সুপ্রিয় ব্লগারবৃন্দ,
কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি, সবাই ভালো আছেন। অনেকদিন পর আজ কোন ব্লগে লগ-ইন করলাম। ইদানিং ব্যস্ততা এতোটা বেড়েছে যে ব্লগিং করার সময় হয়ে ওঠে না। যোদিও একপ্রকার অভিমান করেই টেকটিউনস সহ অন্যান্য ব্লগে লেখালেখি বন্ধ করেছিলাম। টেকটিউনস-এ মহাবিশ্ব নিয়ে ৩০ পর্বের একটি চেইন টিউন শেষ করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সেটা আর করা হয়ে উঠেনি। কারণ টেকটিউনস-এর কোন এক মডারেটর আমার একটা পোস্ট মুছে সম্পূর্ণ মুছে দিয়েছিল। তাই প্রতিবাদ সরূপ ব্লগিং করাটাই টাই জীবন থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আজ শুভ্র আকাশ ভাইয়ের তবু বার বার ফিরে আসি, ফিরে দেখা – টেকটিউনস ২০১১ শিরোনামের নির্বাচিত টিউনে নিজের নাম দেখে খুব ভালো লাগলো। টেকটিউনস-এ সর্বশেষ কবে লগিন করেছিলাম, তা ঠিক মনে নেই। তবে মাঝে মাঝে একটু আধটু উঁকি মারতাম আরকি। সত্যি কথা বলতে কি, আজ নিজের আইডি ও পাসওয়ার্ডটাই ভুলে গিয়েছিলাম। ( মডারেটরদেরকে বলবো, কোন একটা টিউন মুছে দেয়ার আগে কয়েকবার ভেবে নিবেন) তবে যেহেতু আজ শেষ পর্যন্ত লগিন করেই ফেললাম, তাই আপনাদের সবাইকে আজ একটা উপহার দিবো। এটি আমার ২০১১ সালে লেখা বেস্ট এবং সর্বশেষ আর্টিকেল। টিউনটির ১৫ জন প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে থেকে ৮ জনকে নিয়ে 'তোমায় সালাম' শিরোনামে আমার একটা ফিচার আংশিক পরিবর্তন করে ২৮-১২-২০১১ তারিখের 'কালের কন্ঠ' -তে প্রকাশ করা হয়েছিল । এবং পুরো টিউনটি অর্থাৎ ১৫ জন প্রযুক্তিবিদকে নিয়ে লেখা ফিচারটি প্রকাশ করা হয়েছে 'সি-নিউজ' ম্যাগাজিনের চলতি জানুয়ারি সংখ্যায়। আর একটি শুভ সংবাদ দিয়ে আমার কথা বলা শেষ করবো। আগামী মার্চ-২০১২ থেকে আমি ‘সায়েন্সটেক’ নামের একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক ম্যাগাজিন প্রকাশ করতে যাচ্ছি। আশাকরি, ম্যাগাজিনটি ছোট-বড় সব ধরণের পাঠকদের কাছ থেকে জনপ্রিয়তা পাবে। ম্যাগাজিনটির ওয়েবসাইটঃ http://www.sciencetech.info । টেকটিউনস-এর সবার প্রতি ‘সায়েন্সটেক’ ম্যাগাজিন পড়ার আমন্ত্রণ রইলো। সবাই ভালো থাকবেন। শুভকামনা সবার জন্য। 🙂
চলতি বছরে প্রযুক্তি বিশ্বের মূর্তি স্টিভ জবসের মৃত্যুতে পুরো প্রযুক্তি বিশ্ব স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু গত ২০১১ সালে আমরা শুধু একটি নক্ষত্রকে হারাইনি,প্রযুক্তি বিশ্বের অনেক অগ্রদূতকে চিরদিনের জন্য বিদায় জানিয়েছি।কম্পিউটার বিক্রি থেকে শুরু করে সফটওয়্যার প্রোগ্রামিং পর্যন্ত বর্তমান ডিজিটাল বিশ্ব এতোটা উন্নতি লাভ করতে পারতো না, যদি না আমরা তাঁদের মতো উদ্ভাবকদের পেতাম। প্রথম প্রজন্মের কিছু প্রযুক্তি নেতা তাঁদের কর্ম এবং কোম্পানী অনেক বছর আগেই অন্যের হাতে তুলে দিয়েছেন। আজকের দিনে প্রোগ্রামিং,ইঞ্জিনিয়ারিং,মিউজিকসহ অনেক ক্ষেত্রেই ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ পাওয়া যেতনা, যদি না আমরা তাঁদের নেতৃত্ব ও উদ্ভাবনকে পেতাম। যাঁরা তাদের অভূতপূর্ব প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে পুরো বিশ্বটাকেই বদলে দিয়েছেন,আমি তাঁদের প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করছি। এই টিউনে থাকছে ২০১১ সালে মৃত্যিবরণ করা এমনই ১৫ জন প্রযুক্তিগুরুকে নিয়ে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মূলক আলোচনা।
কেনেথ ওলসেন (মৃত্যু-৬ই ফেব্রুয়ারী,২০১১)
কেনেথ ওলসেন ছিলেন ‘ডিজিটাল একিউপমেন্টস কর্পোরেশন’ এর প্রকৌশলী ও সহপ্রতিষ্ঠাতা। কেনেথ হ্যারি ওলসেন ১৯২৬ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারী কানেক্টিকাটের ব্রিজপোর্টে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব কেটেছিল স্টার্টফোর্ডে। তিনি একটি মেশিনারীর দোকানে কাজ করার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪৪ সাল থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে চাকুরি করার পর তিনি তিনি এমআইটি ভর্তি হন।সেখান থেকে ১৯৫০ সালে তিনি তড়িত প্রকৌশলী বিদ্যার উপর স্নাতক এবং ১৯৫২ সালে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৫৭ সালে কেন ওলসন এবং এমআইটির এক সহযোগী হার্লেন এন্ডারসন মিলে নিজের কম্পিউটার ফার্ম দেয়ার পরিকল্পনা করেন।১৯৮৬ সালে ফরচুন ম্যাগাজিন, আমেরিকার সবচেয়ে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করে। চলতি বছরের শুরুর দিকে অর্থাৎ ৬ ই ফেব্রুয়ারী তিনি ৮৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
জিয়ান বার্টিক (মৃত্যু- ২৩শে মার্চ, ২০১১)
জিয়ান বার্টিক ১৯২৪ সালের ২৭শে ডিসেম্বর উত্তর-পশ্চিম মিসৌরিতে জন্মগ্রহণ করেন।১৯৪১ সালে তিনি ১৬ বছর বয়সে হাই স্কুল পড়া শেষে মেরিভিলের ‘নর্থওয়েস্ট মিসৌরি স্টেট টিচার্স কলেজ’ বর্তমান ‘নর্থওয়েস্ট মিসৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে প্রথম নারী হিসেবে গণিতের উপর স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ‘ইউনিভার্সিটি অব পেন্সিলভানিয়া’র একটি প্রোগ্রামিং দলের সাথে কাজ করার সুযোগ পান এবং ENIAC নামে প্রথম বৈদ্যুতিক কম্পিউটারের উদ্ভাবন করেন।উক্ত প্রোগ্রামিং দলের ৬জন নারী সদস্যের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। পরবর্তীতে তিনি BINAC এবং প্রথম বানিজ্যিক কম্পিউটার UNIVAC এর কাজেও যথেস্ট অবদান রাখেন।১৯৯৭ সালে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিসরূপ হল অব ফেম-এ তাঁর জায়গা হয়।২০০২ সালের দিকে তাকে নর্থোয়েস্ট থেকে ডক্টরেট সম্মামনা দেওয়া হয়।‘নিউইয়র্ক টাইমস’ এর দেয়া ‘সফটওয়্যারের পথিকৃত’ উপাধিপ্রাপ্ত এই নারী চলতি বছরের ২৩শে মার্চ ৮৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
ম্যাক্স মেথুস (মৃত্যু- ২১শে এপ্রিল,২০১১)
১৯২৬ সালের ১৩ই নভেম্বর নেববাস্কার কলম্বাসে জন্মগ্রহণ করেন কম্পিউটার মিউজিকের পথিকৃত বা ডিজিটাল মিউজিকের জনক ম্যাক্স মেথুস। তিনি ‘ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’ তে তড়িত প্রকৌশল বিদ্যার উপর পড়াশুনা শেষে এমআইটি থেকে ১৯৫৪ সালে ডক্টরেট অব সায়েন্স ডিগ্রী লাভ করেন। বেল ল্যাবসে কর্মরত অবস্থায় ১৯৫৭ সালে তিনি মিউজিক নামে একটি প্রোগ্রাম লেখেন যেটি আইবিএম ৭০৪ মেইনফ্রেম কম্পিউটরে ১৭ সেকেন্ড ধরে চলতো। যোদিও পরবর্তীতে তিনি তাঁর অন্যান্য সহযোগীর সাথে মিউজিক প্রোগ্রামটির যথেস্ট উন্নতি সাধন করেন এবং অনেকগুলি ভার্সনে প্রকাশ করেন। এরপর তিনি নিনটেন্ডো, সনি ও মাইক্রোসফটের উন্নয়নকৃত রেডিও বাটনেরও যথেস্ট উন্নতি সাধন করেন। ১৯৬২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ম্যাক্স মেথুস, বেল ল্যাবসের ‘অ্যাকুয়াস্টিকাল রিসার্চে’ এর পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর স্ট্যানফোর্ডের মিউজিক ও অ্যাকুয়াস্টিক এর গবেষোণা কেন্দ্রে মিউজিকের অধ্যাপক তাঁর গবেষণা চালিয়ে যান। ডিজিটাল মিউজিকের এই জনক ২১শে এপ্রিল ৮৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
নরিও ওগা (২৩শে এপ্রিল, ২০১১)
নরিও ওগা ১৯৩০ সালের ২৯শে জানুয়ারী জাপানের নামাজুতে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি যক্ষা রোগে আক্রান্ত হলে অনেকটা সময়ই তিনি বিছানায় অতিবাহিত করেন। মূলত এই সময়েই তিনি পরিচিত একজনের কাছ থেকে পদার্থবিদ্যা ও মিউজিক বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন।পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে তিনি অপেরা গায়ক হিসেবে নিজের কর্মজীবনের সূত্রপাত করেন।১৯৫৩ সালে ‘টকিও ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ফাইন আর্টস এন্ড মিউজিক’ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই তিনি সনির দুই প্রতিষ্ঠাতা মাজারু ইবুকা ও আকিও মবিতার নজরে আসেন এবং তাকে পার্টটাইম কনসালটেন্ট হিসেবে চাকুরি দেন। এরপর তিনি কম্প্যাক্ট ডিস্ক বা সিডির উন্নতিতে তাঁর অকৃত্রিম অবদান রাখেন। সিডির উন্নয়ন করার সময় তিনি এটিকে ১২ সেন্টিমিটারের একটি চাকতিতে রূপদেন। এরপর ১৯৮২ সালে তিনি সনির প্রেসিডেন্ট হন এবং পৃথিবীর প্রথম সিডির বাজারজাত শুরু করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি সনির সিইও হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।এবছরই তিনি কোকা কোলা কোম্পানী থেকে কলাম্বিয়া পিকচারস এন্টারটেইনমেন্টকে কিনে নেন এবন্মগ সেটিকে সনি পিকচারস এন্টারটেইনমেন্ট নামি নামান্তরিত করেন। ১৯৯৪ সালে তিনি সনির সহ প্রতিষ্ঠাতা আকিও মবিতার স্থলাভিষিক্ত হন এবং চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেন। তিনি ২৩শে এপ্রিল ৮১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
মাইকেল হার্ট (মৃত্যু- ৬ সেপ্টেম্বর,২০১১০)
মাইকেল স্টার্ন হার্ট ১৯৪৭ সালের ৮ই মার্চ ওয়াশিংটনের টেকোমাতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে ইলেকট্রনিক বুক বা ইবুক উদ্ভাবনের জন্যই তিনি প্রযুক্তিবিশ্বে বহুল পরিচিত। প্রথমে তাঁর বাবা ছিলেন একজন হিসাব রক্ষক এবং মা ছিলেন একটি দোকানের ব্যবস্থাপক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তাঁরা আরবানায় চলে যান এবং সেখানে তাঁরা দুটি ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এসময় মাইকেল হার্ট ইউনিভার্সিটি অব ইলিনিইজ থেকে মাত্র দুই বছর পড়াশুনা করেন। তিনি এ সময় রাস্তায় রাস্তায় গান করে বেড়াতেন।পরবর্তীতে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তাকে একটি ইউজার একাউন্ট দেয়া হয়।এরপর তিনি গুটানবার্গ নামে একটি প্রজেক্টের কাজে হাত দেন এবং এ সময়ই তিনি ইবুক এর সূচনা করেন।এই ইবুক প্রকল্পের মাধ্যমে তিনি অ্যান্ড্রোয়েড ও কিন্ডলে ফ্রী ইবুক সার্ভিসের সূচনা করেন।তিনি চলতি বছরের ৬ই সেপ্টেম্বর ৬৪ বছর বয়সে মারা যান।
জন কেলি (মৃত্যু-১৩ই সেপ্টেম্বর,২০১১)
১৯৩০ সালের ৮ই জুলাই জন্মগ্রহণ করা জন কেলি ছিলেন একজন আমেরিকান চলচিত্র প্রযোজক। ১৯৬৮ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ওয়ার্নার এন্টারটেইনমেন্ট এ কাজ করার সময় তিনি যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিলেন।এসময় তিনি প্রতিমাসে অন্তত একটি করে চলচিত্র প্রযোজনা করতেন।যেগুলোর উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে আছে ‘দ্য এক্সোসিস্ট’ কিংবা ‘সুপারম্যান’ এর মতো মুভিগুলো।১৯৬০ সালে ফিল্মওয়েজ ইনকর্পোরেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি ‘দ্য অ্যামেরিকানাইযেশন অব এমিলি’,‘দ্য সেন্ডপাইপার’ ও ‘দ্য সিনসিনাটির’ সহ-প্রযোজক এবং ‘দ্য লাভড ওয়ান্স’, ‘ক্যাস্টল কিপ’, ‘ক্যাচ-২২’ এর প্রযোজক ছিলেন। এরপর ১৯৯৩ সালে আরও দুইজন সহযোগী সহ তিনি ‘দ্য রিমেইনস অব দি ডে’ প্রযোজনা করেন, যেটি অস্কারের জন্য মনোনয়ন পায়। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে তিনি সনি পিকচারস এন্টারটেইনমেন্ট এর চেয়ারম্যান ও চিপ এক্সিকিউটিভ হিসেবে যোগদেন। তিনি ১৩ই সেপ্টেম্বর ৮১ বছর বয়সে মারা যান।
জুলিয়াস ব্ল্যাঙ্ক ( মৃত্যু-১৭ই সেপ্টেম্বর,২০১১)
জুলিয়াস ব্ল্যাঙ্ক ১৯২৫ সালের ২রা জুন ম্যানহাটনে জন্মগ্রহণ করেন।১৯৫০ সালে তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। একই বছরে তিনি কম্পিউটার চিপ কোম্পানীর প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহ প্রকাশ করেন।১৯৫২ সালে তিনি AT&T’র ওয়েস্টার্ন ইলেকট্রিক প্লান্টের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং দলের সাথে যোগ দেন।এসময় তিনি দূরবর্তী কোন স্থান থেকে অপারেটর ছাড়াই ফোন কল করার প্রোজেক্টের যথেষ্ট উন্ন্যন করেন। এরপর ১৯৫৭ সালে জুলিয়াস ব্ল্যাঙ্ক আরও সাতজন সহযোগীসহ ফেয়ারচিল্ড সেমিকনডাক্টর কর্পোরেশন নামে একটি কোম্পানী প্রতষ্ঠা করেন এবং সিলিকন কম্পিউটার চিপ বানানোর গবেষণায় মনোনিবেশ করেন।পরবর্তীতে তাঁরা ইন্টেল কর্পোরেশনের দুইজন প্রতিষ্ঠাতা রবার্ট এন নয়েচ ও গর্ডন ই ম্যুরকেও সাথে নেন। জুলিয়াস ব্ল্যাঙ্ক গত ১৭ই সেপ্টেম্বর ৮৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
স্টিভ জবস (মৃত্যু- ৫ই অক্টোবর, ২০১১)
চলতি বছরে মৃত্যুবরণকারী প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে যাঁর মৃত্যুসংবাদ পুরো প্রযুক্তি বিশ্বকে অচল করে দিয়েছিল, তিনি অ্যাপল কম্পিউটারের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সিইও স্টিভ জবস।তিনি ১৯৫৫ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারিতে সানফ্রান্সিসকোতে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল পিতা-মাতা ছিলেন ক্যাসিনো মালিক আব্দুল ফাত্তাহ জন জানডালি কলেজ স্নাতক জোয়ানে সিম্পসন সেইবেল। জন্মের পরপরই জবসকে নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের পল এবং ক্ল্যারা জবসের কাছে দত্তক দেয়া হয়েছিল। স্টিভ জবস বেড়ে উঠেন সিলিকন ভ্যালিতে। ক্যালিফোর্নিয়ার এই স্থানটিতে এক সময় ইলেকট্রনিক বর্জ্য ফেলা হতো, যেটি পরবর্তীতে তথ্যপ্রযুক্তির তীর্থস্থান হয়ে ওঠে। ১৯৬৯ সালের দিকে স্টিফেন উজনিয়াক নামের পাঁচ বছরের বড় এক তরুণের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় স্টিভ জবসের এবং দুজনেরই ছিল ইলেকট্রোনিক্সের প্রতি গভীর আগ্রহ। স্টিভ উজনিয়াকের সহযোগিতায় হোমব্রু কম্পিউটার ক্লাব থেকে স্টিভ জবস বেশ কিছু প্রোগ্রামিং ও হার্ডওয়্যারের কাজ শিখে নেন। হাইস্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময়ই তিনি সফটওয়্যার সংস্থা হিউলেট-প্যাকার্ড বা এইচপিতে কাজ করার সুযোগ পেয়ে যান। ১৯৭২ সালে স্কুলজীবনের গণ্ডি পেরিয়েই দত্তক বাবা-মায়ের কাছে তাকে রিড কলেজে ভর্তি করানোর বায়না ধরেন। কষ্টসাধ্য হলেও জন্মদাত্রী মাকে দেয়া কথা রক্ষা করতেই পল-ক্ল্যারা দম্পতি রিড কলেজেই ভর্তি করান জবসকে। কিন্তু কলেজের ধরাবাঁধা নিয়ম তাঁর ভালো