টেকটিউনস আমাদের সকলের পরম কাংক্ষিত এক মিলন ক্ষেত্র। আর আমরা সকলে এক অদৃশ্য সুত্রবন্ধনে আবদ্ধ আত্মার আত্মীয়। টেকটিউনসকে আমরা ভালবাসি ,খুব ভালবাসি, আর একারনেই অভিমান অনুরাগ বিরাগ আমাদের স্বাভাবিক এক রীতি হয়ে দারিয়েছে। কিন্তু এ কথা পরম সত্য যে টেকটিউনসের প্রতি আমাদের যে ভালবাসা, যে অনুভুতির সৃষ্টি হয়েছে তা আমরা চাইলেই মুছে ফেলতে পারব না। তাই টপ টিউনার সহ সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি আমরা আমাদের সকল অন্তরকলহ ভুলে গিয়ে টেকটিউনসকে নতুন ভাবে সাজাই। প্রায়ই দেখা যায় যে আমরা অতি সাধারণ কিছু ব্যপার নিয়ে এমন অন্তরকলহে লিপ্ত হই যা আমাদের উদ্দেশ্যকে ব্যহত করে, নতুনদের উৎসাহকে বিনষ্ট করে। অমি নিজেও এরকম বিরম্বনার স্বীকার। বেশ কিছুদিন হল অমি কোন টিউন করি না আর কেনই বা করব, টেকটিউনস খুললেই দেখা যায় MR.........ক........ ভাই MR......খ.......... ভাইকে কটাক্ষ করছে, অন্য দিকে MR.........গ....... আবার তাতে তেল মালিশ করে আরও বেগবান করছে। আর টপটিউনার যারা আছেন তরা সহ আমাদের অনেকেই তা উপভোগ করেন। ফলে মান সম্মত টিউনের সংখ্যা দিন দিন কমতেছে, যাও বা দু একটা পাওয়া যায় তার দিকে নজর দেওয়ার সময় কই, কলহ গুন্জনেই তা আরালে চলে যায়। আবার ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতেই সেসব কলহ গুন্জনের অস্তিত্ব বিলিন হয়ে যায়।
আমার শেষ লেখা ছিল যে সুখের সন্ধানে আমাদের নিত্য পথ চলা। যার মাধ্যমে আমি আমাদের জীবনে সুখ আর দু:খের প্রভাব তুলে ধরার চেষ্টা করে ছিলাম।
যা হোক অনেক দিন পর ফিরে এসে দ্বিতীয়বার আশায় বুক বাধলাম। একটু ধর্য নিয়ে লেখাটি পড়ার জন্য সকলকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রশ্ন গুলোর উত্তর শেয়ার করার জন্য অতৃপ্ত বাসনা রাখলাম। ১০০ টি উত্তর পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। টেকটিউনস কতৃপক্ষ সহ সকলের সহায়তায় শেষ পর্যন্ত সবগুলোর সর্বোত্তম সংজ্ঞা নিদ্ধারণ করতে আমরা সমর্থ হব বলে আশা রাখি। এবং এর মাধ্যমে আমরা টিউনারগন কতটা ঐক্যবদ্ধ, প্রয়োজনের তাগিদে আমরা সকলের জন্য কতটুকু করতে পারি তা প্রমান করব।
সেদিন বন্ধুদের সাথে বিতর্ক হচ্ছিল এই পৃথিবীতে কোন মানুষ নাকি একটা মূহর্তের জন্যও ১০০% সুখী হতে পারে না। আর তাইতো পৃথিবীতে সুখী মানুষ খুজে পাওয়া সম্ভব নয়।কিন্তু আমি নিজেকে পৃথিবীর একজন ক্ষুদ্র, কিন্তু সুখী মানুষ হিসেবে ভাবতেই পছন্দ করি।বিধাতা এরকম সুন্দর একটা পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন,শুধুমাত্র সুখী মানুষদের জন্যই।এই পৃথিবীতে সুখী মানুষের সংখ্যা হয়তবা কম, কিন্তু শূন্য নয়। সুন্দরের পূজরী,সত্যের সাধক এই সুখী মানুষেরা আছে বলেই পৃথিবীটা আজও টিকে আছে। আমার বন্ধুদের মত অনেকেরই এ ব্যপারে বিপরীত মতামত থাকতে পারে,কিন্তু আমরা সবাইতো এই সুখের সন্ধানেই নিত্য পথ চলছি।
"জীবন মানে স্বপ্ন রচনা করা, স্বপ্নকে অবলম্বন করে সময়ের স্রতে ভেসে চলা, অবশেষে সম্ভব হলে সৎ কর্মকান্ডের মাধ্যমে সে স্বপ্নকে কল্পনার পৃথিবী থেকে বাস্তবের পৃথিবীতে নিয়ে আসা।"আমরা অনেকেই জীবনের এই সহজ সংজ্ঞাটিকে জটিল করে ফেলি, আর তখনই দেখা দেয় বিপর্যয়। মানুষের জীবনে অভাব সীমাহীন, অভিযোগও ছায়ার মত সব সময় সাথেই থাকে, কথাগুলি শুনতে খারাপ হলেও সত্য। কিন্তু এগুলোকে বাদ দিয়ে কি একটি প্রানবন্ত সুখী জীবন কল্পনা করা সম্ভব? আমাদের সীমাহীন অভাবের অতৃপ্ত পরিনতিকে আমরা দু:খ বলে মনে করি।কিন্তু আমাদের জীবনতো সংক্ষিপ্ত। আমাদের এই ছোট্ট জীবনে সকল চাহিদা পূরণ হয়তবা নাও হতে পারে, আমাদের চলার পথ যেহেতু মশৃণ নয় তাই চলার পথে কষ্ট,ব্যথা,বেদনা থাকতেই পরে কিন্তু তাই বলে দু:খের কারণ হিসেবে তা আমাদের জীবনকে ধ্বংস করে দিতে পারে না। আর তাই যদি কারো জীবনে সত্যি হয় তাহলে ধরে নিতে হবে,হয়তবা কোনটা সুখ আর কোনটা দু:খ তাই এখনো তার চেনা হয়ে ওঠেনি। প্রকৃতপক্ষে দু:খ ব্যপারটা আপেক্ষিক, জীবনের চলতি পথের ছোট ছোট কষ্ট গুলোই দীর্ঘ দিন আমাদের অন্তরে লালিত হয়ে দু:খে পরিনত হয়। দু:খের মৌলিক কোন অস্তিত্ব এই পৃথিবীতে নেই। তাহলে সুখ কী?আসলে আমাদের জীবনে দু:খের অনুপস্থিতিই হল সুখ, আমাদের জীবনে দু:খ না থাকাটাই হল সুখ।
আমাদের জীবনে চাওয়া পাওয়া, অভাব-অভিযোগ ,চাহিদা এসব কিছুই কখনো কখনো কষ্টের কারণ হলেও পরোক্ষভাবে তা সুখেরই অংশ। একটু কল্পনার জাল বিস্তার করে মনে করি, আমার সকল চাওয়া পাওয়াতে পরিণত হয়েছে, আমার সকল আকাংঙ্খা পূর্ণতা পেয়েছে, সকল অভিষ্ট সাধন হয়েছে, আমার সকল সাধনার সফল পরিনতি মিলেছে।তাহলে আমি কতটা সুখী, তাহলে আমার বেচেঁ থাকার মানেটা কি?এঅবস্হায় এই পৃথিবীর জন্য আমার আর কি বা করার আছে? যদি এমনটা কারো জীবনে ঘটত, হয়তবা বেঁচে থেকেও সে জীবনটার জীবন্ত মৃত্যু ঘটত। তাই পরম প্রাপ্তি কখনোই প্রকৃত সুখ দিতে পারে না। আজ অভাব আছে বলেই অভাব পূরণের তাগিদ আমাদের জীবনকে গতিশীল করে রেখেছে।
সুখ যদি দু:খের অনুপস্থিতিই হয় তবে সুখ আর দু:খের পার্থক্যটা আমাদের জীবনে কিভাবে ফুটে উঠবে?প্রশ্নটা আমার এক বন্ধুর। একদিন দুজন ব্যক্তি একই সাথে পথ চলতে চলতে একটা অনাকাংঙ্খিত ঘটনার সম্মুখিন হল যা তাদের দুজনকেই বেশ কিছুটা ব্যখিত করল, তাদেরকে থমকে দাড়াতে হল কিছু সময়ের জন্য, আবার সময়ের নির্দেশে তাদের এক সময় ফিরেও আসতে হল। যেমনটি আমাদের জীবনে প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে। অনেকদিন বাদে ঐ দুজন ব্যক্তির মধ্যে আবার দেখা হল, কিন্তু একি একজনকে কেমন যেন বিমর্ষ দেখাচ্ছে। কেন এই বিমর্ষতা? আসলে ঐ দুজন ব্যক্তির জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা দুই জনার কাছে দুই ভাবে গৃহিত হয়েছে, একজন তার স্বাভাবিক কর্মকান্ডের মধ্যে ডুবে গিয়ে জীবনের স্বাভাবিক গতিটাকে ধরে রাখতে পেরেছে আর অন্যজন সেদিনের সেই ব্যথা, বেদনাকে আজও লালন করে চলেছে। সুখ আর দু:খের উপস্থিতি এখানেই উদ্ভাসিত। আমাদের জীবনে কষ্ট, ব্যথা, বেদনা, শোক এ সবই ক্ষণস্হায়ী যা সময়ে স্রতে ভেসে আসে আবার তাতেই ভেসে যায়। কিন্তু সুখ বা আনন্দটা দীর্ঘস্থায়ী, যা আমাদের আগামীর ভবিষ্যৎকে গড়তে প্রেড়ণা যোগায়।
আমরা স্বধীন হতে চাই কিন্তু আমরা তার উল্টো কাজটা করি, অমরা আমাদের চারিপাশে একটা গন্ডি বা বলয় তৈরি করে ফেলি এবং চিন্তা করি আমাদের পৃথিবীটা এটুকুই। যাদেরকে নিয়ে আমাদের গন্ডির সীমানা রচনা হয় তাদের সুখের জন্য আমরা কত কি না করি। আমরা গোটা কয়েক মানুষকে আমাদের পরম আত্মীয় মনে করি সর্বদা তাদের সান্নিধ্য কামনা করি তাদেরকে নিয়েই স্বপ্ন রচনা করি, আমাদের সুখ দু:খ ভাগ করে নিতে চাই তাদের সাথেই। আমরা ভুলে যাই আমাদের এই সীমানার বাইরে পড়ে রয়েছ আমার জন্মভূমি, আমার দেশ, আমার পৃথিবী। অমার দেশ, আমার পৃথিবী আমার কাছে অনেক কিছু প্রত্যাশা করে আছে, এই পৃথিবীর একজন কর্ণধার রূপে তার কতটুকুই বা পূরণ করার চেষ্ট করছি। একজন মানুষ যখন একটা বলয়ের মধ্যে আবর্তিত হয় তখন তার কর্ম কান্ড হয়তবা গোটা কয়েক মানুষের কছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে, আর বাস্তব ক্ষেত্রে এটাই বেশি ঘটে থাকে। ফল স্বরূপ তার জীবনে নেমে আসে সীমাহীন দু:খ কষ্ট। কিন্তু আমরা যদি আমাদের চিন্তা চেতনার জগৎটাকে বিস্তৃত করতে পারি, আমরা যদি আমাদের সৎ কর্মকান্ড গুলোকে শুধু গোটা কয়েক মানুষের জন্য নয় আমার জন্মভূমির সকলের জন্য, আমার দেশের জন্য, সম্ভব হলে এই পৃথিবীর জন্য উৎসর্গ করতে পারি তাহলে হয়তবা গুটি কয়েক মানুষ বিরোধিতা করবে কিন্তু আমার সাথে থাকবে পুরো পৃথিবীটা আর এখানেই পরম অনন্দ পরম সুখ। হয়তবা এই সুখের প্রত্যাশাতেই আপনিও আছেন আসুননা আমরা সকলে মিলে দু:খ বিহীন একটা সুখের স্বর্গ রচনা করি। আমি আজও স্বপ্ন দেখে চলেছি এরকম একটা নতুন দিনের।
ছোট বেলা থেকেই আমি একজন মধ্যম গোছের ছাত্র প্রতিদিন নিয়মিতভাবে ৫-৭ ঘন্টা লেখাপড়া করি কিন্তু তারপরও কখনোই প্রথম,দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় কোনটাই হতে পারিনি সর্বদাই আমাকে পঞ্চম বা ষষ্ঠ স্থানটাকেই গ্রহন করতে হয়েছে। যা কখনোই একান্তভাবে মেনে নিতে পারিনি। আবার খেয়াল করে দেখেছি আমাদের ক্লাসের যে ছেলেটি প্রতিবার প্রথম হয় লেখাপড়ার ব্যপারে অমি তার থেকে অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকি। যেখানে আমি সারাদিন বই নিয়ে পরে থাকি সেখানে আমাদের ফাস্টবয় সারাদিন প্রাইভেট পড়িয়েই কাটিয়ে দেয়। অমার লেখাপড়ার সার্বিক উন্নতির জন্য আমার অন্যান্য শিক্ষকদের পাশাপাশি একজন উচ্চ শিক্ষিত গ্রিহশিক্ষকও আছেন যিনি আমাকে প্রয়োজনীয় নোট,নির্দেশনা ইত্যাদি দিয়ে সাহয্য করেন। তার পরও কেন এমন হয়? আমি কেন প্রথম হতে পারি না? এ প্রশ্নগুলো শুধুমাত্র আমার একার নয় আমার মত যারা লেখাপড়া করে তাদের অনেকেরই।
আমার প্রথম জীবনে এই সমস্যাটি ব্যপক আকার ধারন করে । লেখাপড়ায় নিজের সাধ্যের সবটুকু ঢেলেদিতাম কিন্তু ফলাফলের দিন প্রতিবারই মুখ গোমরড়া করে বাড়ি ফিরতাম।তবে একথাও সত্য যে , হতাশা নামের জিনিসটা কখনোই আমাকে গ্রাস করতে পারে নি। ভাবতাম নতুন ভাবে আবার সবকিছু শুরু করলে পরবর্তীতে ভাল করা যাবে। সবকিছুতে প্রথম হওয়ার যে অতৃপ্ত আকাঙ্খা আমার মধ্যে ছিল, এ বিষয়টা আমার একজন শিক্ষকের নজরে আসে,যিনি আমার জীবনের শ্রেষ্ট শিক্ষক ছিলেন । তিনি আমাকে প্রায়ই বলতেন শুধু বই পড়লেই প্রথম হওয়া যায় না, লেখাপড়ায় অলংকার বলে একটা জিনিস আছে আর যা মহা মুল্যবান এই জিনিসটার সন্ধান তুমি এখনও পাওনি। আমার বিশ্বাস ভবিষ্যতে তুমি অনেক ভাল করবে,তোমার মধ্যে সে শক্তিটুকু আছে।আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের এই কথাগুলোকে অন্তরে গভীর ভাবে ধারণ করেছিলাম। আজও আমি অনুসন্ধান করে চলেছি সেই মর্মবানীর মহত্বকে।
ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতাম বড় হয়ে ইন্জিনিয়ার হব। কিন্তু সাধনার শেষ বিন্দুদিয়েও যখন H.S.C তে ভাল করতে পারলাম না। তখন আমার সব স্বপ্ন যেন আকাশ হয়ে মাথার উপর ভেঙে পরল। আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুরা যাদের কে আমি আমার পরম নিকট আত্মীয় মনে করতাম তারা যেন আমার স্বপ্ন ভাঙার লগ্নটাকে মহাজয়ন্তী রূপে উপভোগ করলো । কিন্তু মাঝ নদীতে নৌকার হাল ছেড়ে দিলে একদিকে যেমন পাড়ে ভেরা অনিশ্চিত হয়ে পরে অন্যদিকে ডুবে মরার সম্ভবনাও প্রায় নিশ্চিত এ কথাটি আমার জনা ছিল । এখন আমি ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রনিক্স ইন্জিনিয়ারিং এর শেষ বর্ষের ছাত্র ।আর আমার ফলাফল যা হচ্ছে তাতে এখন আর আমাকে ফলাফল নিয়ে গোমড়া মুখে বাড়ি ফিরতে হয় না।মনে হয় আমার ছোটবেলার স্বপ্নটাকে বাস্তবে রূপ দিতে যে পথে যাওয়া উচিৎ ছিল সেই পথের অনেকখানি পেড়িয়ে এসেছি। আমি সেই মহামূল্যবান লেখাপড়ার অলংকারের সন্ধানও পেয়েছি যা এখন সবার সাথে ভাগ করার চেস্টা করছি।
একটি কথা প্রচলিত আছে পড়লেই পাশ করবে। কিন্তু লেখাপড়া কি শুধু মাত্র পাশ করার জন্য? আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে , সামাজ জীবনে এর কি কোন মূল্য নেই? শুধুমাত্র কি অর্থ আয়ের জন্যই লেখাপড়া? ছোট বেলায় পিতামাতা আত্মীয় স্বজনেরা ছোট্ট সদ্য স্কুলে পা রাখা ছেলেটির মাথায় ঢুকিয়ে দেয় বাবা তোমাকে কিন্তু লেখাপড়া করে বড় হয়ে ইন্জিনিয়ার হতে হবে ,ডাক্তার হতে হবে। কারণ ছেলেটি ডাক্তার বা ইন্জিনিয়ার হতে পারলে অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবে।ফলে ঐ কিশোর ছেলেটির কোমল মনে গেথে যায় অর্থ।যেখানে লেখাপড়া বা নতুনের অনুসন্ধানকে ছেলেটি খেলা মনে করে স্বাধীনভাবে গ্রহন করত সেখনে সেটাকে তারা পরাধীনতার শিকল হিসেবে গ্রহণ করছে। আর আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কাঠামোও অর্থ উপার্জনের লক্ষেই প্রস্তুত করা।এখানে সৃজনশীলতার কোন সুযোগ নেই । যে ছেলেটি যা পড়তে চাই না নির্দিষ্ট কাঠামো থাকার কারণে তাকে তাই গলধকরন করতে হচ্ছে।।আর আমাদের অবস্থা দারিয়েছে কোন রকমে সার্টিফিকেটটা পেলে হয়।আমরা পড়তে বসলে আমাদের মনোযোগ থাকে সাজেশন,প্রশ্ন,গাইড, শিক্ষকের নোট, টেস্টপেপারস ,এসবের দিকে। আসলে অমরা কি পড়ছি সেটা আমাদের কাছে মুখ্য নয় পরীক্ষায় কি লিখতে হবে , কতটুকু লিখতে হবে, সেটাই যেন মুখ্য। বুঝে বা না বুঝে সবই আমাদেরকে তোতাপাখির মত মুখস্ত করতে হয়।আসলে এভাবে লেখাপড়া করলে শুধু মাত্র পাশই কপালে জুটে।সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার যে ব্যপারটা তা অধরাই থেকে যায়। অনেক ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট অর্জনও কাল হয়ে দাড়ায়। এতক্ষন অমি যা তুলে ধরলাম তা ছিল আমার ব্যর্থতার প্রধান কারন,যা অনেক দেরিতে হলেও আমি খুজে পেয়েছি ।
আমার কাছে মনে হয় সুশিক্ষত হওয়ার প্রথম শর্ত হচ্ছে স্বশিক্ষত হওয়া। আসলে আমরা কোন সমস্যায় পরার সথে সাথেই অন্যের সাহায্য প্রত্যাশা করি। কিন্তু আমি যে নিজেও চেস্টা করলে সে সমস্যাটার সমাধান করতে পারি সেটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা মনে করি না। আসলে আমার আমিকে চেনাটা যে কারে জন্য খুবই জরুরী। পৃথিবীতে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ আছেন যাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বলতে কিছু ছিল না । কিন্তু তারা আমার আমিকে ভালভাবে চিনতে পেরেছিল বলেই স্বশিক্ষায় সুশিক্ষত হয়ে এ ধরনীর বুকে কৃতিত্বের সাক্ষর রেখে গেছেন। আমি মনে করি আমার মধ্যে একজন শিক্ষক আছেন যিনি অনেক জানেন, তার থেকে মহাজ্ঞানী এ পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই,তার থেকে সৎ মানুষও এ পৃথিবীতে নেই। সাধারণত তিনি কোন ভুল করেন না, আর করলেও সে ভুলকে তিনিই শুধরে দিতে পারেন। তিনি সর্বদা আমার সাথে অবস্থান করেন বিধায় তিনি আমার একজন ভাল পথ নির্দেশকও। যে দিন থেকে আমি আমার মধ্যেকার এই মহাজ্ঞানী ব্যক্তিসত্বাকে আবিষ্কার করলাম সেদিন থেকে আমাকে আর কোন প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে যেতে হয় নি। আমরা সবসময়ই আমাদের চিন্তা-ভাবনা, সুখ-দু:খ, সমস্যা,সমাধান ইত্যদি একজন ভাল বন্ধুর সাথে বিনিময় করার চেস্টা করি।কিন্তু আমার সাথেই যদি একজন ভাল জ্ঞনী স্মার্ট বন্ধু থাকে তাহলে আর অন্য কারও প্রয়োজন হয়না। যেদিন থেকে আমার এই প্রিয় বন্ধুটিকে খুজে পেলাম তারপর থেকে একাকিত্য নামের জিনিসটা আর আমাকে কোন দিন স্পর্শ করতে পারে নি।তবে ব্যস্ততা বেরেছে অনেকখানি। নিজের অজান্তেই দেখলাম পরিবারের কাছে একজন বিশ্বস্ত সদস্য হয়ে উঠেছি। সহপাঠীদের মধ্যে যারা আমাকে কোন দাম দিত না তারাও আমাকে শ্রদ্ধা করতে শুরু করেছে।ইতোমধ্যে খেয়াল করলাম আমার লেখা পড়ার পদ্ধতিতেও বেশ পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। য়েখানে আগে আমি রুটিন মেনে সবকিছু করতাম সেখানে সময়ের ব্যপারে অনেকখানি আমাকে উদাসিন মনে হচ্ছে।কিন্তু নিজের অজান্তেই সবকিছু সময়মতই শেষ হচ্ছে।রুটিন মেনে সবকিছু করেও যেখানে সময়মত কাজ শেষ করতে পারতাম না সেখানে সবকিছু ভালভাবে করেও অনেকখানি বারতি সময় পাচ্ছি।যা আমাকে কিছুটা ভাবিত করল, কিন্তু অংকটাতো সহজ।আগে যেখানে ৩টা প্রাইভেট পড়তে ৫-৬ ঘন্টা ব্যয় করতাম সেই সময় টুকু এখন আমার বাড়ির লেখাপড়ায় ব্যয় করতে পারছি। আমি আগে শ্রেণীকক্ষে যখন শিক্ষক পাঠদান করতেন তখন প্রায়ই উদাসিন থাকতাম ভাবতাম বাড়ির শিক্ষকের কাছ থেকে বিষয়টা আরও ভালভাবে বুঝে নিতে পারব।শ্রেণী শিক্ষককে করবার মত কোন প্রশ্নই খুজে পেতাম না। কিন্তু এখন চেষ্টা করি শ্রেণীকক্ষেই বিষয়টা ভালোভাবে বুঝে নিতে ।ফলস্বরূপ আরও একটা লাভ হয়েছে,খেয়াল করে দেখেছি আগের থেকে শিক্ষকদের সাথে সম্পর্কের বন্ধনটা আরও দৃঢ় হয়েছে। আমি যখন কোন বিষয় পড়তে বসি চেস্টা করি ঐ বিষয়ের উপর একাধিক বইপত্র ,ম্যাগাজিন ,পত্রিকা সাথে রাখার।সবগুলোর সংমিশ্রনে একটা অবস্থানে গিয়ে বিষয়টার উপর আমার নিজের একটা বক্তব্য দাড়ায যা নিয়মিত লিখে রাখি। আসলে বাড়িতে আমি যখন লেখাপড়া করি তখন নিজেকে একজন ছাত্র নয় বরং একজন অনুসন্ধানকারী বা গবেষক হিসেবে ভাবতেই বেশি পছন্দ করি। আর এ ব্যপারে আমাকে গ্রিহশিক্ষক নয় বরং পাঠ্যবই এর বাইরে অন্যান্য বই,ম্যাগাজিন,ইন্টারনেট অনেক বেশি সাহয্য করে।আগে আমি যে টাকা দিয়ে বন্ধুদের সাথে সিনেমা দেখতে যেতাম তা দিয়ে এখন আমি ম্যাগাজিন কিনি।পরীক্ষা নিয়ে আমাকে আর বেশি কিছু ভাবতে হয়না যেহেতু পরীক্ষাতে প্রশ্ন হিসেবে আমার পাঠ্য বিষয় গুলো লেখতেই হবে তাই পরীক্ষার আগে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মত নিজের মধ্যে সাজিয়ে নিলেই হল। আসলে শৃঙ্খলা ব্যপারটি জীবনের সকল ক্ষেত্রই অপরিহার্য।আমাদের ঘরে আমরা অনেক জিনিসের সমাহার দিয়ে সাজাই যার মধ্যে কিছু জিনিস আছে যা আমরা সরাসরি ব্যাবহার করি আর কিছু আছে যা আমাদের ঘরের মাধুর্য়তা ও উৎকর্ষতা বৃদ্ধি করে।কিন্তু আমরা যদি সব কিছু ঘরের মধ্যে গুছিয়ে না রাখি তাহলে যা আমাদের ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে তাই জঞ্জাল মনে হবে।লেখাপড়ার ক্ষেত্রেও প্রতিটা বিষয় তার পূর্ববর্তী বা পরবর্তী বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত,তাই আমাদেরকে অবষ্যই এসকল বিষয়গুলো অধ্যয়নের ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমিকভাবে শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।সবকিছুর উপরে আমি যে বিষয়টা সবচেয়ে বেশি অনুভব করি তা হল আমার চিন্তার স্বাধীনতা,মানষিক মুক্ততা যার কোন তুলনা নেই।
শেষে দুটি কথা: যা কিছু আমার জীবনে সুখের বারতা নিয়ে এসেছে,তাই সবার সাথে ভাগ করে নিলাম। আমার জীবনের এই প্রাপ্তিগলো যদি কারো জীবনে সামান্যতম সুখের দোলা দিতে পারে তবে আমার এ লেখা সার্থক হবে।সকলের মতামতের প্রত্যাশায় রইলাম।
আমি অসীম কুমার পাল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 147 টি টিউন ও 469 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 17 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি অসীম কুমার পাল। ইলেকট্রনিক্স এবং ওয়েব ডিজাইনকে অন্তরে ধারণ করে পথ চলতেছি। স্বপ্ন দেখি এই পৃথিবীর বুকে একটা সুখের স্বর্গ রচনা করার। নিজেকে একজন অতি সাধারণ কিন্তু সুখী মানুষ ভাবতে পছন্দ করি।
সুখ জিনিস টাকে খুজতেছি অনেক দিন যাবত্৷ যদি কারো কাছে কিছু এক্সটা থেকে থাকে তাহলে বস আমারে ২৫০গ্রাম হাউলাদ দিয়েন???????
কারন সুখ জিনিটা আমার মনে হয় আমি কখনো পাই নাই৷