ব্লু হোয়েল আত্মহত্যার গেম: আপনার যা যা জানা প্রয়োজনীয়!

আমরা ইন্টারনেটে অনেক আজব আজব ঘটনা ঘটতে দেখেছি এর আগেও, কিন্তু ইন্টারনেট কম্পিউটার বা কোন গেমের জন্য যখন মানুষ মরতে আরম্ভ করে, এর চেয়ে আজব আর জরুরী ঘটনা আর কিছুই হতে পারে না। হ্যাঁ, রিসেন্টলি একটি আত্মহত্যা করার গেম বেড় হয়েছে যার নাম ব্লু হোয়েল (Blue Whale) এবং এই গেমটি খেলার মাধ্যমে আপনাকে জীবন দিয়ে দিতে হবে।

অনেক অনলাইন ওয়েব আর্টিকেল, ইউটিউব চ্যানেলে ইতিমধ্যে এই টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়ে গিয়েছে, টেকটিউনসেও কিছু টিউন দেখেছি এই সম্পর্কে, কিন্তু তারপরেও আমি এই গেম সম্পর্কে লেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম। টিউনটি থেকে গেমটির সম্পর্কে জানুন, কেনোনা জানাতে কোন খারাপি নেই, তবে ভুল করেও এই গেমের কৌতূহল মনে নিয়ে আসবেন না, অনেক সময় শুধু বিস্তারিত জানার ইচ্ছা বা হালকা এক্সপেরিয়েন্স করার ইচ্ছাই প্রানঘাতি হতে পারে।

ব্লু হোয়েল আত্মহত্যার গেম

গেমটির নাম "নীল তিমি" —এই শব্দে রাখা হয়েছে, হতে পারে তিমি আপনাকে যেরকম গ্রাস করে খেয়ে ফেলতে পারে, ঠিক এভাবে এই গেমটিও আপনার প্রান গ্রাস করে নেবে, এই লজিক থেকেই এই এরকম নামকরন করা হয়েছে। গেমটি একটি রাশিয়ান গেম বলে জানতে পাড়লাম, এবং এই গেমের অ্যাডমিনকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়েছে, সেটাও জানতে পাড়লাম। দুনিয়া জুড়ে মানুষ মরছে, এই গেমের নেশায় বা বলতে পারেন গেমের টাস্ক পূরণ করতে গিয়ে।

আপনার কাছে হয়তো বিষয়টি পাগলামু লাগতে পারে, হ্যাঁ আমিও মনে করি বিষয়টি সম্পূর্ণই পাগলামি! যারা গেমিং করতে গিয়ে নিজের জীবন শেষ করাটাকেও গেমের অন্তর্ভুক্ত'ভাবে, তাদের সিরিয়াস চিকিৎসার দরকার। কিন্তু গোটা পৃথিবী জুড়ে মানুষ মারা যাওয়ার খবর আসছে। শুধু রাশিয়াই নয়, অ্যামেরিকা, এমনকি ইন্ডিয়াতেও নাকি মানুষ মরেছে এই গেম খেলতে গিয়ে। চিন্তা করে দেখুন, যেখানে কিছু মানুষ শুধু পেটের ভাত জোগানর জন্য পরিশ্রম করে মরে যাচ্ছে, সেখানে কিছু মানুষের কাছে এতোটাই আজারা মানুষিকটা রয়েছে, যারা গেমিং করতে মরে যাচ্ছে।

যাই হোক, এখানে আমি আমার দৃষ্টিকোন দেখাবো না, কথা বলবো এই গেমটির সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য নিয়ে। দেখুন প্রকৃতপক্ষে দেখতে গেলে, এটি কোন আলাদা দশ বারোটা গেমের মতো নয়, এক ধরণের টাস্ক চ্যালেঞ্জিং গেম, যেটা ভার্চুয়াল টাস্ক নয় বরং আপনার রিয়াল লাইফ টাস্ক সেখানে সম্পূর্ণ করতে হবে।

গেমটি জখন শুরু করবেন, অনলাইন থেকে মানে গেমের অ্যাডমিন প্যানেল থেকে আপনাকে কিছু কমন এবং কিছু স্পেশাল টাস্ক দেওয়া হবে, যেগুলো আপনাকে আপনার ব্যস্তব লাইফের সাথে সম্পূর্ণ করতে হবে। এই গেমের মধ্যে মোট ৫০টি টাস্ক রয়েছে, যেটাকে ৫০দিনে সম্পূর্ণ করতে হবে। আমি নিচে এর টাস্ক লিস্ট গুলো অ্যাড করে দিয়েছি, লিস্ট'টি পর্যবেক্ষণ করুণ আর আপনি নিজেই চিন্তা করুণ, এসব ফালতু কাজ করে কি আপনার জীবন শেষ করে ফেলবেন?

যাই হোক, গেমের টাস্ক গুলোকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে, এতে আপনার মস্তিষ্ক ধীরেধীরে গ্রাস করে নেবে। আপনি যদি অ্যাডভাঞ্চার পছন্দ করেন, তো এই গেম আপনাকে অনেক দ্রুতই গ্রাস করে ফেলবে। প্রথমত আপনাকে হাত কাটতে বলা হবে, তারপরে হাতে স্পেশাল ওয়ার্ড লিখতে বলা হবে, তিমি আকাতে বলা হবে, আপনার রগ কাটতে বলা হবে, হাতে সিরিঞ্জ ঢুকাতে বলা হবে, ভুতের আর লাশ কাটাকাটি মুভি দেখতে বলা হবে, রাতে কবর স্থানে যাওয়ার কথা বলা হবে, আর শেষের টাস্কটি হলো জাস্ট আপনাকে মরে যেতে হবে! ব্যাস এটাই হলো এই ব্লু হোয়েল গেম। আপনার সকল টাস্ক ইমেজ এবং ডাটা গুলোকে অ্যাডমিন প্যানেলে সেন্ড করতে হবে, কিছু টাস্ক অনুসারে আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়াতেও উল্টাপাল্টা স্ট্যাটাস দিতে হবে।

অর্থাৎ আপনার সুস্থ মস্তিষ্কে এতক্ষণে তো এটা বুঝতে পেড়েছেন, এটা কোন কম্পিউটার গেমই নয়, এটা রিয়াল লাইফ গেম। আর যেটার প্রত্যেকটি পর্ব সম্পূর্ণ বেউকুফ পোনায় ভর্তি। যখন আপনি এরকম ভয়ানক টাস্ক পূরণ করতে আরম্ভ করবেন, হয়তো আপনার মস্তিষ্ক ধীরেধীরে বিকৃত হয়ে যাবে, আপনাকে ভুতের ছবি দেখতে হবে, ভুতুরে জায়গায় ফিজিক্যালি যেতে হবে, আপনি নিশ্চয় খারাপ স্বপ্নও দেখতে আরম্ভ করবেন, আর অ্যাডমিন প্যানেল থেকে উল্টাপাল্টা টাস্ক দিয়ে নিয়মিত আপনার মস্তিষ্কের বারোটা তো বাজাবেই।

এভাবেই হয়তো আপনি তাদের ইশারার পুতুল হয়ে জান পর্যন্ত দিয়ে দেবেন। এখন মানুষ যে জান দিয়েছে, সেটা তো অস্বীকার করা যায় না, কিন্তু কেন জান দিয়েছে, কেন মানুষ এতোটা পাগ্লামু করলো? হতে পারে কিছু মানুষের মানুষিক রোগের কারণে, হ্যাঁ আমি এদের রোগীই বলবো। সুস্থ মস্তিষ্কের কেউ গেম খেলতে দিয়ে মরা তো দুরের কথা, নিজেকে এতোটা কষ্ট দিতে পারবে না। আর এই গেমেই টাস্ক গুলোর দিকেই একবার নজর রাখুন, সত্যিই কি আপনার মনে হচ্ছে এই টাস্ক গুলোতে কোন সেন্স রয়েছে? এই গেমের অ্যাডমিন তো পুরা পাগলই, এর চেয়েও মহা পাগল তারা যারা এই গেমকে ব্যস্তব জিবনে আপ্লাই করবে।

এই গেম সম্পর্কে আরেকটি তথ্য আপনাকে জানাই, এই গেমের যে টাস্ক গুলো ক্রিয়েট করেছে, সে ২২ বছর বয়সের এক রাশিয়ান, পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পরে তার উক্তি কি ছিল জানেন, "সে সমাজ পরিষ্কার করার জন্য এরকম গেম তৈরি করেছে"। এখন আপনি নিজেই চিন্তা করে দেখুন, এরকম উক্তি বা কাজ কর্মের সাথে কারা জড়িত থাকে? অবশ্যই এর মাথার নাট বল্টুতে ঢিল রয়েছে। তবে হ্যাঁ, গেমটির মেইন অ্যাডমিন কে, তাকে খুঁজে পাওয়া যায় নি, কল্পনা করা হচ্ছে একাধিক অ্যাডমিন রয়েছে এর পেছনে।

ব্লু হোয়েল গেমের ৫০টি টাস্ক;

  • Carve a specific phrase on the person’s own hand or arm.
  • Wake up at 4:20 a.m. and watch a scary video (sent by the curator.)
  • Make lengthwise cuts on the person’s own arm.
  • Draw a whale on a piece of paper
  • Write “yes” on the person’s own leg if ready to be a whale. Otherwise, they should cut themselves multiple times.
  • Secret task (written in code.)
  • Scratch (a message) on the person’s own arm.
  • Write a status online about being a whale.
  • Overcome a fear.
  • Get up at 4:20 and go to the roof.
  • Carve a whale on the person’s own hand.
  • Watch scary videos all day.
  • Listen to music the “curator” sends.
  • Cut your lip.
  • Poke the person’s own arm/hand with a needle.
  • Make yourself hurt or sick.
  • Go to a roof and stand on the edge.
  • Stand on a bridge.
  • Climb a crane.
  • At this step, the “curator” somehow checks to see if the participant is trustworthy.
  • Talk with a “whale” on Skype.
  • Sit down on a roof with legs dangling over the edge.
  • Another job that is in code.
  • A secret mission
  • Meet with a “whale.”
  • The “curator” assigns a date that the person will die.
  • Visit a railroad.
  • Do not talk with anyone all day.
  • Give an oath/vow about being a whale

এই টাস্ক গুলো পূরণ করার পরে গেমারকে ৩০-৫০ টাস্কের মধ্যে হরর মুভি, হরর মিউজিক, হরর সাউন্ড শোনানো হবে, যেগুলো গেমের অ্যাডমিন প্যানেল থেকে প্রদান করা হবে, ৫০ নং টাস্কটি হলো ছাদে উঠে, ব্যাস জীবন দিয়ে দেওয়া (আরে, জীবন দেওয়া ছেলে খেলা নাকি?)

আরো কিছু আপডেটেড টাস্ক পাওয়া গেছে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে;

  • Write on a white paper ‘I’m strong, I can do everything I want!’ for 50 times.
  • Take a walk listening some electro swing (Parov Stelar for instance)
  • Wake up at 10 am, open the window and listen to the outside sounds thinking, ‘I’m happy to live’ many times.
  • Go see a sunset while listening some jazz (Bossanova, Coltrane for instance). Experience its beauty.
  • Try to cook some food you like, eat it with some friends\parents\others you like.
  • Wake up at 5.30 am, have a good breakfast and then go out watch your city waking up. No music here.
  • Try to talk with at least 5 different unknown people about something for at least 5 minutes each.
  • Try to talk with someone who does not like you and try to make him a friend.
  • Take a walk in the afternoon with some music.
  • Take a whole day to do what you like. Life is beautiful; don’t throw it away.
  • Spam these rules to other people.
  • Force yourself to talk with another gamer (or friend or person) about your problems.
  • Try to help another gamer with his/her problems. You can make the difference, you are special.
  • Take a walk with someone, talk about your hopes and desires, and ask about his/her hopes and dreams.
  • Repeat point 1
  • Repeat point 2
  • Repeat point 3
  • Repeat point 4
  • Repeat point 5
  • Repeat point 6
  • Repeat point 7
  • Repeat point 8
  • Repeat point 9
  • Repeat point 10
  • Repeat point 11
  • Repeat point 12
  • Repeat point 13
  • Repeat point 14
  • You are ready for the last test. Think about your progress, write your feelings about all the steps previously addressed, and give it to a person who you think would appreciate it.
  • Live your life happily. You really do not need a curator to control you. You are free, you are special, remember it whenever you are sad and you feel no way out. I love you.

