۩۩۩ জেনে নিন মক্কার ইতিকথা ۩۩۩ বাক্কায়↔মক্কার অপর নাম ছিল ۩۩۩

 ------------------------------------ بسم الله الرحمن الرحيم -------------------------------------

মানব জাতির জন্য আল্লাহ কর্তৃক নির্দিষ্ট সর্ব প্রথম গৃহ বা বাক্কায় (মক্কার অপর নাম ছিল) অবস্থিত। কাবা গৃহই বিশ্বের সর্বপ্রথম উপাসনালয়। অন্য অর্থে বিশ্বে সর্বপ্রথম গৃহ যা এবাদতের জন্য নির্মিত হয়েছিলো। ইতিপূর্বে কোন উপাসনালয়ও ছিলো না বা বাসগৃহও ছিলো না। হযরত আদম (আ.) ছিলেন আল্লার নবী, এমনটি অসম্ভব নয় যে পৃথিবীতে আগমনের পর বাসগৃহ নির্মাণের আগেই আল্লাহর ঘর অর্থাৎ ইবাদতের গৃহ নির্মাণ করেন। বিশিষ্ট সাহাবীগণের মতে কাবাই বিশ্বের সর্বপ্রথম গৃহ। পক্ষান্তরে এও হয়তো বা সম্ভব যে মানুষের বসবাসের গৃহ পূর্বেই নির্মিত হয়েছিলো কিন্তু এবাদতের জন্য কাবা গৃহই সর্বপ্রথম নির্মিত হয়। এ মতটি হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে।এক হাদীসে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, হযরত আদম (আ.) ও বিবি হাওয়ার পৃথিবীতে আগমনের পর আল্লাহ্‌তালা জিবরাঈলের মাধ্যমে তাঁদেরকে কাবা গৃহ নির্মাণের আদেশ দেন। এ গৃহ নির্মিত হলে তাঁদেরকে তা তওয়াফ করার আদেশ দেয়া হয় এবং বলা হয়, আপনি সর্বপ্রথম মানব এবং এ গৃহ সর্বপ্রথম গৃহ- যা মানবমণ্ডলীর জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

কাবা ঘরের ইতিহাস
ক্ষেত্রফলঃ৩,৫৬,০০০বর্গ মিটার।মুসুল্লি ধারন ক্ষমতা সাভাবিক সময়েঃ৭,৭৩,০০০,হজ,উমরাহ বা রমজানের মুওসুমে যা ১মিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়।ভুমি থেকে কাবার দরজার উচ্চতা প্রায় ২,৫মিটার,দরজার দৈর্ঘ্য ৩,০৬মিটার,প্রস্থ ১,৬৮মিটার।বর্তমান দরজা বাদশা খালেদের হাদিয়া(উপহার)দেয়া,যা নির্মানে প্রায় ২৮০কিলোগ্রাম সর্ণ ব্যবহার করা হয়েছে।হারামে ইমামের সংখ্যাঃ১৫জন।হারামে মুয়াজ্জিন সংখ্যাঃ১৭জন।প্রধান মুয়াজ্জিন আব্দুল মালিক বিন আব্দুর রহমান।
* কাবা নির্মাতা,ফেরেশতা, হজরত আদম, হজরত শীস, হজরত ইব্রাহিম,হজরত ইসমাইল ,আমালিকা,জুরহম,কুরাইশ,আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের,হাজ্জাজ বিন ইউসুফ,সুলতান মুরাদখান,ফাহদ।
* প্রথম কাবা তাওয়াফকারী ফেরেশতারা।
* প্রথম হারামে হজ আদায়কারী – ফেরেশতারা।
* প্রথম কাবার ছাঁদ নির্মাতা -কুসাই বিন কিলাব।
* প্রথম কাবাকে আংশিক গিলাফ পড়িয়েছেন – হজরত ইসমাইল।
* সর্বপ্রথম সম্পুর্ণ কাবাকে গিলাফ পড়িয়েছেন – তুব্বা আসআদ আলহিমরারী।
* সর্বপ্রথম কাবাতে মুর্তি স্থাপন করেছেন – আমর বিন লুহাই আল খুজাঈ।
* সর্বপ্রথম কাবার মিনার বানিয়েছেন – কুরাইশ।
* সর্বপ্রথম কাবাকে গোসল দিয়েছেন – রাসুল(সা),মক্কা বিজয়ের দিন কাবা থেকে মুর্তিগুলো নিস্কাশনের পর।
* কাবাপৃষ্টে সর্বপ্রথম উচ্চসরে আযান দিয়েছেন – বেলাল বিন রাবাহ।
* সর্বপ্রথম কাবাকে মিনজানিক দিয়ে হামলা করেছেন – আল হুসাইন বিন নুমাইর,ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়ার নির্দেশে ইবনু যুবায়েরের সাথে যুব্ধের প্রাক্কালে(৬৪ হিজরী)।
* ১০৩৯ হিজরী বন্যার ফলে কাবার একটি অংশ ধসে যায়।
* পৃ্থিবীর সর্বোতম ছায়া কাবার ছায়া।

 

 

গিলাফে কাবা আচ্ছাদনের ইতিহাস

মাওলানা শাহ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানঃ

 পবিত্র কাবা শরীফকে সুন্দর গিলাফ দ্বারা আচ্ছাদন আল্লাহর এই পবিত্র গৃহের প্রতি ভালবাসা ও সম্মানেরই একটি সুস্পষ্ট প্রকাশ এবং এ জন্যই এটা বলা সম্ভব হয়েছে যে, পবিত্র কাবা শরীফকে গিলাফের আচ্ছাদনের ইতিহাস কাবার নিজের ইতিহাস একই সূত্রে গাঁথা। ইতিহাসের সুস্পষ্ট দলিল বা প্রমাণ এই যে, হযরত ইসমাঈল (আ.) প্রথম পবিত্র কারা শরীফকে গিলাফ দ্বারা আচ্ছাদন করেন এবং এই ধরনের কথাও রয়েছে যে, প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পূর্ব পুরুষ আদনান ইবনে আইদ পবিত্র কাবা শরীফকে প্রথম গিলাফ দিয়ে আচ্ছাদন করেন। কিন্তু ইতিহাস থেকে পাওয়া সত্যের কাছাকাছি তথ্য হচ্ছে, হিমিয়ারের রাজা তুব্বা আবু কবর আসাদই সম্ভবতঃ পবিত্র কাবা শরীফ গিলাফ আচ্ছাদনকারী প্রথম ব্যক্তি। তিনি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ইয়াসরিব শহরে (বর্তমান পবিত্র মদীনা শহর) হিজরতে ২শ’ ২০ বছর বছর আগে এই শহরে (ইয়াসরিব) হামলা করেন। 

ইবনে হিশাম তার ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে, হিমিয়ারের রাজা ইয়াসরিব ছেড়ে যাবার সময় পবিত্র মক্কায় প্রবেশ করে পবিত্র কাবা শরীফ তাওয়াফ শেষে তার মাথা মুন্ডন করেন এবং এই শহরে কয়েকদিন অবস্থান করেন। মক্কায় অবস্থানকালে একদিন তিনি ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখেন যে, তিনি কাবা শরীফ গিলাফ দ্বারা আচ্ছাদন করছেন। এরপরই তিনি খাসাপ দ্বারা আল্লাহর ঘরটি আচ্ছাদন করেন। উল্লেখ্য, খাসাপ হচ্ছে তালগাছ জাতীয় গাছের পাতা ও আঁশের তৈরি এক ধরনের মোটা কাপড়। তারপর তিনি আবার স্বপ্ন দেখেন যে, তিনি আরো উন্নতমানের কাপড় দ্বারা কাবা শরীফ আচ্ছাদন করছেন। তার আলোকে মামিজিয়ান, পাপিরাস (মিশর দেশীয় নলখাগড়া বিশেষ পাতা) দ্বারা কাবা ঘর আচ্ছাদন করেন। ইয়েমেনের মামিজ নামক একটি উপজাতীয় গোত্র এই কাপড় তৈরি করে। তৃতীয়বারের মতো তিনি আবারো আরো উন্নত কাপড় দিয়ে কাবাঘর আচ্ছাদনের স্বপ্ন দেখলেন- এবার তিনি ইয়েমেনের লাল ডোরাকাটা কাপড় দিয়ে পবিত্র কাবা ঢেকে দিলেন।

এরপর থেকে লোকজন কিছু সময়ের ব্যবধানে সুন্দর কাপড় বা গিলাফ দিয়ে পবিত্র কাবাঘর আচ্ছাদনের অনুশীলন অব্যাহত রাখে। যার ফলশ্রুতিতে এখনো দামী কালো কাপড়ের তৈরি মোটা গিলাফ দিয়ে পবিত্র আল্লাহর ঘর ঢাকা রয়েছে। উল্লেখ্য, পবিত্র মক্কা বিজয়ের আগে প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসরণে এ কাজে বিরত থাকেন। এর পরবর্তী অধ্যায়ে খোলাফায়ে রাশেদীন আমলে হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.), হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) হযরত ওসমান ইবনে আফফান (রা.) পবিত্র কাবা শরীফকে সুন্দর গিলাফে আচ্ছাদন করেন এবং পরবর্তীতে মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া, আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর এবং আবদুল মালিক মারওয়ান পবিত্র কাবা শরীফ গিলাফে আচ্ছাদন করেন। আব্বাসীয় শাসনামলেও এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে।

