নিঃসন্দেহে টেকনলোজি দুনিয়ায় জাপান রাজত্ব করছে। আর এই ক্ষেত্রে রোবোটিক্সে তারা সবচেয়ে এগিয়ে। তাদের দৈনন্দিন জীবনের ভালোবাসা জড়িয়ে আছে রোবোটের সাথে। আর এই রাজ্যে তারা আরো এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। জাপানের বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছে আরো উন্নর মানের রোবোট। তারা এই রোবোটকে কাজে লাগাতে যাচ্ছে হোটেলে। তাই এই বছরের জুলাই মাসের দিকে জাপানের নাগাসাকিতে চালু হতে যাচ্ছে বিশ্বের প্রথম রোবট চালিত হোটেল। এই হোটেলের অর্ধেক কাজে রোবোটকে নিয়োজিত করা হবে।
জাপানি ভাষায় হোটেলটির নাম ‘হেন-না-হোটেল’ যার অর্থ ‘আশ্চর্য’ বা ‘পরিবর্তিত’। ৭২টি কক্ষ বিশিষ্ট এই হোটেলে রয়েছে ১০ টি রোবোট এবং ১০ জন মানুষ। পাশাপাশি মানুষের বাবস্থা করা হয়েছে যেন তারা রোবটের সাথে কাস্টমারদের প্রতিক্রিয়া বুঝতে সক্ষম হয়। একে বলা হবে ‘অ্যাক্টরয়েডস’ কারন হুবুহ মানুষের মত দেখতে এবং আচরনেও। এই অ্যাক্টরয়েডসগুলো শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়, অঙ্গভঙ্গি করতে পারে, স্বাভাবিক শরীর নাড়াচাড়া করতে পারে এমনকি চোখের ভাষা বুঝতে এবং বলতেওসক্ষম। রোবটগুলো নিয়ে গবেষণা করেছে ওসাকা ইউনিভার্সিটি এবং তৈরি করেছে ‘কোকোরা’ কম্পানি।
রোবোটগুলোকে জাপানী তরুণীদের আদলে তৈরি করা হয়েছে। এদের মধ্যে জাপানী, কোরিয়ান, ইংরেজিসহ বেশ কিছু ভাষা রয়েছে। তারা কাস্টমারদের ভাষা শুনে তাদের ভাষায় উত্তর দিতে সক্ষম। এদের কথা বলার ভঙ্গি প্রায় মানুষের মতই তাছাড়া গলার স্বরের আওয়াজ কমিয়ে বাড়িয়ে এরা অনুভূতিও প্রকাশ করতে পারে। সাথে সাথে তারা হ্যান্ডশেক করতেও সক্ষম এমং তাদের হাতের স্পর্শ মানুষের মতই।
হোটেলটিতে প্রথমেই ঢুকতে তিনটা রোবটকে রিসিপশনে দেখা যাবে। তারা আপনাকে রিসিভ করবে এবং অন্য আরেকটি রোবট আপনার লাগেজ বহন করবে। তারা আপনার নির্দেশ মত সকল কাজ করে দিতে পারে। যেমনঃ দৈনন্দিন সকল কাজ, কফি বানানো, কাপড় লন্ড্রি, পরিস্কার ইত্যাদি। আপনি ইচ্ছা করলে তাদের টিপসও দিতে পারেন। তারা আপনার যেকোন অনুরোধ শুনবে এবং কাজ করবে। হোটেল কর্তৃক একটা ট্যাবলেট দেয়া হবে যা দিয়ে আপনি সকল নির্দেশনা দিতে পারবেন। হোটেলটিতে আরো উন্নতমানের প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হয়েছে। সেখানে আপনার দরজার চাবি হিসাবে চাবির পরিবর্তে আপনার মুখ ব্যাবহার করা হবে।
হোটেল কর্তৃপক্ষ আশা করে যে এটা নাগাসাকি শহরের থিম পার্কের একটা অংশ হবে। তারা বলেছেন, যদিও খোলার সময় এর অর্ধেক রোবট থাকবে কিন্তু পরবর্তীতে ৯০% রোবট রাখা হবে। এতে ভবিষ্যতে হোটেলের সার্ভিস চার্জও কমতে পারে। আপনিও এই হোটেলে থাকতে পারবেন। এখানে রুম বুকিং দেয়া হয় বিডিং সিস্টেমে। বিড শুরু হবে ৬০$ ডলার বা ৭ হাজার ইয়েন বা ৫হাজার টাকার কাছাকাছি থেকে।
যদি এই প্রজেক্ট সফল হয় তাহলে ২০১৬ সালে এমন আরো একটি হোটেল চালু করা হবে বলে জানায় হোটেল কর্তৃপক্ষ। এবং সারা বিশ্বে এই প্রযুক্তি ব্যাবহার করার জন্য সকলকে উদ্বুদ্ধ করা হবে। কারন এতে খরচ তুলনামূলক ভাবে কম হয়।
তথ্য গ্রহনঃ আই এফ এল সাইন্স.কম
বিজ্ঞান এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বও এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তিতে। তো আমরা পিছিয়ে পড়ব কেন? আমরাও এগিয়ে যাব, সেই প্রত্যাশাই রইল।
বিজ্ঞানকে ভালোবাসুন, বিজ্ঞানের সাথে থাকুন।
টেকটিউনসে প্রকাশিত টিউনগুলো ওমেগা প্রাইম-মাসিক বিজ্ঞান ম্যাগাজিন ও আমার ব্যাক্তিগত ব্লগ ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশিত হয় না।
আমি কামরুজ্জামান ইমন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 33 টি টিউন ও 124 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।
বিজ্ঞানকে ভালবাসি। চাই দেশে বিজ্ঞান চর্চা হোক। দেশের ঘরে ঘরে যেন বিজ্ঞান চর্চা হয় সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।
Thanks for share