টেকটিউনসে সবাইকে স্বাগতম। আশা করি সবাই ভাল আছেন।
আজ আমি আপনাদের সামনে হাজির হলমাা বিশ্বের এই বছর সবথেকে ফ্লপ কিছূ টেকনোলজি নিয়ে। যে টেকনোলজিগুলো চরম হিট হবার আশায় পাবলিশ করা হয়েছিল। কিন্তু, র্দূভাগ্যক্রমে এগুলো বিভিন্ন কারণে সুপার ফ্লপ এর কারণ হতে পারে প্রোডাক্টের বাজে কোয়ালিটি অথবা কোম্পানীর পণ্য রিলিজ করার ব্যাপক ভুল।
কিন্তু আমাদের এই কথাটাও মনে রাখতে হবে, ফ্লপ মানেই যে বাজে প্রোডাকট্ তা কিন্তু না। ব্যার্থ কোন কিছু থেকেও শেখার অনেক কিছূ আছে। জীবনে ব্যার্থতা না থাকলে সফলতার মর্ম বোঝা কঠিন। তাই, এগুলো নিয়ে হতাশ হবার কিছুই নেই। তো চলুন, আজ আমরা এবছর পর্যন্ত টপ ফ্লপ কিছূ প্রোডাক্ট ও তাদের ফ্লপ হবার কারণগুলো বের করি।
মাইক্রোসফট আগের বছর একটা ফিটনেস ট্রাকিং যন্ত্র বের করে। এটা বের হবার আগেই এর মার্কেটিং বা বিভিন্ন কারণে চরমভাবে সমাদৃত হয়। কিন্তু, এরআগে মাইক্রোসফটের মত একটা প্রতিষ্ঠান থেকে এত দ্রুত কোন প্রোডাক্ট এর রিলিজ দেওয়া হয়নি। এই মাইক্রোসফটের ব্যান্ড জনসাধারণের দ্বারা চরমভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়। সিএন এন রিপোর্টে বলা হয় যে, এটার ব্যাটারী লাইফ ভাল না, এটা সুইং ফ্রেন্ডলি না, ব্লুটুথ সিং এবং পেয়ারিং খুবই বাজে এবং মাইক্রোসফট হেলথ অ্যাপসগুলো ইউজ করা খুব একটা সহজ হয় নি। এটার অন্যান্য ফাংশন যেমন হার্ট রেট পরিমাপেও নাকি বেশ গন্ডগোল ছিল।
যাই হোক, এসব কারণে বা পাবলিক এর এটা সাদরে গ্রহণ না করার কারণে মাইক্রোসফট ব্যান্ড আজ জাদুঘরের একটা পণ্যে পরিণত হয়েছে।
আারেকটা বড় ধরনের ব্যাথর্তা ছিল আইফোনের সেটা হল এদের একটা গেম সুইং কপটারস। এটা একটা চরম বাজে গেম ছিল তারপরও এটা আ্যাপল অ্যাপস্টোর থেকে প্রচুর লাভের আশায় রিলিজ করা হয়। এর আগের একটা গেম ছিল যেটার নাম ছিল ফ্লাপি বার্ডস, যেটা ছিল সর্বকালের সবথেকে হিট একটা গেম। তো, এ্ই গেমের জনপ্রিয়তা আরও বাড়াবার আশায় সুইং কপ্টার রিলিজের ডিসিশন। তো, যখন এই সুইং কপ্টার রিলিজ হবে তখনও পাবলিক এটার ওইরকম একটা জনপ্রিয়তা দেখতে চাইছিল। কিন্তু, সুইং কপ্টার পাবলিকের সব আশাকে ভেঙে চুরমার করে দিয়ে সুপার ফ্লপে পরিণত হয়।
জুলাই এর মিডলে, Rupert Murdoch ঘোষণা দেন যে তিনি ৮০ মিলিয়ন ডলারে Time Warner কিনে নিচ্ছেন। এতে পুরো মিডিয়ায় ব্যাপক তোলপার দেখা দেয়। কিন্তু, আগস্টে তিনি এই ডিলটি বাতিল করেন এবং তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এটা মানুষকে অনেক অবাক করেছিল।
বছরটি অ্যাপল এর ক্লাউড সার্ভিসের জন্য খুব একটা ভাল বছর ছিল না। আবার এটাকে ফ্লপ ও বলা যায় না। তবে এই বছর যখন অ্যাপলের কিছু প্রাইভেট ফটো যেগুলো ক্লাউডে ছিল সেগুলো লিক হয় এবং সারা বিশ্ব এসম্পর্কে জানতে পারে। এর ফলে অ্যাপলেরর ক্লাউডের ভাবমূর্তি ক্ষূণ্য হয়। অ্যাপল বলতে চেয়েছিল যে এটা একটা ফিশিং এট্যাক। কিন্তু, তারপরও জনগণ অ্যাপলের এই কাজটা ভালভাবে নেয়নি।
এই ঘটনাটা ছিল আসলেই খুবই খারাপ। অ্যাপল একটা তাদের অপারেটিং সিস্টেমের আপডেট ছাড়ে যেটা ফোনের জন্য মারাত্ম খারাপ হয়ে যায়। যারা এই সফটওয়্যার ডাউনলোড করে ইউজ করতে গেছেন তাদের অনেকেরই ফোন একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। অবশ্য, এই সমস্যাটা টেম্পোরারিলি ঘটেছিল। অ্যাপল এই সমস্যার সমাধানের জন্য এই সফটওয়্যারটি দ্রুত তুলে নেয় এবং অন্য একটা আপডেট ছাড়ে। এটা প্রায় ৪০০০০ মানুষকে প্যাড়ায় ফেলে দিয়েছিল।
Uber ডেভিড প্রলুফ নামের একজনকে তাদের রেপুটেশন বাড়ানো জন্য ভাড়া করে আনেন। তার কাজ ছিল বিভ্ন্নি কারণে সরকারের বিরুদ্ধে সারা বিশ্বব্যাপী আন্দোলন করা।
কিন্তু এটা খুব একটা ফলপ্রসু কিছু হয়নি। এটা ফল করে। যেহেতু তিনি ভাড়া করা ছিলেন, তাই এই কাজে প্রচুর পরিমাণে ভুল ছিল।
এইকাজে একজন উবার সাংবাদিক এর উপর গোয়েন্দাগিরি করতে গিয়ে একজন এক্সিকিউটিভ ধরা পড়েন। উবার ড্রাইভাররা ক্রাইমের সাথে জড়িয়ে পড়েন। তারপর সরকার পোর্টল্যান্ড থেকে জার্মানী পযন্ত উবার বন্ধ করে দেন।
টুইটারের ফাউন্ডার বিজ স্টোন জেলি নামের আকেরকটি কোম্পানী লঞ্চ করার একটা উদ্যোগ নেন। এটা ছিল একটা মোবাইল ক্রাউড সোর্সড Q&A অ্যাপ। এটা মূলত জনগণের কোন রকম দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়নি। এটা ছিল মূলত একটা ডেড প্রজেক্ট।
গুগল গ্লাস রিলিজের পর একেক ধরনের মানুষের আশা একেক ধরনের ছিল। কিন্তু কেউ এটার থেকে খুব বড় কিছু আশা করেনি। গুগল সামনের বছর গ্লাস ভার্সন ২ রিলিজ করতে যাচ্ছে। দেখা যাক সেটা কেমন হয়। আসলে গুগল গ্লাস যে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি সেটা আমরা সবাইই কমবেশী জানি।
টুইটারের স্টক এইবছর ৮৫% ফল করেছে। এর কারণটা কী? এটা কী টুইটারের ইউজার বেসড গুড নিউজ গ্রো না করা? এটা কোন কারণ নাও হতে পারে। কারণ, ২ বছর আগে ফেসবুকের আইপিও পৃথিবীর সবথেকে বাজে ভাবে ফল হয়েছিল। সেখান থেকে তারা আজ টপে। টুইটারের ক্ষেত্রেও একই বিষয় যে ঘটবে না সেটা বলা যায় না।
Verizon একটা নতুন টেক সাইট লঞ্চ করার কথা ভাবনা চিন্তু করছিল। কিন্তু, তাদের এই আশা মাঠে মারা যায়। এই টপিকটা বেশী দিন পর্যন্ত গড়ায় নি। খুব কম সময়ের ভেতরই তাদের এই প্লান ধূলিস্মাৎ হয়ে যায়।
Clinkle এর সিইও এবং ফাউন্ডার Lucas Duplan সিলিকন ভ্যালির হিস্ট্রিতে সবথেকে বড় একটা উদ্যোগ নিতে চলেছিলেন। এটাই ছিল তার প্রোডাক্টের লঞ্চ হবার শেষ বছর। তাদের কথা মত তারা একটা প্রিপেইড ডেবিট কার্ড এর বিজনেজ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পাবলিক এটাকে ইগনোর করে। ফলে এটা চরমভাবে ফ্ল একটা প্রোজেক্টে পরিণত হয়।
২০১৪ সালের ২৩ শে ফেব্রুয়ারী স্যামসাং মোবাইল ওয়ার্ল্ড কনগেগ্রসে তাদের স্যামসাং নিউ গিয়ার ২ এবং গিয়ার ফিটনেস ব্যান্ডপ্রদর্শন করে।
তারপর স্যামস্যাং এগুলো রিলিজও করে, কিন্তু র্দূভাগ্যক্রমে এটা পাবলিক মোটেও খায়নি। এটা স্যামসাং এর জন্য খুব একটা কখারাপ হত না, কিন্তু এটা তাদের মোট প্রোফিট ৬০% কমিয়ে এনেছে যেটা আসলেই শকড নিউজ।
ফেসবুক এবছর তিনটি নতুন অ্যাপ রিলিজ করে। এগুলো হল “Paper, Slingshot, এবং Rooms। এদের কোনটিউ তেমনএকটা সাড়া জাগাতে পারেনি।
শর্ট টার্মে এটা কোন বিষয়ই না ফেসবুকের কাছে। কিন্তু লং টার্মে এটা ফেবুকের দ্রুত ডাইনামিককভাবে ভিন্ন ক্রিয়েটিভ অ্যাপস তৈরী ও সেটা হিট করা নিয়ে একটা প্রশ্ন তুলেছে।
এখন আপনাদের কাছে প্রশ্ন জাগতে পারে যে এই Slingshot কে কেন হাইলাইট করা হচ্ছে? কারন এটা এমন একটা অ্যাপ যেটার মাধ্যমেযে কেউ একটা পিকচার তার কাছে আসার পর সেটা না দেখেই ফরোয়ার্ড করতে পারবে। তাই, এটা ছিল ফেসবুকের একটা নতুন চমক। আর এটা ফ্লপ হওয়াতে মনে হয় ফেসবুকে এর একটা দীর্ঘ প্রভাব ফেলবে।
কিং ক্যান্ডি ক্রাশ নামের একটা গেম ডেভলপ করেছিল যেটা ছিল তাদের একটা লস প্রোজেক্ট। এটার স্টক প্রাইস ছিল ২২.৫০ ডলার। কিন্তু এটা প্রথম দিনেই ১৯ ডলারের উপরে সেল হয়নি। ফলে এটার পেছনে যারা ইনভেস্ট করেছিল তারা প্রথম দিন্ লসের সম্মুখীন হয়। এখন এটার দাম ১৭ ডলার এর্ ও নীচে। ফলে কোম্পানী তাদের শেয়ার হোল্ডারদের তাদের টাকা ফেরৎ দেয়।
অ্যামাজন শেষপর্যন্ত এই বছরের শেষে একটা ফোন রিলিজ করেছিল। এটা চরম একটা লস প্রোজেক্ট ছিল। অ্যামাজনকে এইসব অবিক্রিত ফোনের জন্য ১৭০ মিলিয়ন ডলার এমাউন্টের একটা লস গুনতে হয়। কিন্তু, এখানে গোলমালটা কী ছিল? অ্যামাজন এই ফোনটাকে ইউনিক করার জন্য তেমন কিছুই করেনি। এবং যে ফিচারগুলো ভাল ক্রেতা টানবে বলে মনে করা হয়েছিল যেগুলো ব্যার্থ হয়। যেমন, ৩ডি ডিসপ্লে, কোন স্টোরে প্রোডাক্টের দাম স্ক্যান করার ব্যাবস্থা প্রভৃতি। এগুলো তেমন কাষ্টমার টানতে পারেনি। এটা শুধু আইফোনের মত দামীই ছিল। কিন্তু, এর ফিচার ছিল খুবই জঘন্য।
এইগুলো বিশ্লেষণ করার পর আমার মনে হয় পরিকল্পনার অভাব, ইনফরমেশন গ্যাপ বা বিভিন্ন কারণে এই প্রযুক্তিগুলোর হিট হবার কথা থাকলেও এগুলো আজ ফ্লপ প্রযুক্তিতে পরিণত হয়েছে। কারণ, আমমরা দেখতে পাচ্ছি যে প্রতিটা প্রযুক্তি ই যথেষ্ঠ ভাল ছিল। হয়তবা এগুলো ফ্লপ হবার পেছনে আরেকটি কারণ হতে পারে মার্কেটিং এর ভুল।
যাই হোক, আজ এই পর্যন্তই। আবার দেখা হবে কোন টিউন নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন। আর কোন মতামত থাকলে অবশ্যই টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। ধন্যবাদ।
আমি অরিন্দম পাল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 81 টি টিউন ও 316 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 20 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মানসিক ভাবে দূর্বল । কোন কাজই কনফিডেন্টলি করতে পারি না , তবুও দেখি কাজ শেষ পর্যন্ত হয়ে যায় । নিজের সম্পর্কে এক এক সময় ধারণা এক এক রকম হয় । আমার কোন বেল ব্রেক নেই । সকালে যে কাজ করব ঠিক করি , বিকালে তা করতে পারি না । নিজের...
onek tottho diyechen….জেনে ভালো লাগলো