না লাগায় মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে প্রথম সেমিস্টারেই খারাপ ফল করার কারণে কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হন জবস, ঝরে পড়েন কলেজ থেকে। মূলত এরপর থেকেই তাঁর কর্মজীবনের সূত্রপাত ঘটে। ১৯৭৭ সালে বন্ধু স্টিভ উজনিয়াকের সহযোগিতায় অ্যাপল-২ নামের একটি উন্নত কম্পিউটার বানাতে তাঁরা সক্ষম হন। যোদিও এর এক বছর আগে তাঁরা অ্যাপল-১ নামে প্রকৌশলীদের উপযুক্ত করে একটি কম্পিউটার বানান। এরপর থেমে থাকেননি স্টিব জবস। একে একে পুরো প্রযুক্তি বিশ্বকে উপহার দিয়েছেন চোখ ধাঁধানো বহু প্রযুক্তি পণ্য,যা ইতিমধ্যে সবাই জেনে গেছেন। অ্যাপল-২ প্রকাশ করার সময়ই মাত্র ২৩ বছর বয়সে তিনি লিসা নিকোল নামে একটি কন্যা সন্তানের জনক হন। ১৯৮৩ সালে তিনি মেয়ের নামে (লিসা, ১৯৮৩ সাল) একটি উন্নত কম্পিউটার উদ্ভাবন করেন। এই কম্পিউটারেই সর্বপ্রথম আইকন, গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টাফেস, মাউস কার্সার ব্যাবহার করা হয়। এরপর একে একে উপহার দিয়েছেন ম্যাকিনটোশ (১৯৮৪), আইম্যাক(১৯৯৮), আইপড ক্লাশিক (২০০১), আইপড ন্যানো (২০০৫), আইপড টাচ্ (২০০৭), আইফোন (২০০৭), আইপ্যাড (২০১১) সহ বহু প্রযুক্তি পণ্য।তাছাড়া ১৯৯৫ সালে এক্সিকিউটিভ প্রডিউসার হিসেবে তাঁর নির্মিত ছবি ‘টয় স্টোরি’ তো আছেই। শুধু তাই নয় ১৯৮৫ সালে তিনি অ্যাপল ইনকর্পোরেশন থেকে সরে দাঁড়ান এবং নেক্সট কম্পিউটার এর প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও তিনি ১৯৯৬ সালে আবার অ্যাপলে ফিরে যান এবং ১৯৯৭ থেকে ২০১১ সাল থেকে সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জবস দীর্ঘদিন ধরে অগ্ন্যাশয়ের জটিল ক্যানসারে ভুগছিলেন। তিনি গত ৫ই অক্টবর মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।
[ বিঃদ্রঃ আমি ব্যাক্তিগতভাবে স্টিভ জবসের উপর একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন করছি। স্টিভ জবসের উপর আমার তৈরিকৃত ওয়েবসাইটির ডিজাইন হবে অনেকটা বাম পাশের ছবির মতো। কোন একটি টেবিলে/ছবিতে ক্লিক করলেই তার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। তবে এতে কিছুটা সময় লাগবে। আশাকরি, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে হয়ে যাবে। এটি স্টিভ জবসের পুরো জীবনের(1955-2011) ইতিহাস বলবে। তবে বর্তমানে খুব অল্প সময়ে স্টিভ জবস সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করতে পারেন। লিঙ্কে যাওয়ার পর পরবর্তী ঘটনা পড়তে Next ( > ) বাটনে ক্লিক করুন। লেখা কখনো ফ্রেমের বাইরে চলে গেলে '+' বাটনে ক্লিক করে জুম করে নিতে হবে। ]
রবার্ট গালভিন (মৃত্যু-১১ই অক্টোবর, ২০১১)
বব নামে বহুল পরিচিত রবার্ট গালভিন ১৯২২ সালের ৯ই অক্টোবর মার্সফিল্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা পল গালভিন ১৯২৮ সালে মটোরলা কোম্পানী প্রতিষ্ঠা করেন।মটোরলায় যোগ দান করার পূর্বে ১৯৪৪ সালে রবার্ট গালভিন ইউনিভার্সিটি অব লণ্ডন থেকে তাঁর পড়াশুনার ইতি টানেন। পরবর্তীতে ১৯৫৯ সালে তাঁর বাবার মৃত্যুর পর তিনি মটোরলার সিইও হিসেবে যোগ দেন। এরপর ১৯৯০ পর্যন্ত মটোরলার চেয়েরম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।সবশেষে ২০০১ সালে তিনি বোর্ড অব ডিরেক্টরস থেকে অবসর গ্রহণ করেন। প্রায় তিন দশক ধরে মটোরলার সিইও হিসেবে থাকা সেলফোনের সংস্কারক ও অগ্রদূত রবার্ট গালভিন গত ১১ই অক্টোবর ৮৯ বয়সে মারা যান।
ডেনিস রিচি (মৃত্যু-১২ই অক্টোবর,২০১১)
ডেনিস রিচি ১৯৪১ সালের ৯ ই সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের ব্রনসভিলে শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা এলিস্টার রিচি ছিলেন বেল ল্যাবসের একজন কর্মকর্তা। যিনি সেখানে দীর্ঘদিন সুইচিং সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তারা নিউ জার্সিতে চলে যান এবং সেখানেই ডেনিস রিচি হাইস্কুলে ভর্তি হন। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে রিচি খুব ভাল ফলাফল করতে থাকেন যার ফলসরূপ ১৯৬৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যা ও ফলিত গণিত বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৬৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন।হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই ডেনিস রিচি “সান্দিয়া ন্যাশনাল ল্যবরেটরি নামের একটি পারমাণবিক অস্ত্র গবেষণা কেন্দ্র এবং কিছুদিন পর “ম্যাসাচুসেটস্ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি)” খন্ডকালীন কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। এলিস্টার রিচির কাছেই ডেনিস রিচির সার্কিট ও পরবর্তীতে মেশিনের উপর হাতে খড়ি হয়েছিল। শৈশবে পদার্থবিদ্যার উপর আগ্রহ থাকলেও মূলত “এমআইটি” তে কাজ করার সময়টাতেই কম্পিউটার বিজ্ঞানের প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ বাড়তে থাকে। ১৯৬৭ সালে ডেনিস রিচি বাবার কর্মস্থল বেল ল্যাবরেটরি তে কম্পিউটার সায়েন্সের গবেষণা কিভাবে যোগ দেন। সেখানে তিনি কেন থম্পসন নামের একজন সহযোগীর সাথে পরিচিত হন। কেন থম্পসন, ডেনিস রিচির এক বছর আগেই ১৯৬৬ সালে বেল ল্যাবস-এ যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৬৯ সালে কেন থম্পসন একটি অপারেটিং সিস্টেম প্রজেক্টের কাজ শুরু করেন। এর কিছুদিন পরেই ডেনিস রিচি আরও দুইজন সহযোগীসহ সেই প্রজেক্টের কাজে মনোনিবেশ করেন। এই প্রজেক্টই পরর্তীতে অপারেটিং সিস্টেম ইউনিক্স নামে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭৩ সালের শেষের দিকে রিচি ও থম্পসন সহ আরও পাঁচজন সহযোগী মিলে ইউনিক্সের উন্নততর সংস্করনের উদ্দেশ্যে আবারও কাজ শুরু করেন। বর্তমান বিশ্বে ইন্টারনেটের বিকাশে ইউনিক্সের অবদান অপরিসীম। ১৯৭৫ সালে ইউনিক্সকে ইন্টারনেট বেসড কম্পিউটার নেটওয়ার্কের অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। ক্লায়েন্ট সার্ভার মডেল তৈরিতে অপরিহার্য উপাদান ছিল ইউনিক্স। এসময় ডেনিস রিচি ‘সি’ নামে একটি নতুন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের উদ্ভাবন করেন। তিনি এটি ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৩ সালের কোন এক সময়ে উদ্ভাবন করেন। উল্লেখ্য যে ডেনিস রিচি ‘সি’ এর জনক হিসেবেই বহুল পরিচিত। ‘সি’ ল্যাঙ্গুয়েজের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ইউনিক্সের গতিকে বাড়ানো।গত ১২ ই অক্টেবর ডেনিস রিচি ৭০ বছর বয়সে নিউ জার্সির নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।
এশয়ানা হেইলে (মৃত্যু-১৪ই অক্টোবর, ২০১১)