আব্বাসীয় খলিফা আল আব্বাস আল মাহদী ১৬০ হিজরীতে পবিত্র হজ্ব পালনকালে পবিত্র কাবা থেকে একটি ছাড়া সবগুলো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। এখনো এই ধারাই অব্যাহত রয়েছে। বাদশাহ বাইবার্স হচ্ছেন পবিত্র কাবায় গিলাফ পরিয়ে দেয়া প্রথম

গিলাফ পরান। পরবর্তীতে মিসরের শাসকরা পর্যায়ক্রমে এ কাজ অব্যাহত রাখেন।

৮১০ হিজরীতে পবিত্র কাবার দরজায় একটি সুন্দর সুসজ্জিত নকশা সম্বলিত পর্দা লাগিয়ে দেয়া হয়। এক পর্যায়ে মিশরীয় সরকার বহু অর্থ ব্যয়ে কাবা শরীফ ঢাকার জন্য একটি সুন্দর গিলাফ তৈরি করে লাগিয়ে দেন। পরবর্তীতে বাদশা আবদুল আজিজ আল সউদ মক্কা-মদীনার দুই পবিত্র মসজিদের দেখাশোনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ১৩৪৬ হিজরিতে পবিত্র কাবা শরীফের গিলাফ তৈরির জন্য একটি বিশেষ ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেন। একই বছরে মাঝামাঝি সময়ে প্রয়োজনীয় কাপড় তৈরি করে মক্কা মুকাররমায় দক্ষ শিল্পীর মাধ্যমে সুন্দর নক্শা তৈরি করে ইসলামী শিল্পকলায় সমৃদ্ধ রূপায়ণ সুন্দর গিলাফ তৈরি করে পবিত্র কাবার গায়ে পরিয়েছেন। ১৩৫৭ হিজরী পর্যন্ত এই ফ্যাক্টরি গিলাফ বা কিসওয়া তৈরি অব্যাহত রাখে।

পরবর্তীতে ১৩৮১ হিজরীতে সৌদি হজ্ব ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে দক্ষ সৌদি কারিগর দ্বারা রেশমী ও সোনালী সুতা দিয়ে গিলাফ তৈরি করে কাবার গায়ে পরিধানের ব্যবস্থা করা হয়। ১৩৮২ হিজরীতে মরহুম বাদশা ফয়সাল ইবনে আঃ আজিজ নতুন ডিক্রিজারির মাধ্যমে নতুন করে পবিত্র কাবার গিলাফ তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেন। খাঁটি প্রাকৃতিক রেশমী রং এর সাথে কালো রং-এর কাপড় দিয়ে পবিত্র কাবার গিলাফ তৈরির ব্যবস্থা হয়। এর মধ্যে পবিত্র কুরআন শরীফের কিছু আয়াত শোভা পায়। অক্ষরগুলো সোনালী আভায় উদ্ভাসিত। মুসলিম মিল্লাতের হৃদয়ের মণিকোঠায় কাবাশরীফ চির ভাস্মর হয়ে রয়েছে।

Level 0

আমি ۩۩۩ডিজিটাল বিপ্লব۩۩۩। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 43 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

খুব সুন্দর হইছে। আপনিতো খুব ভাল লিখেন।
আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।

অনেক সুন্দর লিখছেন ।

টিউনটি save করে রাখলাম। শেয়ার করার জন্য কৃতজ্ঞতা।

করলে ডাউনলোড করেও রাখতে পারবে আর সবচেয়ে বড় কথা এখানে বাংলাও আছে।
অত্যন্ত সুন্দর এবং তথ্য বহুল একটি টিউন উপহার দিলেন,আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিবেন নিশ্চয়,সামনে এই রকম আরো ভাল ভাল টিউন আশা করছি।
আমি প্রথমেই দাবি করেছিলাম ‘ইসলাম’ নামে একটি বিভাগ খোলা হউক যাতে করে এই ধরনের টিউন সেখানে স্থান পাবে আশা করি এডমিন প্যানেল এই ব্যপারটা বিবেচনায় নিবেন।

    প্রথম লাইনটা কমেন্টের বাহিরে থাকবে এটা ভুল করে হয়ে গেছে।

চমৎকার একটি টিউন করেছেন । অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ।

ধন্যবাদ টিউনটির জন্য

অনেক ধন্যবাদ টিউনের জন্য।

অনেক — অনেক — অনেক ধন্যবাদ টিউনটির জন্য আপনাকে।