এনালগ স্থির ছবির কথা উঠলেই সেই পুরানো দিনে ফিরে যেতে হয়। এগুলো এখন ইতিহাস। আর সেই ইতিহাসের সাক্ষী আমি নিজেই। এনালগ ছবি বলতে মূলত ফিল্মকে বুঝায়। সেই ফিল্ম আবার দুই ধরনের ছিল। নেগেটিভ ফিল্ম এবং পজিটিভ ফিল্ম। এই গুলোর আবার বিভিন্ন ফরম্যাট ছিল। যেমন ৩৫ মিঃমিঃ। এটিই ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় ফিল্ম ফরম্যাট। এ ছাড়াও ১২০ মিডিয়াম এবং ৪ x ৫ ইঞ্চি বড় ধরনের ফিল্ম ফরম্যাট ব্যবহার করা হত। যাঁরা পেশাদার ফটোগ্রাফী করতেন তাঁরা পজিটিভ ফিল্ম ব্যবহার করতেন। পজিটিভ ফিল্ম আবার বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল। যেমন - রিভারসেল, স্লাইড, ট্রান্সপারেন্সি ইত্যাদি।
ফিল্ম নেগেটিভ হোক বা পজিটিভ হোক ছবি তোলার পর সেইগুলোকে ল্যাবে প্রসেস করতে হতো। রঙ্গিন নেগেটিভ ফিল্ম সি-৪১ কেমিক্যালে প্রসেস করা হতো। আর পজিটিভ ফিল্ম প্রসেস করা হতো ই-৬ কেমিক্যালে। স্থির ছবির জন্য আরেক ধরনের মাধ্যম ব্যবহার করা হতো বহু আগে। সেটার নাম ছিল গ্লাস প্লেট নেগেটিভ। বাংলাদেশের প্রবীণতম ফটোগ্রাফার জনাব গোলাম কাসেম ড্যাডি (১৮৯৪-১৯৯৮) এই মাধ্যমে কাজ করেছিলেন। আর তা ব্যবহার করা হয়েছিল ১৯১৮ সাল এবং তার কিছু পরে। দৃক এ চাকুরী করার সুবাদে সেই গুলো দেখার এবং সেই গুলো নিয়ে কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিলো। যেহেতু আমি দীর্ঘ সময় ফটো এজেন্সিতে কাজ করেছি তাই আমি এজেন্সির আলোকেই কথা গুলো বলবো।
ছবি প্রসেস করার পর পর-ই শুরু হয়ে যায় এর ব্যবস্থাপনার কাজ। এবার আশা করি।
- ১. ছবির সম্পাদনা - এই পর্যায়ে কোন ছবি গুলোকে চূড়ান্তভাবে রাখা হবে সেটা নিয়ে ভাবা হত। এই ক্ষেত্রে ছবির মান, কম্পোজিশন, শার্পনেস, বিষয়বস্তু, বাজার চাহিদা ইত্যাদি বিবেচনা করা হত।
- ২. মাউন্টিং – ছবির সম্পাদনার কাজ শেষ হলেই ফিল্ম রোল থেকে বাছাইকৃত ছবিগুলো কেটে মাউন্ট করা হত। মুলত ৩৫ মিঃমিঃ ফিল্ম নিয়েই বেশি কাজ করা হত। এর জন্য ব্যবহার করা হত ২ ইঞ্চি বাই ২ ইঞ্চি স্লাইড মাউন্ট।
- ৩. ক্যাটালগিং – ছবিগুলোকে সঠিকভাবে ইনডেক্স করে ক্যাটালগ করা হতো। বিষয়ভিত্তিক ছবিগুলোকে ভাগ করে নিয়ে একটা একসেশন নম্বর বসানো হতো। খুব বেশি জায়টা থাকত না বলে খুব ছোট আকারে ছবির ক্যাপশন লেখা হতো মাউন্টে। এ ক্ষেত্রে অ্যাডেসিভ পেপার অথবা পার্মানেন্ট মার্কার কলম ব্যবহার করা হত।
