খ্রিস্টের জন্মেরও ১০০বছর পুর্বে মধ্য আমেরিকার নিম্নভূমির বনাঞ্চলে এক অদ্ভুত এবং অসাধারন সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল।
এই সভ্যতা যে জনগোষ্ঠী নির্মাণ করেছিল, তারা অধিকাংশ প্রাথমিক সভ্যতা নির্মাণকারীদের মতো শহরে জীবন যাপন করতো না। বরং তাদের বসবাস ছিল ছোট ছোট কৃষি-গ্রামে।
তারা পিরামিডের মতো দেখতে উপাসনাগৃহ ও উৎসবস্থল তৈরি করেছিল।
এগুলো ছিল তাদের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক জীবনের কেন্দ্রবিন্দু।
মায়াদের ৪টি প্রধান কেন্দ্র ও অনেকগুলো ছোট ছোট কেন্দ্র ছিল। প্রধান কেন্দ্রগুলোর একেকটি থেকে দেশের প্রায় এক চতুর্থাংশ এলাকায় শাসনকার্য চালানো হতো।
এই প্রাচীন গোষ্ঠীই মায়া নামে পরিচিত। আর এদের সভ্যতাই পরিচিত "মায়া সভ্যতা" নামে।
মেসো শব্দটা গ্রিক। অর্থ, ‘মধ্য’। যেমন, মেসোপটেমিয়া।
এর মানে: দুই নদীর মধ্যেখানের অঞ্চল। তেমনি, মেসোআমিরিকায় বলতে বোঝায় মধ্যআমেরিকাকে, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যবর্তী অঞ্চলটিকে (প্রধানত মেক্সিকো) ।
মেসোআমেরিকায় কতগুলি সভ্যতা বিকাশ লাভ করেছিল। যেমন, ওলমেক, অ্যাজটেক, মায়া। এর মধ্যে মায়া সভ্যতার উৎপত্তি ও বিকাশ ছিল অভূতপূর্ব।
বর্তমান মেক্সিকো, গুয়েতেমালা, বেলিজ ও হন্ডুরাসজুড়ে ছড়িয়ে ছিল মায়া সভ্যতা।
লিখিত ভাষাসহ, মেসোআমিরিকার সবচে উন্নত সভ্যতা ছিল মায়া সভ্যতা।
মায়াদের পুর্বপুরুষেরা ২০০০০ বছর আগে বেরিং প্রনালী অতিক্রম করেছিল বলে তাদের ধারনা । এর পক্ষে অবশ্য তেমন কোনও সত্যতা পাওয়া যায় না ।
সম্প্রতি মেক্সিকোয় ৫০০০-১৫০০ খ্রীস্টপুর্বের ব্যবহ্রত কিছু যন্ত্রপাতির নমুনা পাওয়া গেছে, যা থেকে ধারনা করা যায়, এই অঞ্চলের অন্যান্য প্রাচীন সভ্যতার সঙ্গে মায়ানদের যোগাযোগ ছিল ।
প্রত্নতাত্তিকেরা এখনও মায়ানদের পুর্বপুরুষ বলে পরিচিত ওলমেক সভ্যতার সাথে তাদের কোনও সরাসরি যোগসুত্র খুজে পায়নি, তবে তাদের মধ্যে যে একটি যোগাযোগ ছিল, তা তারা নিশ্চিত হয়েছে ।
মায়া সভ্যতার বিকাশ কে মুলত ৩টি পর্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে.....
এই সময়ের মধ্যে মায়া সভ্যতা সবচেয়ে উন্নত ছিল বলে ধারনা করা হয় ।এই সময় মায়ান সমাজে পেশা ভিত্তিক শ্রেনী ব্যবস্থা গড়ে ওঠে,
যার প্রধান ছিলেন একজন কেন্দ্রীয় শাসক । প্রত্যেক শাসকের জন্যে নির্দিষ্ট সীমানা নির্ধারিত ছিল, যা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হত ।
এই সময়ের মধ্যে মায়ান সভ্যতার প্রধান শহরগুলো হচ্ছেঃ তিকাল (guantemala), পালেঙ্ক ও ইয়াক্সচিলতন (চিপাস, মেক্সিকো) এবং কপতন ও kuirigua (হন্ডুরাস) ।
কিন্তূ বেশিরভাগ মায়ান জনগনের আবাস ছিল মেক্সিকোর শহরগুলোতে । এই সময়ে খরা, মহামারি জাতিগত দাঙ্গা এবং ব্যাবসা-বানিজ্যের অচলাবস্থার জন্যে অবশ্য উত্তর ইউকাতান এলাকায় (এখনকার কানকুন, মেক্সিকো) জনবসতি কমতে শুরু করে । সে সাথে বড় শহরগুলো ভেঙ্গে ছোট ছোট উপশহরের সৃষ্টি হয় ।
মেসো-আমেরিকান সভ্যতাগুলোর ধর্মীয় উৎসবে আত্মোৎসর্গ করার একটা ব্যাপার ছিল, যা অনেক সময় রক্তাক্ত উৎসবে পরিনত হত ।
কিন্তু মায়া জনগনের মধ্যে আত্মোৎসর্গ করার কোনও ব্যাপার ছিল না, যদিও তারা রক্ত দিয়ে তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করত । এই কাজে তারা স্টিং রে মাছের কাটাযুক্ত লেজ ব্যবহার করত ।
" প্রতীকী ছবি"
সমাজের সব স্তরের মানুষের মধ্যে এই উৎসব চলত, যদিও রাজা বা নেতৃস্থানীয়দের মধ্যে প্রায়শয়ই এটি ঘটতে দেখা যেত । মায়া জনগন শান্তিপ্রিয় ছিল; তারপরও তারা মাঝে মাঝে প্রতিবেশির জমি বা ফসল দখলের জন্যে যুদ্ধ করত ।
কলম্বাস পুর্ববর্তী সভ্যতাগুলোর মধ্যে জ্ঞান-বিজ্ঞানে মায়ারাই সবচেয়ে উন্নত ছিল বলে ধরা হয় । তারা গনিতে শুন্যের ব্যবহার জানত ।
তারা তাদের ভাষার মাধ্যমে প্রায় সব ধরনের ভাব প্রকাশ করতে পারত । তাদের মধ্যে কাগজের ব্যবহার ছিল, পাশাপাশি তারা লেখার কাজে মসৃন পাথর ব্যবহার করত ।
প্রায় ৩১১৪ খ্রীস্টাব্দ থেকে মায়ান ক্যালেন্ডারের শুরু, যদিও তখনও এই সভ্যতার শুরুই হয় নি ।
নিজেদের ভবিষ্যত কর্মসুচী নির্ধারনের জন্যে তারা এই ক্যালেন্ডার ব্যবহার করত ।
(মায়ান ক্যালেন্ডার নিয়ে পরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে)
তারা অসংখ্য বইয়ে তাদের ইতিহাস লিখে রেখেছিল, কিন্ত ১৫৬২ সালে ইউকতান বিশপ ফ্রে ডিয়েগো দে লানদা এর নির্দেশে সমস্ত বই ধংস করা হয় । শুধুমাত্র তিনটি বই ধংসের হাত থেকে রক্ষা পায়।
মায়ারা হায়ারোগ্লিফিক্সে খুবই পারদর্শি ছিলো। উপরের ছবি গুলো দেখে তা সহজেই অনুমান করা যায়।
৯০০ সালের পরে মায়ারা ইউকতান এলাকায় স্থানান্তরিত হয় । এই সময় তাদের জীবনধারায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে । জ্ঞ্যান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তাদের অগ্রগতি একরকম থেমে যায় ।
বর্তমানে কানকুনের দক্ষিনে এই সময়ের কিছু নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায় ।
পোস্ট ক্লাসিক পর্যায়ের মায়ান শহরগুলোর মধ্যে চিচেন ইটযা, উক্সমাল এবং মায়পটন (মেক্সিকো) উল্লেখযোগ্য । ১০০০-১১০০ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চল মোটামূটি শান্ত ছিল,
(প্রতীকী ছবি)
কিন্ত ১১০০ সালের পরে মায়ানরা তাদের বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে যুদ্ধ শুরু করে । ১৪৪১ সালে উক্সমাল মায়ানরা মায়পটন শহর ধ্বংস করে দেয়
এবং ‘মানি’ নামের নতুন একটা শহর গোড়ে তোলে । স্প্যানিশরা এই অঞ্ছল দখল করে নেওয়ার আগপর্যন্ত এই যুদ্ধ চলতে থাকে।
চিচেন ইটযা শহরটিতে ৫০০-৯০০ সালের মধ্যে বসতি গড়ে ওঠে, কিন্ত কোনও এক কারনে ৯০০ সালের পরে এই শহরটি পরিত্যাক্ত হয় । প্রায় ১০০ বছর পরে এই শহরে জনবসতি গড়ে ওঠে,
এবং সাথে সাথেই উত্তরদিক থেকে টলটেক রা এটি দখল করে নেয় । ১৩০০ সালের দিকে অজ্ঞাত কারনে এই শহর আবার পরিত্যাক্ত হয় । স্প্যানিশরা যদি মায়ানদের সমুলে বিনাশ করার নীতি গ্রহন না করত, তাহলে হয়ত এর সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যেত ।
হিস্পানিওলা (বর্তমানে ডোমিনিকান রিপাবলিক) ও কিউবা দখলের পর স্প্যানিশরা উপসাগর পেরিয়ে ইউকতান এলাকার দিকে নজর দেয়া শুরু করে ।
১৫১৭ সালে ‘সিরোবা’ বলে এক স্প্যানিশ অভিযাত্রী ইছলা মুহের আবিস্কার করে ইউকতান এলাকার দিকে অগ্রসর হয় । কিন্ত মায়াদের কাছে হেরে গিয়ে তার অভিযান বন্ধ হয়ে যায় ।
১৫১৯ সালে কর্টজ নামের এক স্প্যানিশ সেখানে পৌছাতে পারে এবং এজটেক নিয়ন্ত্রিত এলাকা দখল করে নেয় । কিন্ত পরবর্তী ২০ বছরে স্প্যানিশরা ইউকতান এলাকা দখল করতে পারে নি ।
শেষ পর্যন্ত মায়ারা হেরে যায় এবং স্প্যানিশরা তাদেরকে নির্বিচারে খুন করতে থাকে । মায়াদের গ্রামাঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং তাদের উপরে অতিরিক্ত কর ধার্য করা হয় ।
এর মধ্যেই মাঝে মাঝে মায়ারা বিদ্রোহ করতে থাকে ।
১৮৪৭ সালের জুলাই মাসে মায়াদের সাথে স্পানিশদের প্রচন্ড যুদ্ধ শুরু হয় । স্প্যানিশরা তখন আমেরিকা ও মেক্সিকোর যুদ্ধ নিয়ে ব্যস্ত, তাই ইউকতান এলাকার দিকে তাদের নজর কমে যায় । সেই সাথে মায়ারা বেলিজ ইংরেজদের সাহায্য নেয় এবং প্রায় ৯০% এলাকা নিজেদের দখলে নিয়ে আসে ।
কিন্ত ১৮৪৮ সালে আমেরিকা ও মেক্সিকোর যুদ্ধ শেষ হওয়ার সাথে সাথে স্প্যানিশরা মায়াদের ইউকতান এলাকা থেকে বিতাড়ন করে ।
সাধারণত মায়া নাগরায়ণ শহরের মধ্যে খুজে পাওয়া যায় নাগরিক এবং ধর্মীয় স্মৃতিসৌধ, মন্দির, কোর্ট এবং মিটিং এর বাসস্থান, প্রান্তে গ্রামগুলো এবং কৃষকদের বাড়ী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল।
টিকাল বৃহত্তম কিন্তু নিশ্চিতভাবে পুরনো শহর ছিল না, যদিও কেউ মনে করে El Mirador মত কেন্দ্রগুলোকে এবং অতি প্রাচীন কেন্দ্রগুলোকে বর্তমান বেলিজ অথবা এমনকি Kaminaljuyu গুয়াতেমালাকে।
তাদের নাগরিক এবং ধর্মীয় মধ্যের প্রায় ২ বর্গকিমি একটি অঞ্চল ছিল, ক্ষুদ্রতর শহরটি ২ অথবা ৩ মাইলের একটি ব্যাসার্ধের ওপর প্রসারিত হয়েছিল।
রাজত্ব করেছিল ৫ মন্দির পিরামিড, সব চেয়ে বড়টির উচ্চতা ছিল ৭৫ মিটার। তারপর Copán ছিল,
মায়া বিশ্বের আলেকজান্দ্রিয়া স্থানটি একটি ভূল অর্থ করার জন্য, দীর্ঘ সময়ের জন্য বিশ্বাস করা হয়েছিল যে বিজ্ঞানী এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানীর একটি মিটিং এর প্রতিনিধিত্ব করতো, যখন পরে চেনা হয়েছিল শহরের শাসদের তালিকা হিসেবে, Chichen Itza, Yucatan এর পবিত্র শহর যেটি তীর্থযাত্রীরা অগ্রসর হয়েছিল সম্মানের সঙ্গে, একটি বড় প্রাকৃতিক কূপ ছিল, মানবিক উৎসর্গের স্থান।
শহরের ছায়াতে ছিল ভুট্টা, সবকিছু যা তারা করতো এবং যা তারা বিশ্বাস করতো, ভুট্টার সঙ্গে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ছিল। মন্দির এবং উৎসর্গ গুলো তাদেরকে অধিক শস্যর নিশ্চিতকরণের কাজ ছিল,
সম্প্রসারিত ধর্মতত্ত প্রসন্নতা সম্পাদনের একটি হাতিয়ার ছিল, কিন্তু ফল গুলোর বীজেরও; বর্ষপঞ্জিকার সময় মাঠে কাজের ভিত্তি ভাগ করা হয়েছিল।
মায়ান নগরীতে উৎসবের দিনে সব জেলা জুড়ে প্রবাহিত ছিল প্রথা গুলোতে উপস্থিত থাকার, পশু বলি, প্রগতির যাত্রার, দাঁড়িয়ে থাকা চারা গাছগুলোর, বল খেলার, কর প্রদান করার এবং তারপর হিনটারলেন্ড এর তাদের আরামদায়ক কামরা-ঘরে যেত। মায়ান স্থাপত্যে বাকে ফিরে আসছে, এইটি সম্পূর্ণরূপে স্বদেশজাত মনে হতো, কিন্তু অনেক পন্ডিত অনুমান করে যে এটি এশিয়া সভ্যতার স্পর্শ দ্বারা কিছুটা প্রভাবিত ছিল।
মায়ারা আজ রোমান ক্যাথলিজমে বিশ্বাসী হলেও পূর্বেকার মায়া বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি, দেবদেবী ও গৃহস্থালী পরব পালন করে আজও। মায়ারা অনেক দেবতায় বিশ্বাসী ছিল। সে দেবতা ভালো মন্দ দুটোই হতে পারতেন।
ইটজামনা ছিলেন প্রধান দেবতা। তিনি সৃষ্টিকর্তা, আগুন ও উনুনের দেবতা।
অন্য একজন হলেন পালকযুক্ত সরীসৃপ কুকুলকান। ইনি বৃষ্টি ও বজ্রপাতের দেবতা। মায়াদের উপসনালয়ে এর মূর্তি পাওয়া গেছে। মৃত্যুর পরের জীবনে বিশ্বাসী ছিল মায়ারা। মৃত্যুর পর আত্মার বিপদজনক ভ্রমন শুরু হত পাতালদেশে। পাতালের অধিকর্তা দেবতা অমঙ্গলকর। সে দেবতার প্রতীক Jaguar। Jaguar রাত্রিরও প্রতীক।
রাতের আকাশকে একটি জানালা হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল, যে সমস্ত অপ্রাকৃতিক কার্যকলাপ প্রদর্শন করে। মায়ারা তারামণ্ডলী দ্বারা দেবতা এবং স্থান নির্দেশ করতো, তাদের ঋতুভিত্তিক ধারাবাহিক গতি বর্ণনার উদঘাটন দেখতো, এবং বিশ্বাস করতো যে, সব সম্ভাব্য বিশ্বগুলোতে রাতের আকাশে মিল ছিল। মায়ারা প্রকৃতির আবর্তন লক্ষ করেছিল। সময় নিয়ে অবসেসড ছিল। তারা মনে করত বিশ্বজগৎ ৫ বার সৃষ্টি হয়েছে আর ৪ বার ধ্বংস হয়েছে। বছরের কোনও কোনও দিন শুভ কোনও কোনও দিন অশুভ।
মায়া দেবতাদের গ্রিক দেবতার মত আলাদা সত্ত্বা ছিল না। দেবতার ঘনিষ্ট সম্পর্ক এবং বিভিন্ন দিক ছিল, যেকারণে তাদের একে অন্যকে একটি উপায়ে একত্রিত করেছিল যা মনে হয়েছিল অসীমিত। এটি কখনও কখনও বিশ্বাস করা হয় যে একাধিক "ঈশ্বর" এর প্রতিনিধিত্ব একটি গাণিতিক ব্যাখ্যার চেয়ে বেশি কিছুই না যা তারা পর্যবেক্ষণ করেছিল।
শাসককে বন্দি করত, টর্চার করত, তারপর তাকে দেবতার কাছে বলি দিত! নরবলি বা হিউম্যান স্যাক্রিফাইস ছিল মায়াদের ধর্মবিশ্বাসের মূলে। মায়ারা নরবলি দিত উর্বরতা, ধর্মনিষ্টা দেবতার সন্তুষ্টির লক্ষ্যে । মায়া পুরোহিত বিশ্বাস করত দেবতা মানুষের রক্তে পুষ্ট হন! রক্তই দেবতাদের সঙ্গে যোগাযোগের উপায়।
মেক্সিকানের অন্যান্য সভ্যতা গুলোর সাথে মায়া সভ্যতার মিল হলো,
মায়া ব্যবহার করতো একটি ২০ ভিত্তি সংখ্যা (vigesimal) এবং ৫ ভিত্তি সংখ্যা পদ্ধতি। তা ছাড়াও, প্রেক্লাসিক মায়া এবং তাদের প্রতিবেশীদের ৩৬ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে শূন্যের ধারণা স্বাধীনভাবে ক্রমবিকাশিত করেছিল। তাদের লেখা হতে বুঝা যায় যে তারা কাজ উপর ভিত্তি করে লাক্ষ লাক্ষ অংকের হিসাব করতো এবং তারিখ গুলো এতো বড় হতো যে তা শুধু লিখতে অনেক লাইনের দরকার হবে। তারা খুব নির্ভূল ভাবে জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ করেছিল; তাদের নকশায় চাঁদ এবং অন্যান্য গ্রহগুলোর পর্যায়কাল সমান অথবা অন্যান্য সভ্যতার খালি চোখে পর্যবেক্ষকগণদের থেকে উন্নত ছিল।
তারা হায়ারোগ্লিফিক্স দিয়েও সংখ্যা প্রকাশ করতে পারতো!!
মেক্সিকানের অন্যান্য সভ্যতা গুলোর সাথে মায়া সভ্যতার আরও মিল হলো, মায়া সঠিক এবং নির্ভুলতার সাথে সৌর বছরের দৈর্ঘ্য পরিমাপ করেছিল। ইউরোপীয়নরা যে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জিকা ব্যবহার করতো তার চেয়েও অনেক বেশি সঠিক এবং নির্ভুল ছিল। যাইহোক; তারা যে অপরিণত বর্ষপঞ্জিকা ব্যবহার করেছিল,
এটি ভিত্তি করা হয়েছে এক বছর যথাযথভাবে ৩৬৫ দিন, এর অর্থ এই যে বর্ষপঞ্জিকা প্রতি চার বছরে এক দিন বৃদ্ধি পায়। জুলিয়ান বর্ষপঞ্জিকা ব্যবহার হতো ইউরোপে রোমানদের সময় থেকে ১৬ শতাব্দীর শুরু পর্যন্ত। প্রতি ১২৮ বছরে কেবল এক দিনের ত্রুটি জড়িত হয়েছিল। আধুনিক গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জিকা আরও বেশি নির্ভূল, প্রায় ৩২৫৭ বছরে কেবল এক দিনের ত্রুটি জড়িত হচ্ছে।
সময় এবং সৃষ্টির এক সুন্দর বিন্যাস সম্পর্কে তারা অনেক আগেই অবগত হয়েছিলেন। মায়ানরা জানত যে চাঁদ, শুক্র এবং অন্যান্য গ্রহ-তারা মহাবিশ্বে চক্রকারে ঘুরছে। তারা নিখুঁভাবে সময় গণনা করতে পারত। তাদের একটি পঞ্জিকা ছিল যাতে সৌর বছরের প্রতিটি মিনিটের নিখুঁত বর্ণনা ছিল। মায়ান ক্যালেন্ডার সম্পর্কে উইকিপিডিয়ার পেজটা দেখতে চাইলে এখানে ঢুঁ মারুন।
মায়ানরা মনে করত প্রতিটি জিনিসের উপর সময়ের প্রভাব আছে এবং প্রতিটি জিনিস সময় অনূযায়ী একেকটি অবস্থানে অবস্থান করছে। পুরোহিতরা নভোঃমন্ডল এবং পঞ্জিকা ব্যাখ্যা করতে পারত। এ কারণে সাধারণ মানুষের সমস্ত কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তাঁর হাতে থাকত। কখন বীজ রোপণ করতে হবে, কখন ফসল ঘরে তুলতে হবে, কবে থেকে বর্ষা শুরু হবে, কবে থেকে গরম শুরু হবে- এ সব সম্পর্কে তারা জানত বলে তারা ক্ষমতা এবং নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে গিয়েছিল। তাদের সময়, ঋতু, চক্র উপলব্ধি করার খুব উচ্চ ক্ষমতা ছিল।
মায়ানদের কাছে মহাকাশের উপর ১৭ টি ভিন্ন ভিন্ন পঞ্জিকা ছিল। এদের মধ্যে কোন কোন পঞ্জিকা এখান থেকে ১০ মিলিয়ন বছর আগের। এবং সেগুলো এত দুর্বোধ্য যে তা বুঝতে চাইলে হিসেব-নিকেশ করার জন্য সাথে অবশ্যই একজন করে অ্যাস্ট্রোনমার, অ্যাস্ট্রোলজার, জিওলজিস্ট, এবং ম্যাথমেটিশিয়ান থাকতে হবে। শুক্র গ্রহের পরিক্রমণ পথ এবং এর অরবিট সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বানী করা একটি সারণীও তারা তৈরি করেছিল।
যে পঞ্জিকাগুলো পৃথিবী এবং পৃথিবীতে বসবাসরত প্রাণীদের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো হল হা’ব, তুন-উক এবং তযোকি’ন। এদের মধ্যে তযোকিইন হল সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং এর প্রভাব আমাদের উপর অনেক বেশি।
হা’ব
এটি পৃথিবীর পরিক্রমণ পথের উপর রচিত। এতে সর্বমোট ৩৬৫ দিনের হিসাব আছে। হাব এ ২০ দিন করে মোট ১৮ মাসের উল্লেখ আছে (এত গেল মোট ৩৬০ দিন)। আর বাকি ৫ দিন নিয়ে আরেকটি মাস হিসাব করা হয়েছে যার নাম উয়ৈব। প্রতিটি মাসের নিজস্ব একটি করে নাম আছে। প্রতিটি দিনের আবার ধর্মীয় তাৎপর্য আছে।
তুন-উক
এটা হচ্ছে চাঁদের পঞ্জিকা। এতে চক্রটি হিসাব করা হয়েছে ২৮ দিন দিয়ে যাতে মেয়েদের রজঃচক্রের হিসেবের প্রতিফলন দেখা যায়। এই চক্রানুসারে প্রতি ৭ দিন পরপর আরও চারটি করে ছোট ছোট চক্র সম্পন্ন হয়। এই ছোট চক্রগুলো হল চাঁদের চারটি দশা।
তযোকি’ন
এটি মায়নাদের একটি পবিত্র পঞ্জিকা। এতে কৃত্তিকার পরিক্রমণ পথানুসারে চক্র পূরণ করা হয়েছে। এ চক্রানুসারে সম্পূর্ণ অরবিট ঘুরে আসতে এর সময় লাগে ২৬,০০০ বছর। আর এই পঞ্জিকাতে ২৬০ দিনে একেকটি বছর পূর্ণ করা হয়েছে। এতে মায়ানদের দুটি পবিত্র নম্বরের বিন্যাস ঘটেছে। একটি ১৩ এবং অন্যটি ২০। এতে চারটি ছোট ছোট চক্র আছে যাদের বলা হয় সিজন বা ঋতু। প্রতিটি ঋতু ৬৫ দিনের। এদের নামগুরো হল চিকচ্যান, ওক, মেন এবং আহাউ। এই পবিত্র পঞ্জিকাটি এখনও মায়ান আদিবাসীদের মধ্যে প্রচলিত আছে।
তযোকি’ন পঞ্জিকাটি হা’ব পঞ্জিকার সাতে সম্পর্কযুক্ত। হা’ব পঞ্জিকাটিতে ৫ দিনের সমন্বয়ে যে মাসটি রয়েছে সেটিকে খুব ভয়ঙ্কর একটি সময় বলে গণনা করা হয়। তযোকি’ন এবং হা’ব পঞ্জিকা দিয়ে একটি পূর্ণ চক্র সম্পন্ন করতে সময় লাগে ৫২ বছর। অধিকাংশ আর্কিওলজিস্টরা মনে করেন মায়ানরা খ্রিস্টের জন্মের প্রায় ৩,১১৪ বছর আগে থেকে সময় গণনা করা শুরু করেছে। আমাদের বর্তমান পঞ্জিকা মতে খ্রিস্টের জন্মের বছরের জানুয়ারি মাস থেকে প্রথম বছর গণনা করা হয়। আর মায়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এই বছরটাকে হিসাব করা হয় শূন্য বছর। এই সময়টাকে লেখা হয় এভাবেঃ ০-০-০-০-০। একটা নতুন চক্র শুরু হওয়ার আগে ১৩ চক্রের ৩৯৪ বছর শেষ হয়ে যাবে। আর নতুন চক্রটি শুরু হবে ২০১২ সালে।
মায়ানরা তিনটি ভিন্ন সিস্টেমের পঞ্জিকা ব্যবহার করত। এই তিনটি সিস্টেম তযোকিন ( পবিত্র পঞ্জিকা), হা’ব ( বিভিন্ন কাজকর্মের নিয়ম সংক্রান্ত পঞ্জিকা ), গণনার পন্থা।
তযোকি’ন ২৬০ দিনের চক্র এবং হা’ব ৩৬০ দিনের চক্র। তযোকি’ন এবং হা’ব একত্রে ১৮.৯৮০ দিনের একটি চক্র পূরণ করে। এই চক্রটি ‘রাউন্ড ক্যালেন্ডার’ নামে পরিচিত। ৫২ সৌর বর্ষের তুলনায় ১৮,৯৮০ দিন খুবই কম।
‘রাউন্ড ক্যালেন্ডার’ দেখতে অনেকটা চাকার মত। এর ভিতরে দুটি বড় ছোট বৃত্ত থাকে। ছোট বৃত্তটি ২৬০ দিন চক্রের তযোকি’ন বা পবিত্র রাউন্ড এবং বড়টি ৩৬৫ দিনের চক্রের হা’ব রাউন্ড। এভাবে গণনা করা চক্রে ৫২ বছরের মধ্যে একটি দিনও রিপিট হয় না। এ কারণে কয়েকশ বছরের মধ্যে মায়ারা তযোকি’ন বা হা’ব ডেট অনুযায়ী কোন একটি বিশেষ দিনকে ব্যবহার করতে পারত না। মায়ানরা এ সমস্যার সমাধান করেছিল ভিইেসমাল সিস্টেম অনুযায়ী। ভিজেসিমাল সিস্টেম হল এক ধরণের গণনা পদ্ধতি যাতে ২০ ভিত্তি করে গণনা করা হয়। মঅয়ারা কোন বস্তু গণনা করার ক্ষেত্রে ও এই পদ্ধতি ব্যবহার করত। তবে এ পদ্ধতির সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হত সময় গণনার ক্ষেত্রে।
আমরা যেমন একেকটা বিশেষ সময়কে একেক নামে সূচীত করি মায়ানরাও তাই করত। যেমন তারা এক দিনকে বলত কিন, ২০ কিন তৈরি করত এক উইনাল, ১৮ উইনালে এক তুন, ২০ তুনে এক কাতুন, ২০ কাতুনে এক বাকতুন। অর্থাৎ-
১ কিন = ১ দিন
১ উইনাল = ২০ কিন = ২০ দিন
১ তুন = ১৮ উইনাল = ৩৬০ দিন
১ কাতুন = ২০ তুন = ৭,২০০ দিন
১ বাকতুন = ২০ কাতুন = ১৪৪,০০০ দিন
তাদের তারিখ লেখার পদ্ধতিটা ছিল নিম্নরূপ-
বাকতুন . কাতুন . তুন . উইনাল . কিন
উদাহরণস্বরূপঃ
৯.১৫.৯.০.১ বলতে ৯ বাকতুন, ১৫ কাতুন, ৯ তুন, কোন উইনাল নেই, ১ কিন বোঝায়।
অর্থাৎ ৯ X ১৪৪,০০০ + ১৫ X ৭,২০০ + ৯ X ৩৬০ + ০ X ২০ + ১ X ১ = ১,৪০৭,২০১ দিন।
আর মায়ানদের ০.০.০.০.০ বলতে খ্রিস্টের জন্মের পূর্বের ৩১১৩ সালকে বোঝায়।
আর ১৩.০.০.০.০ বলতে ২০১২ সালকে বোঝায়।
(এটি নিয়ে টিউনার সেতু ভাই চরম একটি আর্টিকেল লিখেছিলেন, সেখান থেকে জাস্ট কপি পেস্ট করে দিলাম https://www.techtunes.io/reports/tune-id/19394)
মায়ান ক্যালেন্ডারটি নিয়ে যতই গবেষণা হচ্ছে ততই আধুনিক বিশ্ব অবাক হচ্ছে। ওটা এতটা নিখুঁত যে আগমিতে যে চন্দ্র গ্রহণ বা সূ্র্যগ্রহণ হবে তার প্রত্যেকটির সময় সেকেন্ডের হিসেবে ঐ ক্যালেন্ডারে উল্লেখ আছে।এবং এই সময়ের চ্যুতি ৩৩ সেকেন্ডের ও কম!
মায়ানরা মহবিশ্বের জম্ম থেকে ধংস পর্যন্ত সময়কালকে কয়েকটি সাইকেলে ভাগ করেছে। একেকেটি সাইকেলের সময়কাল ২৫৮০০ বছর। একেকটা সাইকেল শেষ হবার পর পৃথীবি এবং মহাবিশ্বের ওলট পালট হয়ে নতুন যুগের সুচনা হয়।
মায়ানদের ক্যলেন্ডারের বর্তমান সাইকেলের গণণা ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বর সকাল এগারটায় শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ মায়ানদের মতে ঐ দিন বর্তমান সাইকেল শেষ হয়ে নতুন সাইকেলের সূচনা হবে।উল্লেখ্য মহাবিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাবে এমন কথা বলা হয়নি। মায়ানদের ক্যলেন্ডারে এর ২০১২ সালের পর আর সময়ের উল্লেখ নাই কেন সেই প্রশ্নের উত্তর কারো জানা নেই? তাই এর অনেক উত্তর হতে পারে।...
মায়ানদের ক্যলেন্ডারে মায়ানরা সময়কে মহাবিশ্বের একটা মানচিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। যাতে দেখিয়াছে ২০১২ সালের ঐ সময়ে পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহ-নক্ষত্র মহাবিশ্বের কেন্দ্রের সাথে একই সমান্তরালে অবষ্হান করবে। যেটা একটা মহাজাগতিক ঘটনা। আধুনিক মহাকাশ গবেষণা ও একমত প্রতি ২৫৮০০ বছর পর পৃথিবী , সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহ এবং সূর্য আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যলাক্সীর সাথে একই এলাইনমেন্টে অবষ্হান করে এবং ২০১২ সালের ২১ শে ডিসেম্বর এই বিরল মহাজাগতিক ঘটনা বিশ্ববাসী প্রত্যেক্ষ করবে
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বরের পর থেকে মায়া পঞ্জিকাতে আর কোন দিনের উল্লেখ নেই। তাই এই দিনটিকে মনে করা হচ্ছে পৃথিবীর সর্বশেষ দিন। আর একটি ব্যাপার হল আজ পর্যন্ত মায়া পঞ্জিকাতে যাই ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছে, সেই প্রতিটি কথা বাস্তবে প্রতিফলিত হয়েছে। তাই বিজ্ঞানীরা ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বরে পর থেকে আসলে কি ঘটতে পারে তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।
কিছু সুত্র থেকে পাওয়া যায়,
সানস্টর্ম বা সূর্যঝড়কে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর ভবিষৎতের জন্য একটি ভয়ঙ্করতম হুমকি বলে মনে করছেন। সূর্যের ভেতরে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের বিস্ফোরণ থেকে তৈরী হয় এনার্জি। আর সেই এনার্জি থেকে ইলেক্ট্রন, প্রোটনের মতো নানা পার্টিকল পৃথিবীতে এসে পৌছায় এবং এগুলোর ক্ষতিকর প্রভা এসে পরে পৃথিবীর উপর। সেই সঙ্গে সোলার র্স্ট্রম বা সৌরঝড় তো রয়েছেই।
সূর্যের সবচেয়ে বেশি পরিমাণ এনার্জি তৈরি হতে পারে, যার নাম 'সোলার ম্যাক্সিমাম'। এই সৌরঝড়ের ভয়ষ্কর রেডিয়েশন এবং এনার্জি নির্গমনের ফলে ভূপৃষ্ঠে বা মহাকাশে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে নানা সমস্যা দেখে দিবে। বেড়ে যেতে পারে মানুষের অসুখ , দুঘর্টনা ও ভয়াবহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ফলে পৃথিবী এগিয়ে যাবে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে।
অন্যদিকে পৃথিবীর সবচেয়ে আগ্নেয়গিরি হলো আমেরিকার ইয়েলোস্টোন ভলকানো। মোটামুটি প্রতি ৬,৫০,০০০ বছর পর ভয়ষ্কর অগস্ন্যুৎপাত হয় এই আগ্নেয়গিরি থেকে। গবেষনা অনুসারে ২০১২ সালে ভয়ষ্কর বিষ্ফোরণ হতে পারে ইয়োলোস্টোনে হয়তো সেখান থেকে সাংঘাতিক অগ্নুতপাত হবে, সব বায়ু মন্ডল ঢেকে যাবে, ছাইয়ে হয়তো চাপা পড়ে যাবে সূর্যও। তখন গোটা পৃথিবী অন্ধকারে ঢেকে যাবে। এভাবে কিছু দিন চললেই পৃথিবী থেকে প্রাণের স্পন্দন থেমে যাবে।
আবার অন্য ব্যাখ্যাও পাওয়া গিয়েছে,
ডেইলি মেইলের খবর অনুসারে, মায়া সভ্যতার বিভিন্ন বইতে নাকি লেখা আছে ২০১২ সালেই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু এটি স্রেফ গুজব বলেই মন্তব্য করেছেন মেক্সিকান গবেষক কার্লোস পালান। তিনি জানিয়েছেন ২০১২ সালে সালে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে এমন কথা ১৫ হাজার মায়ান বইয়ের কোথাও লেখা নেই। এটি কেবল ১৯৭০ সালে দুর্বোধ্য কিছু লেখা থেকে ছড়ানো গুজব।
গুজব রটেছে, চক্র শেষ হলে ধারণা করা হয় গ্যালাক্সির কেন্দ্রে একটি ব্ল্যাকহোল তৈরি হবে এবং সূর্যের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। আর এসব গুজব ছড়িয়েছে ১৯৭০ সালের দুবোর্ধ্য কিছু লেখা। যেখানে বলা হয়েছে মায়া ক্যালেন্ডারের সঙ্গে ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বর তারিখটি মিলে যায়। তাই ঐ দিনই ধ্বংস হবে পৃথিবী।
কিন্তু গবেষক কার্লোস পালান (মেক্সিকোর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যানথ্রপলজি অ্যান্ড হিস্ট্রি অফ মেক্সিকো-এর একুইস মায়া হাইরোগ্লাফিক এবং আইকোনোগ্রাফিক (আজিমায়া)-এর পরিচালক) জানিয়েছেন, মায়ারা কোথাও সেরকম ইঙ্গিত করেনি। এমনকি কখনও ভাবেওনি আমাদের বর্তমান সময়ে এসে সময়ের যাত্রা থেমে যাবে।
😀
😛
আমি শুভ্র আকাশ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 72 টি টিউন ও 1922 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সময় লাগলেও সম্পূর্ণ লিখাটা পড়ে শেষ করলাম । এক কথায় অসাধারণ , সবার জানা উচিৎ আমি মনে করি , আর জানতে হলে পড়তে হবে সকল কে । ধন্যবাদ টিউনার সুন্দর পোস্ট এর জন্য ।