একবিংশ শতাব্দীর এই ডিজিটাল সময়ে এসে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার অপব্যবহারের ফলে অনেকেই স্বীকার হচ্ছে প্রতারণার । প্রতারণার কিছু সাধারন ঘটনা তুলে ধরা হল। যেগুলো সম্বন্ধে না জানার ফলে যে কেউ হতে পারে এধরনের প্রতারণার স্বীকার।
প্রথম প্রতারণা মুঠোফোনে বিভিন্ন পুরষ্কার নিয়ে:
আপনার মুঠোফোনটি বেজে উঠল। ওপাশ থেকে প্রমিত উচ্চারণে কাস্টমার কেয়ার কর্মকর্তাদের কথার ভঙ্গিতে:
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত বেকার যুবক, স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে মধ্যবয়সী পুরুষরাও এই প্রতারণার সদস্য। এমনকি কোনো কোনো মেয়েও এ প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। প্রতারণামূলক এ তৎপরতা বর্তমানে ওইসব এলাকায় ‘কিছু করে খাওয়ার মতো’ সামাজিক কর্ম হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। ফলে কেউ কারো বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না। ফলে সাংবাদিক পরিচয় গোপন করেও এই ব্যবসার হোতাদের সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, মোবাইল অপারেটর কম্পানিগুলোর যাচ্ছেতাই রেজিস্ট্রেশনের ফলে অথবা প্রতারণার জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা না থাকায় এ ব্যাধি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, লোভনীয় অফার পেয়ে কেউ যদি প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে; তখনই সুকৌশলে তারা বিভিন্ন অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। টাকা নেওয়ার মাধ্যম দুই ধরনের। একটি ফ্লেক্সিলোডের মাধ্যমে প্রতারকদের মোবাইলে টাকা পাঠানো, যা ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতারকরা বিক্রি করে দেয়। কিছু কিছু ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ীর সঙ্গেও প্রতারকদের গোপন আঁতাত রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। কেউ চেকের মাধ্যমে প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেন। চেক জমা হওয়ার পর টাকা তুলে ওই অ্যাকাউন্ট সাধারণত প্রতারকরা দ্বিতীয়বারের মতো ব্যবহার করে না। ভুয়া তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার কারণে ব্যাংক কর্তৃপক্ষও তাদের শনাক্ত করতে ব্যর্থ। জানা যায়, কিছু দিন আগে প্রতারণার শিকার হন চট্টগ্রামের এক চিকিৎসক। দুই কোটি টাকা দামের ফ্ল্যাটের লোভ দেখিয়ে ওই চিকিৎসকের কাছ থেকে ভ্যাট বাবদ হাতিয়ে নেওয়া হয় ১৪ লাখ টাকা, যে টাকা তিনি চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করেন বলে স্থানীয় পুলিশ জানায়। যে প্রতারক ওই টাকা হাতিয়ে নেয় সে ওই উপজেলার বাসিন্দা বলে জানায় পুলিশ। এদিকে রাজশাহী রুয়েট পড়া ছাত্র তুহিন মোল্লা জানান তাকেও এরকম লোভ দেখানো হয় । তিনি সবগুলো মুঠোফোন বার্তার ভয়েস রেকর্ড নিয়ে র্যাব অফিসে জমা দিলেও প্রতারকের প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে সনাক্ত করতে ব্যার্থ হয়।এদিকে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠনের পর র্যব অথবা পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেও কোন লাভ হয় না। এবং জানা যায় এসব প্রতারণার সাথে যারা জড়িত তাদের সিমগুলোর কোন রেজিট্রেশন কাগজ পত্র নেই। আবার রেজিস্ট্রেশন করা থাকলেও সেটি আউটলেট দোকানের নামে করা। যা দিয়ে প্রতারককে ধরা সম্ভব নয়।
দ্বিতীয় প্রতারনা অনলাইন বা ইন্টারনেট ভিত্তিক প্রতারণা:
প্রতারণা করা হয় সাধারনত ই-মেইলের মাধ্যমে। বিভিন্ন ই-মেইল থেকে মেইল আসে এইরকমভাবে: আমি একজন সরনার্থী(বিভিন্ন দেশের) । যুদ্ধের সময় আমার পরিবারের সবাই মারা যায়। আমার বাবার ব্যংক একাউন্টে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার রয়েছে। কিন্তুু আমি এই টাকা আমাদের দেশের নিয়ম অনুযায়ী উঠাতে সক্ষম না। তাই আমি চাচ্ছি ডলারগুলো আপনার নামে হস্তান্তর করে দিব। আপনি অর্ধেক রাখবেন এবং আমাকে কিছু টাকা দেবেন যাতে আমি বাকী জীবনটা একটু ভালভাবে কাটাতে পারি। এরপর সম্মতি পেলে আপনার যোগাযোগ একটা ব্যংকের কর্মকর্তার কাছে চলে যাবে। এই ব্যাংকটাও সাজানো যার কোন অস্তিত্ব নেই । এবং ব্যংক থেকে আপনাকে মেইল করবে যে, আপনার নামে একটা ফাইল ইস্যূ হয়ে আছে, এবং ১০ মিলিয়ন ডলার আপনার নামে হস্তান্তরের অপেক্ষা। এজন্য আপনার কিছু টাকা জমা দিতে হবে। শুধু ব্যাংক একাউন্টটা খোলার জন্য। এরপর আপনাকে নির্দিষ্ট টাকার অংক ব্যাংকে জমা দিতে বলা হবে। টাকা জমা দেওয়ার পর ব্যাংক সরনার্থী সব গায়েব।
তৃতীয় প্রতারণা এইরকম। আপনাকে একটা গেম খেলতে দেওয়া হবে। এবং বলবে গেমটি জিততে পারলেই আপনাকে দেওয়া হবে ২০ মিলিয়ন ডলার । গেমটি জিতলে ব্যাংক একাউন্টটা খোলার জন্য আপনাকে কিছু টাকা জমা দিতে হবে। এরপর আপনাকে নির্দিষ্ট টাকার অংক ব্যাংকে জমা দিতে বলা হবে। টাকা জমা দেওয়ার পর ব্যাংক,গেম সব গায়েব।
এরপর আছে ডিভি প্রতারনা :
আপনি আমেরিকার ডিভি লটারীতে বিজয়ী হয়েছেন। ইত্যাদি ইত্যাদি.আবার সেই একই পদ্ধতি। এভাবেই বিভিন্নভাবে সহজ সরল মানুষ প্রতারণার স্মীকার হচ্ছে। সবগুলোর পেছনে মূল কারন লোভ। একটা জিনিস সবারই মনে রাখা দরকার মোবাইল কাস্টমার কেয়ার থেকে কোন বার্তা দেওয়া হলে তা ১২১ বা এই ধরনের গ্রাহক নম্বর থেকে ফোন দেওয়া হয়। এবং কখনই কোন কোম্পানী কোন গ্রাহককে হাজারে টাকার অফার দেয় না। এবং মোবাইল কোম্পানী গুলো কখনই বলবেনা আমার মোবাইলে ফ্লেক্সি দেন। আর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রতারণাগুলো পরিচালিত হয় সাধারনত ইন্ডিয়া বা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর যুবক শ্রেনী দ্বারা। আর সরকার থেকে মোবাইল কোম্পানিগুলোর রেজিস্ট্রেশন আরও কঠোর বাধ্যবধকতা যারি করা উচিৎ। যাতে পরিপূর্ণ তথ্য ছাড়া কেউ সিম রেজিস্ট্রেশন করতে না পেরে। সরকারী বেসরকারী সচেতনতা ও সাইবার আইনের সঠিক প্রয়োগের ফলে ছাড়া এইসব প্রতারণা থেকে পুরোপুরি মুক্ত হওয়া সম্ভব নয়।
আমি আকাশ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 30 টি টিউন ও 23 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সতর্ক করার জন্য ধন্যবাদ।কিন্তু এই টিউন টি আরো ১ অথবা ২ বছর আগে করা উচিৎ ছিলো।কারন এই সময়ে এসব বিষয়ে জানেনা এমন মানুষ খুজে পাবেন বলে মনে হয়না।