শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা ছাড়া যেভাবে সমৃদ্ধি কামনা করা যায়না তেমনি শিক্ষা ছাড়া সভ্যতার শিখরেও পৌছা যায় না। প্রতিটি সমাজেই শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। শিক্ষার বিকল্প কিছুই হতে পারে না। শিক্ষকরা হলেন সেই শিক্ষীত সমাজ গঠনের কারিগর। আজ সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক শিক্ষাই অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে কারণ সু-নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা বিদ্যালয় ছাড়া শিক্ষার আলো যথাপোযুক্তভাবে ছড়ানো যায় না। তাই একটি প্রতিষ্ঠানে একের অধিক থেকে হাজারও স্টুডেন্ট এবং ক্ষুদ্র পরিসরে শিক্ষকদের একটি টিমের মধ্যে দারুন একটি সমন্বয় গড়ে উঠাই বাঞ্চনীয়। শুধু তাই নয়, শিক্ষার বিস্তারে এই বিষয়টিকে একান্তভাবে গুরুত্ব দিতে হয়।
শিক্ষক এবং স্টুডেন্টদের মাঝে গড়ে উঠবে এমন একটি কমিনিউটি যেখানে থাকবে মায়া, মমতা, শ্রদ্ধা, শাসন, ভালবাসা। একটি যৌগিক পরিবারে ন্যায় শিক্ষকরা হবেন স্টুডেন্টদের পিতৃতূল্য এবং এটাই বাঞ্চনীয়, এটাই কাম্য। কিন্তু যখন একজন শিক্ষক তার স্টুডেন্টদেরকে বেধড়কভাবে অমানবিক নির্যাতন চালাবেন মনের আক্রশ মিশিয়ে এবং তা যদি হয় ধর্মীয় শুড়শুড়ি থেকে তাহলে অন্য আর যাই কিছু বলা যাক কি না, অন্তত তিনি যে শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেন তা নির্ণয় করতে আশা করি কাউকে কোন বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদ হতে হয় না। বলতেছিলাম ‘পিয়ার সাত্তার লতিফ হাই স্কুলের’ প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের কথা যিনি মহান আল্লাহকে কটুক্তির দায়ে উত্তিজিত জনতা কতৃক বেধড়ক গণপিঠুনির শিকার অতঃপর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সেলিম উসমানের মধ্যস্থতায় জনরোষ থেকে মুক্তি।
একজন শিক্ষককে লাঞ্চিত করার মত অপরাধ কোনভাবেই হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। কারণ একজন শিক্ষককে লাঞ্চিত করার মানে হলো গোটা জাতিকে লাঞ্চিত করা। শিক্ষক লাঞ্চিত হবেন, তার জন্য প্রতিবাদ হবে এটাই সচেতন জনসমাজের একান্ত কাম্য বা একান্ত চাওয়া। হোক সেই প্রতিবাদ কান ধরে বা জুতার মালা গলায় পরে! (প্রতিবাদ জানানোর সবারই ব্যক্তিগত কিছু স্টাইল রয়েছে যা ইতমধ্যে আমাদের বোধোদয় হয়ে যাওয়ার কথা)। পাশাপাশি এই বিষয়টিও বিচেচনায় নিতে হবে যে, একজন শিক্ষক এমন কোন কাজ করতে পারেন না যাতে করে ঐ শিক্ষকের শিক্ষক থাকার মত যোগ্যতাই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে পড়ে। আমাদের তারকা সমাজ বা বুদ্ধিজিবী মহল থেকে শিক্ষক! শ্যামল কান্তি ভক্তের পক্ষে জোরালো প্রতিবাদ হচ্ছে, প্রতিবাদ হতেই থাকবে, আমরাও প্রতিবাদ জানাচ্ছি ভালো কথা। কিন্তু কেন প্রতিবাদ করছি তার আসল কারণতো জানতে হবে। মূর্খের মত হুজুগে বাঙ্গালী সেজে বিশেষ কায়েমী গোষ্ঠীর পদলেহনকারী কিছু হলূদ মিডিয়ার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কাঁটছাট করা অসম্পূর্ণ প্রতিবেদন দেখেই ডাঙ্গার ব্যাঙের মত লাফালাফি করাতো শিক্ষিত জনগোষ্ঠী বা বুদ্ধিজিবীমহলের কাজ হতে পারে না্। কোন ধরণের বোধ-বিবেচনা ছাড়া, কিছু না বুঝে রায় দিয়ে দেওয়াতো বিবিকের সাথেই প্রতারণা করার শামিল।
