রাজা তুতানখামেন সমাধি খুলতে গিয়ে মানুষ মারা গেল কেন? why people died from opening King Tut's tomb?
এই ছবিটিই প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের পূর্ববর্তী ফারাও তুতেনখামেনের অভিশপ্ত সমাধি খোলার মুহূর্ত.এবং এটি প্রাচীন মিশরে পাওয়া একমাত্র সমাধি যা তিন হাজার বছর ধরে অক্ষত ছিল.এটি স্বর্ণ এবং এবং বিভিন্ন শিল্পকর্ম দ্বারা পরিপূর্ণ ছিল.যাইহোক সমাধি খোলার সময় উপস্থিতিদের মধ্যে অন্তত ১৩ জন মারা যাওয়ার পরপরই ফারাওদের অভিশাপ সম্পর্কে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
তুতানখামুনের সমাধি গবেষকরা মমিটির চারপাশের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলি পরীক্ষা করে দেখেন যে, অন্যান্য সাধারণ মমিগুলো থেকে এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন. প্রাচীন মিশরীয়রা বিশ্বাস করত যে. একজন ফারাও তার মৃত্যুর পর দেবতাদের খুব কাছাকাছি থাকে.এবং তার লোকেদের পক্ষ হয়ে দেবতার সাথে কথা বলে.আর এ কারণেই মমিকরণ প্রক্রিয়া টি বিশেষ যত্ন সহকারে করা হয় এবং সমাধিগুলো অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে সজ্জিত করা হয়.
কিন্তু কেন তারা তুতেনখামেনের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম করেছে? কে ওসাইরিস কে হত্যা করেছিল এবং কেনই বা তার আঙ্গুলগুলো কাটা ছিল? কেন তুতানখামুনের মমি আজও ঐতিহাসিকদের বিভ্রান্ত করে?
=
কেন এই মমিটি সমাধি গবেষকদের বিভ্রান্ত করেছিল? প্রত্নতাত্ত্বিক হাওয়ার্ড কার্টার এবং তার সঙ্গী লর্ড জর্জ কার্নারভন যখন 1922 সালে মহিমান্বিত এই রাজার সমাধিতে প্রবেশ করেছিলেন তখন তারা অবাকই হয়েছিল.
একটি জাঁকজমকপূর্ণ এবং প্রশস্ত ঘরের পরিবর্তে, তারা দেখতে পেল একটি ছোট সঙ্কুচিত warehouse বা গুদামঘরে মমিটি সমাধিস্থ করা আছে. এই সমাধিটির অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে যে.তুতানখামুন কে সমাধিস্থ করা হয়েছিল তার রাজকীয় পূর্বপুরুষদের থেকে অনেক দূরে.
প্রাচীন মিশরীয়দের মতে পরলৌকিক জগতে শাসন করা থেকে বিরত রাখার জন্যই হয়তো ফারাওকে তারপরিবারের সাথে পুনরায় মিলিত হতে বাধা দেয়.
ধরা যাক পূর্বপুরুষদের সমাধির স্থান ফুরিয়ে গেছে কিন্তু ফারাওদের জন্য একটি কফিনও কেন ছিল না? সবগুলো ইঙ্গিত থেকে বোঝা যায় তুতানখামুন কে রাখা হয়েছিল তিনটি বিশেষ ধরনের second-hand সোনালী কফিনে, যেটা একটা আরেকটার উপর সজ্জিত করা হয়েছিল.
প্রাচীন মিসরীয়রা এসব মণিকরণ করত তাদের মৃত দেবতা osirisর গঠন অনুসারে.কফিনটির পেছনে শুয়ে রাখা হতো হাতগুলো বাঁকানো অবস্থায় এবং এক বিশেষ ধরনের crook এবং flail ধরে রাখত যেটা নিদর্শন করে ক্ষমতা এবং রাজতন্ত্রর.
কিন্তু মাঝের কফিনের স্টাইল একটু ভিন্ন ছিল এবং এর মুখটি অন্য দুটি কফিনের মুখের মতো দেখতে ছিল না এমনকি এটি দেখতে তুতানখামুনের ডেথ মাস্কের মুখের মতোও ছিল না।
ইজিপ্টোলজিস্টরা অনুমান করেছিলেন যে এই তিনটি কফিনের মধ্যে, মাঝের কফিনটি এক রহস্যময়ী নারী নেফারনেফেরুটেনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এই মহিলা একজন তান্ত্রিক শাসক ছিলেন যার নাম দেওয়ালে শিলালিপিতে লিপিবদ্ধ রয়েছে.
