সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল প্রতিবছরই ৫০০-৬০০ বার পান্ডা, পেঙ্গুনইসহ অ্যালগরিদমে নতুন সংষ্করণ বা পরিবর্তন আনে। বিষয়টি অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কারণটি হলো এই সকল আপডেটের বেশিরভাগই গৌণ বা ছোট ধরনের পরিবর্তন। মূল বিষয়টি হলো, প্রতি বছর গুগল অ্যালগরিদমে ৩/৪টি বড় ধরনের আপডেট আসে। এগুলো সার্চ রেজাল্টে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।
অনলাইন মার্কেটার, ওয়েবমাস্টারদের গুগলের এই সকল অ্যালগরিদমের বিভিন্ন আপডেট কবে হয়েছে, কি ধরনের পরিবর্তন এসেছে এসব জানা জরুরী। যার ফলে সাইটের র্যাংকিং ও অর্গানিক ওয়েবসাইট ট্রাফিক বৃদ্ধির জন্য যা করা দরকার সেটি সম্পর্কে ধারনা পাবেন। তাই পাঠকদের জন্য গুগলের অ্যালগরিদমের বড় ধরনের পরিবর্তণ ও এ সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত তথ্য প্রকাশ করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করি। লেখাটি অনেক বড় হওয়ায় ও পাঠকদের সুবিধার্তে দুটি পর্বে ভাগ করে প্রথম পর্ব আগেই প্রকাশ করেছি। আজ দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব প্রকাশ করছি। যারা মিস করেছেন তারা নিচের লিংক থেকে আগের পোস্টটি পড়তে পারেন।
এপ্রিল ২০১০ : দ্য গুগল প্লেস আপটেড
২০০৯ সালে প্লেস ফিচারটি আসলে অফিসিয়ালি ২০১০ সালে ‘প্লেস’ ফিচারটি উন্মুক্ত করা হয়। এটি লোকাল সার্চের ক্ষেত্রে বড় ধরণের পরিবর্তণ আনে। একইসঙ্গে লোকাল বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের ক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা রাখে।
মে ২০১০ : দ্য মে ডে আপডেট
লং-টেইল ট্রাফিকের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখতেই এই আপডেট।
জুন ২০১০ : দ্য ক্যাফেইন (রোলআউট) আপডেট
ইনডেক্সের ক্ষেত্রে ৫০শতাংশের বেশি ফ্রেশ আপডেট আনা হয় এই অ্যালগরিদম সংষ্করণে। এটি ক্যাফেইন ইনফ্রাস্ট্রাকচার এর চূড়ান্ত সংষ্করণ।
নভেম্বর ২০১০ : ইনস্ট্যান্ট প্রিভিউ
সার্চ রেজাল্টের লিংকের উপর একটি ম্যাগনিফাইং গ্লাসের আইকন যুক্ত করা হয়। এই আইকনে ক্লিক করার ফলে ঐ নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে না গিয়েও ব্যবহারকারীরা সাইটের ল্যান্ডিং পেজকে দেখার সুযোগ পান। এটি কোনো সাইটের ল্যান্ডিং পেজের মান, ডিজাইন ও ইউজিবিলিটির উপর গুরুত্ব দেয়।
সেপ্টেম্বর ২০১০ : গুগল ইনস্ট্যান্ট
এই ক্ষেত্রে এসইও এর বিষয়টি কম পরিমানে হলে ব্যবহারকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গুগল ইনস্ট্যান্ট ফিচারটির ফলে ব্যবহারকারীরা যখন সার্চ ইঞ্জিনে টাইপ করতে থাকেন তখন এই সম্পর্কিত সাজেশন দেখায়। ফলে ব্যবহারকারী সহজেই তার কাংখিত কিওয়ার্ডের মাধ্যমে সার্চ করতে পারেন।
ডিসেম্বর ২০১০ : সোশ্যাল সিগন্যালস
গুগল এবং অপর সার্চ ইঞ্জিন বিং যৌথভাবে ঘোষনা করে তারা সার্চ রেজাল্টে সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোকে বিশেষকরে ফেসবুক, টুইটারকে সংযুক্ত করছে। এরফলে এসব সাইটে শেয়ার করা বিভিন্ন তথ্যও ব্যবহারকারীরা সার্চ করার মাধ্যমে পেতে পারবেন।
ডিসেম্বর ২০১০ : নেগেটিভ রিভিউ