ঘটনার সূত্রপাত কোত্থেকে, প্রকৃত ঘটানা কি ছিল, কি ঘটেছিল তার সম্যক ধারণা থাকা একান্ত আবশ্যক। উপস্থিত জনতা বা ক্লাসের বাকী স্টুডেন্টদের বক্তব্য অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত সেদিন রিফাত নামের দশম শ্রেণীর একজন স্টুডেন্টকে বেধড়ক মারধর করছিলেন। মারধরটি মমতা মাখা বা শাসনসূলভ ছিল নাকি নিজের ব্যাক্তগত কোন মনের আক্রোশ মেশানো ছিল তার বিশ্লেষণ আমি করবোনা। সরেজমিনে গিয়ে যা জানতে পারলাম তাতো রীতিমত লোমহর্ষক। কঁচিকাঁচা একটা ছেলে যখন বেধড়ক, অমানবিক মারধর (কিল, ঘুশিসহ তলপেটে লাথি অবশেষে রিফাত অজ্ঞান হওয়াা) সহ্য না করতে পেরে বাাঁচার আকুতি স্বরূপ আল্লাহকে ডাকছিল ঠিক তখনি শ্যামল কান্তি ভক্ত সাহেব আরো উত্তেজিত হয়ে উঠেন এবং বললেন “তুই ও থাকবিনা, তোর আল্লাহও থাকবে না, তোরা নাপাক, তোদের আল্লাহও নাপাক”।
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করার মত আল্লাহকে নিয়ে এমন একটি উস্কানি মূলক বক্তব্য ধর্মপরায়ণ জনগোষ্ঠী মেনে নেবেনা এটাই স্বাভাবিক এবং তার প্রতিফলন হতেও সময় নেয়নি। উত্তিজিত জনতা ঐ শিক্ষককে তাদের ভাষায় ”উচিৎ শিক্ষা” দিতে গিয়ে শিক্ষকের মাথার একাংশ থেতলে দেয়। শুধু তাই নয়, জনতা কোনভাবেই ঐ শিক্ষককে ক্ষমা করতে পারছিলনা। ঘটনার প্রবলতায় প্রশাসনের লোকজন এসে ঐ শিক্ষককে জনরোষ থেকে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে একটি সু-রক্ষিত কামরায় আটকে রাখে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। কিন্তু উত্তিজিত জনতাকে কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিলনা। তাই তারা বাধ্য হয়ে স্থানীয় সাংসদ সেলিম উসমান সাহেবকে খবর পাঠান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নিমিত্তে।
সেলিম উসমান সাহেব যখন এসে পৌছালেন তখনও হাজার পাঁচেক জনতা নারা লাগাচ্ছিল এবং দাবি জানাচ্ছিল যে, শ্যামল কান্তি ভক্তকে যেন তাদের হাতে ছেড়ে দেয়ওয়া হয়। অবস্থার বেগতিকতা দেখে উসমান সাহেব প্রধান শিক্ষককে একান্তভাবে জিঞ্জেস করেন যে, আপনি এখন কি করতে চান? শ্যামল কান্তি সাহেব নিজ থেকেই বললেন আমি জনগণের কাছে ক্ষমা চাইব তাই তিনি উপস্থিত জনতার সামনে এসে কনধরে উঠবস করে ক্ষমা চাইলেন (যদিও একান্ত কামরায় কানধরে উঠবস করার কথাই হয়নি)। জনরোষ দেখে শিক্ষক ভীতসন্ত্রস্ত্র হয়ে পড়েন এবং নিজেই ক্ষমা চাওয়ার একপর্যায় কানধরে ফেললেন। এরপর সেলিম উসমান সাহেব পুলিশ প্রহরায় শ্যামল কান্তি ভক্তকে হসপিটালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করে দেন। এর জন্য প্রধান শিক্ষকের পরিবার থেকে লিখিতভাবে সেলিম উসমান সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞতাবার্তাও প্রেরণ করা হয় যা উসমান সাহেব সংবাদ সম্মেলনে বার বার প্রকাশ করছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমাদের অন্ধ মিডিয়াগুলো নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে, বিশেষ একটি গোষ্ঠীকে খুশি রাখতে সেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে আড়ালে রেখে কাঁটচাট করে খন্ডিত প্রতিবেদন ছাপিয়ে জিঘাংসা ছড়াচ্ছে।
আপনার তারকা, আপনারা সাধারণ মানুষের আদর্শ। আপনার বুদ্ধিজিবী, আপনাদের প্রতিটি বোধ-বুদ্ধ, চিন্তা, গবেষণা হবে দেশের, জনগণের বৃহৎ স্বার্থে। আপনাদের তথ্য ও তত্ত্বহীন চিন্তার ফুলঝুড়ি ছড়িয়ে কেন নিজেরদেরকে তথাকথিত বলাতে বাধ্য করবেন? শুধু আজ কেন আপনার এত সোচ্চার? এর আগে কি কখনও কি শিক্ষক লাঞ্চিত হননি, এর আগে কি শিক্ষকরা মারধরসহ জুতা দিয়ে প্রহার করার মত ন্যাক্কারজনক অপমানের শিকার হননি? সেদিন কৈ ছিল আপনাদের সংগ্রামী চেতনা? কেন বিশেষ একটি সম্প্রদায়ের প্রতি আপনাদের নিস্তেজ চেতনায় বার বার অগ্নিস্ফুলিঙ্গ হানা দেয়?