এশয়ানা হেইলে ১৯৪৯ সালের ৮ই অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। প্রথম জীবনে তিনি শাওন নামের পুরুষ থাকলেও এবং লিঙ্গ সমতায় বিশ্বাসী থাকায় চিকিতসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাহায্যে তিনি মহিলাতে পরিণত হন। তখন তিনি তাঁর নাম পরিবর্তন করে এশয়ানা হেইলে রাখেন।তিনি টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করেন এবং কলেজে থাকাকালীন অবস্থায় তাঁর প্রথম কোম্পানী ‘মেটা সফটওয়্যার’ প্রতিষ্ঠা করেন। এশয়ানা হেইলে মূলত এইচস্পাইস প্রোগ্রামের জন্যই প্রযুক্তিবিশ্বে বহুল পরিচিত। ১৯৭৩ সালে তিনি AM9080 নামে প্রথম মাইক্রোপ্রসেসর আবিষ্কার করেন যেটিকে ইন্টেলের INTEL8080‘র ক্লোন হিসেবে মানা হয়।তিনি ১৪ অক্টোবর ৬২ বছর বয়সে মারা যান।
জন ম্যাকার্থি (মৃত্যু-২৪শে অক্টোবর,২০১১)
জন ম্যাকার্থি ১৯২৭ সালের ৪ঠা সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে জন্মগ্রহণ করেন।১৯৪৮ সালে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (ক্যালটেক) থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৫১ সালে তিনি প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি থেকে গণিত বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। এ সময় তিনি সার্কাসস্ক্রিপশন ও নন মোনোটনিক রিজোনিং এর মতো বিখ্যাত তত্ত্বগুলি আবিস্খার করেন। পিএইচডির পর তিনি সেখানেই গনিতের ইন্সট্রাকটর হিসেবে তাঁর প্রতিষ্ঠানিক কর্মজীবন শুরু করেন।পিএইচডি সম্পন্ন করার দুই বছর পর ১৯৫৩ সালে তিনি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি তে গণিতের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেয়ার পর ১৯৫৫ সালে ডার্টমাউথ কলেজে যোগ দেন। ১৯৫৬ সালে ঐতিহাসিক ডার্টমাউথ সম্মেলনে তিনি সর্বপ্রথম কম্পিউটারের নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা বা Artificial Language সংক্রান্ত বিজ্ঞানকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নামে উপস্থাপনা করেন। এ সম্মেলনে, যন্ত্র বিশেষ ব্যবস্থায় শিখতে পারে এবং একে শেখানো যায় বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।১৯৫৮ সালে তিনি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-তে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং পৃথিবীর প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেন। এ সময় তিনি উত্তর প্রদানকারী প্রোগ্রামিং ভাষা তৈরির প্রস্তাব করেন। ফলসরূপ ১৯৫৯ সালের দিকে তিনি প্রোগ্রামিং ভাষা লিস্প (Local Identifier Separator Protocol) তৈরী করেন।১৯৬২ সালে তিনি স্ট্যানফোর্ডে ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসেবে যোগ দিন এবং দ্বিতীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৬ সালের দিকে জন ম্যাকার্থি ও তাঁর দল কম্পিউটারে দাবা খেলার একটি প্রোগ্রাম তৈরি করেন। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত সময়ে, পিএইচডি করার সময় স্বউদ্ভাবিত সার্কামস্ক্রিপশন ও নন-মোনোটনিক রিজোনিং তত্ত্বের উন্নয়ন সাধন করেন। ১৯৮২ সালের দিকের সময়ে তিনি মহাকাশের স্পেস এলেভেটর এর ক্ষেত্রেও তাঁর ধারণা ব্যাক্ত করেন। ২০০০ সালে তিনি তাঁর সকল কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন।তিনি গত ২৪শে অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। এ সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
জন ওপেল (মৃত্যু- ৩রা নভেম্বর, ২০১১)
জন ওপেল ১৯২৫ সালের ৫ই জানুয়ারী মিসৌরির কেনসাস শহরে জন্মগ্রহ্ণ করেন। ইংরেজীর উপর স্নাতক করার পর ১৯৪৯ সালে তিনি ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো থেকে এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করেন।আইবিএম-এ সেলসম্যান হিসেবে কর্মজীবনের সূত্রপাত করলেও তিনি ১৯৫৯ সালে আইবিএম এর ততকালীন সিইও থমাস জে ওয়াটসন জুনিয়র এর এক্সিকিউটিভ এসিস্ট্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর তিনি ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত আইবিএম এর প্রেসিডেন্ট এবং ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত সিইও দায়িত্ব পালন করেন। শুধু তাই-ই নয়, তিনি ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত আইবিএম এর চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জন ওপেল চলতি বছরের ৩রা নভেম্বর ৮৬ বছর বয়সে মারা যান।
চার্লস ওয়ালটন (মৃত্যু-৬ই নভেম্বর, ২০১১)
চার্লস ওয়ালটন ১৯২১ সালে জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর সঠিক জন্মদিনটি জানা সম্ভব হয়নি।তিনি রেডিও ফ্রিকোয়েন্সী আইডেন্টীফিকেশনের জনক। তাঁর শৈশব কাটে মেরিল্যান্ড ও নিউইয়র্কে। ১৯৩৯ সালে জর্জ স্কুল থেকে পাঠ শেষে কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে তড়িত প্রকৌশল বিদ্যার উপর স্নাতক দিগ্রী অর্জন করেন।এরপর স্টিভেন্স ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর ১৯৭০ সাল পর্যন্ত তিনি আইবিএম এর রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট ল্যাবরেটিরিতে কাজ করেন। এরপর ১৯৭০ সালে তিনি প্রক্সিমিটি ডিভাইসেস ইনকর্পোরেশন নামে নিজের কোম্পানী প্রতিষ্ঠা করেন। চার্লস ওয়ালটন চলতি বছরের ৬ নভেম্বর ৮৯ বছর বয়সে মারা যান।
ইলিয়া ঝিতোমিরস্কি (মৃত্যু- ১২ই নভেম্বর, ২০১১)
ইলিয়া ঝিতোমিরস্কি ১৯৮৯ সালের ১২ অক্টোবর মস্কোতে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০০ সালের দিকে তাঁরা সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। এখানেই ইলিয়া ঝিতোমিরস্কি ম্যাসাচুসেটস্-এর পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তিনি ‘তুলান কলেজ’-এ ভর্তী হন। সেখানে তিনি তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করে উচ্চশিক্ষার্থে ‘নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি’-তে ভর্তী হন। সাখানেই গত বছররের ফেব্রুয়ারীতে ‘লিবারেশন টেকনোলজি’-র আইনজীবী ও ‘কলাম্বিয়া ল্য স্কুলের’-এর অধ্যাপক ইবেন মগলেন-এর দেয়া একটি বক্তৃতা শুনে, ঝিতোমিরস্কি ডায়াসপোরার মতো ওপেন সোর্স ভত্তিক সাইটের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। শেষে তিনি তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের এক সেমিস্টার বাকি থাকতেই, তিন সহযোগিসহ ডায়াসপরার মতো ওয়েবসাইটের শুভ সূচনা করেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে চলতি বছরের ১২ নভেম্বর মারা যান সামাজিক যোগাযোগের সাইট ডায়াসপরার অন্যতম সহ প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়া ঝিতোমিরস্কি । তাঁর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে অনেকেই মনে করেন, তিনি সম্ভবত আত্মহত্যা করেছিলেন।
আমি এন.সি.। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 46 টি টিউন ও 208 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আপনার এই অভিমান আমাদের অনেক সুন্দর সুন্দর টিউন থেকে যে বঞ্চিত করেছে তা নিঃসন্দেহে বলতে পারি।আশা করি সকল মান অভিমান ভুলে নতুন করে আমাদের জন্য সুন্দর টিউন করতে শুরু করবেন। আর এই টিউনটির কথা বলতে পারি খুবই ভালো লেগেছে।ধন্যবাদ