ওয়ালটনের বেভেলিন স্মার্ট এসিঃ অন্যসব ব্র্যান্ডের টেক্কায় কিরকম?

দেশি বিদেশি বহু কোম্পানির ভীরে ন্যায্য দামের মধ্যে যুগোপযোগী এবং পূর্ণ কার্যকর একটি এসি কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া জেনো সত্যি একটি কষ্টকর ব্যাপার। আমাদের দেশের বিবেচনায় সেই এসিটি কতোটা ইলেক্ট্রিসিটি এফিসিয়েন্ট, পরিবেশের জন্য এসিটি এসিটি কতোটা উপযোগী, দামের দিক দিয়ে এসিটি কতোটা সাশ্রয়ী, সবকিছুই ভাবার বিষয়।

এই আর্টিকেলে আজকে আমরা দেশীয় ইলেক্ট্রনিকস প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের বেভেলিন সিরিজের সাম্প্রতিক একটি দেড় টনের এসির সাথে, বাজারে থাকা অন্যকিছু একই দেড়টন ক্যাপাসিটির তুলনা করব।

আমরা আজকের আর্টিকেলে ওয়ার্লপুল, ডাইকিন, প্যানাসনিক, স্যামসাং এবং জেনারেল এর ১.৫ দেড় টনের কিছু এসির সাথে ওয়ালটনের নতুন বেভেলিন সিরিজের দেড় টন এসির তুলনা করব। যেখানে আমরা এসিরগুলোর কাজ হিসেবে দামের সাশ্রয়, এসির সুযোগ-সুবিধা, কতোটা পরিবেশ বান্ধব এসব বিষয় বিবেচনায় রাখব। সর্বোপরি কোন এসিটিতে টাকা খরচ করলে আমাদের অর্থ অতিরিক্ত খরচ হবেনা, তা অনুধাবন করব।

নাম দাম মডেল 
Whirlpool71, 517 SAI18K30SC0
Daikin97, 200JTKJ18TV16UD
Panasonic65, 100CS-VC18VKY-81+S
Samsung91, 900AR18MVFHGWKZ
General80, 000AOGA18FUTBR
Walton 63, 000WSI-BEVELYN-18C

আমরা যদি উপরের এসিগুলোর দামের দিকে তাকাই, তবে বেভেলিনের সাথে বাকিগুলোর তফাত খুব সহজেই আলাদা করতে পারবো। প্যানাসনিক দেড় টন এসির দাম বেভেলিনের কাছাকাছি হলেও, প্যানাসনিক এসিটি পিছিয়েই থাকবে, কেননা এটি একটি নন- ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি। তাছাড়াও জেনারেল এসিটিও নন-ইনভার্টার এসি।

নন-ইনভার্টার এসি ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে সার্কিট অন-অফ হওয়ার মাধ্যমে। এখানে এসি পূর্ণ শক্তিতে চালু হওয়ার পর ঘরের তাপমাত্রা আরামদায়ক অবস্থায় এলে এসির কমপ্রেসর বন্ধ হয়ে যায়। আবার ঘরের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে গেলে, তখন চালু হয়।

এভাবে বারবার এসি চালু ও বন্ধ হওয়ার কারণে, এসি বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, যার ফলে বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়। তার ঠিক বিপরীতে ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি প্রথমে পূর্ণ শক্তিতে চালু হয়। পরে ঘরের পরিবেশের আরামদায়ক তাপমাত্রা ঠিক রেখে এসিটির কম্প্রেসর নিয়ন্ত্রণ করে শক্তি খরচ কমিয়ে নিয়ে আশাকরি ওয়ালটনের তুলনায় সেগুলো অনেক বেশি।

আবার সব এসিই আমাদের দেশের জন্য কার্যকরী হবে না। যেমন ওয়ার্লপুলের এসিটি একটি কনভার্টেবল এসি। এতে ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত টেম্পারেচার মোড রয়েছে। আমাদের দেশ বরফের দেশ হলে তখন এই এসির কনভার্টেবল সুবিধাটি কাজে আসত।

যেহেতু গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর মত বৈশ্বিক সমস্যার জন্য অন্যতম দায়ী এসির মত ইলেকট্রনিক্স এপ্লায়েন্স, তাই এসিতে সঠিক এবং পরিবেশবান্ধব রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে কিনা তাও বিবেচনার রাখা গুরুত্বপূর্ণ। রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস এর আরেকটি নিয়ামক মাত্রা হল GWP, তথা গ্লোবাল ওয়ার্মিং পটেনশিয়াল মান। GWP মান যত কম হবে এসিটি বাতাসে তত কম তাপ উৎপন্ন তথা কার্বন নিঃসরণ করবে।

আগে সিএফসি গ্যাস ব্যবহার করা হত, তবে পরিবেশ নিয়ে ভাবে এমন সকল উৎপাদনকারী কোম্পানি সিএফসি থেকে বের হয়ে এইচএফসি রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস ব্যবহার করতে শুরু করেছে। আজকের তালিকার দুটি এসি তথা জেনারেল এবং ক্যারিয়ার এর এসিতে ব্যবহার করা হয়েছে R-410A রেফ্রিজারেন্ট, এটিও এইচএফসি আর এটির GWP মান ২০৯০। অন্যদিকে ওয়ালটনের রিভারাইন মডেলএর এসিটিতে ব্যবহার করা হয়েছে R-32 রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস, এটির GWP মান ৬৭৫।

প্যানাসনিক, স্যামসাং এবং জেনারেল এসিতে ব্যবহার করে R-410A রেফ্রিজারেন্ট। ওয়ার্লপুল, ডাইকিন এবং ওয়ালটন ব্যবহার করে R-32 রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস, সুতরাং পরিবেশবান্ধব কতোটা এটা চিন্তা করলে এই তিনটি ব্র্যান্ড এগিয়ে। আর যদি বলা হয় অর্থ সাশ্রয়, তবে সেটা আমাদের দেশীয় ওয়ালটন।

এসির ক্ষেত্রে সার্ভিস অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরী। সেক্ষেত্রে যেকোনো রকম সার্ভিসের কাজে ওয়ালটনের আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস পয়েন্টগুলো, আপনাকে অন্যসবের তুলনায় যথেষ্ট ভালো সেবা দিবে। তাছাড়াও স্যামসাং আর ওয়ার্লপুলের মতন ওয়ালটন তাদের এসির কম্প্রেসরে ১০ বছরের ওয়ারেন্টি প্রদান করবে।

এই আর্টিকেলের অন্যতম উদ্দেশ্য আপনাকে ন্যায্য দামে একটি ভালো এসি কেনার ক্ষেত্রে একটি সিন্ধান্ত দেয়া। আমরা যদি ন্যায্য এবং সাশ্রয় দামে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি এসি পাই, যা সুবিধার দিক দিয়ে তাদের সাথে টেক্কা দিতে সক্ষম এবং অনেকাংশে ভালো; তবে কেনো আমরা দেশীয় ব্র্যান্ডের দিকে ঝুঁকবো না? আশা করি আর্টিকেলটি থেকে কিছু বিষয় জানতে পেরেছেন, নিচে আপনার মূল্যবান মতামত কাম্য।

Level 12

আমি Touhidur Rahman Mahin। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 326 টি টিউন ও 88 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

ভালোবাসি প্রযুক্তি নিয়ে লিখতে, ভালবাসি প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস