২৯ সেপ্টেম্বর ২০১১, দুপুর ২ ঘটিকা
কলাবাগান নামলাম একটা কাজে। কাজ করবো কেমনে? মানিব্যাগে শুধু ৫ টি টাকার লুছনি মার্কা একখানা নোট। আশে পাশের এক চিপায় খুইজা পাইলাম এক খানা বাশ ভাঙ্গা ভ্যাংক এর ভুথ!
গিয়া দেখি বিশাল লাইন। গরমে ঘামতে ঘামতে ৭-৮ জনের পরে ঢুকলাম। ১০০ টাকার এমাউন্ট সহ কিছু টাকা চাইলাম ভুথ মামুর কাছে করলাম। ঘ্যাট ঘ্যাট করে যথারীতি মামু কইলো ১০০ নাই, ৫০০ ল (কত্ত মহৎ! মামু তো) ।
চাইলাম এইবার ৫০০ দিয়া একটা এমাউন্ট। কতখন ঘড় ঘড় করল। ঘড় গড় করতে করতে এইবার মামু খানা আমার মইরা-ই গেলো। মানে কারেন্ট এক্কেবারেই গেলো গিয়া। আর আমার মাস্টোর কার্ড খানা মামুর গলার ভিতরে আটকাইয়া গেলো। আশে পাশে আর কাউরে খুইজ্জা পাইলাম না। না পাইলাম আমার পিছনে ছিলো যারা তাদের, না পাইলাম কুনু দারোয়ান মামু। দারোয়ান একটা পাইলে আইজ... এদিকে ৫ টার আগে ভার্সিটির ফী, ৬ টার মদ্ধে তারে নিয়া যাইতে হইবে বসুন্ধরা...!!
অতি আতঙ্কিত হইয়া ফোন দিলাম বাশ ভাঙ্গা ভ্যাংক মামুর হ্যবলা ক্যবলা কেয়ারটেকার গুলারে। এইখানেও জ্বালা। এক মাইয়া কয় এইডা টিপেন, ওইডা টিপেন। টিপতে টিপতেই আমার মোবাইলের ট্যাকা সব শেষ। অবশেষে টিপাটিপি শেষ অইলো, আইলো এক ব্যাটা। সব খুলে তারে ঝারলাম। আবুইল্লা কয় ,"আম্নে ব্রাঞ্চ-এ যাইন, আমিও আপ্নের জায়গায় থাকলে এই কাজই করতাম..."
দৌড়াইয়া গেলাম ধানমন্ডি ব্রাঞ্চে। গরমে রইদে আমি পুরাই শেষ। তাহাদের হাতে পায়ে ধরলাম। আমারে কয় চ্যাক বই লগে রাখিনা ক্যান। আপনারা ই কন ১ হাত লাম্বা চ্যাক বই সাথে রাখা যায়? তাছাড়া চ্যাকের একটা পাতা ভাঁজ কইরা মানিব্যাগে রাখলে ও পরে সেটা দিলে হাজার বার ফরিক্কা কইরা কর্কশ গলায় ট্যাকা দেয়, আমার অভিজ্ঞতা আছে। এই টেবিল সেই টেবিল ঘুরে অবশেষে কিছু টাকা ম্যানেজ করা গেলো ড্রাফট করে...আমারে বললো ৭ দিন পরে আইসা কার্ড নিয়া যাইয়েন। আচ্ছা, এইবার আপনেরা ই কন কার্ড টা যে মামুর গলার ভিতরে আটকাইলো এইটা কি আমার দূষ? মামুর কারেন্ট কি আমি খাইছি? মামুর কি আই পি এস নাই? মামুর কুনু গার্ড ও নাই যে দেখবো অনেক্ষন আই পি এস চলে এখন বন্ধ হওয়ার সময় হয়েছে, ভাইগ্নাদের মামুরে টিপতে বাধা দেই? তাইলে আমি ক্যান এত ভুগবো আপনেরা বলেন?
২০ অক্টোবর, ২০১১
- স্যার, আমার কার্ড টা কি আসছে? ক্যাপচার কেস...
-নাম্বার বলেন...
আপনার কার্ড তো এক্টিভ। ক্যাপচার ই তো হয় নাই, আসবে ক্যামনে?
- অ্যা... স্যার কি কন? (আবার বললাম পুরা ঘটনা)
- তাহলে তো আমার হাতে আর করার কিছু নাই, আপনি জিডি করেন, পরে কার্ড হারানোর কেস করে নতুন কার্ড এর এপ্লাই করেন।
আমার মাথায় হাত, মাত্র ১ মাস আগে অকর্মা নেক্সাস রে মাস্টোর বানাইছি ১০০০ টাকা খরচ কইরা আর ১ মাসেই মাস্টোর সাহেব হারাইয়া গেলো...এই সুখ! রাখি কই!!!
স্যার এবার আমায় তাদের কাস্টমার কেয়ার এ ফোন করিতে বললো...আবার টিপাটিপি!!!
...হ্যা স্যার...আপনার কার্ড আজ দুপুরে আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। ক্যাপচারের সময় এটা টেম্পরারিলী ডি-এক্টিভেট হওয়ার সময়-ই পায় নাই, তাই এটার তথ্য ডাটাবেইজ এ নাই... এই কার্ড এর যাবতীয় কাজ হচ্ছে ম্যানুয়ালী...আপনি ২ দিন পরে ব্রাঞ্চ এ এসে কার্ড টা নিয়ে যাবেন।
৩ দিন পরে গিয়ে আর কুনু কথা না...
-"কার্ড দেন...এই হইলো নাম্বার"
-এভাবে বলছেন কেনো স্যার ? একটু বসেন...দেখছেন তো ব্যাস্ত।
-এমনি বলছি...আমার মুঞ্চাইছে...তারতারি কার্ড দেন, জাইগা...
কতক্ষন চোখ দিয়া স্যার আমারে খাইয়া ফালাইলো আর কার্ডখানা দিয়া দিলো...
আমি আর কুনুদিন আমার ক্যাম্পাসের বাইরের মেশিনে পাঞ্চ করবো না পন করেছি। এখানে কোনোদিন কারেন্ট ও যায় না...কার্ড ক্যাপচার হলেও এত ভোগান্তি হয় না, টাকা ভরতে আসলে তাদের কাছে বললেই দিয়ে দেয় (এখানে ফাস্ট ট্র্যাক)
এই টিউন টার একটাই উদ্দেশ্য। মানুষ যখন দুরে কোথাও টাকার বিপদে পড়ে, তার চেয়ে বড় বিপদ আর নাই। তাই একটাই কথা...সেটা হলো কোথাও যাওয়ার আগে ন্যুনতম প্রয়োজনীয় পরিমান টাকা সাথে রাখবেন। অবশ্যই আপনারা সবাই বুথ দেখে ঢুকবেন মানে কারেন্ট আছে কি নাই, হঠাত চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না এসব দেখে ঢুকবেন আর কি। আসলে ভোগান্তির কথা আর কি বলবো, আজ এক অভিজ্ঞতা হলো, কাল হয়তো আরেক ভোগান্তি দেখাবে তারা, হয়তো ভুথ মামু এইবার আমারেই ধইরা ভিতরে আটকাইয়া রাখবো...
আমি স্পর্শবিন্দু। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 12 টি টিউন ও 71 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
😀 এহোনো এই রকম কিছুতে পরি নাইক্কা। পরলে আমি আবার চরম বিপদে পইরা জামু। কারন আমার মাথা গরম, অফিসে গিয়া উলটা পালটা কথা কইলে পরে আবার বিপদে পরুম 😀 ফুন কোম্পানিরে মাথা গরম কইরা যে কি পরিমান বকা দিছি তা এহন ও হেগোর ডাটাবেজে সেভ করা আছে 😀 গিরামিন, উয়াক্টেল, চিটিংসেল, ইয়ারটেল কিছুই বাদ জায় নাই। খালি টাল্লু টক আর বাঙ্গা লাইন ইউজাই না। 😀