অনেকদিন ধরে ভাবছিলাম কি নিয়ে টিউন করা যায় যেটা কেউ কোনদিন করেনি। ভাবতে ভাবতে মাথায় এলো ভূত নিয়ে একটা চেইন টিউন করার কথা। এর আগে ভূত নিয়ে ছোটখাটো লেখালেখি এখানে হলেও চেইন টিউন হয়নি কখনো। তাই ভাবনা অনুযায়ী কাজ শুরু করে দিলাম।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার – পিনাকি মজুমদার(ভৌতিক লেখক), ইন্টারনেট।
বৃষ্টি ভেজা রাত্রে, কাঁপা কাঁপা মোমবাতির আলোয় ভুতের গল্প শুনতে আমরা কে না ভালবাসি! মন থেকে বিশ্বাস করি বা না করি, ভয় পেতে আমরা সকলে ভালবাসি; কারণ ভয় পাওয়ার মধ্যে রয়েছে একটা অদ্ভুত রোমাঞ্চ। আর ভুতের গল্পের শ্রোতা ছেলে থেকে বুড়ো সকলেই, আর ভুতের গল্পের বইও বিক্রি হয় সব চেয়ে বেশি। ভূত আছে কি নেই, থাকলেও দেখা যায় কিভাবে এই নিয়ে আমাদের সকলের নিজস্ব মতামত রয়েছে। যদি জানতে ইচ্ছে করে ভূত সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য, তাহলে ঢুকে পরুন এই ভৌতিক আলোচনায়।
১। লুইসভিল গোস্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট
সংস্থাটির গোড়াপত্তন হয় বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে। গোড়াপত্তন করেন ডঃ কেনেথ জেমস রস। উনি নিজে ডক্টরেট করেছিলেন “প্যারানর্মাল স্টাডিজ” এবং “প্যারাসাইকোলজি” নিয়ে। এই সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতায় বহু বিজ্ঞানী গবেষণা চালাচ্ছেন লুইসিয়ানার কিছু ভুতের বাড়ি নিয়ে। এইসব গবেষণার বহু তথ্য পাওয়া যাবে http://www.louisvilleghost.com এই ঠিকানায়।
২। ইউরোপিয়ান গোস্ট হান্টারস
প্যারিসের লইভিয়র রোডে পাওয়া যাবে এই সংস্থাটির হেডকোয়ার্টার, যদিও বহু দেশেই ছড়িয়ে রয়েছে এই সংস্থাটির শাখা। ই.এম.এফ (E.M.F) অর্থাৎ Electro Magnetic Field এর সাহায্যে ভৌতিকতার মাপ এরাই প্রথম চালু করেন। এখন এই পদ্ধতিটা প্রায় সকলেই মেনে চলেন।
৩। কেন্টাকি ইন্সটিটিউট ফর প্যারানর্মাল স্টাডিজ
নব্বই দশকের একদম গোড়ায় শুরু হয় এই সংস্থা। বলা হয় এটি পৃথিবীর প্যারানর্মাল স্টাডিজ- এর বৃহত্তম সংস্থা। আমেরিকার বহু রাজ্যে ও মধ্য ইউরোপের বহু শহরে এদের শাখা রয়েছে। এদের ওয়েবসাইটে এদের গবেষণার জানানো হয়, আপনার কৌতূহল থাকলে ইন্টারনেটে সার্চ করে দেখতে পারেন।
৪। গোস্ট-স্টাডি ডট কম
যদিও এটি কোন সংস্থা নয়, একটি ওয়েবসাইট। তবু এর কথা উল্লেখ করতেই হয়। এরা নেমে পড়েছেন এক অদ্ভুত কাজে। পৃথিবীর যত এই ধরনের সংস্থা এবং ওয়েবসাইট আছে তার একটি তালিকা নথিভুক্ত করেছেন এরা। সঙ্গে দিয়েছেন ভৌতিকতা মাপার বহু যন্ত্রের বিবরন। এদের আসল কাজ হল জুয়াচুরি ধরা। যারা ভৌতিকতা দেখিয়ে ব্যবসা করতে চান বা জোচ্চুরি করেন, তাদের মুখোশ খুলে দেন এরা। এদের ঠিকানা – http://www.ghoststudy.com
ক) Spirit অথবা আত্মা
