গুগল ফেব্রুয়ারী মাসের দিকে প্রতি বছর প্রজেক্টটির কার্যক্রম শুরু করে। ওপেনসোর্স সংস্থাগুলোকে পরামর্শ সংস্থা হিসেবে যোগ দেয়ার জন্য আহবান করা হয়। বেশির ভাগ নামীদামী প্রতিষ্ঠানগুলো এর জন্য আবেদন করে। আবেদনপত্রগুলো রিভিউ করে মার্চ মাসে গুগল জানিয়ে দেয় কোন কোন প্রতিষ্ঠান গুগল সামার অফ কোডে অংশ নিতে পারবে। গুগল এই সাইটেপ্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা আলাদা করে পেজ খোলে। যাতে শিক্ষার্থীরা ওপেনসোর্স প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন আপডেট জানতে পারে।
মার্চের শেষ দিকে আসে শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহনের সুযোগ। শিক্ষার্থীরা চোখ রাখে কোন কোন ওপেনসোর্স প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারছে। এর অধীনে তারা তাদের আইডিয়া গুলো গুগলের সাইটে সাবমিট করবে। উল্লেখ্য যে ২০০৫ সালে মাত্র ৪০ টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল। আজ ২০১৩ সালে প্রায় ২০০ টির মত প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। ২০১৩ সালে জিসকে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর লিস্ট এখানে ।
শিক্ষার্থীরা কিভাবে এই জিসকে কাজ করতে পারে তা আরেকটু বিস্তারিত বলি। যেমন কেউ হয়ত ওয়ার্ডপ্রেসে কাজ করে। সে হয়ত দেখছে ওয়ার্ডপ্রেসের কোন একটি অংশে আরো পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা যায়। বা ওয়ার্ডপ্রেসে আরো এমন কিছু যোগ করা যায় যা এর সিকিউরিটিকে আরো উন্নত করবে। যেহেতু ওয়ার্ডপ্রেস জিসকে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আছে সেহেতু এর অধীনে শিক্ষার্থীরা ওয়ার্ডপ্রেসের জন্য কি করবে তার আইডিয়া গুগলকে সাবমিট করবে। এখন শুধুমাত্র আইডিয়া সাবমিট করতে হবে, কোডিং করা লাগবে না। এই আইডিয়াগুলো ওয়ার্ডপ্রেসের কমিউনিটি রিভিউ করবে। যার আইডিয়া ভাল লাগবে এবং আইডিয়া বাস্তবায়ন করলে ভাল কিছু হবে বলে আশা করা যায় , সেসব শিক্ষার্থীদের গুগল সামার অফ কোডে কাজ করার জন্য নির্বাচিত করা হবে। এপ্রিল মাসের শেষের দিকে কারা কারা নির্বাচিত হয়েছে জানিয়ে দেয়া হয়।
জুন জুলাই এই দুই মাস শিক্ষার্থীরা তাদের প্রজেক্টের জন্য যে আইডিয়া দিয়েছিল, তা কোডিং করা বাস্তবায়নের কাছে নেমে পড়ে। বাস্তবায়নের জন্য তাদের স্ব স্ব ওপেনসোর্স প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞ ডেভেলাপাররা সহায়তা করে। আগস্ট মাস পর্যন্ত সময় থাকে তাদের প্রজেক্ট পরিপূর্ণরূপে তৈরি করার জন্য। প্রজেক্ট জমা দেয়ার পর এটি গুগল কতৃক রিভিউ হয়। যদি গুগলের কতৃক প্রজেক্ট গৃহীত হয় তবে প্রতিশ্রুত ৫ হাজার ডলারের চেক তুলে দেয়া হয় শিক্ষার্থীর হাতে।
যদি এমন হয় কোন ওপেনসোর্স প্রজেক্টে কোন শিক্ষার্থী আগে থেকে পারদর্শী, এর উপর আইডিয়া এবং প্রজেক্ট করতে চায়। কিন্তু সামার কোডে অংশ নেয়া ওপেনসোর্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নেই তখন কি হবে? তখন Google Open Source Programs Office এর অধীনে শিক্ষার্থীকে তার আইডিয়া সাবমিট করতে হবে। প্রতি বছর চান্স পাওয়াদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা এর অধীনে কাজ করেছে।
যারা এই লেখাটি পড়ছেন তাদের মধ্যে অনেকেই হয়ত এখনও কনফিউসড কি ধরনের আইডিয়া প্রেরন করবেন বা কোন ধরনের আইডিয়া গুলো গুগল সামার কোডে স্থান পেয়েছে। তাহলে এই লিঙ্ক দেখুন। ২০১৩ সালে এই আইডিয়াগুলোর উপর কাজ করবে শিক্ষার্থীরা। খেয়াল করলে দেখবেন এখনও তাদের প্রজেক্টের সোর্সকোড দেয়া হয় নি। প্রজেক্টগুলো পরিপূর্ণভাবে কমপ্লিট হলে দিয়ে দেয়া হবে। ২০১২ সালে হওয়ার প্রজেক্টগুলোর লিঙ্ক দেখুন এখানে তাদের করা সকল সোর্সকোড দিয়ে দেয়া হয়েছে।
গুগল ডেভেলপার গ্রুপ ঢাকা (জিডিজি ঢাকা)” এবং “অঙ্কুর আইসিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন” এই প্রোগ্রামটিতে বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহন বাড়ানোর জন্য সারাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গুগল সামার অফ কোড অরিয়েন্টশন আয়োজন করছে। আশা করা আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহন আগামীতে আরো বাড়বে এবং আমাদের আইডিয়াগুলো আরো বেশি গৃহীত হবে। ধন্যবাদ সবাইকে।
লেখাটি আমার ব্লগে প্রকাশিত - http://mashpysays.blogspot.com/
আমি Mashpy Says। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 25 টি টিউন ও 1964 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
প্রয়োজনের সময় আমি অনেকের কাছেই প্রয়োজনীয়।
আমারো ইচ্ছে আছে।দেখি যোগ দেয়া যায় কিনা? 😐