স্পষ্টতই তিনি আখেনাতেন এর স্ত্রী এবং তুতানখামুনের সময়ে বাস করতেন কিন্তু কম বয়সে মারা যান এবং কখনও নিজের কর্তৃত্ব জাহির করতে পারেননি.ফলে তার পথচলা ইতিহাসে হারিয়ে যায়. ভূতত্ত্ববিদ কফিনটির কিছু অংশ ভেঙে ফেলে, ফলে ভাস্কর্যটির সম্পূর্ণ রূপে প্রদর্শিত হয়নি.
পরবর্তীতে প্রত্নতত্ত্ববিদ এই ভাস্কর্যের নিচের অংশে osiris পায়ের আঙ্গুলে কিছু টুকরো খুঁজে পায়.এটা সত্যি যে তুতেনখামুন কে তাড়াহুড়া করে সমাহিত করা হয়েছিল.
প্রত্নতাত্ত্বিকরা এ ও খুঁজে পান যে এই সমাধি স্থান টিতে সর্বত্র নতুন করে পূর্ণ গঠন করা হয়েছে, যেটা ইঙ্গিত করে যে সমাধিটি অন্য কোন একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল.
সম্ভবত ফারাও রাজা হঠাৎই মারা গিয়েছিল এবং tar জন্য মমীকরণের কোন পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না.কিন্তু ফারাও মৃত্যুর কারণ টা কি ছিল? এতগুলো চিহ্ন রেখে গিয়েছেন যে কোন কারনে আসলে তার মৃত্যু হয়েছে এটা স্থির করা কঠিন.
তুতেনখামেন ছিলেন এক ভাই এক বোন, ধারণা করা হয় উত্তরাধিকারসূত্রে জন্মগতভাবে তার পা বাঁকানো ছিল, , পঙ্গুত্ব থাকার ফলে তার সারাজীবন লাঠির উপর ভর করে চলতে হতো.তার সমাধিতে 350 টি স্বর্ণ দিয়ে সূক্ষ্মভাবে আঁকানো একটি ওয়াকিং স্টিক পাওয়া যায়.
তার ছিল দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং মমি তে পাওয়া যায় তার ঠুনকো বা ভাঙ্গা হাড় যেটাতে ম্যালেরিয়ার লক্ষণ পাওয়া যায়, , .তার অসুস্থতা থাকা সত্ত্বেও যুবক এই রাজা আনন্দ উপভোগ করতে এবং রথে চড়তে পছন্দ করতেন.হয়তো এই কারণেই তাঁর মমিতে পাওয়া যায় তার ভাঙ্গা পা.
কিন্তু কেন তার দেহে হৃদপিণ্ড ছিলনা সেটা এখনও স্পষ্ট না, যদিও মিশরীয়রা কখনো এই অঙ্গটি অপসরণ করে নি.কিং তুতের মমিটি ছিল নিম্নমানের, কারণ এটিতে ছিল বিশাল আকারের ছিদ্র যা সাধারনত অন্য কোন মমিতে থাকেনা.পায়ের উরুর থেকে নাভি পর্যন্ত ছিল ছোট ছোট দাগ.
আমরা যদি এই সমস্ত তথ্য একত্রিত করি এবং অনুমান করার চেষ্টা করি ঠিক কীভাবে যুবক ফারাও মারা গিয়েছিল তাহলে হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে,
ভয়ংকরভাবে দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন এই বালক রাজা রথে চড়ে ভ্রমণ করছিলেন এবং বিস্ময়কর ভাবে পড়ে যায়, রথটি সোজা না গিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় এবং রাজার বুকের উপর দিয়ে চলে যায়।
এর ফলে তার শুধু হাড়িই ভেঙ্গে যায় না, তার হৃদপিণ্ড তেও সরাসরি আঘাত লাগে.তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তার মৃতদেহটি সৎকারের জন্য চেষ্টা করেছিল.কিন্তু মিশরীয় সূর্যের তাপে শরীরটি দ্রুত পচতে শুরু করে.
নিশ্চিত যে তুতেনখামেনের সমাধি প্রস্তুত ছিল না.যার ফলে তাকে একটি সংকুচিত ঘরে রাখা হয়.নিষ্প্রাণ দেহটি কোন রীতিনীতি অনুসরণ না করেই সমাধিস্থ করা হয়.সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান না করেই তার মমিতে এক বিশেষ ধরনের পোকা scarab beetle দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়.
তিন হাজার বছর পর প্রত্নতাত্ত্বিকরা তাকে খুঁজে পায়.কফিন থেকে মমি বের করার সময় মাথার খুলি টুকরো প্রথমে পাওয়া যায়.কয়েকটি অদ্ভুত ঘটনা গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আশ্চর্যজনক বিষয়টি হলো তুতেনখামেনের মমি আগুনে পরছিল.
ইজিপ্টোলজিস্ট ক্রিস নন্টেন এবং ফরেনসিক বিজ্ঞানীদের একটি দল চ্যানেল 4 টেলিভিশন ডকুমেন্টারিতে তরুণ ফারাও রাজার ভার্চুয়াল ময়নাতদন্ত প্রকাশ করেছে. tutankhamun the mystery of the burnt mummy.মাংসের টুকরোটির পরীক্ষা করে দেখা jay যে এটি আগুনে দগ্ধ হয়েছিল.
কিন্তু এটা অসম্ভব যে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে রাজার মৃতদেহ পুড়িয়েছে.প্রথমত, প্রাচীন মিশরীয়রা কোন মৃত শরীরে শারীরিক নির্যাতন করত না, , , এবং দ্বিতীয়ত কফিনটি সিল করা soho ভিতরে মমিটি দগ্ধ অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল.
এই পরিস্থিতিতে ফারাও রাজা তুতেনখামেনের অভিশাপের অস্তিত্ব অস্বীকার করা বেশ কঠিন.তাই নয় কি?
কিন্তু এটা সত্যি যে তুতেনখামেনের শরীর থেকে প্রচুর তেল এবং ধূপ পাওয়া গিয়েছিল.এতটাই besi ছিল যে সমাধি খোলার সময় কফিনের ভেতর থেকে মামিকে ছিড়ে বের করানো হয়.
সেই ডকুমেন্টারিতে বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, কিভাবে তুতেনখামুনের মমি সংরক্ষণের জন্য রাসায়নিক বিক্রিয়া করা হয়েছিল.
স্বতঃস্ফূর্তভাবে তার মমিকরণ প্রক্রিয়া অবহেলার সাথেই করা হয়েছিল যেটা সত্যিই একজন রাজার ক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যজনক.
কিন্তু তদন্তকারীরা যারা এই কফিনটি খুলেছিল কেনই বা তারা মারা যায়.?বিজ্ঞানী, প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং তাদের পরিবারের কেন রহস্যজনক মৃত্যু হয়?
বিভিন্ন মতবাদে বেরিয়ে আসে ফারাওদের অভিশাপ সম্পর্কে.
প্রত্নতাত্ত্বিক arthur mace,
radiologist sir archibald douglas reed,
এবং carnavan এর ভাই audrey herbert সমাধি খোলার মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই মারা যায়.
তারা মিশরীয় রাজপরিবারের সদস্য ছিলেন, , প্রিন্স আলী কামেল ফ্যামি বে যাকে তার স্ত্রী গুলি করে হত্যা করেছিল, , ,
lord carnavan এবং carter দুজন একসাথে সমাধিটি প্রথম দেখেছিল তারা ও মারা যায়.
কিন্তু এই অভিশাপ বিজ্ঞানীদের গড় বয়স বিবেচনা করেনি, , , , আর সেটা হল 57 বছর বয়সী george carnevan মারা যায় নিউমোনিয়া হয়ে.এবং সারাজীবন ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত ছিলেন.এবং হাওয়ার্ড কার্টার যিনি অভিশাপের শিকার প্রথম ব্যক্তি 64 বছর বয়সে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন।
সমাধি খোলার 16 বছর পর অবশেষে ইজিপ্টোলজিস্টরা উল্লেখ করেন যে, , মিশরীয় ধর্মীয় অনুশীলনে অভিশাপের মত কোন কিছু ছিল না. অন্যান্য সমাধি খোলার সাথে জড়িত বিপুল সংখ্যক লোক কখনই কোন অভিশপ্ত বিষয় অনুভব করেনি.
যাইহোক আপনি কোন বিষয়টি সাপোর্ট করবেন.হ্যাঁ এটা ঠিক যে. তুতেনখামেনের গল্পটা অন্যদের থেকে আলাদা.এখানে অভিশাপ এবং দুর্ঘটনায় দুইটাই প্রাধান্য পায়.তা ছাড়া বিজ্ঞানীরা এখনও তার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করতে পারেননি.
নতুন করে পাওয়া তথ্য আরো বিভ্রান্তিকর, তুতেনখামেন ছিলেন একজন কমেডিয়ান রাজা, যিনি ছিলেন mr. বিন এর চেয়েও বেশি হাস্যরস.কিন্তু akhuno তাকে নিয়ে কোনো কমেডি মুভি বানানো হয়নি যেখানে তাকে প্রধান চরিত্রে দেখা যাবে.সম্ভবত মুভিটির নাম নির্ধারণের জটিলতা থাকার কারণে.আপনার কি মনে হয়?
আমি জামিউর রহমান জিসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 22 টি টিউন ও 6 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।