সবাইকে অনেক অনেক সুবেচ্ছা ও অভিনন্দন । আসা করি সবাই ভাল আছেন আজ অনেক দিন পর আপনাদের মাঝে ফিরে এলাম । এক সময় দিনে কত বার যে টেকটিউন্সে আসতাম তার কোন ঠিক নেই। আর সবচেয়ে যেটা পছন্দ করতাম তা হল টিউন করতে ... আর আরও ভাল লাগত যখন ভাল মন্তব্য পেতাম।।এই টিউন করার জন্য আসলে অন্যরকম একটা অনুভুতি কাজ করত ।কিন্তু এখন সময় এবং আরও কিছু পারিবারিক সমস্যার দরুন টিউন করতে পারছি না । তবে আমি চেস্টা করব মাঝে মাঝে আপনাদের কিছু ভাল টিউন উপহার দেওয়ার জন্য । আমি আজ অপেক্ষা করছিলাম কখন টিউন টি করতে পারব । সময় কি হবে সকলকে জানানোর জন্য ... শেষ পর্যন্ত পারলাম । আমার আজকের টিউন উৎসর্গ করলাম আমার খুবই প্রিয় গায়ক , মানুষ , মুক্তিযোদ্ধা , আজম খান ......
আজ আমি যে বিষয় নিয়ে টিউন করতে যাচ্ছি তা সম্পরকে আপনার টিউনের টাইটেল থেকে জানতে পেরেছেন আসা করি ... আজ আমাদের জন্য অনেক বড় একটা দুঃখের দিন । বেদনার দিন।। আজ আমরা সকলে কি যে হারিয়ে ফেলেছি তা অনেকেই এখন ও উপলব্ধি করতে পারেন নি।। আজ আমরা আমাদের বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচিত পপ গায়ক আজম খান কে হারিয়ে ফেলেছি।। আমাদের যে দেশের স্বাধীন করার জন্য এই আজম খান ২১ বছর বয়সে যুদ্ধে জান এবং দেশ কে স্বাধীন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন । আমারা তাকে কি দিতে পেরেছি?? আমদের জাতি এবং জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন রইল তিনি যখন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তখন ও কি তিনি তার প্রাপ্য সম্মান পেয়েছেন?? আমরা কি তাঁকে তার প্রাপ্য সম্মান দিতে পেরেছি? হায়রে আমরা মানুষ !! আমাদের কি কিছুই করার ছিল না ?? তাঁকে বাঁচানর জন্য শেষ চেস্টা ও কি আমরা করেছিলাম ? যে আজম খান এক সময় সকলের সবচেয়ে প্রিয় গায়ক ছিলেন এখনও অনেক গায়কদের আইডল তার কি কোনই মর্যাদা নেই ?? তিনি ক্যান্সারের সাথে লড়াই করছিলেন আর আমরা কেবল তার সেই অসুস্থতার খবর প্রচার করছিলাম ।।কিন্তু সত্যি কি তাঁকে কোন সাহায্য করতে চেস্টা করেছিলাম ।। তাকে আর্থিক ভাবে দৈহিক ভাবে সাহায্য করতে পেরেছিলাম ?? আমাদের সরকার ??? সে তো ।। থাক এই সব পলিটিক্স এর নাম নিয়ে টেকটিউন্স কে আমি নোংরা করতে চাই না ...
কি হারালাম আমরা আজ ??
আমরা কি হারালাম আজ... আজ হারালাম একজন মুক্তিযোদ্ধা ...যিনি কিনা অকাতরে তার জীবনের মায়া ত্যাগ করে চলে গিয়েছিলেন যুদ্ধে ।। ফিরে এসেছেন দেশ স্বাধীন করে ।। তারপর বানিয়েছেন ব্যান্ড দল ।। যার দরুন তিনি পরিচিত পপ গুরু হিসেবে।। আমরা কি আর পাব এই রকম কোন আজম খান।। আর কি কখন ও পারব সুনতে তার গান ।। সেই হৃদয় মাতানো গান গুলি । যার কথা গুলো বাস্তব ভিত্তিক।। যিনি সবার মডেল । তার নিজস্ব গানের পধতি , অঙ্গাগিক নাচের স্টাইল দেখব কি কখন ও ।। আর ??
সকল ভক্ত দের কান্নার জলে ভাসিয়ে দিয়ে চলে গেলেন তিনি ।। আর ফিরে আসবেন না ।। আর সুনতে পাব না তার সেই সালেকা মালেকা , বাংলাদেশ , সহ মন পাগল করা গান গুলো ।। সত্যি কি তিনি আর নেই? আমাদের যে বিশ্বাস হচ্ছে না !!
আজম খান (জন্ম ফেব্রুয়ারি ২৮, ১৯৫০; মৃত্যু: ০৫ই জুন, ২০১১, সিএমএইচ, ঢাকা) একজন জনপ্রিয় বাংলাদেশী গায়ক। তাঁর পুরোনাম মাহবুবুল হক খান । বাবার নাম আফতাবউদ্দিন আহমেদ,মা জোবেদা খাতুন । তাঁকে বাংলাদেশের পপ ও ব্যান্ড সঙ্গীতের একজন অগ্রপথিক বা গুরু হিসেবে গণ্য করা হয়।আজম খানের জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ (রেল লাইনের ঐ বস্তিতে), ওরে সালেকা, ওরে মালেকা, আলাল ও দুলাল, অনামিকা,অভিমানী, আসি আসি বলে ইত্যাদি। সর্বোপরি তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকায় সংঘটিত কয়েকটি গেরিলা অভিযানে তিনি অংশ নেন। প্রথম কনসার্ট বাংলাদেশ টেলিভিশনে ১৯৭২ সালে।
জন্ম আজিমপুর ১০ নং কলোনীতে। ১৯৫৫ সালে প্রথমে আজিমপুরের ঢাকেশ্বরী স্কুলে বেবিতে ভর্তি হন। এরপর ১৯৫৬ সালে কমলাপুরের প্রভেনশিয়াল স্কুলে প্রাইমারিতে ভর্তি হন। তারপর ১৯৬৫ সালে সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুলে বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হন। এই স্কুল থেকে ১৯৬৮ সালে এসএসসি পাস করেন। কলেজ: ১৯৭০ সালে টি অ্যান্ড টি কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। মুক্তিযুদ্ধের পর পড়ালেখায় আর অগ্রসর হতে পারেননি। ১৯৫৬তে তার বাবা কমলাপুরে বাড়ি বানান। এরপর থেকে সেখানে বসতি তাদের।
বিয়ে করেছিলেন ১৯৮২ সালে। সহধর্মিনী মারা যাবার পর থেকে একাকী জীবন। আজম খান দুই মেয়ে এবং এক ছেলের জনক। এছাড়া আছেন চার ভাই,এক বোন ।
১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানের সময়ে আজম খান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তখন তিনি ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর শোষণের বিরুদ্ধে গণসঙ্গীত প্রচার করেন।১৯৭১ সাকে আজম খানের বাবা আফতাব উদ্দিন খান সচিবালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।বাবার অনুপ্রেরণায় যুদ্ধে যাবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন আজম খান। ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরু হলে তিনি পায়ে হেঁটে আগরতলা চলে যান।আগরতলার পথে তার সঙ্গী হন তার দুই বন্ধু। এসময় তার লক্ষ্য ছিল সেক্টর ২ এ খালেদ মোশাররফের অধীনে যুদ্ধে যোগদান করা। আজম খান মুক্তি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন ২১ বছর বয়সে। তার গাওয়া গান প্রশিক্ষণ শিবিরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণ যোগাতো। তিনি প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ভারতের মেলাঘরের শিবিরে।যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষে তিনি তিনি কুমিল্লায় পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে সমুখ সমরে অংশ নেয়া শুরু করেন।কুমিল্লার সালদায় প্রথম সরাসরি যুদ্ধ করেন। এর কিছুদিন পর তিনি পুনরায় আগরতলায় ফিরে আসেন। এরপর তাকে পাঠানো হয় ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য। আজম খান ছিলেন দুই নম্বর সেক্টরের একটা সেকশনের ইনচার্জ। আর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল খালেদ মোশাররফ। ঢাকায় তিনি সেকশান কমান্ডার হিসেবে ঢাকা ও এর আশেপাশে বেশ কয়েকটি গেরিলা আক্রমণে অংশ নেন। আজম খান মূলত যাত্রাবাড়ি-গুলশান এলাকার গেরিলা অপারেশান গুলো পরিচালনার দায়িত্ব পান। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল তার নেতৃত্বে সংঘটিত "অপারেশান তিতাস" তাদের দায়িত্ব ছিল ঢাকার কিছু গ্যাস পাইপলাইন ধ্বংস করার মাধ্যমে বিশেষ করে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল (বর্তমান শেরাটন হোটেল) ,হোটেল পূর্বানীর গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটানো। তাদের লক্ষ্য, ঐ সকল হোটেলে অবস্থানরত বিদেশি রা যাতে বুঝতে পারে যে দেশে একটা যুদ্ধ চলছে।এই যুদ্ধে তিনি তার বাম কানে আঘাতপ্রাপ্ত হন সেটি এখনো তার শ্রবণক্ষমতায় বিঘ্ন ঘটায়।আজম খান তার সঙ্গীদের নিয়ে পুরোপুরি ঢাকায় প্রবেশ করেন ১৯৭১ এর ডিসেম্বারের মাঝামাঝি। এর আগে তারা মাদারটেকের কাছে ত্রিমোহনী তে সংগঠিত যুদ্ধে পাক সেনাদের পরাজিত করেন।
আজম খানের কর্মজীবনের শুরু প্রকৃতপক্ষে ৬০ দশকের শুরুতে। ৭১ এর পর তার ব্যান্ড উচ্চারণ এবং আখন্দ ( লাকী আখন্দ এবং হ্যাপী আখন্দ ) ভাতৃদ্বয় দেশব্যাপীসঙ্গীতের জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে। বন্ধু নিলু আর মনসুরকে গিটারে, সাদেক ড্রামে আর নিজেকে প্রধান ভোকাল করে করলেন অনুষ্ঠান। তারপর একদিন বিটিভিতে প্রচার হলো সেই অনুষ্ঠান। সেটা ৭২ সালের কথা। ‘এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ আর ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি সরাসরি প্রচার হলো বিটিভিতে। ব্যাপক প্রশংসা আর তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দিলো এ দুটো গান। দেশজুড়ে পরিচিতি পেয়ে গেলো তাদের দল আজম খান ১৯৭৪-১৯৭৫ সালের দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে বাংলাদেশ ( রেললাইনের ঐ বস্তিতে) শিরোনামের গান গেয়ে হইচই ফেলে দেন।তার পাড়ার বন্ধু ছিলেন ফিরোজ সাঁই। পরবর্তীকালে ওর মাধ্যমে পরিচিত হন ফকির আলমগীর, ফেরদৌস ওয়াহিদ, পিলু মমতাজ এদের সাথে। এক সাথে বেশ কয়েকটা জনপ্রিয় গান করেন তারা। এরই মধ্যে আরেক বন্ধু ইশতিয়াকের পরামর্শে সৃষ্টি করেন একটি এসিড-রক ঘরানার ‘জীবনে কিছু পাবোনা এ হে হে!আজম খানের দাবী এটি বাংলা গানের ইতিহাসে- প্রথম হার্ডরক!
তার গান গুলো যদি শুনে না থাকেন ।। ডাউনলোড করতে পারেন এখান থেকে ...।
এলবাম গুলো নিচে ডাউনলোড লিংক সহ দেওয়া হল ।।
কিছু অন্যান্য গান ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
১~~ আমি বাংলাদেশের বাঙালি
২~~আমি যারে চাই রে
৩~~আসি আসি বলে তুমি
তার কিছু ভিডিও দেখতে চাইলে ঘুরে আসুন এখান থেকে...
বেশ কিছু ভিডিও ।। কালেকশনে রাখতে পারেন জদি চান।।
১৯৯১—২০০০ সালে তিনি প্রথম বিভাগ ক্রিকেটখেলতেন গোপীবাগ ফ্রেন্ডস ক্লাবের হয়ে।
আজ সকাল ১০ টা ২০ মিনিটে পপ গুরু ,মুক্তিযোদ্ধা , আজম খান মারা গেছেন ।
আজ যিনি চলে গেলেন আমরা তিনি বেঁচে থাকার সময় তার মর্যাদা দিতে পারলাম না ।। তার মৃত্যুর পর কি পারব ?? তিনি থাকবেন আমাদের সকলে হৃদয়ের গভীরে , অন্তরের অন্তঃস্থলে , থাকবে তার গান গুলি ... হয়ে থাকবে সকলের নিকট অনুকরণীয় ও অনুসরনিয় ।। তার সেই গান গুলি আসলেই অন্য রকম ছিল ।।
আমি সিনবাদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 58 টি টিউন ও 594 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ভালবাসি ইন্টারনেট , আমার ল্যাপটপ , আর আমার পরিবারকে ।
পুরা জাতি আজ সোখাহত খুবই দুঃখ পেলাম কিছু বলার নাই………