আমাদের বর্তমান বাংলাদেশ "ডিজিটাল বাংলাদেশ"। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেই তিনি এই বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলবে বলে আক্ষ্যায়িত করেছেন। অবশ্য তিনি ইতিমধ্যেই অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপও নিয়েছেন ইতিমধ্যেই এবং আমরা স্বপ্নও দেখতে শুরু করে দিয়েছি যে আমাদের বাংলাদেশ "ডিজিটাল বাংলাদেশ"। বর্তমান বাংলাদেশ সরকার যেমন নতুন নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে আমাদের দেশকে "ডিজিটাল" করে গড়ে তোলার জন্য তেমনি কিন্তু আরো কিছু বিষয় তিনি ভুলে হোক আর না ভুলেই হোক তিনি পদক্ষেপ নেননি।
এর মধ্যে একটি হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুততম এবং সহজ ও নিরাপদ টাকা এবং অনলাইনে কেনাকাটার নির্ভরযোগ্য মাধ্যম পেপাল সিষ্টেম। দুঃখের বিষয় হচ্ছে বর্তমান সময়ে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই পেপালের সাপোর্ট রয়েছে কিন্তু বাংলাদেশ এই সময়ের এমনই একটি দেশ যেখানে পেপাল সাপোর্ট করে না। এটা আমাদের একটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং কষ্টের একটা ব্যাপার। আজকে যদি আমাদের দেশে পেপাল এর ব্যবস্থা থাকতো তাহলে আমরা ঘরে বসেই পেয়ে যেতাম আমাদের প্রয়োজনীয় এবং কাংখিত সকল কিছু।
বর্তমান যুগ অনলাইন এবং ওয়েবের যুগ। এখন একটা মানুষের বেঁচে থাকার যা প্রয়োজন এবং যা না প্রয়োজন তার সবকিছুই অনলাইনে পাওয়া যায় এবং খুব সহজেই কেনার ব্যবস্থাও রয়েছে। আর পেপালের মাধ্যমে এই সকল কিছু সকলেই কিনতে পারে অনায়াসে। যার ফলে একজন ব্যক্তিকে ব্যাংকে বা দোকানে গিয়ে টাকা পরিশোধ করতে হয় না। এখনকার সকল ওয়েবসাইটেই পেপালের মাধ্যমে কেনাকাটা করতে হয়।
কিন্তু হাঁয়। আমাদের দেশে পেপাল সুবিধা না থাকার কারণে অনেকেই অনেক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। যেমন ধরেন বর্তমান সময়ের ফ্রীল্যান্সারদের কথাই আগে বলি। কারণ, আমার মনে হয় যে বর্তমান সময়ে ফ্রীল্যান্সাররাই সবচেয়ে বেশী ভোগান্তির শিকারে পরছে। ফ্রীল্যান্সিংয়ে বর্তমান বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে এবং দেশের এই খাতটি সরকারের কোন প্রকারের পৃষ্টপোষকতা ছাড়াই এতদূর সাফাল্য পেয়েছে। কিন্তু এই সাফাল্যের ধারা আমার মনে হয় যে আর বেশীদিন বজায় থাকবে না।
কারণ, ফ্রীল্যান্সারেরা রাতের পর রাত জেগে তারা অনলাইনে ডলার কামাই করতেছে এবং শেষ পর্যন্ত দেখা যায় কি যে এই ডলার কে দেশে বা ফ্রীল্যান্সিংয়ে কামাইকৃত অর্থ দেশে তুলতে তাদের অসংখ্য ভোগান্তির শিকার হয়ে হচ্ছে। আর যদিও বা টাকা পেওনার ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে তোলা যায় কিন্তু তাতে অনেক চার্জ কেটে নেয় পেওনার এবং বাংলাদেশি ব্যাংকগুলো। যেখানে পেপালের চার্জ অনেক কম।
বাংলাদেশে মানিবুকার্স, এ্যালার্টপে এবং লিবার্টি রিজার্ভ এর মতো অন্যান্য টাকা আদান-প্রদানের মতো ওয়েবসাইটগুলোর সুবিধা থাকলেও তাদের সুবিধাগুলো পেপালের মতো নয়। ধরেন যে আপনি আপনার মানিবুকার্স এর এ্যাকাউন্ট থেকে আপনার ব্যাংক এর মাধ্যমে টাকা তোলার অর্ডার করেছেন। হ্যাঁ, সবকিছু ঠিকই আছে কিন্তু দেখবেন যে আপনার টাকা আসছে তো আসছেই। এখন কবে যে আসবে, কতো যে চার্জ কেটে নিবে আর কখনোই যে আপনি টাকা হাতে পাবেন এর কোন গ্যারান্টি নেই। আর এগুলো বেশীরভাগ ওয়েবসাইটেই সাপোর্ট করে না বা এগুলোর সুবিধা নেই।
আবার বর্তমানে বাংলাদেশ কিন্তু লেখাপড়ার দিক থেকেও অনেক উন্নতিসাধন করেছে। বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক ধরণের লেখাপড়া হচ্ছে ব্রিটিশ কাউন্সেলের তত্বাবধায়নে। এখানে প্রত্যেক বছরই অনেক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হচ্ছে এবং রেজাল্টও কিন্তু অনেক ভালো করতেছে এবং এখানে লেখাপড়া শেষ করে কিন্তু অনেক ভালো চাকরীও করছে সবাই। কিন্তু যেহেতু এটি সম্পূর্ণ ব্রিটিশ কাউন্সেলের তত্বাবধায়নে পরিচালিত হয় তাই ছাত্র-ছাত্রীদেরকে টাকা পাঠাতে লন্ডনে।
আবার বর্তমান বাংলাদেশ ইন্টারনেটেও কিন্তু অনেক এগিয়ে গেছে। অনেকেই আজকাল অনেক বড়বড় ওয়েব হোষ্টিং এবং ডোমেইন ওয়েবসাইট থেকে রিসেলার কিনে ব্যবসা করতেছে। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রেও দেখেন যে একি সমস্যা। তাদের ওয়েবসাইট কোম্পানিগুলোকে মাসে মাসে টাকা পরিশোধ করতে কত ভোগান্তিই না পোঁহাতে হচ্ছে।
আর আমাদের দেশে কোন ভাবেই বা কোন ব্যাংকের সিষ্টেমেও দেশের বাইরে টাকা পাঠানো যায় না। যায়, শুধুমাত্র যাদের ক্রেডিট কার্ড আছে। আর আমাদের দেশের অনেকেই এখন পর্যন্ত বোঁঝে না যে কোনটা ডেবিট কার্ড আর কোনটা ক্রেডিট কার্ড। এতে করে দেখা যায় যে, যে সকল প্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্র-ছাত্রী টাকা পাঠায় সেসকল প্রতিষ্ঠান তাদের কাছ থেকে অনেক বেশী চার্জ কেটে নেয়। আবার ছাত্র-ছাত্রীরা তেমন ভরসাও কিন্তু পায় না।
আবার দেখা যাচ্ছে যে, একজন ব্যবসায়ীর বা একজন সাধারন কোন ব্যক্তির হঠাৎ করে কোন সরকারী ছুটির দিনে অন্যকাউকে বা ব্যবসায়ীক লেনদেন করার অনেক প্রয়োজন পরে গেল। কিন্তু সেদিন সরকারী ছুটির দিন। সকল অফিস- আদালত বন্ধ। অথচ তার এই লেনদেন করাটা কিন্তু অনেক জরুরী। তা না হলে তার কিন্তু অনেক বড় ক্ষতিসাধন হয়ে যাবে। এইধরণের সমস্যায় কেউ পড়বেনা যদি পেপাল বাংলাদেশে থাকতো। কারণ, পেপালে শুধুমাত্র আপনার মাউসের একটি ক্লিকেই টাকা পাঠাতে পারবেন কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই।
আসলে কি আর বলবো বলেন? আমাদের বাংলাদেশে বর্তমানে ই-কমার্স ব্যবস্থারই এখন পর্যন্ত খুব একটা উন্নতি হয়নি। তাহলে সেখানে পেপাল আসবে কেমন করে। যেখানে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশের কোন ব্যাংকে অনলাইনে এক এক্যাউন্ট থেকে অন্য এক এক্যাউন্টে টাকা পাঠানো যায় না সেখানে তো পেপাল শুধু স্বপ্নই। তাই না? বাংলাদেশে এখন ব্যক্তিগত এবং বিদেশী ব্যাংকের সংখ্যা অনেক। আর ঢাকা শহরেতো ব্যাংকগুলোর বুথ এখন গোলির মোড়ের চায়ের দোকানের মতোই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
বুথ গুলোর সকল যায়গাতেই লেখা দেখবেন যে অনলাইন ২৪ ঘন্টা অনলাইন ব্যাংকিং সেবা। অথচ সন্ধ্যার সময় যদি কোন সমস্যায় পড়েন তাহলেই আর কারো খোঁজ পাওয়া যাবে না। এই তো আমাদের দেশের অবস্থা। এককথায় আসলে এখানে পেপালের গুরুত্ব আমি আর বর্ণনা করে শেষ করতে পারবো না। পেপালের সুবিধা দিনদিন বেড়েই চলেছে।
আমাদের বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে পেপাল না থাকার কারণে অনেক নতুন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও কিন্তু গড়ে উঠেছে। ধরুন পেপালবিডির কথাই বলি। তারা এই প্রতিষ্ঠানটি করে বেশ ভালোই করেছে। কিন্তু তারা অষ্ট্রেলিয়ান ডলারে লেনদেন করে। এজন্য চার্জ বেশি দিতে হয়। আবার তাদের সেখানে এ্যাকাউন্ট খোলার জন্য একটা বাৎসরিক চার্জ দিতে হয়। আবার তারা লেনদেনের টাকার অংকের পরিমাণের উপরে চার্জ কাটে। এতে করে দেখা যায় যে খাঁজ নার থেকে বাঁজনাই বেশি পড়ে গেছে।
আবার দেখা যায় অনেক ফ্রীল্যান্সারেরা বিদেশী কাউকে দিয়ে এ্যাকাউন্ট করিয়ে নেয় পেপালের বা অনলাইনে ভার্চুয়াল ক্রেডিট কার্ডের সাহায্যে পেপালের এ্যাকাউন্ট করে। কিন্তু দেখা যায় যে পেপাল কিছুদিন পরে তাদের এ্যাকাউন্টগুলো লিমিটেড করে দেয়। যার ফলে তাদের পেপাল এ্যাকাউন্টে থাকা টাকা আর অন্য কোথাও পাঠানো যায় না। এর ফলে অনেকেই তাদের কষ্টার্জিত টাকা গোচ্ছায় দিয়েছে।
আমি নিজেও এরকম অনেক ধরা খেয়েছি। আমার একটা এ্যাকাউন্টে $1400 ডলার ছিল এবং আমার সেই এ্যাকাউন্টটি লিমিটেড এখন পর্যন্ত হয়ে আছে। আমার আর একটা এ্যাকাউন্টে $120 ছিল এবং সেটাও এখন পর্যন্তও লিমিটেড হয়ে আছে। আবার এইমাত্র কিছুদিন আগে একটা এ্যাকাউন্টে $20 ধরা খাইলাম। এভাবে দেখেন যে আমি নিজেই কত টাকা ধরা খেয়ে বসে আছি।
তাই এইজন্যই এখন আমরা আমাদের বাংলাদেশ সরকারের কাছে দীর্ঘ আবদেন জানাচ্ছি যে অতিসত্বর যেন আমাদের দেশে পেপাল এর ব্যবস্থা চালু করা হয়। তাহলে আমাদের দেশের মানুষ অনেক সুবিধা পাবে এবং আমাদের দেশের বর্তমান ফ্রীল্যান্সার সহ আরো অনেকে অনলাইন ব্যবসার সংগে জড়িত সকলেই খুব সহজে লেনদেন করতে পারবে। তাহলে একভাবে যেমন আমাদের দেশের বেকার সমস্যা দূড় হয়ে যাবে অনলাইনের মাধ্যমে টাকা আয় করে তেমনি অন্যদিকে কিন্তু আমাদের দেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রাও আয় করতে পারবে।
আবার বর্তমান বাংলাদেশ সত্যিই সত্যিই ডিজিটাল বাংলাদেশের রুপ নেবে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের সকলের একান্ত আবেদন এই যে, খুব শীঘ্রই আমাদের দেশের জন্য পেপালের ব্যবস্থা করবেন।
আমি সুমন খান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 29 টি টিউন ও 245 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
My Name Is "SuMoN". I'm Study in "Computer Science & Engineering". I Live in Dhanmondi, Dhaka, Bangladesh.
ধন্যবাদ আপনাকে ।