একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরী করা হয় প্রোগ্রামিং কোডের উপর ভিত্তিকরে । প্রোপ্রাইটরি সফটওয়্যার কোম্পানী গুলো তাদের তৈরীকৃত সফটওয়্যার এর প্রোগ্রামিং কোড বা সোর্সকোড তাদের কাছেই সংরক্ষিত রাখে । অর্থাৎ সর্বসাধারণের এটি দেখার অনুমতি নেই । ওপেনসোর্স হচ্ছে এর সম্পূর্ণ বিপরীত । ওপেনসোর্স সফটওয়্যারের প্রোগ্রামিং সোর্সকোড সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকে । এখন কথা হচ্ছে কী লাভ এতে ?
লাভ দুপক্ষেরদই রয়েছে সফটওয়্যারটির প্রস্তুতকারকের ও তার ব্যবহারকারীরঃ
যেহেতু সকলেই এর সোর্সকোড দেখতে পারে তাই যে কেউ সফটওয়্যারটিকে আরো উন্নত করতে পারে । কারণ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য প্রোগ্রামার একজন আরেকজন থেকেও দক্ষ । তারা সেই সফটওয়্যারটিকে আরো উন্নত করে তোলার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে (প্রোপ্রাইটরী সফটওয়্যার কোম্পানীর ক্ষেত্রে সেই প্রতিষ্ঠানের প্রোগ্রামারদের মধ্যে তা সীমাবদ্ধ থাকে )। সফটওয়্যারে কোন ত্রুটি থাকলে সেটি প্রকাশ পাবার সাথেসাথেই সমাধান পাওয়া সম্ভব ( প্রোপ্রাইটরী সফটওয়্যার কোম্পানীর ক্ষেত্রে তাদের উপর নির্ভর করে বসে থাকতে হয় কখন তারা এটির সমাধান করবে )
ব্যবহারকারীর চাহিদার গুরুত্ব : ওপেনসোর্স এ্যাপ্লিকেশনে আপনি যদি কোনকিছু বা কোন ফিচারের অভাব বোধ করেন তবে সেটি ডেভলপারদের জানালে আপনার চাহিদা গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে এবং এপ্লিকেশনে উক্ত ফিচার যুক্ত ও করে দেয়া হবে। এমনকি মূল ডেভেলপার না করলেও অন্য যে কোন প্রোগ্রামার এ্যাডঅন/প্লাগইন হিসেবে উক্ত ফিচার যুক্ত করতে পারেন।
আপনি যদি প্রোগ্রামার হন বা শেখা শেষ করেছেন তবে ওপেনসোর্স এ্যাপলিকেশন ও তার সোর্সকোড আপনার জন্য মূল্যবান । কেন ?
ধরুন আপনার আগ্রহ বা ইচ্ছা হচ্ছে ইমেজ এডিটিং এ্যাপলিকেশন তৈরী করবেন । তবে এটি সম্পর্কে ধারণা পাবেন কিভাবে ? তখন আপনি সে ধরনের ওপেনসোর্স সফটওয়্যার খুঁজে বের করে বা http://www.sourceforge.net/ থেকে এ্যাপলিকেশন এর সোর্সকোড ডাউনলোড করে বা GIMP (http://www.gimp.org/) এর সোর্সকোড ডাউনলোড করে তা স্টাডি করতে পারেন এবং শিখতে পারেন কিভাবে সে জাতীয় এ্যাপলিকেশন তৈরী করা যায় । এটাইতো ওপেনসোর্সের লক্ষ্য/উদ্দেশ্য আপনাকে এ্যাপলিকেশন তৈরী শেখা ও মডিফিকেশনের সুযোগ দেয়া । যেটা প্রোপাইটারী এ্যাপলিকেশনে সম্ভব নয় ।
বেশীর ভাগ ওপেনসোর্স সফটওয়্যার বিনামূল্যে হওয়ায় আপনি উচ্চমূল্যের সফটওয়্যার না কিনে ফ্রি ওপেনসোর্স সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার প্রতিষ্ঠানের ব্যায় হ্রাস করতে পারেন। আপনি যখন উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ক্রয় করেন তখন তাতে ছোটখাটো কিছু সফটওয়্যার দেয়া থাকে কিন্তু বাকিগুলো আপনাকে কিনতে হচ্ছে, অন্যদিকে আপনি যদি লিনাক্স ওএস ব্যবহার করেন তাহলে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সফটওয়্যার এর সাথেই পাচ্ছেন যেমন Openoffice (মাইক্রোসফট অফিসের বিকল্প), Gimp (ফটোশপের বিকল্প),Firefox (ওয়েব ব্রাউজার) এছাড়াও আরও নানান সফটওয়্যার আপনি একদম বিনামূল্যে পাচ্ছেন।
ওপেনসোর্স সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে সফটওয়্যারের স্বচ্ছতা বজায় থাকে। যেমন আপনি একটি সফটওয়্যার ক্রয় করলেন যেটির সোর্সকোড উন্মুক্ত নয়। এখন সেই সফটওয়্যারে যদি কোন গোপন কোড থাকে যেটি আপনার গোপন তথ্য পাচার করে দিতে পারে এমন কিছু থাকলে তা আপনার বোঝার কোন উপায় থাকবেনা। কিন্তু ওপেনসোর্স ব্যাপারটি পুরোপুরি স্বচ্ছ কারণ আপনি সফটওয়্যারটির প্রোগ্রামিং কোডগুলো দেখতে পাচ্ছেন এবং অনাকাঙ্খিত কোড এর উপস্থিতি সহজেই বের করতে পারছেন।
আর ওপেনসোর্স মানেই ফ্রি সফটওয়্যার নয় । এটি বিক্রয় ও করা যাবে সোর্সকোড উন্মুক্ত রেখে (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওপেনসোর্স জগতে পণ্য বা অ্যাপ্লিকেশন বিক্রির বদলে উন্নত সেবা বিক্রয় করা হয়)। প্রোপাইটারি বা বাণিজ্যিক সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে অর্থ দিয়ে সেই অ্যাপ্লিকেশন কেনা সত্ত্বেও ক্রেতাকে অ্যাপ্লিকেশনটির সোর্সকোড দেয়া হয়না । সফটওয়্যার কোম্পানী এটি তাদের কাছে সংরক্ষিত রাখে ।
আমি darklord। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 30 টি টিউন ও 111 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Share your knowledge with others..........
ওপেন সোর্সের উপরে নানান কৌতূহল দূর হইল…অন্ধকার-সম্রাট ভাইরে ধন্যবাদ।