- ৪. আর্কাইভিং – মাউন্ট করা ছবিগুলো রাখা হতো আর্কাইভাল ফটো ফাইল স্লিভে। তারপর সেই স্লিভগুলো ফাইল ক্যাবিনেটের ভেতর বর্ণনাক্রমিকভাবে সাজিয়ে রাখা হতো। জলীয়বাষ্প ও আদ্রতা থেকে ছবিগুলো কে রক্ষা করার জন্য ডি-হিউমিডিফায়ার মেশিন ব্যবহার করা হতো আর্কাইভাল রুমে।
- ৫. কাস্টমার সার্ভিস – যাঁরা ছবি কিনতে চাইতেন তাঁদেরকে সশরীরে অফিসে এসে ছবি দেখতে হতো। তখনতো আর সফটওয়ার ব্যবহার করা হত না। তাই নিজের স্মরণশক্তি আর ক্যাটালগ এর ওপর ভর করেই ক্রেতাদের পছন্দমত ছবি ফাইল থেকে খুঁজে বের করতে হতো। ছবিগুলো স্লাইড টেবিলের ওপর রেখে আলো জ্বালিয়ে অথবা পোরটাবল প্রজেকটরে দেখানো হতো। আবার দেশের বাইরে থেকে কোন ছবির অর্ডার এলে মুল ছবিটা কুরিয়ারে করে পাঠিয়ে দিতে হত। কাস্টমাররা শুধু দেখার জন্য ছবি নিতে চাইলে একটা রিসার্চ ফি দিয়ে ২/৩ দিনের জন্য সেই গুলো নিতে পারতেন। চূড়ান্তভাবে ব্যবহারের জন্য ছবি নির্বাচন করা হলে ছবি স্ক্যান করার জন্য ইস্যু করা হতো। দেখার জন্য হোক অথবা স্ক্যান করার জন্যই হোক সেটার সঙ্গে থাকতো কঠিন শর্ত। যেমন কোন ছবি হারিয়ে ফেললে বা নষ্ট হয়ে হলে প্রতিটা ছবির জন্য ৩৫, ০০০ টাকা জরিমানার বিধান ছিল।
সমস্যা সমূহ:
এনালগ ছবি ব্যবস্থাপনায় নানা সমস্যা ছিল। ডিজিটাল ফটোগ্রাফি আসাতে সেই গুলো সমস্যা এখন ভালভাবে চোখে পরে। আমি এখন সেইগুলো নিয়ে আলাপ করবো।
- ১. খরচ – ফিল্ম কেনা থেকে শুরু করে এর প্রসেস এবং রক্ষানাবেক্ষণ খরচ ছিল অনেক বেশি। তাই মূলত পেশাদার ফটোগ্রাফারাই পজিটিভ ফিল্ম ব্যবহার করতেন।
- ২. জায়গা – এনালগ ছবি রাখার জন্য অনেক বেশি জায়গা লাগতো।
- ৩. আর্কাইভিং – ছবিগুলো আর্কাইভিং করতে হলে দক্ষ লোকবল এবং সেই সঙ্গে নানা যন্ত্রপাতি এবং কেমিক্যাল লাগতো।
- ৪. স্মতিশক্তির ওপর নির্ভরশীলতা – সফটওয়ার ছিল না বলে নিজেদের স্মতিশক্তির ওপর ভর করেই প্রয়োজনীয় ছবি খুঁজে বের করা হত। আবার সঠিক জায়গায় সেইগুলো কে রাখতে হতো।
- ৫. ঝুঁকি – প্রতিটা ছবিই ছিল স্বতন্ত্র এবং অরিজিনাল। সেই গুলোর কোন ব্যাকআপ থাকত না। তাই কোন ছবি হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে সেটা আর সেটা ফিরে পাওয়া যেত না। তাই ছিল চরম ঝুঁকি। এই ঝুঁকি যেমন ছিল ক্রেতাদের দিক থেকে, তেমনি ছিল এজেন্সির দিক থেকেও।
- ৬. সময় – এনলগ ছবি নিয়ে কাজ করতে অনেক বেশি সময় লাগতো।
এনলগ মাধ্যম অনেক ব্যয়বহুল হওয়া সত্ত্বেও এর ভাল দিকও ছিল। ফটোগ্রাফাররা ছবি তুলতে অনেক বেশি মনোযোগী ছিলেন। ক্রিয়েটিভিটি ছিল খুবই ভাল মানের। ব্যয়বহুল বলে বেশি ফ্রেমের জন্য ক্লিক করতেন না। তাই বাজে মানের ছবি কম উঠত। এতে করে ছবি এডিট করতে সময় কম লাগতো।
প্রিয় আব্দুল্লাহ আল ফারুক,
টেকটিউনসে অরিজিনাল ও ইউনিক টিউন করে আপনি টেকটিউনস থেকে ‘ট্রাসটেড টিউনার’ ব্যাজ পেতে পারেন। আপনি মৌলিক, অরিজিনাল ও ইউনিক টিউন ১০ টি প্রকাশ করে টেকটিউনস থেকে ‘ট্রাসটেড টিউজার ব্যাজ’ অর্জন করতে পারবেন।
ট্রাসটেড টিউনার হতে ও ট্রাসটেড টিউনারশীপ বজায় রাখতে আপনার পরবর্তি টিউন গুলো নিচের বৈশিষ্ঠ্য সম্পন্ন হতে হবে:
আপনার কোন একটি Single টিউন টেকটিউনস টিউন গাইডলাইন ভঙ্গ করে নেগেটিভ র্যাংক পেলে আপনার ট্রাসটেড টিউনারশীপ সাথে সাথে বাতিল হয়ে যাবে।
টেকটিউনসের ‘ট্রাসটেড টিউনার’ হলে আপনি টেকটিউনস থেকে যে সুবিধা গুলো পাবেন:
টেকটিউনস ‘ট্রাসটেড টিউনার’ দের টিউন ফলো করে টিউন করুন:
টেকটিউনস থেকে আর্ন করতে হলে আপনাকে ট্রাসটেড টিউনারদের মত মৌলিক, অরিজিনাল, কপিপেস্টমুক্ত, দারুন ইমেইজ ও ছবি সমৃদ্ধ, টেকটিউনসের সঠিক ও সুন্দর স্ট্যান্ডার্ড টিউন ফরমেটিং গাইডলাইন মোতাবেক ফরমেটিং করে, যে কোন ধরনের অ্যাফিলিয়েট, রেফারাল লিংক মুক্ত, ইউনিক টিউন করতে হবে। টেকটিউনসে কি ধরনের কোয়ালিটি টিউন কিভাবে করে নিজের ফলোয়ার বাড়াবেন ও আর্ন করবেন তা প্র্যাকটিক্যালি শিখতে টেকটিউনস এর ‘ট্রাস্টেড টিউনারদের’ সকল টিউন গুলো দেখুন ও শিখুন এবং তাঁদের মত করে টিউন করুন।
আপনি ট্রাসটেড টিউনারদের মত
ইউনিক ১০ টি টিউন প্রকাশ করলে টেকটিউনস থেকে আপনাকে ‘ট্রাসটেড টিউনার ব্যাজ’ দেওয়া হবে এবং আপনার একাউন্টে টেকটিউনস মনিটাইজেশন চালু করে দেওয়া হবে। টেকটিউনস মনিটাইজেশন চালু হলে আপনি স্ট্যান্ডার্ড টিউন (টিউন), ভিডিও টিউন (ভিউন), অডিও টিউন (ওউন), ফটো টিউন (ফিউন) তৈরি করে টেকটিউনস থেকে আর্ন করতে পারবেন এবং আপনার একাউন্ট প্রোফাইল থেকে প্রতি মাসের শেষ শনিবার টাকা উত্তলোন করতে পারবেন।
ট্রাসটেড টিউনার ব্যাজ’ এর জন্য টেকটিউনস ডেস্কে আবেদন করুন
আপনি পরবর্তী ১০ টি টিউন ‘টেকটিউনস ট্রাসটেড টিউনার’ এর মত করে টিউন প্রকাশ করে ‘ট্রাসটেড টিউনার ব্যাজ’ এর জন্য টেকটিউনস ডেস্কে আবেদন করুন। টেকটিউনস SiteOps Team আপনার টিউনগুলো রিভিউ করে আপনাকে ট্রাসটেড টিউনার ব্যাজ প্রদান করবে।
টেকটিউনস সৌশল নেটওয়ার্ক কীভাবে কাজ করে তা জানতে এই টিউনটি পড়ুন এবং টেকটিউনসে টিউন করতে কি কি বিষয় মেনে টিউন করতে হয়, কোন কোন বিষয় মেনে টিউন করলে আপনার টিউন র্যাংক করবে বেশি ফলোয়ার পাওয়া যাবে তা জানতে এই টিউনটি পড়ুন।
ধন্যবাদ।