এলাকায় আর আসতে চায় না। ফলে চমৎকার প্রাকৃতিক দৃশ্য থেকে আমরাই বঞ্চিত হই। কারণ ঝাক বেধে অতিথি পাখিরা যখন তাদের স্বরে ডাকতে ডাকতে উড়ে চলে সেটা অবশ্যই পৃথিবীর সুন্দরতম দৃশ্যের একটি।
শুধু পাখিই নয়, আরো বেশকিছু প্রাণী আছে যারা ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পাড়ি দেয় হাজার হাজার মাইল পথ। তার মধ্যে তিমি, ব্লু ফিশ, লেমিংস, লবস্টার, কচ্ছপ, ঈল, মোনার্ক প্রজাপতী, প্লোভার পাখি সহ আরো অনেকেই আছে।
এই সম্পর্কে বিস্তারিত আগেই আলোচনা করা হয়েছে।
অনেক প্রাণী শীতের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে। গরম পোশাক কেনার পয়সা নেই তাতে কী। প্রাকৃতিকভাবেই যুদ্ধ করার মতো দৈহিক অবস্থা এদের আছে। এদের দেহে চামড়ার নীচে চর্বির অনেক মোটা স্তর থাকায় এরা সহজে শীতে কাবু হয় না। চর্বির এই স্তরকে বলে ব্লাবার। এই ব্লাবার তাদের দেহকে শীতেও গরম রাখে।
এসব প্রাণীদের মধ্যে আছে মেরু ভালুক, সীল এবং তিমি ইত্যাদি।
তাছাড়া দেহে অনেক ঘন লোমও এদের শীতের হাত থেকে বাঁচায়। শুনলে আশ্চর্য হতে হবে,
এসব প্রাণীর কারো কারো দেহের এক ইঞ্চি জায়গায় গড়ে এক মিলিয়ন লোম থাকে। মানুষের মাথায় গড়ে এক মিলিয়ন করে চুল বা লোম থাকে।
এবার তুলনা করে বলুন, ওদের কি আর সোয়েটার বা জ্যাকেট পড়ার দরকার আছে? যেমন মেরু ভালুক এবং মেরু শেয়ালের দেহে এরকম ঘন লোম দেখা যায়।
তাছাড়া অন্য এলাকার প্রাণীদের চেয়ে শীতপ্রধান অঞ্চলের প্রাণীদের দেহ গঠনেও অনেক পার্থক্য আছে। যেমন, মেরু শেয়ালের, এদের দেহ অন্য এলাকার শেয়ালের চেয়ে একটু গোলগাল ও স্থুলাকার। এ ধরনের দেহ তাপমাত্রা সঞ্চয় করে রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া এদের নাকমুখ একটু ছোটখাটো এবং কানটাও ছোট ও গোলাকৃতির। এসব বৈশিষ্ট্যের কারণে তাদের দেহ থেকে তাপ বের হয় কম।
আগেই জেনেছেন এদের সারা দেহ ঘন লোমে ঢাকা। একইভাবে এদের পায়ের পাতাও লোমে ঢাকা। এদিকে মরু শেয়াল যখন ঘুমায় তখন এদের লম্বা লোমশ লেজ দিয়ে দেহকে জড়িয়ে নেয়। অনেকটা মাফলারের মতো করে। তাই শুণ্যের নিচের তীব্র শীতেও ওরা দিব্যি আরামেই থাকতে পারে।
সময় নিয়ে টিউনটি, গুছিয়ে করার চেষ্টা করেছি।কতটুকু পেরেছি তা আপনারা ভাল বলতে পারবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখবেন এবং একটা অনুরোধ, ভাল মন্দ যে কোন ধরনের কমেন্ট এবং সমালোচনা বেশি বেশি করবেন,যার ফলে এই টিউনের ভুল গুলো আমার চোখে পরবে এবং নেক্সট টিউনে সেগুলো শুধরে নেওয়ার চেস্টা করবো ফলে ভবিষ্যতে আরও ভাল টিউন আপনাদের উপহার দিতে পারব।
ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ সবাই কে।
আকাশ
আমার আগের টিউন গুলি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
আমি শুভ্র আকাশ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 72 টি টিউন ও 1922 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ফাটাফাটি টিউন করেছেন ভাই।
তা আপনার টেরা-ড্রাইভটা Sata নাকি Pata ? 🙂
সবাইকে পূজার শুভেচ্ছা