এর ব্যাখ্যা খুবই সোজা। প্রত্যেক মানুষের ভিতরেই রয়েছে প্রাণশক্তি (Life Force)। এই Life Force এর দ্বারাই আমরা আমাদের সমস্ত কাজ করে থাকি এবং যদি আমাদের কোনওকাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায়, তাহলে মৃত্যুর পর আমাদের পর আমাদের প্রাণশক্তির যে অংশটুকু অই কাজটার জন্য ধার্য ছিল সেটুকু জড়িয়ে থাকে সেই কাজটার আশেপাশে। এই প্রাণশক্তির প্রকাশকেই (manifestation) বলা হয় spirit বা আত্মা।
খ) পল্টারগাইস্ট (Poltergeist)
স্থূল বস্তুর সাথে যখন কোনও মানুষের প্রাণশক্তি জড়িয়ে যায় মৃত্যুর পরে, তাকে বলা হয় পল্টারগাইস্ট। এর উপস্থিতি শুধুমাত্র তখনই টের পাওয়া যায়, যখন ওই বস্তুটিকে নাড়াচাড়া করা হয় অথবা তাকে নিজের জায়গা থেকে সরানো হয়। যেমন- মৃত ব্যক্তির অত্যন্ত প্রিয় কোন জিনিসে এরকম হতে পারে।
গ) জান্তব আত্মা (Animosity or Animal spirit)
যখন কোন পশু এবং কোন মানুষের প্রাণশক্তি একে অপরের সাথে জড়িয়ে যায় অথবা সম্মোহনের সাহায্যে জড়িয়ে দেওয়া হয়, তখন তৈরি হয় এই জান্তব শক্তি। এর উধাহরন হিসাবে বলা যায় ভ্যাম্পায়ার অথবা ওয়ারউলফ। ভ্যাম্পায়ার বাদুড় কিন্তু সত্যি আছে। তাদের বাঁচার উপায় হল অন্য প্রাণীর রক্তকে পুষ্টি হিসাবে গ্রহণ করা। আফ্রিকার মোগাদিসুর আশেপাশে এবং মালয়েশিয়ার কিছু জঙ্গলে এদের দেখা যায়।
ঘ)অস্তিত্বের ভিন্ন স্তর (Alternate Plane of Existence)
১৯৩৬ সালে ডঃ অলিভার ভন টাওয়ার্প ফ্রান্সের মারসেইতে অনুষ্ঠিত প্যারানর্মাল কংগ্রেস এ এই থিওরির উপস্থাপনা করেন। তিনি বলেন মানুষের দুটো ভিন্ন স্তর রয়েছে একটি বর্তমান (current) এবং একটা ভবিষ্যৎ (future)। এই দুই স্তরের মাঝের পর্দাটা যখন হঠাৎ সরে যায়, তখন দুই স্তর মিশে যাওয়ার জন্য এটি ঘটে। এই সময়ে ভবিষ্যৎ স্তরের কোনও প্রাণশক্তি যদি বর্তমান স্তরে আটকে পড়ে, তাহলে আমরা তার ব্যাখ্যা দিই Spirit হিসাবে।
পিটার আন্ডারউড কে বলা হয় ভূত শিকারের সর্বপ্রথম বিশেষজ্ঞ। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উনি শিখিয়েছেন, ভৌতিক উপস্থিতি সত্যি না সেটা মানুষের তৈরি করা মিথ্যা জুয়াচুরি, তা কিভাবে প্রমান করতে হয়। তার মতে প্রত্যেক গবেষণাকারীর একটি ভূত ধরার সরঞ্জাম (Ghost Hunting Kit) থাকা উচিত। এখনকার দিনে যে কোনও গবেষণাকারীর সরঞ্জামই তৈরি হয় আন্ডারউড সাহেবের সরঞ্জামের অনুকরনে। একদম প্রথমেই দরকার একটা খোপ (Compartment) ভাগ করা ব্যাগ অথবা বাক্স, যেখানে এইসব সরঞ্জাম বিভিন্ন প্রয়োজন অনুযায়ী ভাগ করে রাখা যাবে। যে কোনও প্যারানর্মাল কাজ আদৌ প্যারানর্মাল কি না তা মেপে দেখা হয়। এর আবার তিন রকম ভাগ আছে।
আজ এই পর্যন্তই থাক, বাকি আবার পরের বার। ভালো লাগলে জানাতে ভুলবেন না আর সকলে ভাল থাকবেন।
আমি jiko। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 23 টি টিউন ও 251 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
বিপুল এই প্রযুক্তির কতোটুকুই জানি? যতটুকুই বা জানি তা সবার সাথে শেয়ার করতে চাই।
আম্মা ভয় পাইসি!!!!!!
😥 😳 😥 😳 😥 😳 😥 😳