অরণ্য এবং আমাদের পরিবেশ

টিউন বিভাগ অন্যান্য
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

"গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান" এই স্লোগানটি এখন সকলেরই জানা৷ প্রাকৃতিক পরিবেশের যথাযথ ভারসাম্য এবং বিশুদ্ধ অক্সিজেন সরবারাহের জন্য গাছের কোন বিকল্প নেই। বর্তমান পৃথিবীর অন্যতম এক ভীতির বিষয় 'গ্রিনহাউস এফেক্ট' প্রতিরোধ করার জন্য বেশি বেশি বৃক্ষরোপন এবং অরণ্য রক্ষার কোন বিকল্প নেই।

পৃথিবীতে যতবেশি বনাঞ্চল থাকবে পরিবেশের ভারসাম্যও ততবেশি বজায় থাকবে। কিন্তু সঙ্কার বিষয় হচ্ছে, পৃথিবীর ক্রমান্বীত উন্নয়নের ধারায় হারিয়ে যাচ্ছে অসংখ্য বনাঞ্চল। নগরায়নের ফলে গাছপালা কেটে শহর-বন্দর গড়ে উঠে চলছে নিত্যদিন৷ ফলে বন এবং গাছপালাও অত্যাধিক হারে কমে যাচ্ছে৷ বন এবং গাছপালা কমে যাওয়ার ফলে ওজোনস্তরে গ্রিনহাউসের মাত্রাও অত্যাধিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেশি বেশি বৃক্ষরোপন করার মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা না গেলে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ চরম হুমকির মুখে পতিত হবে৷ এজন্য প্রয়োজন সচেতন প্রচেস্টার মাধ্যমে গাছ লাগিয়ে প্রকৃতির ক্ষতি কমানোর কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই বন প্রয়োজন৷ বন ধ্বংস করে ফেলায় প্রকৃতির ভারসাম্য এমনভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে যে প্রাণের অস্তিত্ব এখন বিপন্ন হয়ে পড়ছে। দিনদিন অনেক বন্যপ্রাণী আশঙ্কাজনকভাবে বিলুপ্তির দিকে এগুচ্ছে।

গাছের সবচেয়ে বড় উপকার হলো, গাছ বাতাসে অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে। পৃথিবীতে মানুষসহ যেকোনো প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য এই অক্সিজেন অবশ্যই দরকার৷ বস্তুত অক্সিজেন ব্যতিত মানুষ কিংবা কোনো প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে না৷ এখন আলোচনার বিষয় হচ্ছে, গাছ কিভাবে বাতাসে অক্সিজেন ছড়ায়? গাছের সবুজ পাতায় থাকে ক্লোরোফিল মাটি থেকে আহরিত পানি আর সূর্যের আলোর সহায়তায় এই ক্লোরোফিল সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় গাছের জন্য খাদ্য তৈরি করে৷ এই প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন মুক্ত হয়, যা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে৷ কল-কারখানা, ইট-ভাটা ও গাড়ির ধোঁয়া এবং প্রাণীর স্বাস-প্রশ্বাস বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছড়িয়ে দেয় এবং বাতাস দূষিত করে তুলে। সবুজ গাছ সেই বিষাক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে নেই এবং আবার অক্সিজেন ছড়িয়ে দিয়ে বাতাসকে পরিশোধন করে তুলে৷ ফলে মানুষ অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে। তাই গাছ কমে গেলে অক্সিজেনের অভাবে হয়তো মানুষের জীবনও বিপন্ন হতে পারে৷ এছাড়াও গাছ আমাদের আরো অনেক উপকার করে থাকে। যেমন— বন থাকলে বৃষ্টিপাত আশানুরূপ হয়, ঘুর্ণিঝড়ের প্রকোপ কমে, বন্যায় মাটিক্ষয় কমে প্রভৃতি। এখানে একটি বিষয় মনে রাখা দরকার যে গাছও কিন্তু শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়ায় বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছড়ায়। রাতে সূর্যের আলো থাকে না বলে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকে। তখন গাছের নিচে কার্বন-ডাই-অক্সাইড জমতে থাকে। সে জন্যই রাতে বড় গাছের নিচে ঘুমাতে নেই। রাতে বড় গাছের নিচে ঘুমালে মানুষ অচেতন হয়ে পড়তে পারে৷

 

দূর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে আমরা প্রতিনয়তই ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় বিভিন্ন উপায়ে বনাঞ্চল এবং গাছগাছালির ক্ষতিসাধন করে যাচ্ছি। পরিবেশের ভারসাম্য, নির্মল বাতাস এবং সর্বোপরি একটি সুন্দর ও সুস্থ প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য বনাঞ্চল সংরক্ষণে আমাদের ব্যক্তিগত এবং সামাজিকভাবে অধিক সচেতনতা প্রয়োজন৷

বেশি বেশি বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় আমরা ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারি। অতঃপর সেই স্লোগান দিয়েই ইতি টানছি—"গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান। " 

Level 1

আমি নূরুদ্দীন শহীদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 13 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস