বাংলাদেশের প্রত্যেক তরুণই ইচ্ছা,পরিবেশ,জনসংখ্যা,ট্রাফিক জ্যাম,রাস্তার অবস্থা এবং স্বল্প রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ইত্যাদি বিবেচনা করে একটি মোটরসাইকেল কেনার স্বপ্ন দেখে । বর্তমান সময়ে বাইক নিয়ে আগ্রহের মূল কারণ হল ট্রাফিক জ্যাম ও গাড়ির উচ্চমূল্য ।
একজন তরুণের কাছে বাইক হল তার ভালবাসা এবং কারো কাছে এটা তার সম্পদ । ভালবাসা কিংবা প্রয়োজন যাই হোক অধিকাংশ বাইকের মালিক তাদের বাইক কেনে ১ থেকে ১০ বছর বা তারও বেশী সময়ের মধ্যে। তাই বাইক কেনার পূর্বে যথাযথ পরিকল্পনা আপনাকে দেবে সঠিক বাইক এবং আপনার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার অনুভূতি ।
মোটরসাইকেল কেনার পূর্বে আপনি এই প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো অনুসরন করতে পারেনঃ
যে বাইক আপনি কিনতে পারবেন না,সে বাইকের স্বপ্ন দেখবেন না । একটি বাজেট করুন।আমার পরামর্শ হল সবসময় ৫০০০ টাকা অতিরিক্ত রাখবেন । ধরা যাক আপনি ২০০,০০০ টাকা দিয়ে একটি বাইক কিনবেন । তাহলে বাজেট করুন ২০৫০০০ টাকা ,কারণ ২০০,০০০ টাকা দিয়ে বাইক কেনার পর আপনাকে থেফট অ্যালার্ম সিস্টেম,কসমেটিকস কেয়ার আইটেম ,কভার,রেইন ক্লথ, হেলমেট ইত্যাদি কিনতে হবে ।
আপনার বাজেটের সাথে মিলিয়ে বাংলাদেশে পাওয়া যাবে এমন বাইকের সংক্ষিপ্ত তালিকা করুন । যদি এ তালিকা লম্বা হয় তাহলে আপনার পছন্দ অনুযায়ী ছোট করুন ।একটি বাইকের সুন্দর লুক দেখেই পছন্দ করবেন না ।
চারদিকে তাকান , আপনার বন্ধু, আত্মীয়,প্রতিবেশী যে কারো একটি বাইক থাকতে পারে । একজন বাইকের মালিক সবসময় আপনাকে বাইক সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতাই জানাবে । আপানার কাঙ্খিত বাইক সম্পর্কে তাদের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করুন । যদি কেউ এমন কোন বাইকের মালিক হয় যেটা আপনার সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল তাহলে তার কাছে যান এবং ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, খুচরা যন্ত্রাংশের দাম, সার্ভিস এসব নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করুন।
যদি বাংলাদেশে কেনার পূর্বে একটি মোটরসাইকেল পরীক্ষামূলকভাবে চালাতে চান তাহলে আপনি শোরুম হতে সে সুযোগ পাবেন না । বাংলাদেশের শোরুমগুলোতে “ টেস্ট ড্রাইভ ” সুবিধাটি নেই । আপনি আপনার বন্ধু ও আত্মীয়দের কাছে যান যাদের কাছে আপনার পছন্দের বাইকটি আছে । একটি “টেস্ট ড্রাইভ” আপনাকে বাইক চালানোর সঠিক অনুভূতি দেবে এবং এটি আপনাকে পছন্দের বাইকের তালিকা ছোট করতেও সাহায্য করবে । একটি ব্যাপার মনে রাখবেন, একটি ভ্রমণ আপনার সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারে ।
এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করবে বাইকের ব্যবহার এবং ব্যবহারকারীর বয়সের উপর । আপনি যদি সৌখিন চালক হন তাহলে মাইলেজের ব্যাপারে ভাববেন না । যদি আপনি মধ্যবয়সী হন এবং আপনার উদ্দেশ্য যদি হয় অফিস থেকে আসা-যাওয়া বা শহরের বাইরে যাওয়া তাহলে মাইলেজ একটি বড় বিষয় । সাধারনত ৫০-১৩৫ সিসির বাইকগুলো তাদের মাইলেজ এবং দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাবহারের জন্য জনপ্রিয় । অফিসগামী লোকজন এ ধরনের বাইক ব্যাবহার করে থাকেন।
