খেয়াল করে চোখ দিয়ে দেখে পড়তে হবে:
মানুষ যা কিছু মনে রাখার চেষ্টা করে তার মধ্যে সব থেকে সহজে মনে থাকে ভিজ্যুয়াল মেমরি। অর্থাৎ যা মানুষ চোখে দেখে মনে রাখে। খেয়াল করে দেখবেন, কাউকে কিছু মনে করতে বলা হলে সে ঐ সময়ের ঘটনাটাকে মনে করার চেষ্টা করে। এমনকি পড়া ধরলে অধিকাংশ সময়ই আমাদের চোখের সামনে বইয়ের পৃষ্ঠা ভেসে উঠে। এতে বুঝা যায় মানুষ দেখার মাধ্যমে বা ভিজ্যুয়াল ওয়েতে বেশি শিখে। ফলে মনে রাখার ক্ষমতা বাড়াতে চাইলে বেশি বেশি ছবি, ছক, বইয়ের পৃষ্ঠা ও আনুষাঙ্গিক চিত্র দেখতে হবে।
অল্প অল্প করে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে:
কোন কিছু মনে রাখতে হলে তা বিভিন্ন অংশ বা সেগমেন্টে ভাগ করে পড়া বেশ উপকারী। যেমন ৪৬৭৮৯০-কে মনে রাখা যতটা সহজ তার চাইতে ৪৬৭ ও ৮৯০ এই দুই ভাগে ভাগ করে সংখ্যাটা মনে রাখা বেশি সহজ। আমরা পাঠ্যবইয়ের অনেক অনেক বড় বড় সংজ্ঞা পড়তে ভয় পাই। কিন্তু বড় সংজ্ঞাকে কয়েকভাগে ভাগ করে পড়লে দেখবেন তা সহজেই মনে থাকছে। এর কারণ আমদের ব্রেইন অনেক বড় একটা জিনিসের চাইতে ছোট জিনিসে বেশি মনোযোগ (কনসেনট্রেশন) দিতে পারে। আর তাই বড় পড়াকে ছোট ছোট ভাগ করে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। এতে সহজেই পড়া মনে থাকবে।
নতুন শিখতে যাওয়া বিষয়ের সাথে পূর্বে শেখা বিষয়ের সাদৃশ্য খুঁজতে হবে:
আমাদের ব্রেইন কোন একটা বিষয়কে নতুন পেলে সে তা পুরানা স্মৃতি বা মেমরির সাথে তুলনা করা শুরু করে। পুরানা মেমরির সাথে মিলে গেলে তা খুব দ্রুত পূর্বের মেমোরির সাথে যোগ করে নেয়। কিন্তু যদি সম্পূর্ন নতুন কিছু শিখতে হয় তবে ব্রেইনকে নতুন করে মেমোরি ট্রী তৈরী করতে হয় যা একটু সময় সাপেক্ষ। এ কারনে পুরনো কোন বিষয়ের সাথে মিলিয়ে পড়লে পড়া খুব সহজে মনে থাকে।
লিখে লিখে পড়ার অভ্যাস করতে হবে:
লিখে লিখে পড়লে আমাদের ব্রেইনের অনেক বেশি এলাকা উদ্দীপ্ত (স্টিমুলেটেড) হয়। আবার লেখার সাথে ব্রেইনের যে অংশগুলো জড়িত তা তথ্য (ইনফর্মেশন)-কে স্থায়ী স্মৃতি (পার্মানেন্ট মেমরি)-তে রূপান্তরিত করতে সহায়তা করে। এছাড়া মানুষ কোন কিছু লিখতে চাইলে সেই লেখার প্রতি তার মনোযোগ বেড়ে যায়। এটা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি বা পার্মানেন্ট মেমরি তৈরীতে সাহায্য করে।
বিকালের পরে বা সন্ধ্যায় পড়াশুনা করা উচিত:
বিভিন্ন ডাক্তারি গবেষণায় দেখা গেছে, সকাল ১০ টার আগে মানুষের ব্রেইন পুরোপুরি ক্রিয়াশীল হয় না। এই সময়ের পর থেকে ধীরে ধীরে ব্রেইনের ক্রিয়াশীলতা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে বিকালের পরে ব্রেইনের ক্রিয়াশীলতা বেশি বাড়ে। তাই সকালে পড়ার থেকে বিকালে বা সন্ধ্যার পরে পড়া বেশি কার্যকর।
পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে:
ব্রেইন মূলত স্মৃতি তৈরীর কাজটা করে ঘুমের ভেতর। গবেষণায় দেখা গেছে, সারা দিনের কাজ ও ঘটনাগুলো ঘুমের সময়েই মেমরিতে রূপান্তরিত হয়। ফলে যেকোন তথ্য (ইনফর্মেশন) মেমরিতে রূপান্তর করতে চাইলে পড়া-লেখার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।
নিমনিক (mnemonic) ব্যবহার করা:
নিমনিক (mnemonic) মানে হচ্ছে মনে রাখার বিশেষ কৌশল। আমাদের ব্রেইন অগোছালো কিছুর চাইতে কৌশলে সাজানো বিষয়ের উপর বেশি মনোযোগ দিতে পারে। ফলে কোন কিছু ছক বা টেবিল আকারে সাজিয়ে নিলে কিংবা নিমনিক (mnemonic) তৈরী করে নিলে দ্রুত মেমোরি তৈরী হয় ও মনে থাকে।
বার বার পড়তে হবে:
ব্রেইনে ক্ষণস্থায়ী স্মৃতিগুলো (শর্ট টার্ম মেমরি) তখনই দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে (লং টার্ম মেমরী) রূপান্তরিত হয় যখন এটা ইমোশনাল হয় (সুখের বা কস্টের) বা বার বার ইনপুট দেয়া হয় (অর্থাৎ রিপিটেশন করা হয়)। বারবার ইনপুট দিলে ব্রেইনের মেমরি ট্রি অর্থাৎ স্মৃতি গঠনের স্থানে স্থায়ী গাঠনিক পরিবর্তন (স্ট্রাকচারাল চেইঞ্জ) হয়। আর এই স্ট্রাকচারাল চেইঞ্জের ফলেই স্থায়ী বা পার্মানেন্ট মেমরি তৈরী হয়।
আমি রতন কুমার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 12 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 24 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
allylook profile link : https://allylook.com/roton