বিটকয়েন একটি প্রতিযোগিতামূলক এবং বিকেন্দ্রিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপন্ন হয় যার নাম "মাইনিং"। এটি হচ্ছে একটি পিয়ার-টু-পিয়ার কম্পিউটার প্রসেস যা বিটকয়েনের লেনদেন সুরক্ষিতভাবে এবং যাচাইয়ের জন্য ব্যবহার হয় - ডিসেন্ট্রালাইজড নেটওয়ার্কে এক ইউজার থেকে অন্য ইউজারে পেমেন্ট দেয়া হয়। যখন লেনদেনের ব্লক তৈরি হয়, মাইনাররা ক্রিপ্টোগ্রাফিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যা সেই ব্লককে বিটকয়েনের ব্লকচেইনে যোগ হওয়ার সুযোগ দেবে এবং বর্তমান নেটওয়ার্কের লেনদেনের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ দেবে। এটা করতে, মাইনাররা ব্লক থেকে তথ্য নেবে, আর তাদের গনিতিক সুত্র প্রয়োগ করবে। এই সুত্র ব্লক থেকে নেয়া তথ্যকে ছোট, র্যান্ডম সংখ্যা এবং অক্ষরে পরিনত করবে। এটা ক্রিপ্টোগ্রাফিক হ্যাশ নামে পরিচিত। প্রতিটি ব্লকের হ্যাশের একটি কন্সট্রাইন্ট মানতে হয়ঃ হ্যাশকে বড় একটি ইন্টেজার সংখ্যা হিসেবে ধরা হয় আর তা বর্তমান নেটওয়ার্কের কাঠিন্যের লক্ষ্যের চেয়ে কম অথবা সমান হতে হবে।
এই প্রক্রিয়ায় মানুষজন জড়িত থাকে যারা নেটওয়ার্ক দ্বারা তাদের সেবার জন্য পুরস্কৃত হয়। বিটকয়েন মাইনাররা লেনদেন প্রক্রিয়াকরন করে এবং নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিশেষ হার্ডওয়্যারের মাধ্যমে এবং নতুন বিটকয়েন সংগ্রহ করে এবং তারপরিবর্তে লেনদেনের ফি।
বিটকয়েন প্রটোকল এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে নতুন বিটকয়েন নির্দিষ্ট হারে উৎপন্ন হয়। এটা বিটকয়েনকে অনেক প্রতিযোগিতামূলক ব্যাবসা করে তুলেছে। যখন আরো মাইনাররা নেটওয়ার্কে যোগ দেবে, লাভ করাটা প্রচুর কঠিন হয়ে যাবে আর মাইনারদের তাদের পরিচালনার খরচ কমাতে কার্যকারিতা বাড়াতে হবে।
বিটকয়েন একটি হ্রাস পাওয়া এবং অনুমানের অনুপাতে তৈরি হচ্ছে। প্রতিবছর উৎপন্ন হওয়া বিটকয়েন ধাপে ধাপে অটোমেটিকভাবে অর্ধেক হয়ে আসছে যতোদিন পর্যন্ত না বিটকয়েন উৎপাদন একেবারে থেমে যাবে যখন তা ২১ মিলিয়ন বিটকয়েন হবে। এই পর্যায়ে, বিটকয়েন মাইনাররা সম্ভবত শুধু অসংখ্য ট্রাঞ্জাকশন ফি দ্বারা সমর্থিত হবে।
মাইনাররা যে ক্রিপ্টোগ্রাফিক সমস্যার সমাধান করে তা কতোটা কঠিন? আসলে, তা নির্ভর করে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্কে কতোটা প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে তার ওপর। কাঠিন্য নিজে নিজে সাজিয়ে নেয় এই লক্ষ্যে যে যেন ব্লকের উদ্ঘাটন নির্দিষ্ট হারে হয়। তাই যতো গণনীয় পাওয়ার মাইনিঙে ব্যবহার করা হবে, মাইনিংকে আরো কঠিন করতে কাঠিন্য নিজেকে বাড়িয়ে নেবে। আর গণনীয় পাওয়ার যদি নেটওয়ার্ক থেকে তুলে নেয়া হয়, তাহলে তার বিপরীত ঘটবে। কাঠিন্য কমে আসবে আর মাইনিং সহজ হয়ে যাবে।
বিটকয়েনের প্রথম দিকে, পার্সোনাল কম্পিউটারের সিপিইউ দিয়ে মাইনিং করা সম্ভব ছিল। গ্রাফিক্স কার্ড, অথবা গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ), মাইনিঙের ক্ষেত্রে সিপিইউর চেয়ে বেশী কার্যকরী ছিলো এবং বিটকয়েনের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হয়েছিলো, জিপিইউ প্রভাবশালী হয়েছিলো। অবশেষে, ASIC নামক হার্ডওয়্যার, যার মানে হচ্ছে অ্যাপলিকেশন-স্পেসিফিক ইন্টেগ্রেটেড সার্কিট, বিশেষভাবে বিটকয়েন মাইনিঙের জন্য তৈরি করা হয়েছে। প্রথমটি ২০১৩ সালে বের হয়েছিলো আর তারপর থেকে উন্নত হয়ে আসছে, এবং আরো কার্যকরী ডিজাইন মার্কেটে আসছে। মাইনিং হচ্ছে প্রতিযোগিতামূলক এবং বর্তমানে শুধুমাত্র লাভজনকভাবে করা হয় লেটেস্ট ASIC এর মাধ্যমে। যখন সিপিইউ, জিপিইউ, অথবা পুরনো ASIC ব্যবহার করা হতো, তখন লাভ হওয়ার চেয়ে বেশী শক্তি খরচ হতো।
এই টিউনের প্রথম প্রকাশ-fbs.com
আমি মিজানুর রহমান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।