সুপ্রিয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বন্ধুগন আসসালামুআলাইকুম। আশা করি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের মেহেরবাণীতে সবাই ভালো আছেন। আজকে এমন একটি বিষয় নিয়ে লিখতে বসেছি যে, যা এই বিষয়ে অনেক আগেই বোধগম্য হওয়া উচিত ছিল। যাক আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আজকে লেখার সুযোগ করে দিলেন এই জন্য আলহামদুলিল্লাহ।
ইন্টারনেট এমন এক জায়গা, যেখানে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে খুব সহজেই জানা যায়। ভাল-মন্দ সবকিছু এখানে বিদ্যমান। তথ্যের বিশাল ভান্ডার। সার্চ ইন্জিনের মাধ্যমে আমরা সহজেই যেকোন তথ্য খুব সহজেই খুজে পেতে পারি।
যাইহোক, মূল আলোচনায় আসা যাক......... আজকে সারা বিশ্বে মুসলিমদেরকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের বিশাল জাল ছড়ানো আছে(বিশেষ করে ইন্টারনেটে) তা প্রিন্ট মিডিয়া, অডিও-ভিডিও, ইন্টারনেট, ইত্যাদি যেকোন মাধ্যমেই হোক না কেন। বিভিন্ন সময়ে ইসলাম বিদ্বেষীরা ইসলামকে হ্যায় প্রতিপন্ন করে অনেক কিছু করেছে এবং বর্তমানেও তা অব্যাহত আছে। কিন্তু তারা কখনো সফল হয়নি...............নিচের ঘটনাগুলো পড়ুন ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
ঘটনা-১: একবার বিখ্যাত জুতো কোম্পানি নাইক(Nike) এমন এক ধরনের জুতো বের করল যার পেছনের দিকে লেখাটিকে আরবী হরফের আল্লাহ লেখার মত মনে হয়। যেটা ইসলামের জন্য অবমাননাকর। এ কারনে আমেরিকান মুসলিম অর্গানাইজেশন কেয়ার নাইকের(Nike) বিরুদ্ধে কেস করেছিল। তবে সে কেস কোর্টে যাওয়ার আগেই নাইক(Nike) কেয়ারের সাথে সমঝোতা করে এবং প্রায় ১৭ মিলিয়ন ডলার জরিমানা দেয়। এ টাকাটা পরে কেয়ার জন মুসলমানদের সেবামূলক কার্যক্রমে ব্যয় করে।
ঘটনা-২: ডেনমার্কের একটি স্থানীয় পত্রিকায় যখন নবীজী(সা.)-কে নিয়ে প্রথম কার্টুনগুলো প্রকাশিত হয়েছিল তখন সে দেশের মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও রাষ্ট্রদূতগণ একত্রিত হয়ে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করে এবং তিন সপ্তাহ পর প্রধানমন্ত্রীর সাথে মিলিত হয়ে প্রতিবাদ জানালেন। কিন্তু ড্যানিশ প্রাইম মিনিস্টার বিষয়টিকে হালকাভাবে নিলেন এবং কোন পদক্ষেপ নিলেন না।
তিন মাস পর ২০০৬ এর ২০শে জানুয়ারি একই কার্টুন ছাপানো হল নরওয়েতে। চারটি পত্রিকায় ছাপানো হল। এরপর ছাপানো হল জার্মানীতে, তারপর হাঙ্গেরীতে। প্রথম থেকেই মুসলিম বিশ্বের স্থানে স্থানে এ কার্টুনের প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। পরবর্তীতে যখন কার্টুনগুলো বিভিন্ন দেশে ছাপানো হচ্ছিল তখন সমগ্র মুসলিম একযোগে এর তীব্র প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেছিল। মুসলিম বিশ্বে এ প্রতিবাদ জ্ঞাপন করা হয়েছিল উপরে আলোচিত ৬টি পদ্ধতিতেই। মিডিয়া, ইন্টারনেটে এর উত্তর দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এসব স্থানে এর শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানানো হয়েছে, শান্তিপূর্ণ মিছিলের মাধ্যমে। সে সময় সৌদি আরবের পাঁচশত-এর বেশি আইনজীবীদের একটি আন্তর্জাতিক কমিটি ঘোষনা করেছিল যে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করা হবে।
ডেনমার্কের ওপর অর্থনৈতিক চাপও সৃষ্টি করা হয়েছিল। ডেনমার্কের আয়ের অন্যতম উৎস হল দুগ্ধজাত পণ্য সামগ্রী। কুয়েত একাই প্রতি বছর ১৭০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য ডেনমার্ক থেকে আমদানী করত। সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে এ আমদানীর পরিমাণ হল প্রতি বছর ৮০০ মিলিয়নেরও উপরে। সে সময় মধ্যপ্রাচ্যের স্বদেশ একযোগে ডেনমার্কের পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এভাবে যখন ডেনমার্কের ব্যবসায়িক ক্ষতি হল তখন ডেইরি ফার্মের মালিকরা মিলিত হয়ে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী ও প্রিন্টমিডিয়ার কাছে গেল এবং ব্যবস্থা নিতে বলল। প্রিন্ট মিডিয়া তখন ক্ষমা চেয়েছিল। ইংরেজি, আরবি ভাষায় প্রকাশিত পত্রিকাগুলোতে তাদের ক্ষমা চাওয়ার ভাষা স্পষ্ট ছিল, যদিও ড্যানিশ ভাষায় প্রকাশিত পত্রিকাগুলোতে এ ক্ষমা চাওয়ার ভাষা জোরালো ছিল না। দোষী পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক বলল যে, ‘আমরা যে কার্টুন ছাপিয়েছি তা ডেনমার্কে আইনে অবৈধ নয়, তবে যেহেতু এতে মুসলিম বিশ্ব আহত হয়েছে এ জন্য আমরা ক্ষমা চাইছি।‘
অর্থাৎ অনেকটা শর্ত আরোপ করে ক্ষমা চাওয়ার মত। যেন, কোন দেশে ধর্ষণ অবৈধ না বিধায় সে দেশের কোন লোক কোন মুসলিম মহিলাকে ধর্ষণ করে বলল যে, আমাদের দেশে ধর্ষণ বৈধ কিন্তু আপনি যেহেতু কষ্ট পেয়েছেন সেহেতু আমি দুঃখিত।
এ ধরনের কোন অযৌক্তিক নিয়ম তৈরি করার কোন সুযোগ নেই। যা অবৈধ তা সবার জন্যই অবৈধ। যা ক্ষতিকর তা সবার জন্যই ক্ষতিকর। সেটা বৈধ নাকি অবৈধ তার ওপর ভিত্তি করে ক্ষতির পরিমাণ কমবেশি হবে না।
ডেনমার্কের উক্ত ঘটনায় রাজনৈতিক চাপও দেয়া হয়েছিল। যেমন আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, এ ঘটনার সাথে রাষ্ট্রদূতরা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। সে পদ্ধতিতে যখন কাজ হল না তখন সাথে সাথেই সৌদি আরব তার রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নিয়েছিল এবং অন্যান্য মুসলিম দেশগুলো বলল যে, তাদের দেশে ডেনমার্কের অ্যামবেসী দরকার নেই। এরপর ডেনমার্ক ক্ষমা চেয়েছিল।
এখন নিশ্চয় বুঝতে পারছেন কিভাবে তারা(ইসলামের শত্রুরা) বিভিন্ন সময়ে ইসলামকে হেয় প্রতিপন্ন করে কত কিছু করেছে। তারা এখনো থেমে নেই। কয়েকদিন যাবত ফেইসবুকে কতগুলো পেইজ আমার নজরে পড়লো..............আমি আতঁকে উঠে থমকে গেলাম!!!!! আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে নিয়ে, নবীজী(সা.) কে নিয়ে, কুরআন, ইসলামকে নিয়ে কিসব বিশ্রী অকথ্য ভাষায় লেখালেখি এবং বিভিন্নরকম ব্যঙ্গ চিত্র প্রদর্শন করে পেইজ খোলা হয়েছে। তাই আর বসে থাকতে পারলাম না। পেইজগুলো দেখলে আপনাদেরও রক্ত উত্তপ্ত হয়ে যাবে।
আসুন এই পেইজগুলো সম্পর্কে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষকে অবগত করি। ইনশাআল্লাহ আসা করি দ্রুত এইসব পেইজ বন্ধ হবে। কারন উল্লেখিত দু'টি ঘটনা আমাদের স্মরন করিয়ে দেয় যে, কখনোই ইসলাম বিদ্বেষীরা সফল হয়নি, হবেও না। পূর্বে অনেকগুলো পেইজ বন্ধ হয়েছে। তাই, চলুন..........
কিছু পেইজঃ
http://www.facebook.com/Laffffiiiinnnn
http://www.facebook.com/insultmo
http://www.facebook.com/Insultallahswt?ref=pb
http://www.facebook.com/IslamIsTerrorism?ref=pb
http://www.facebook.com/pages/Allah-Sucks/354939841184913?ref=pb
এছাড়াও অনেক পেইজ আপনার নজরে পড়তে পারে। সাথে সাথে রিপোর্ট করুন।
পেইজগুলো সম্পর্কে রিপোর্ট করার পদ্ধতিঃ
১.পেইজের ডানদিকে সেটিংসে যান এবং Report Page-এ ক্লিক করুন।........................নিচের ছবিতে দেখুন।
২.Hate Speech-এ ক্লিক করে Targets a religious group-এ সিলেক্ট করুন এবং Continue করুন। নিচের ছবিতে দেখুন।
৩. Report to Facebook-এ টিক দিয়ে Continue করুন। নিচের ছবিতে দেখুন।
৪. শেষ ধাপ হলো Okay করুন, আপনার রিপোর্টটি করা সম্পূর্ণ হবে। নিচের ছবিতে দেখুন।
"এই কাজগুলো করা আমাদের ঈমানের দাবী।"
দয়া করে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।
আমি মুহাম্মদ জিয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 162 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি একজন মুসলিম বাংলাদেশী। সর্বশক্তিমান আল্লাহ পৃথিবীর দ্বিতীয় মুসলিম দেশে জন্ম দিয়েছেন বলে তার নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি 'আল্হামদুলিল্লাহ'।বাংলাদেশের অন্যতম একটি IT blog site এ অংশগ্রহন করে আমি অনেক আনন্দিত। সকল টেক টিউনারের প্রতি আমার সালাম এবং অভিনন্দন।
Report দিল্যম …