৫ই মার্চ, ২০১৩ মহান আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলে কটুক্তিকারীদের বিচারের দাবিতে লাখো আলেম যখন শাপলা চত্বরে সমবেত হয়। ঠিক তখনি রাতের অন্ধকারে, বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন করে, মিডিয়ার চোখ পাকি দিয়ে সরকারের কিছু পেটোয় বাহিনীসহ পুলিশের স্পেশাল টিম মিলে শত শত আলেমকে অমানবিকভাবে হত্য করে। দেশ বরেণ্য আলেমদেরকে পুলিশি সহায়তায় কানধরে উঠবসও করানো হয়। তারাতো কোন সন্ত্রাস করেনি, চাঁদাবাজী করেনি, দূর্নীতি করেনি, নারী ধর্ষণ করেনি, কাউকে খুন করেনি, জীবনে কখনও কোন ধরণের নারী কেলেংকারীতে জড়ানোর মত অভিযোগও কেউ উত্থাপন করতে পারেনি। তারা চেয়েছিল শুধু মহান আল্লাহ তায়ালাকে নিয়ে কটুক্তিকারীদের বিচার। তাহলে কেন তাঁদের উপর এমন নির্মম অত্যাচার? তারা কি এ দেশের হাজারও জনগোষ্ঠীর শিক্ষক নন? কোথায় আমাদের সুশীল লেবাসধারী সুশীল সমাজ, আর বুদ্ধিজিবী মহল? আপনারা কখনও কি একবারের জন্য হলেও প্রতিবাদ করেছিলেন? আপনাদের অভিযোগ তারা পবিত্র কোরআন পুড়িয়েছিল! যেটা কখনও মানুষকে বিশ্বাস করাতে পারবেন না। কারণ এ দেশের ধর্মপ্রান মানুষ আপনাদের এইসব কুট-বুদ্ধি সম্পর্কে খুব ভালোভাবেই অবগত রয়েছে। আলেমরা কোরআন এর বিধান বাস্তাবায়নের জন্য মুভমেন্টে এসেছিলেন, কোরআনকে পুড়ানোর জন্য নয় যা সূর্যের তীব্র আলোর ন্যায় স্পষ্ট। তর্কের স্বার্থে যদি ধরেও নিই যে তারা সেদিন কোরআন পুড়িয়েছিল! কিন্তু এতে আপনাদের এত মাথা ব্যাথা হবে কেন; কি এমন রহস্য লুকিয়ে থাকতে পারে যে ঠিক ঐ রাত্রের জন্যই আপনাদেরকে কোরআন এর দহন এত ব্যথিত করছিল!।
বুয়েটের প্রখ্যাত অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম স্যার কে যখন ছাত্রলীগ কর্মী শুভ্রধর চটকদারসহ (নামটা পুরো মনে নেই) ছাত্রলীগের অন্যান্য বিপদগামি ছেলেরা মিলে মারধরসহ লাঞ্চিত করছিল তখন আপনারা একবারের জন্যও প্রতিবাদতো করেন নাই বরং সেইসব বিপদগামি সন্ত্রসীদের পক্ষ নিয়ে তাদের সাথে সূর মিলিয়ে বলেছিলেন জাহাঙ্গীর আলম স্যার জামাতি মতাদর্শে বিশ্বাসী। যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের একনিষ্ঠ বিশ্বাসী মাহবুবুল্লাহ স্যারকে টেনে হিচড়ে রাস্তায় এনে জুতা দিয়ে আঘাত করে অপমানিত, অপদস্থ, লাঞ্চিত করা হয়েছিল, তখন আপনাদের এই চড়া গলা কোথায় হারিয়ে গেছিল? আজ আপনারা কানধরে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অথচ মাহবুবুল্লাহ স্যারকে যখন লাঞ্চিত করা হয়েছিল তখন আপনাদের কাউকে জুতার মালা গলায় দিয়ে প্রতিবাদ জানাতেতো দেখলামনা। গতকালকে (২৭-০৫-২০১৬) রংপুর-৬ নির্বাচনি এলাকার পীরগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক প্রধান শিক্ষক আ শ ম রফিকুল ইসলাম যখন মারধরের শিকার হলেন তখনও আপনারা নিশ্চুপ, আপনাদের লালিত মিডিয়গুলোও নিশ্চুপ। এমন বহুরুপিতা জাতি আপনাদের থেকে আশা করে না। শুধু একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্যই কেন আপনাদের এত মায়া কান্না, এত দগ্ধতা যার ব্যাখ্যা শুধু আপনাদের কাছেই রয়েছে।
গত বৎসর আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দূর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু নেতাদের একটি বৈঠকে গুরুত্ব দিয়ে বলেছিলেন যে, হিন্দুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং তাদের বাক-স্বাধীনতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে, তাদের ধর্মীয় ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চয়তা প্রদান করা হচ্ছে এবং ভিবিষ্যতেও করা হবে। প্রধাণমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বামপন্থি নেতা হিসেবে চিহ্নিত সবার পরিচিত মূখ ড. ফেরদৌস আহাম্মদ কোরেশী যথার্থই অনুধাবন করছিলেন। দৈনিক যুগান্তরে উনার একটি লিখা পড়েছিলাম যার সারমর্ম ছিল এমন যে, বর্তমানে এ দেশের মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি ইসলাম বিদ্ধেষী তথাকথিত ব্লগারদের উদাহরণ টেনে বলেছিলেন যে, আজ ইসলাম ধর্মের প্রতি যেভাবে প্রতিনিয়ত আক্রমন করা হচ্ছে বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ব্লগারদের তরফ থেকে যে হারে ইসলামের মূল বিষয়গুলোকে আক্রমন করা হচ্ছে তা নিয়ে সরকারকে অবশ্যই ভাবতে হবে। এই বিষয়টি হেলায় ফেলে দেওয়া যায় না। তিনি আরো বলেছিলেন, এ দেশের হিন্দুরা সংখ্যালগু হয়েও যেভাবে সরকারের তরফ থেকে সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছেন সেভাবে এ দেশের মুসলিমরা সংখ্যগরিষ্ঠ হয়েও তাদের ন্যায় সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারছেন না্। এটা এক ধরণের বৈষম্যতা বৈ আর কিছুই নয়।
যখন প্রধান শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষিকা বা অবলা ছাত্রীরা অহরহ ধর্ষণের শিকার হচ্ছে, যখন সহকারী শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষক কর্তৃক ধর্ম অবমাননা হচ্ছে তখন আন্দোলন করুন কিভাবে এইসব অসামাজিক কার্যকলাপ রোধ করা যায়। তাহলে শিক্ষক লাঞ্চনা বলেন আর ধর্ম অবমাননার দায়ে ব্লগার হত্যা সবই শুন্যের কোটায় নেমে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িকতাকে চরমভাবে ঘৃণা করে, তারা চায় জাতিগত ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি। কিন্তু আজ আপনারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়ানোর মত ঘৃণ্য টিউমেন্টকারী একজন বিকৃত মনস্ক হিন্দু মৌলবাদি শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে জাতীয় বীর বানাতে উঠেপড়ে লেগেছেন। সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত কর্তৃক মহান আল্লাহকে নিয়ে কটুক্তি করার কোন ধরণের প্রমান মেলেনি। অথচ গঠনার দুইনিদ আগে অর্থাৎ ১০-০৫-২০১৬ তারিখে যেদিন রিফাতকে বেধম মারধর এবং আল্লাহকে কটুক্তি করা হয়েছিল সেদিন শিক্ষক শ্যমল কান্তি ভক্ত পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে বিকেলেই রিফাতের মায়ের কাছে ছুটে যান এবং অনুরোধ করেন, যেন মহান আল্লাহকে অবমানার বিষয়টি পঞ্চায়েত কমিটিকে না জানান। রিফাতের মা ঠিকি সেই বিষয়টি পঞ্চায়েত কমিটি থেকে আড়াল করেছিলেন কিন্তু ক্লাসের বাকী স্টুডেন্টদেরকে (শারমিন, সিফাত, সোহাগ ইত্যাদি) কে আঁটকাবে! তারা মহান আল্লাহকে নিয়ে চরম অপমানটি মেনে নিতে পারেনি। তাই তারা প্রতিবাদ মূখর হয়ে পঞ্চায়েত কমিটিকে বিষয়টি জানাতে ভূল করেনি। শুধু আজ কেন, এই যাবৎকাল যতজনের বিরুদ্ধেই ধর্ম অবমানার মত গুরুতর অভিযোগ উঠছিল, সরকারের তদন্ত কমিটি কোনদিন কারো বিরুদ্ধেই ধর্ম অবমাননার প্রমান পান নি! সরকার কখনও প্রমান পাবেও না। কিন্তু জনগণ পেয়ে যায়। কারণ জনগণ সরকারের মত অজ্ঞ নয়। তারা যথেষ্ট পরিমান জ্ঞানী, তারা অন্ধ নয়, তারা ভালো মদেন্দর বিচার করতে জানে।
আমাদের মিডিয়াগুলো কাদের স্বার্থে, কাকে খুশি করার জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে চরম সত্যগুলোকে আড়াল করে একটি মিথ্য বিষয়কে হাতেগুনা গুটি কয়েকজনের ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধনকে সর্বোস্তরের জনগণের জনমতের প্রতিফলন বলে প্রচার করে কোন ধরণের আনন্দ পায় আমার বোধগম্য নয়। জনগণের প্রতি তারা কতটুকু দায়িত্ববোধ দেখায়, কিভাবে তারা বিষেশ একটি গোষ্ঠীর হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে ব্যস্ত থাকে তার একটি উদাহরণ দিয়ে আজকের লিখার ইতি টানবো। গত কিছুদিন আগে বি এন পি নেতা আসলাম চৌধুরীর কথিত মোসাদ অ্যাজেন্ট সাফাদির সাথে একটি ব্যাবসায়ীক বৈঠককে ‘’দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তবলে মিডিয়া যেভাবে ঢালাওভাবে প্রচার চালালো’’। অথচ এক বৎসর আগে এই সেই মোসাদ অ্যাজেন্ট সাফাদির সাথে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ও নিউইয়র্কে বৈঠক করেছিলেন। তখন আমাদের অন্ধ মিডিয়াগুলো এমন ভান করছিল যেন এই বিষয়টি তারা জানতেই পারেনি। হয়তো অনেকেই বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, জয় কখন আবার সাফাদির সাথে বৈঠক করলেন? বিশ্বাস না হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ আমরা যে মাধ্যমটির মাধ্যমে দেশ-বিদেশের খবর পেয়ে থাকি সেই মিডিয়াই যখন সত্যকে গোপন করে চলে তখন আমরা সাধারণ জনগণ সে বিষয় সম্পর্কে কিছুটা অজ্ঞ থাকা মোটেই অস্বাভাবিক ব্যপার নয়। কিন্তু আজ প্রযুক্তির উৎকর্ষতারযোগে চাইলেই অনেক কিছু আড়াল করা যায় না। তাই জয়ের সেই বৈঠক সম্পর্কিত ভিডিও লিংটি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। নিম্মের লিংকটিতে সেই ভিডিওটি দেখতে পাবেন। http://www.taza-khobor.com/bd/politics/64195-2016-05-27-09-52-19?q=12 ভিডিওটি দেখার পর আমাদের মিডিয়াগুলো এবং আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজিবীদের সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
আমি kamrulbhuiyan। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 136 টি টিউন ও 406 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি খুবই সাধারন একজন মানুষ, কিছুই করিনা, মাঝে মাঝে ব্লগে লিখালিখি করি, আর অন্য সময় খেলাধুলায় ব্যাস্ত থাকি.....।।
onek oprio sotto katha bole fellen bhai,kakhon Abar jonogon k ushkani mamlay pore Jan!