নিজে নিজে ভাবুন যে আপনি একটি মোটরসাইকেল কোম্পানির মালিক এবং পণ্যের বেশী বিক্রির কারণে আপনার প্রচুর লাভ হচ্ছে, তাই আপনার মোটরসাইকেলের কোয়ালিটি ও নতুন প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট টাকা রয়েছে । তাই এই প্যারার মূল বিষয় হল সর্বাধিক বিক্রিত বাইকটি নেয়া । কারণ অধিকাংশ ব্যাবহারকারী যারা তাদের বাইক নিয়ে সন্তুষ্ট তারা কখনো বোকা হতে পারেন না । ২০১১ সালে বাজাজ পালসার ১৫০সিসি ছিল বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রিত মোটরসাইকেল ।
এমন বাইক পছন্দ করুন যেটার সার্ভিস সেন্টার আপনার বাড়ির কাছে । একটি বাইক এখন ভাল, কিন্তু কখন এটা সমস্যা করবে তা আপনি বলতে পারেন না ।ধরা যাক আপনি থাকেন দিনাজপুরে কিন্তু আপনার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল কোম্পানির সার্ভিস ষ্টেশন গাজীপুর যেটা প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে । এটাকেই বলে প্রকৃত ঝামেলাকর অবস্থা ।
আমার এক বন্ধু হোন্ডা সিবি৬৫০(CB 650) মোটরসাইকেল কিনেছিল । কিন্তু ইঞ্জিনের একটি সাধারন যন্ত্রাংশ হারানোর পর একটি চমৎকার বাইক হতে এটি একটি জঞ্জালে পরিনত হয়।এই বাইকের কোন যন্ত্রাংশ বাংলাদেশে নেই । তাই সতর্কতার সাথে বাইক পছন্দ করবেন যেটার খুচরা যন্ত্রাংশের দোকান রয়েছে এবং সাথে সাথে কেনার ক্ষেত্রেও ছাড় দেবে।
ধরুন আপনি ৬ ফুট লম্বা এবং চালাচ্ছেন একটি ছোট বাইক যেমন হোন্ডা ৫০সিসি । যেটা দেখতে হাতির ইঁদুরের উপর চড়ার মত । তাই যে বাইকটি আপনার উচ্চতার সাথে মানানসই,যেটা আপনাকে ভ্রমণের সময় সুন্দর লুক দেবে সেটি পছন্দ করুন ।
সবসময় শুনুন আপনার “দিল” কি বলে.........হা...হা...হা... হ্যাঁ এটা সত্যি । শুধুমাত্র বাজেটের কথা চিন্তা করে বাইক কিনবেন না । পাশাপাশি আমার পরামর্শ হল কিছু সময় অপেক্ষা করুন এবং আপনার পছন্দের বাইকের জন্য টাকা জমান । যদি শুধুমাত্র বাজেটের কথা চিন্তা করে বাইক কেনেন তাহলে এটা কখনো আপনাকে সন্তুষ্ট করতে পারবে না । কিছুদিন পর অবশ্যই আপনি বাইকটি বিক্রি করে দিবেন এবং পছন্দের বাইকটি কিনতে যাবেন । মাঝখান দিয়ে আপনি একটি বড় অঙ্কের টাকা হারাবেন। তাই আপনার পছন্দ অনুযায়ী বাইক কিনুন।
এগুলো বাংলাদেশে মোটরসাইকেল কেনার ক্ষেত্রে অবশ্য পালনীয় নির্দেশনা যা আপনাকে আপনার স্বপ্নের বাইক পেতে সাহায্য করবে । উপরের সবগুলোর মধ্যে আমি জোর দিয়ে বলব “আপনার পছন্দ অনুযায়ী নিন...............।” নিরাপদ থাকুন এবং ঠাণ্ডা মাথায় বাইক চালান ।
সৌজন্যে: বাইকবিডি
আমি suvrosen007। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 18 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ভাই অসাধারণ টিউন. কিন্তু কিছুদিন আগে পেলে আমার আরও উপকার এ আসত। walton 125 fusion ex new টা কিনলাম .service ভাল। আমি setisfied.