রাতের বেলা নীল আকাশে অসংখ্য আলোর বিন্দু মিটমিট করতে দেখা যায়। আমরা এগুলোকে তারকা বা নক্ষত্র বলে থাকি। যদিও দেখতে বিন্দুর মত, কিন্তু কিছু তারকার ভর সূর্যের চেয়েও হাজারগুণ বেশি। যাইহোক, এখন আমরা নক্ষত্র নিয়ে কিছু তথ্য জানব যেগুলো আমাদের অনেকের কাছেই অজানা। মূলত তারকা হচ্ছে জ্বলন্ত অগ্নিপিন্ড যা গ্যাস এবং ধূলিকণা দিয়ে গঠিত। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এক মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে এদের সৃষ্টি হয়েছে। এসব নক্ষত্র সৃষ্টির শুরুতে মহাকাশের বিশাল অঞ্চল জুড়ে ছিল শীতল হাইড্রোজেন, হিলিয়ামসহ অন্যান্য পরমাণু এবং এদেরকে ধূলিমেঘ বলে। ধূলিমেঘের প্রায় ৭৫% হাইড্রোজেন, ২৪% হিলিয়াম এবং কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন সহ অন্যান্য গ্যাস ১% ছিল। যাইহোক, এসব নক্ষত্রের ও মৃত্যু ঘটে। আমরা জানি, প্রত্যেকটি বস্তু চালনা করার জন্য শক্তির প্রয়োজন হয়। আর এসব শক্তি সরবরাহের জন্য আমরা খাবার খাই, যান্ত্রিক মেশিনে পেট্রোল, ডিজেল ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। তেমনি নক্ষত্রের শক্তি সরবরাহ করে হাইড্রোজেন। নক্ষত্রের দুইটি অংশ থাকে। একটি মূল অংশ বা ভিতরের অংশ যাকে কোর বলে এবং অপরটি বাইরের অংশ। ভিতরের অংশের তাপমাত্রা যদিও এক কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি, কিন্তু বাইরের অংশের তাপমাত্রা মাত্র কয়েক হাজার ডিগ্রী সেলসিয়াস। বাইরের তাপমাত্রা কম হওয়ায় সেখানে ফিউশন বিক্রিয়া ঘটে না। ভিতরের অংশের ফিউশন বিক্রিয়া শেষ হলে কোরে উৎপন্ন বহির্মুখী চাপ কমতে থাকে এবং মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বলের কারণে সংকোচন বাড়তে থাকে। অর্থাৎ আকর্ষণ বল প্রাধাণ্য লাভ করে এবং কোরের সংকোচন চলতে থাকে।
যে সমস্ত নক্ষত্রের ভর কম, হাইড্রোজেন জ্বালানি কমে গেলে সংকোচনের কারণে মূল অংশের ঘনত্ব এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং বাইরের অংশে প্রসারণ ঘটে। তবে মূল অংশের তাপমাত্রা আহামরি বৃদ্ধি পায় না। বাইরের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় তারকার পৃষ্ঠ থেকে নির্গত বিকিরণ লালচে দেখায় যাকে রক্তিম দৈত্য বলে। আস্তে আস্তে এর বাইরের আবরণ ভেঙ্গে যায় যাকে শ্বেত বামন বলে। শ্বেত বামন তারকার উজ্জ্বলতা কমতে কমতে একসময় কালো বামনে পরিণত হয় এবং মৃত্যু ঘটে।
কিন্তু যে সমস্ত নক্ষত্রের ভর অনেক বেশি, হাইড্রোজেন জ্বালানি কমে গেলে সংকোচন অনেক বেশি ঘটে এবং তাপমাত্রা অনেক বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এ ক্ষেত্রে তাপমাত্রা প্রায় ১০ কোটি ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছায় এবং হিলিয়াম নিউক্লিয়াসে ফিউশন বিক্রিয়া শুরু হয়। তখন তিনটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস ফিউশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে কার্বন নিউক্লিয়াস গঠন করে এবং প্রচুর শক্তি নির্গত হয়। তখন কোরের ভিতরের চাপ বৃদ্ধি পায় এবং বাইরের আবরণে বিস্তার লাভ করে এবং প্রসারণ লাভ করে। তারকাও আস্তে আস্তে উজ্জ্বল হয়। বাইরের অংশের তাপমাত্রাও একসময় কমে যায় এবং তারকা লালচে হয়ে যায়। এ অবস্থায় তারকাকে বলা হয় রক্তিম দৈত্য বা অতি রক্তিম দৈত্য তারকা। সূর্য যখন হাইড্রোজেন জ্বালানি শেষ করে এই ধাপে পৌঁছবে তখন সূর্যের আকার এতটা বেড়ে যাবে যে, বুধ, শুক্র, পৃথিবী এবং মঙ্গলগ্রহও গ্রাস করে ফেলবে। বিজ্ঞানীদের ধারণা মতে, এই অবস্থা সৃষ্টি হতে এখনও ৬০০ কোটি বছর দেরি আছে।
টিউনটি ভাল লাগলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না।
পোস্টটি কষ্ট করে পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি মোঃ তারেক জামিল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 113 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
বাংলাদেশকে বিজয়ী করতে প্রয়োজন আপনার ভোট। প্রযুক্তিপ্রেমী তরুণ প্রজন্ম কি একবার সাড়া দেবে ? এসো সবাই মিলে বিজয়ী করি বাংলাদেশকে। বিশ্বকে জানিয়ে দেই আমরাই চ্যাম্পিয়ন
https://www.techtunes.io/tech-talk/tune-id/438763