বিশ্বের প্রথম সারির মোবাইল জায়েন্ট নোকিয়া অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশে তাদের নিজস্ব সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে কাস্টমারদের বিভিন্ন ধরণের সার্ভিস দিয়ে আসছে। অবশ্য শুরু থেকেই তাদের সার্ভিসের মান নিয়ে নানা ধরণের প্রশ্ন তুলেছেন তাদের গ্রাহকেরা। তুলনামূলকভাবে বেশি সার্ভিস চার্জ, অপেক্ষাকৃত বেশি সময় ধরে কাস্টমারের মোবাইল ফোন অকারণে আটকে রাখাসহ নানাবিধ অভিযোগের তীর প্রশ্নবিদ্ধ করেছে ধানমন্ডির প্রিন্স প্লাজাস্থ নোকিয়ার এই সার্ভিস সেন্টারকে। তুলনামূলকভাবে অন্য জাতির তুলনায় বাঙ্গালী জাতি অধিকতর সহিঞ্চু জাতি। আর তাই এখন পর্যন্ত যথেষ্ট ‘সহিঞ্চুতার’ পরিচয় দেখিয়ে আমাদের বাঙ্গালী নোকিয়ার কাস্টমাররা তাদের যথেষ্ট ধৈর্য্যরে পরিচয়ও দিয়েছেন ইতোমোধ্যেই। তবে সম্প্রতিকালে নোকিয়ার সার্ভিস সেন্টারের ‘সার্ভিস’ এর ভিন্ন নমুনা প্রকাশ করেছেন একজন সাধারণ গ্রাহক। আর এ থেকেই বেরিয়ে এসেছে নোকিয়া সার্ভিস সেন্টারের ‘সার্ভিসের নামে’ ভিন্ন কাহিনী।
(ছবির পূর্ণ আকৃতি দেখার জন্য ছবির উপর ক্লিক করুন)
মোহাম্মদ শাহজালাল। পেশায় ব্যবসায়ী। বড় শখ করে নোকিয়ার এন ৯৫ (৮ জিবি) মডেল এর হ্যান্ডসেটটি কেনেন নিজের ব্যবহারের জন্য। কিছুদিন পরই ঘটল বিপত্তি। শুরু হল হ্যান্ডসেটটিতে সমস্যা। সমস্যা সমাধানের উপায় হিসাবে দারস্থ হলেন নোকিয়ার সার্ভিস সেন্টারে। ক্যালেন্ডারের হিসাব অনুযায়ী সেটি জানুয়ারির ৭, ২০০৯। নোকিয়ার ওয়ার্ক নম্বর হিসাবে দেয়া হল DHK1128467. নোকিয়া কাস্টমার সার্ভিস থেকে বলা হল ‘ কেসিং বদলাতে হবে, ৭০০০ টাকা লাগবে, আর সেই সাথে সময় লাগবে অন্তত দিন তিনেক’। বিনা বাক্য ব্যয়ে রাজি হলেন শাহজালাল। এরই মধ্যে ব্যবসায়িক কাজে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় সময় বের করতে পারছিলেন না শাহজালাল। ইতোমধ্যে সপ্তাহ গড়িয়ে গেল। প্রায় ৯ দিনের মাথায় শাহজালাল নোকিয়া সেন্টার থেকে তার মোবাইল সেটটি নিয়ে এলেন নিজের কাছে। কিন্তু সমস্যা হল তার মোবাইলের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য (ডেটা) ভুল বশত ইতোমধ্যেই মুছে ফেলেছে নোকিয়া সার্ভিস সেন্টার থেকেই। এখন কী করা যায় এমনটাই ভাবছিলেন। হঠাৎ পেয়ে গেলেন মোবাইলের ডেটা রিকভারিং এর জন্য একটি দারুন সফটওয়্যার। আর ঐ ডেটা রিকভারিং সফটওয়্যার দিয়ে নোকিয়ার সেই মোবাইল হ্যান্ডসেটের ডেটা পুণরুদ্ধার করতে গিয়ে শাহজালাল আবিস্কার করলেন ‘ নোকিয়া’ সার্ভিস সেন্টারের ‘সার্ভিসিং’ এর অন্যরুপটি। যা হয়তোবা এতদিন কেউ জানতে পারেনি!
পুরোনো ডেটা পুণরুদ্ধার হওয়ার পর শুধুমাত্র হতবাক হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না মোহাম্মদ শাহজালালের। তার মোবাইল সেটটি নোকিয়া সার্ভিস সেন্টারের রাখা অবস্থায় ঐ সেটটি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করেছেন নোকিয়া সেন্টারের একজন স্টাফ। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আলোচিত ঐ মোবাইল ফোনটি ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাজশাহীতে জানুয়ারীর ৮ তারিখেই। ট্রেনে চড়ে রাজশাহী যাওয়া, স্টেশনে ঘোরাঘুরি করাসহ নানা ব্যক্তিগত ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে ধারাবাহিকভাবে ঐ মোবাইলের ক্যামেরায় তোলা ছবিতেই।
(ছবির পূর্ণ আকৃতি দেখার জন্য ছবির উপর ক্লিক করুন)
যার মাত্র গুটি কয়েক এ প্রতিবেদনের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে। অবাক হওয়ার মত ব্যাপার হলো নোকিয়া সেন্টারের ঐ স্টাফ এর নিজের ‘নিম্নাংগ’ এর ছবিও তুলেছেন ঐ মোবাইল ক্যামেরাতেই! কী অবাক হওয়ার মত ব্যাপার তাই না।
মোহাম্মদ শাহজালাল প্রশ্ন রাখেন, নোকিয়ার মত প্রতিষ্ঠানের কাছে কী একজন কাস্টমার এমনটা আশা করতে পারেন। তার ব্যক্তিগত ব্যবহারের মোবাইল ফোন কি সার্ভিস সেন্টারের কোন স্টাফ নিজের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য সার্ভিস সেন্টারের বাইরে নিয়ে যেতে পারে কী না। যদি তাই হয় , তাহলে ঐ সার্ভিস সেন্টারে মোবাইল ফোন জমা রাখাটা কতটা নিরাপদ, এমন সব প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন শাহজালাল।
তিনি আরো বলেন, ছবিসহ ঐ স্টাফ এর মোবাইল ফোন ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহারের বিষয়টিকে নোকিয়া কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে অপরাধ কী না তা ও জানা প্রয়োজন। এভাবে চলতে থাকলে কোন ব্যবহারকারীই হয়তোবা তার মোবাইল ফোনটিকে নোকিয়ার সার্ভিস সেন্টারে রাখাটা আর নিরাপদ বলে মনে করবেন না। এক্ষেত্রে নোকিয়া কর্র্তৃপক্ষের উচিৎ হবে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থ্যাগ্রহণ করা। নতুবা একজন সাধারণ গ্রাহক হিসাবে তিনি আইনের আশ্রয়ও নিতে পারেন বলে মন্তব্য করেন শাহজালাল।
এ প্রতিবেদনের শুরুতেই আমরা জেনেছি যে, বাংলাদেশে নোকিয়ার সার্ভিস সেন্টারের সার্ভিস নিয়ে ইতোমধ্যেই নানা অভিযোগ উঠেছে। অথচ অনেকটা দেখেও না-দেখার ভান করে আছে নোকিয়া কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্টদের মতে, দ্রুত এসব বিষয়ে নকিয়া কাস্টমার কেয়ারের নজর দেয়া প্রয়োজন। নতুবা গ্রাহকদের নানাভাবে হয়রানির অভিযোগের পাল্লা কেবল ভারীই হতে থাকবে। আর এতে করে নোকিয়ার সার্ভিস সেন্টারের দূর্নামই বাড়বে, গ্রাহক বাড়বে না বৈকি।
আপনাদের অনুভূতি জানান।
আমি দুরন্ত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 7 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
প্রযুক্তিতেই মুক্তি
আমারও একটা সেট নোকিয়া সার্ভিস সেন্টারে আছে, এরকম হইলে তো খুবই সমস্যা।
ধন্যবাদ খবরটি জানাবার জন্য
amaro ekta set nokia service center a ase.
ভাই যদি কেউ যদি ডাটা রিকবারি সফটওয়্যারটার ঠিকানা দিলে ভাল হতi
kal set ta anbo. jodi a rokom kisu pai !!!!!!!
balo ekta tune korte parbo.
ভাবছিলাম নোকিয়ার একটি ভাল সেট কিনবো। কিন্তু ভাই এ কি শুনলাম। বাঙ্গালিদের এভাবে ঠকানো হচ্ছে। আমরা তো শেষ। শীগ্রয় এর একটা ব্যবস্থা নেএয়া উচিত।
মাইর লাগান দরকার । আর এটা দুরন্ত ভাইয়ের করা আসলেই দুরন্ত একটা টিউন । এতো বড় একটা নিউস শেয়ার করার জন্য একটা ধন্যবাদ কাফি নেহি হে।
কী মন্তব্য করব; আমারতো রীতিমত হাত কাপছে। এটা তো আরব্য উপন্যাসের কাহিনীকেও হার মানায়।
সবাইতো নকিয়া বিরু্দ্ধে অনেক কিছুই বলৃলেন । Samsung,Sony Ericsson, LG, Motorola, HP(চোর), Epson(ডাকাত), Canon, সবই এক গুরুর শিষ্য । কোথায় যাবেন ?
চমৎকার টিউন করেছেন।এর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
অন্য সব কোম্পানীর কাষ্টমার কেয়ারের অবস্থা ো তুলে ধরা দরকার।
শাহজালাল সাহেব,
দয়া করে আপনার সঠিক ইমেইল এড্রেসটি দেবেন। অথবা আমাকে একটা কপি দেবেন এই এড্রেসে – opurahman (@at) gmail.com
আমার একটা নোকিয়া এন-৭০ সেট এর ডিসপ্লে নস্ট হওয়ায় ওখানে ঠিক করতে দিই। ২ সপ্তাহ হয়ে যাবার পরেও এখন ও সেট ফেরত পাইনি, যদিও এর জন্য ৫০০০/- লাগবে বলে নোকিয়া কেয়ার থেকে জানানো হয়েছে। এই পোস্ট টা আগে পড়লে এখানে ঠিক করতে দিতাম না.. 🙁
কি অবস্থা !
রীতিমত ভয়াবহ, দেখছি