চলুন জেনে নেই পুইশাক এবং হলুদের বিষ্ময়কর কিছু তথ্য

পুঁই শাক

Scientific taxonomy – বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস

বৈজ্ঞানিক নামঃ Basella alba Linn.পরিবারঃ Basellaceae.ইংরেজি নামঃ Indian Spinach.

আরও জানতে ক্লিক করুন: Great 11 benefits of mango tree – আম গাছের উপকারিতা

Identity of Indian Spinach – পুঁই শাকের পরিচিতি

Indian Spinach/পুঁইশাক পুঁই লতানো উদ্ভিদ। মাচার উপর দিয়ে বেয়ে বেয়ে ৮-১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পাবে। পুঁই লতা সবুজ এবং দেখেতে তাজা। পাতা সবুজ ও পুরু। কচি লতাসহ পাতা শাক হিসেবে সুখাদ্য। লালচে লতার অন্য এক প্রকার পুঁই আছে যার বৈজ্ঞানিক নাম B.rubra. আকারে, স্বাদে ও গুণেও এটি সবুজ পুঁই থেকে আলাদা। বর্ষর শেষে পুঁইয়ের ফুল লাল হয়। কাঁচা সবুজ ফল অনেকে সবজি হিসেবে খেয়ে থাকেন।

আরও জানতে ক্লিক করুন: Great 7 Benefits of peepal tree – অশ্বথ গাছের উপকারিতা

Extension of Indian Spinach – পুঁইশাকের বিস্তৃতি

পুঁইশাক আমাদের দেশে সর্বত্র জন্মায়। বাংলাদেশের আবহাওয়া পুঁইশাকের জন্য খুবই উপযোগী।

Great 9 Amazing Benefits of Indian Spinach – পুঁই শাকের 9 টি বিস্ময়কর উপকারিতা

পুঁইশাক শরীরে ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’, প্রোটিন, ক্যলসিয়াম ও আয়রনের অভাব পূরণ করে। শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগলে পুইশাক দিয়ে খিচুড়ি রেঁধে নিয়মিত খাওয়ালে অপুষ্টি কেটে যায়া। শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিলে পুঁইশাক খুবই কার্যকর একটি পথ্য হতে পাবে।

আরও জানতে ক্লিক করুন: আগরের উপকারিতা – Great 6 Benefits of Agarwood

১। ব্রণ ও টিউমার সারাতে

বঙ্গসেনের প্রাচীন গ্রন্থে উল্লেখ আছে ব্রণ ও টিউমারে পুঁইপাতার রস মেখে ঐ পাতা দিয়ে বেঁধে রাখলে নিরাময় হয়। কবিরাজ বিজয়কালী ভট্টাচার্যের মতে রক্তবর্ণ পুঁই হলে এক্ষেত্রে ভালো ফল পাওয়া যায়। আবার টিউমার ছোট থাকা অবস্থায় লাগালে তাড়াতাড়ি মিলিয়ে যায়।

২। ফোড়ার ঘা শুকাতে

পুঁইপাতা ফোড়া পাকানো ও ফাটানোর পক্ষে সহায়ক। এর পাতার একটু গাওয়া ঘি মাখিয়ে গরম করে ফোড়ায় জড়িয়ে দিলে ফোড়া পাকে, আবার পাকা ফোড়ার ঘা শুকাতেও একই পদ্ধতি। (Econ Bot, 1970)

৩। বাতের চুলকানি দূর করতে

urticaria বা আমবাত বের হলে চুলকানি নিবারণের জন্য পুঁইশাকের রস গায়ে মাখা হতো। (Kirtikar, 1935)

৪। হুপিং কাশির প্রকোপ কমাতে

পুঁইপাতার রসের সাথে ছাগলের দুধ মিশিয়ে ৫/৭ দিন খেলে হুপিং কাশির প্রকোপ কমে যায়।

৫। অর্শ রোগের সমস্যায়

চরক সংহিতার মতে অর্শ রোগীর অতিরিক্ত স্রাব দেখা দিলে এই শাক, কুল ও ঘোল একসঙ্গে খেতে হয়।

৬। পচা ঘা সারাতে

প্রাচীন কবিরাজবৃন্দ পুঁইশাকের আশ্চার্য শক্তি প্রত্যক্ষ করেছেন পচা ঘা সরাতে। আধা কেজি পুঁই পাতার রসের সথে ২৫০ মি.লি. সরিষার তেল মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে পনি শুকিয়ে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে এ তেল দিয়ে খোসপাঁচড়া বা পচা ঘা সারাতেন তাঁরা। এ তেল তৈরি করে ঘারে রেখ দিলে প্রয়োনে পরে ব্যবহার করা যায়।

আরও জানতে ক্লিক করুন: Great 7 Benefits of Yellow Ashok – আশোক গাছের উপকারিতা

৭। গানোরিয়া ও লিঙ্গ প্রদাহ দূর করতে

পুঁইশাক গানোরিয়া ও লিঙ্গ প্রদাহে খুব উপকারী (Watt, 1972)। এর রস নিয়মিত খেলে শরীরে মূত্রতন্ত্র শক্তিশালী হয়। কোনো কারণে প্রস্রাব নিয়মিত না হলে পুঁইশাক খেলে অনেক সময় সমস্যা কেটে যায়।

৮। খোসপাঁচড়া দূর করতে

পুঁইশাকের ডাঁটা ‍টুকরো টুকরো করে কেটে শুকিয়ে অল্প আগুনে সেগুলোকে সেকে নিতে হবে। এ শুকনো ডাঁটা নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে খোসাপাঁচড়ায় মাখলে তা দ্রুত সেরে যা।

৯। শিশুদের সর্দি দূর করতে

বঙ্গসেন তার গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, পুঁইপাতার রস একটু গরম করে শিশুদের সর্দিতে ব্যবহার করতে হবে।

 

হলুদ

Scientific taxonomy of Turmeric – হলুদের বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস

বৈজ্ঞানিক নামঃ Curcuma domestica Vahl.পরিবারঃ Zingiberaceaeইংরেজি নামঃ Turmaric

Identity of Turmeric – হলুদের পরিচিতি

Turmeric/হলুদ একটি বর্ষজীবী কন্দাল ও গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। হলুদের কাণ্ড মাটির নিচে হলদ হিসেবে বাড়ে, উপরে থাকে শুধু এর পাতা। লম্বা পত্রবৃন্তসহ পাতা মাটি হতে এক থেকে ক্ষেত্রবিশেষ দেড় মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে দেখা যায়। একই পরিবারভুক্ত হলেও আদার চেয়ে হলুদের পাত তুলনামূলকভাবে বড় হয়। মাটির নিচে কন্দ /হলুদ থেকে সাদা সাদা শিকড় বের হয়। সৌন্দর্য বর্ণনায় আগুন রঙের কাঁচা হলুদের উপমা কাব্য-সাহিত্যে বহু পূর্বে থেকেই প্রচলিত। এর একপ্রকার বিশেষ সুগন্ধও বর্তমান। নিত্য আহর্য ব্যঞ্জনের রং আকর্ষনীয় করাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনেও হলুদের সেবনের ব্যবস্থা আছে। বর্ষাকালে লম্বা পুষ্পদণ্ডের চারদিকে ঘিরে একাধিক হালকা সবুজ বণের সুগন্ধি ফুল পোটে। পাহাড়ি উপজাতীয় আধিবাসীর এ ফুল সবজি হিসেবে ব্যবহার করে।

আরও জানতে ক্লিক করুন: Great 7 Amazing Benefits of Long pepper-পিপুলের উপকারিতা

আবহমান বাংলায় Turmeric/হলদ শুভ অনুষ্ঠানের সূচক। বিবাহ, জন্মদিন এবং নতুন বউ বরণ অনুষ্ঠানে হলুদ ব্যবহৃত হয়। আর গায়ের রং জ্জ্বল করতে হলুদের ব্যবহার সুপ্রাচীন। কাঁচা হলুদ ও মসুরের ডাল বেটে মুখে প্রলেপ দিলে মুখের কোমনীয়তা বজায় থাকে। এ টিপস সকল সৌন্দর্য পিয়াসীরই যানা।

Extension of Turmeric – হলুদের বিস্তৃতি

হলুদের বিস্তৃতি ও বংশবিস্তার আদার অনুরুপ- যা এ সাইটের আদা টিউনে আলোচনা করা হয়েছে।

 

Great 10 Amazing Benefits of Turmeric – হলুদের উপকারিতা

হলুদ কাজ করে রক্তবহ স্রোতে। রক্তের বিভিন্ন রোগে হলুদের রস ব্যপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

আরও জানতে ক্লিক করুন: Great 9 Amazing Benefits of Indian Spinach-পুঁই শাকের উপকারিতা

১। কৃমির উপদ্রব রেহাই পেতে

হলুদ কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে (Ghani, 2002) এবং তাই হলুদের এক নাম কৃমিঘ্ন বা কৃমিনাশকারী। কাঁচা হলুদের ১৫/২০ ফোঁটা রস সামান্য লবণ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে কৃমির উপদ্রব থেকে রেহাই পাওয়া যায়। অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে মাত্রাে কমাতে হবে।

২। তোতলামি সমস্যা দূর করতে

অনেক শিশুর কথা বলতে আটকে যায়, তোতলায় (Stammering)। সে ক্ষেত্রে ২/৩ গ্রাম হলুদের গুঁড়া ১ চা চামচ ঘিয়ে একটু ভেজে অল্প অল্প করে খেতে হবে। এতে তোতলামি কমে যায়।

৩। প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূর করতে

প্রস্রাবের জ্বালাপোড়ার সাথে পুঁজের মতো লাল ঝরলে (প্রমেহ) এক চা চামচ কাঁচা হলুদের রসের সাথে একটু মধু বা চিনি মিশিয়ে খেলে উপশম হয়।

আরও জানতে ক্লিক করুন: Great 7 Benefits of Yellow Ashok – আশোক গাছের উপকারিতা

৪। এলার্জির সমস্যা দূর করতে

কোনো কোনো খাদ্যে অনেকের এলার্জি থাকে। যেমন ইলিশ মাছ, বেগুন, চিংড়ি, গরুর গোশত ইত্যাদি খেলে শরীরে চাকা চাকা হয়ে ফুলে ওঠে, চুলকায় ও লাল হয়ে যায়। এ অবস্থায় এক ভাগ নিম পাতার রস/গুঁড়া, ২ ভাগ হলুদের গুঁড়া ও ৩ ভাগ আমলকী গুঁড়া একত্রে মিশিয়ে প্রতিদিন সকাল এক গ্রাম করে ছুদিন খেলে উপকার হবে। কিন্তুু কোনো পার্শপ্রতিক্রিয়া নেই।

৫। ফোড়া তাড়া তাড়ি পাকাতে

পোড়া হলুদের ছাই পানিতে গুলে সেটা ফোড়ায় লাগালে তা তাড়াতাড়ি পাকে এবং ফেটে যায়। আবার গুঁড়া লাগালে তা দ্রুত শুকিয়ে যায়।

৬। চুলকানি দূর করতে

শরীরে চুলকানি হলে কাঁচা হলদ বাটা ও নিম পাতা বাটার সাথ একটু চিনি মিশিয়ে তা দিয়ে শরবত খেলে কিছুটা উপশম হয়।

৭। চোখ ওঠা সারাতে

গ্রামে-গঞ্জে চোখ ওঠা শুরু হলে পুরো গ্রামে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে, কারণ এটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে। কিছু পরিমাণ হলুদ ছেঁচে তার সাথে অল্প পানি মিশিয়ে ঐ পানি দিয়ে চোখ ধুতে হবে এবং ঐ পানিতে পরিষ্কার কাপড়ের টুকরা ভিজিয়ে তা দিয়ে চোখ মুছতে হবে। এতে চোখ তাড়াতাড়ি সেরে যায় এবং চোখের লালচে ভাবও কেটে যায়।

৮। শরীরের আঘাত দূর করতে

শরীরের কোনো অঙ্গ মচকে গেলে বা আঘাত লাগলে চুন, হলদ ও লবন মিশিয়ে গরম করে লাগালে ব্যথা ও ফোলা দ্রুত কমে যায়।

আরও জানতে ক্লিক করুন: Great 7 Benefits of peepal tree – অশ্বথ গাছের উপকারিতা

৯। জোঁকে ধরা এবং রক্ত পড়া বন্ধ করতে

হলুদ রক্ত ক্লোটিং -এ সাহায্য করে(Chevallier, 1996), তাই জোঁকে ধরলে জোঁকের মুখে হলুদ গুঁড়া দিলে ছেড়ে দেয় এবং রক্ত পড়াও বন্ধ হয়ে যায়।

১০। হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে

হলুদে essential oil রয়েছে, যা বায়ুনাশক, অম্ল নিবারক ও হজম শক্তি বৃদ্ধিকারক হিসেবে কাজ করে। (Chevallier, 1996)

আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে

Level 2

আমি ইবন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 12 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 26 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

ধন্যবাদ এই টিউনের জন্য