এই সময়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যেখানে কিভাবে একটি ওয়েবসাইট নেগেটিভ রিভিউ এর মাধ্যমে র্যাংকিংয়ে আসে সেটি উল্লেখ করা হয়। এই বিষয়টির উপর ভিত্তি করে গুগল তাদের অ্যালগরিদমে কিছু পরিবর্তণ আনে। নেগেটিভ রিভিউয়ের উপর ভিত্তি করা ওয়েবসাইটগুলো গুগল টার্গেট করে।
জানুয়ারি ২০১১ : ওভারস্টক.কম পেনাল্টি
অস্পষ্ট এসইও এর কারণে এই সময়ে ওভারস্টক.কম সাইটটি পেনাল্টি খায়। ধরে নেওয়া হয় এই সময়ে এই বিষয়ে কোনো আপডেট আনা হয়। একই কারণে পরবর্তী মাসে জেসিপেনি সাইটটিও পেনাল্টি খায়।
জানুয়ারি ২৮, ২০১১ : অ্যাট্রিবিউশন আপডেট
এই আপডেটটি সমগ্র সার্চ রেজাল্টে ২ শতাংশ পরিবর্তণ আনতে সক্ষম হয়। এটি মূলত হাই প্রোফাইল স্প্যাম রোধে কার্যকর।
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১১ : পান্ডা ফার্মার
এটি গুগল অ্যালগরিদমের সবচেয়ে বড় আপডেট। যা সার্চ রেজাল্টে ১২ শতাংশের বেশি প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়। বিভিন্ন সাইটের কোয়ালিটি যেমন কনটেন্ট কোয়ালিটি, কনটেন্ট ফার্মস, থিন কনটেন্টসহ এ সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেওয়া হয় এই আপডেটে।
মার্চ ৩০, ২০১১ : দ্য +১ বাটন
ফেসবুক ও টুইটারের সাথে পাল্লা দিতে গুগল তাদের সার্চ রেজাল্টের পাশে +১ বাটন যোগ করে। এরফলে ব্যবহারকারী ঐ লিংকটি গুরুত্বপূর্ণ কিনা সেটি নির্ধারণ করে দিতে পারেন। এটি অর্গানিক ও পেইড সার্চ রেজাল্টে অনেক ভ’মিকা রাখে।
এপ্রিল ১১, ২০১১ : পান্ডা ২.০
এটি সমগ্র বিশ্বের ইংরেজিতে সার্চের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। ক্রোম ব্রাউজারের মাধ্যমে কোনো ওয়েবসাইটকে ব্লক করা, এসইআরপিসহ বেশ কয়েকটি বিষয়কে বিবেচনা করা হয় এই আপডেটে।
মে ৯, ২০১১ : পান্ডা ২.১
পান্ডার আরেকটি আপডেট আসে। তবে এটিতে কি পরিবর্তণ আনা হয়েছে বা এর প্রভাব কি সে সম্পর্কে গুগলের পক্ষ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
জুন ২, ২০১১ : সিমা.অর্গ
আর্কাইভে সংরক্ষিত বিভিন্ন ডাটা সহজে সার্চে আনার জন্য গুগল, মাইক্রোসফট ও ইয়াহু যৌথভাবে এই আপডেট আনে। ওয়েবমাস্টারদের এই কাজের সুবিধার্তে বেশ কিছু সিমাস যেমন এইচটিএমএল ট্যাগ সরবরাহ করা হয়।
জুন ২১, ২০১১ : পান্ডা ২.২
এই আপডেটটি মূলত প্রধান ইনডেক্সের বাইরে কাজ করে। এটির রিয়েলটাইম কোনো প্রভাব নেই।
জুন ২৮, ২০১১ : গুগল প্লাস চালু
গুগল তাদের নতুন সামাজিক যোগাযোগ সাইট গুগল প্লাস চালু করে। একইসঙ্গে জিমেইলসহ বিভিন্ন সেবার সাথে গুগল প্লাসকে সংযুক্ত করা হয়।
জুলাই ২৩, ২০১১ : পান্ডা ২.৩
আগের মতোই এই আপডেটের বিষয়টি অনেকটা অস্পষ্ট। র্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারেনি এই আপডেটটি।
আগস্ট ১২, ২০১১ : পান্ডা ২.৪
এই আপডেটটি টোটাল সার্চ কোয়ারির ৬ থেকে ৯ শতাংশ প্রভাব ফেলে। তবে কোরিয়া, জাপান ও চীন এই আপডেটের আওতার বাইরে ছিলো।
আগস্ট ১৬, ২০১১ : এক্সপান্ডেড সাইটলিংক
সাইটলিংকের বর্ধিত সংস্করণ ‘এক্সপান্ডেড সাইটলিংক’ ব্র্যান্ড কোয়ারির ক্ষেত্রে বিশেষ ভ’মিকা রাখে। মূল ১২ প্যাককে ৬ প্যাকে নির্ধারণ করা হয়।
সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১১ : প্যাগিনেশন অ্যালিমেন্ট
কপিকন্টেন্ট এবং পেজিনেশনের কারনে ক্রল প্রব্লেম এর সমস্যা দূর করার জন্য গুগল দুটো লিংক এট্রিবিউট এড করেছে। যা হচ্ছে rel=”prev” এবং rel=”next”। আর এটার মাধ্যমে ভিউ অল পেজ সিস্টেমেরও অটোমেটিক ক্যানোনিকালাইজেশন উন্নতি হয়েছিলো।
সেপ্টেম্বর ২১, ২০১১ : ৫১৬ আপডেট
এই সময়ে গুগলের প্রধান নির্বাহি এরিক স্মিথ বলেন, ৫১৬ আপডেটটি ২০১০ সালে তৈরি করা হয়েছে। এটা কোনো আপডেট নয়, তবে কিছু চমক রয়েছে। বিশেষ করে এর মাধ্যমে ১৩ হাজারের অধিক আপডেট পরীক্ষা করা হয়েছে।
সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১১ : পান্ডা ২.৫
সেপ্টেম্বরে পান্ডা আপডেট আসলেও কি পরিবর্তণ এসেছে সেটি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে বেশ কিছু ওয়েবসাইট বিশাল পরিমানে ক্ষতির সম্মুখীণ হয়েছে বলে অভিযোগ আসে।
অক্টোবর ৫, ২০১১ : পান্ডা ‘ফ্লাক্স’
ম্যাট ক্যাট জানান, পান্ডার সঙ্গে সম্পর্কিত ফ্ল্যাক্স আপডেট এসেছে, যা র্যাংকিংয়ে ২ শতাংশ প্রভাব ফেলে।
অক্টোবর ১৮, কোয়ারি এনক্রিপশন
গুগল ঘোষনা করে, প্রাইভেসি রক্ষার্থে সার্চ কোয়ারি অবশ্যই এনক্রিপশন করা হবে। তা না হলে এটি অর্গানিক কিওয়ার্ড রেফারেল ডাটায় নেগেটিভ প্রভাব ফেলছে।
নভেম্বর ৩, ২০১১ : ফ্রেশনেস আপডেট
গুগল ঘোষনা করে তাদের অ্যালগরিদমে রিফ্রেশ আপডেট আসছে। যার মাধ্যমে টোটাল সার্চ কোয়ারিতে এটি ২৫ শতাংশ প্রভাব ফেলবে। আপডেটটি মূলত সাম্প্রতিক কনটেন্টের উপর বিশেষ ফোকাস দেয়।
নভেম্বর ১৪, ২০১১ : ১০ প্যাক অব আপডেট
ম্যাট ক্যাট ১০টি আপডেটের নাম উল্লেখ করেন। এগুলোর প্রত্যেকটিই অল্প কিছু পরিবর্তণ আনা হয় এবং বিশেষ কোনো পরিবর্তণ পরিলক্ষিত হয়নি।
নভেম্বর ১৮, ২০১১ : পান্ডা ৩.১
পান্ডা ফ্লাক্সের পর এই সময়ে বেশ কয়েকটি পরিবর্তণ আসে যেগুলো বেশি উল্লেখযোগ্য নয়। অফিসিয়ালি কোনো ঘোষনা না আসলেও কিছু বিশ্লেষক এটিকে পান্ডা ৩.১ আপডেট বলেন।
ডিসেম্বর ১, ২০১১ : ডিসেম্বর ১০ প্যাক
১০ প্যাকের আরো একটি আপডেট আসে এই সময়ে। এই আপডেটে বিশেষ করে পার্কড ডোমেইন, ব্লগ, ইমেজ সার্চসহ বেশ কয়েকটি ফিচারে গুরুত্ব দেওয়া হয়। তবে আপডেট তারিখটি সুস্পষ্ঠ নয়।
জানুয়ারি ৫, ২০১২ : জানুয়ারি ৩০ প্যাক
প্রায় মাসজুড়ে ৩০টি আপডেট আসে। এক্ষেত্রে মূলত স্নিপেটস, রিলেভেন্ট সাইট লিংকসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে উন্নত করা হয়।
জানুয়ারি ১০, ২০১২ : সার্চ+ ইউর ওয়ার্ল্ড
এই সময়ে গুগল সার্চে অনেক পরিবর্তণ আনা হয়। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইট থেকে ইউজার প্রোফাইল কালেক্ট করার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। সার্চে পার্সোনালাইজেশন করার জন্য একটি বাটনও যোগ করা হয়।
জানুয়ারি ১৯, ২০১২ : অ্যাডস অ্যাবোভ দ্য ফোল্ড
এই আপডেটে সাইটের পেজ লেআউটটি বেশি গুরুত্ব পায়। কারণ সার্চে অনেক বেশি অ্যাড যুক্ত হয়। এগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাইটকে টিকতে হবে। এই আপডেটের কোনো অফিসিয়াল নাম আসেনি।
আমি বদরুদ্দোজা মাহমুদ তুহিন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 10 টি টিউন ও 17 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
valo likhechen. ovro nai tai bangla likhte parlam na. aro kisu bishoy add kora jeto. proyojone 3rd, 4rth part kora jeto. but thanx for this kind of post.