আমার কিছু কথা

এখন আপনি নিজেই বলুন, এগুলো মেন্টালি রোগা নয়তো আর কি? অনেকে অনেক ব্যাখ্যা দিয়েছে দেখলাম, এজন্য আত্মহত্যা করতে পারে, সে জন্য আত্মহত্যা করতে পারে, ব্যাট আমার কাছে কোন ব্যাখ্যাই যুক্তি সম্পূর্ণ মনে হয়নি। যারা মরে গেছে তাদের কথা আপাতত বাদই দিলাম, কিন্তু আপনার আর আমার কথা বলি, ২২ বছরের এক বাচ্চা আপনাকে কম্পিউটারে ম্যাসেজ করে বলল, আপনার ঘরে আগুন লাগিয়ে দিন, আর আপনি আগুন লাগিয়ে দিলেন? এটা কোন লজিকে পরে? এখানে কীসের অ্যাডভাঞ্চার রয়েছে? আপনি এই গেম খেলছেন, টাস্ক পূরণ করছেন, হাত কাটছেন, হাতে তিমি আঁকাচ্ছেন, কীসের জন্য? আপনি জীবন দিতে চলে যাচ্ছেন, আরে ভাই আপনার কি এটা জানা নেই, "মৃত্যুর পরে গেম, ইন্টারনেট, টাস্ক এগুলো শুধু পরেই থাকবে।

চিন্তা করে দেখুন তো, আপনি যার ইশারায় গেম খেলছেন, সে নিজেই আপনাকে পরিবেশের আবর্জনা বলে আখ্যায়িত করছে, আর সে বলেও দিয়েছে, সে পরিবেশ পরিষ্কার করতে চায়! সত্যি কি আপনি পরিবেশের আবর্জনা, নাকি ঐ আবুলই পরিবেশের আবর্জনা?

টেককে ভালোবাসা, গেমিং করা, কম্পিউটিং করা খারাপ কিছু না। তবে সব জায়গাতেই আপনার কমন সেন্স লাগানো প্রয়োজনীয়। অতিরক্ত বেশি কোনকিছুই ভালো না। যদি আজ মানুষ তাদের কমন সেন্সের ব্যবহার করতো, তো এতো গুলো প্রানহানি ঘটতো না, আমরা শুধু ট্রেনডের পেছনে ছুটছি, ভেবেই দেখছি না কার পেছনে ছুটছি, শুধু জানি ট্রেন্ডের পেছনে! যাই হোক, আমার চেয়ে আপনি অনেক বেশি বুদ্ধিমান তাই বিষয় গুলোকে বুদ্ধি দিয়ে যাচায় করুণ।

এই টিউনটি করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনাকে নন-সেন্স থেকে দূরে রাখা, নিরাপদে থাকুন, সুস্থ থাকুন! যদি আপনি সন্তানের বাবা বা মা হোন, অবশ্যই আপনার সন্তানের প্রতি নজর রাখুন, খুববেশি দেরি হয়ে যাওয়ার পূর্বেই সমস্যার সমাধান করুণ!

Level 6

আমি তাহমিদ বোরহান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 177 টি টিউন ও 680 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 43 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

আমি তাহমিদ বোরহান। টেক নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকতে ভালোবাসি। টেকটিউন্স সহ নিজের কিছু টেক ব্লগ লিখি। TecHubs ব্লগ এবং TecHubs TV ইউটিউব চ্যানেল হলো আমার প্যাশন, তাই এখানে কিছু অসাধারণ করারই চেষ্টা করি!


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

বেশি কিছু বুঝবো না। আগে গেম টা ডাউনলোডের লিংক দেন। কয়েক দিন আগে সেট ডাউনলোডের লিংক খুজছিলাম। পায়নি আমি…

    এ থেকে দূরে থাকায় ভালো! অ্যান্ড আমার কাছে লিঙ্ক নেই, আমি সার্চ করেও দেখিনি!

Click “START BLUE WHALE” on that page ….. Game will start