ইথিক্যাল হ্যাকিং কি এবং কেন হবেন ইথিক্যাল হ্যাকার

টিউন বিভাগ অন্যান্য
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

আমরা সবাই কমবেশি হ্যাকিং শব্দটির সাথে পরিচিত। আবার অনেকেই হ্যাকিং বলতে অপরাধমূলক কাজকে বুঝে থাকে। সাধারণত হ্যাকার সম্প্রদায় তাদেরকে তিন ভাগে ভাগ করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার, গ্রে হ্যাট হ্যাকার এবং অন্যটি হোয়াইট হ্যাক হ্যাকার। ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকাররা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সিস্টেমে  বেআইনিভাবে প্রবেশ করে এবং নানা ক্ষতি করে থাকে। অন্যদিকে হোয়াইট হ্যাট হ্যাকাররা সিস্টেম ককর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে সিস্টেমের ত্রুটি বা সমস্যাগুলো খুঁজে বের করে এবং এর বদলে তারা মোটা অংকের টাকা পেয়ে থাকে। মূলত হোয়াইট হ্যাকারদেরকেই ইথিক্যাল হ্যাকার বলা হয়ে থাকে। ইথিক্যাল হ্যাকিং এর বিস্তারিত এবং কিভাবে আপনি ইথিক্যাল হ্যাকিং এ ক্যারিয়ার গড়বেন এ নিয়েই আজ আলোচনা করব।

  • ইথিক্যাল হ্যাকিং কি?

ইথিক্যাল হ্যাকিং বলতে সাধারণত  বৈধ হ্যাকিং বা নৈতিক হ্যাকিংকে বোঝানো হয়ে থাকে। অনেক হ্যাকার কোনো সাইট এর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সেখানে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে। কিন্তু আপনি যদি একজন ইথিক্যাল হ্যাকার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি কখনোই এমনটা করতে পারবেন না। ইথিক্যাল হ্যাকাররা সিস্টেম কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে সিস্টেমটিতে প্রবেশ করে এবং এর এক্সেস নেয়, কিন্তু সে সাইটটির কোনো ক্ষতি করতে পারবে না কিংবা সাইট এর কোনো তথ্য অন্য কোথাও প্রকাশ করতে পারবে না। পরবর্তীতে সে ঐ সাইট এর দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে সাইট কর্তৃপক্ষকে জানায় এবং সমস্যা প্রতিকার এর সমাধান দিয়ে থাকে।

ইথিক্যাল হ্যাকাররা মূলত চারটি মূল প্রোটোকল ধারণা অনুসরণ করেন। সেগুলো হলো:

আইন মেনে চলা: ইথিক্যাল হ্যাকারদের  অ্যাক্সেস এবং সম্পাদন করার আগে যথাযথ আইনি অনুমোদন নিতে হয়।
সুযোগ নির্ধারণ : ইথিক্যাল হ্যাকারদের মূল্যায়নের সুযোগটি নির্ধারণ করতে হয় যেন কাজ আইনি এবং প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত সীমানার মধ্যে থাকে।
দুর্বলতার তথ্য প্রদান:মূল্যায়নের সময় পাওয়া সকল দুর্বলতার তথ্য সিস্টেম কর্তৃপক্ষকে জানানো এবং এই দুর্বলতাগুলো সমাধান করার জন্য ইথিক্যাল হ্যাকাররা নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ডেটা সংবেদনশীলতা : ডেটা সংবেদনশীলতার উপর নির্ভর করে  ইথিক্যাল হ্যাকারদেরকে  সিস্টেম কর্তৃপক্ষের দ্বারা প্রয়োজনীয় শর্তাবলী ছাড়াও প্রকাশ না-করার চুক্তিতে সম্মত হতে হয়।

  • কেন হবেন ইথিক্যাল হ্যাকার?

বর্তমানে ইথিক্যাল হ্যাকারদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ইথ্যিকাল হ্যাকারদের চাহিদা যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে সাইবার ভিত্তিক বিভিন্ন অপরাধ এর সংখ্যা। তাই অনেক দেশেই এখন ইথিক্যাল হ্যাকারদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও এখন  ইথিক্যাল হ্যাকারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের অনেক সাইট এখনও অরক্ষিত, সেখানে প্রায়শই সাইবার হামলার কথা শোনা যায়। এ পরিস্থিতিতে এখন ইথিক্যাল হ্যাকারদের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। তাছাড়াও এখন বেসরকারী বিভিন্ন কোম্পানি রয়েছে যারা তাদের সাইট এর সুরক্ষার জন্য ইথিক্যাল হ্যাকারদের নিয়োগ দিচ্ছে। অাপনি যদি একজন ইথিক্যাল হ্যাকার হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে কোনো প্রকার আইনি জটিলতায় পড়তে হবে না। একজন ইথ্যিকাল হ্যাকারের বেতন কত?সাধারণত বাংলাদেশেএকজন ইথিক্যাল হ্যাকারের মাসিক বেতন কয়েক লক্ষ টাকা। প্রথম প্রথম আপনি ১ লক্ষ  থেকে শুরু করতে পারেন। পরবর্তীতে সেটা বৃদ্ধি পেয়ে ১০ লক্ষ বা তার অধিকও হতে পারে। অাপনি ইচ্ছা করলে ঘরে বসেও  ফাইবার, ফ্রিল্যান্সার  থেকে বিভিন্ন ক্লায়েন্ট অর্ডার নিয়ে তাদের সাইট এর ত্রুটিগুলো খুঁজে বের করে ইথিক্যাল হ্যাকিং এর কাজ করতে পারেন। এগুলো বিদেশি সাইট হওয়ায় অাপনি এখান থেকে অারও অধিক টাকা টাকা লাভ করতে পারেন।

  • কিভাবে হবেন একজন ইথিক্যাল হ্যাকার

হ্যাকিং হলো একটি শিল্প। অাপনি এই  শিল্পকে যত চর্চা করবেন তত তাড়াতাড়ি শিখতে পারবেন। আপনি চাইলেই ১ দিন বা ২ দিনে একজন হ্যাকার হতে পারবেন না। এর জন্য আপনাকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। একজন প্রকৃত হ্যাকার হতে হলে আপনার কমপক্ষে বছরখানেক সময় লাগতে পারে। হ্যাকিং এর অন্যতম মন্ত্র হলো ধৈর্য। এর জন্য আপনাকে প্রচুর ধৈর্য ধরতে হবে। অনেকেরই ধারণা হ্যাকিং এর জন্য অনেক দামি এবং মূল্যবান যন্ত্র লাগে। আপনি চাইলে আপনার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল দিয়েই হ্যাকিং এর ১০% কাজ  করে ফেলতে পারেন। হ্যাকিং কিভাবে শিখবেন?হ্যাকিং শেখার জন্য গুগল হতে পারে আপনার অন্যতম শিক্ষক। আপনি গুগলে  ইথিক্যাল হ্যাকিং এর কোর্স সম্পর্কে সার্চ করলে হাজার হাজার কোর্স পেয়ে যাবেন। আপনি Udemy এর কমপ্লিট ইথিক্যাল হ্যাকিং কোর্সগুলো করতে পারেন। আপনি সাইবার ভিত্তিক ট্রেনিং  ইনস্টিউট এ গিয়েও এই কোর্সগুলো করতে পারেন। হ্যাকার হতে গেলে আপনাকে বেশ কিছু দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আপনাকে ইউনিক্স সম্পর্কে জানতে হবে। অপারেটিং সিস্টেম, লিনাক্স, উইন্ডোজ ইত্যাদি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে যেমন-জাভা, পাইথন, এইচটিএমএল ইত্যাদি। এছাড়াও আপনাকে ইংরেজি সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। সর্বোপরি একজন প্রকৃত  হ্যাকার এর মতো আপনাকে চিন্তা করতে হবে। অলসতা, একঘেয়েমি কখনোই একজন  হ্যাকারের মনকে প্রতিফলিত করতে পারে না। এমন অনেক হ্যাকারও আছে যারা টানা ২-৩ দিন নিজেদের কম্পিউটার এর সামনে বসে ছিলেন। একজন হ্যাকার এর মূল লক্ষ থাকে আগের পুরনো রেকর্ড ভাঙা। একজন হ্যাকার যখন কোনো লক্ষ স্থির করে, তখন সেই লক্ষ পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সে থামে না।

আপনি যদি সত্যিই ইথিক্যাল হ্যাকিং শিখতে চান তাহলে আমি আপনাকে অনলাইন ফ্রি কোর্স এবং ট্রেইনিং ইনস্টিউট এর কোর্স উভয়গুলোই করার জন্য সাজেস্ট করব। কারণ  আপনি যদি একজন ভালো হ্যাকার হতে চান তাহলে অনলাইনের নানা ফ্রি কোর্সগুলো আপনার জন্য এক অন্যতম উপায়। আর ট্রেইনিং ইনস্টিউট এর কোর্সগুলো করার পর অাপনাকে ইথিক্যাল হ্যাকিং এর একটি সার্টিফিকেট দিবে, আর এই সার্টিফিকেট সমাজের বুকে আপনাকে একজন ইথিক্যাল হ্যাকার হিসেবে সম্মান এনে দিবে।

 

Level 0

আমি ফাহিদ ইসলাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস