মেয়েদের হার্ট আছে, হার্টের অসুখও আছে
একটি রম্য গল্পের প্লট খুঁজতে গিয়ে পেয়ে গেলাম এই গল্পের শিরোনাম খানা। যারা পড়েছেন তাদের অনেকেই হয়তো ভুরু কুচঁকে ভাবছেন ," কোথায় যেন দেখেছি?"
মিছেই দুশ্চিন্তা করছেন। হ্যাঁ জনাব, এটিও আরেকটি অনবদ্য "টুকলিকরণ" তবে কিনা কোন রম্য গল্প বা উপন্যস থেকে নেয়া নয়।
স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ নিউইয়র্কের প্রফেসর অফ মেডিসিন ও ভি এ মেডিক্যাল সেন্টার এর কার্ডিওলজি প্রধান ডাঃ শক্তি মুখার্জির “হার্ট হাইপারটেনশন ডায়াবিটিস" এর একটি পরিচ্ছেদ যা দেখে মনে হলো আজ একটু জটিল বিষয় নিয়েই আলোকপাত করা যাক।
আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে একটা ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে যে, হার্টের অসুখগুলো উন্নতদেশগুলোর একচেটিয়া রোগ। এই ধারণা কি শুধু আমাদের? খোদ পশ্চিমারাই এই ধারণাকে লালন করছে। কিন্তু বর্তমানে ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশন ও করোনারি হার্ট ডিজিজ সকল দেশের জন্য একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে উঠেছে । সাধারণ মানুষের মধ্যে মেটাবলিক সিনড্রোম এর আধিক্য লক্ষনীয় এবং দক্ষিন এশিয়ায় তা অল্প বয়েসে প্রকাশ পায় ।
পেটে চর্বি, হাই ব্লাড প্রেশার, রক্তে HDL কোলেস্টেরল বা গুড কোলেস্টেরল কম, ট্রাইগ্লিসারাইড বেশি এবং ইনসুলিন প্রতিবন্ধক অবস্থা এই সিনড্রোমের সাথে অ্যাথেরোসক্লেরোসিস এর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে থাকায় হার্টের করোনারী ধমনীর রোগ থেকে শুর করে মস্তিষ্কের ও দেহের অন্যান্য বহু ধমনীর একই ধরনের অসুখ দেখা যায় ।
হার্টের করোনারী অসুখ বলতে মূলত বোঝায় করোনারী আর্টরীর মাধ্যমে সঞ্চালিত রক্ত প্রবাহের ব্যাঘাত ঘটার বা বন্ধ হবার ফলে হার্টের পেশীতে সৃষ্ট সমস্যাকে ।
ডাঃ শক্তি মুখার্জি তার নিবন্ধে লিখেছেন, "হার্ট সঙ্কোচন করে কেবল সারা দেহেই রক্ত সঞ্চালন করে তাই নয়, সে তার নিজের পেশীর জন্যেও করোনারী আর্টারীর বা ধমনীর মাধ্যমে রক্ত সরবরাহ করে থাকে।
হার্ট অ্যাটাক তখনই হয় যখন করোনারী ধমনীর কোন একটি রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হবার ফলে সংশ্লিষ্ট হার্টের পেশীর মৃত্যু ঘটে।"
স্ত্রী এবং পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই মৃত্যুর জন্য দায়ী এই করোনারী ডিজিজ। ধারণা করা হয় আমেরিকায় প্রতি বছর ৮ লাখের ও বেশী মহিলা এই করোনারী ডিজিজে প্রাণ হারায়। এই সংখ্যাটি সবরকম ক্যান্সারে মৃত মানুষের সংখ্যার দ্বিগুন।
আমেরিকায় স্ত্রীলোকগন মনে করেন তাদের সবচেয়ে ভয়ানক শারীরিক ভয়ের কারন -
১. স্তন ক্যান্সার | ৪৬% |
২. অন্য যে কোন ধরনের ক্যান্সার | ১৬% |
৩. AIDS | ০৬% |
৪. করোনারী ডিজিজ | ০৪% |
৫. জরায়ু ও ডিম্বকোষের ক্যান্সার | ০৩% |
অথচ, স্ত্রীলোকগন প্রাণ হারান-
১. করোনারী ডিজিজ়ে | ৩৬% |
২. যে কোন ধরনের ক্যান্সারে | ০৫% |
৩. স্তন ক্যান্সারে | ০৪% |
৪. AIDS এ | ০১% |
উৎসঃ ন্যাশনাল সেন্টার ফর হেলথ স্ট্যাসিসটিকস
১. Angina; ২. শ্বাসকষ্ট; ৩. গা-বমি ভাব কিংবা বদহযম
১. বয়োবৃদ্ধি; ২. জাতি বৈশিষ্ট্য; ৩. পারিবারিক হার্টের ইতিহাস; ৪. ইস্ট্রোজেনের অভাব
১. দৈহিক স্থূলতা; ২. দৈহিক সক্রিয় অবস্থার অভাব; ৩. ধূমপান
১. হাইপারটেনশন; ২. ডায়াবিটিস; ৩. রক্তে কোলেস্টরলের পরিমাণ; ৪. হরমোণের হ্রাস-বৃদ্ধি ইত্যাদি।
এটা বলা বাহুল্য যে, উন্নত দেশগুলোর তুলনায় আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সচেতনতার হার অতি নগণ্য। মেয়েদের বেলায় এর আকারতো রীতিমত ভয়াবহ। আফসোসের কথা হল আজ পর্যন্ত হার্টের অসুখ নিয়ে যত গবেষণা হয়েছে তার বেশিরভাগই পুরুষদের উপর করা হয়েছে। তাই ফলাফলও একপেশেই হয়েছে। আমেরিকায় The National Institutes of Health (NIH) ১৯৯১ সালে Women's Health Initiative নাম নিয়ে প্রায় ১৪০,০০০ জন মহিলা নিয়ে ১৪ বছরব্যাপী গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেছিল (এখনও চলছে)। কে জানে এতে হয়ত পাওয়া যাবে আরও অজানা অনেক তথ্য। সেই পর্যন্ত সকলকে স্বাস্থ্যকর শুভেচ্ছা।
এটি পূর্বে কাঙ্গালিকথনে প্রকাশিত হয়েছিল।
আমি samehood। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 7 টি টিউন ও 181 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আজও রাখি মানুষের ভালোবাসায় বিtশ্বাস চেপে যাই বুক চীরে আশা কোন দীর্ঘশ্বাস বাস্তবতা করে নিয়ে আমায় পরিহাস, সহস্র ব্যস্ততার মাঝেই খুঁজি একবিন্দু অবকাশ......
মাঝরাতে চমৎকার একটা টিউনের জন্যে ধন্যবাদ!