ইন্টারনেটে এমন বেশ কয়েকটি ওপেন সোর্স অ্যাপিকেশন পাওয়া যায় যা ওয়েব পেজ ডিজাইনারদের প্রচুর সাহায্য করতে পারে। ওপেন সোর্স অ্যাপিকেশন ব্যবহার নানা কারণেই সুবিধাজনক। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এগুলো ফ্রি এবং এগুলো তৈরি ও উন্নয়নের পেছনে নিয়োজিত থাকেন নিবেদিতপ্রাণ অনেক ডেভেলপার। এঁদের নিঃস্বার্থ শ্রমে ধীরে ধীরে উৎকর্ষের পথে এগিয়ে যায় এসব সফটঅয়্যার, যা বাণিজ্যিক সফটঅয়্যারগুলোর ক্ষেত্রে ঘটে না। আজকে এমনই কয়েকটি ওপেন সোর্সভিত্তিক সফটঅয়্যার অ্যাপিকেশনের কথা আলোচনা করব যেগুলো ওয়েব ডিজাইনারদের খুবই কাজে আসবে।
সিএসএসইডি
ওয়েব সাইট: http://www.cssed.sourceforge.net এটি একটি ছোট আকৃতির ডেভেলপার এডিটর এবং ভ্যালিডেটর। সিএসএস (ক্যাসকেডিং স্টাইল শিট) এডিটিং-এর কাজটিকে সহজতর করার লক্ষ্য নিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। সিনট্যাক্স হাইলাইটিং, সিনট্যাক্স ভ্যালিডেশন, এমডিআই নোটবুক বেজড ইন্টারফেস এবং দ্রুতগতির সিএসএস প্রপার্টি ও ভ্যালু অন্তর্ভুক্তকরণ হচ্ছে এর প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য। সিএসএস এডিটর হওয়ায় এর সাপোর্ট যে কেবল সিএসএস-এর জন্যই সীমিত সেটি ভাবলে ভুল হবে। এটিতে এইচটিএমএল (এমবেডেড জাভা স্ক্রীপ্ট), এক্সএমএল, জাভা স্ক্রীপ্ট, জাভা, পএইচপি, জেএসপি, সি, সি++, পাইথন, পার্ল, এসকিউএল এবং সমজাতীয় অন্যান্য ল্যাংগুয়েজের জন্যও সাপোর্ট আছে। এ কারণে এটি একটি বহুমাত্রিক ওয়েব এডিটর হিসেব কাজ করতে পারে। প্লাগ- ইন যোগ করার মাধ্যমে এটির কর্মকাণ্ড আরো বিস্তৃত করা সম্ভব।
বুফিশ
ওয়েব সাইট: http://www.bluefish.openoffice.nl বুফিশ নামের এই শক্তিশালী ওয়েব এডিটর প্রোগ্রামটি তৈরি করা হয়েছে প্রোগ্রামার এবং ওয়েব ডিজাইনারদের প্রয়োজনের দিকে নজর রেখে। এ কারণেই ওয়েব সাইট, স্ক্রিপ্ট এবং প্রোগ্রামিং কোড তৈরির বিভিন্ন সুবিধা রাখা হযেছে এতে। বুফিশ বেশির ভাগ প্রোগ্রামিং এবং মার্ক আপ ল্যাংগুয়েজ সাপোর্ট করে এবং বিশেষ করে ডায়নামিক ও ইন্টারএকটিভ ওয়েব সাইট এডিট করাতেই এর দতা। এটি লিনাক্স, ফি"বিএসডি, ম্যাকওএসএক্স, ওপেন বিএসডি ও সোলারিসসহ বেশিরভাগ অপারেটিং সিস্টেমে রান করে। এর একমাত্র দুর্বলতা - এটি মাইক্রোসফট উইন্ডোজের জন্য পুরোপুরি কমপ্যাটিবল নয়। এটি উইন্ডোজে রান করে বটে, তবে উইন্ডোজের জন্য সম্পূর্ণ সাপোর্ট এখনও এতে নেই।
কোয়ান্টা পাস
ওয়েব সাইট: http://www.quanta.kdewebdev.org উপরে বর্ণিত দুটোর মত কোয়ান্টা পাসও একটি উন্নতমানের ওয়েব ডেভেলপমেন্ট টুল। এটি এইচটিএমএল (HTML), এক্সএইচটিএমএল (XHTML), সিএসএস (CSS), এক্সএমএল (XML), পিএইচপি (PHP) এবং অন্য যে কোনো এক্সএমএল-ভিত্তিক ল্যাংগুয়েজ বা স্ক্রীপ্টীং ল্যাংগুয়েজ-এর জন্য উপযোগী একটি ওয়েব ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট এনভায়রনমেন্ট। এটি কেডিই (কে ডেভেলপমেন্ট এনভায়রনমেন্ট) নামে একটি লিনাক্স ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্টের অংশ। কোয়ান্টা দিয়ে ওয়াইসিউইগ এবং হ্যান্ডকোডিং দুটোই করা যায়। এর অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আছে ডায়ালগ ইন্টারফেসের মাধ্যমে ট্যাগ এডিটিং, স্ক্রীপ্টল্যাংগুয়েজ ভ্যারিয়েবল অটো-কমপিশন, প্রজেক্ট ব্যবস্থাপনা, লাইভ প্রিভিউ, পিএইচপি ডিবাগার, সিভিএস সাপোর্ট ইত্যাদি।
আমায়া
ওয়েব সাইট: http://www.w3.org/Amaya অসধুধ এটি হচ্ছে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কনসোর্টিয়ামের তৈরি একটি ফ্রি, ওপেন সোর্স ওয়েব এডিটর এবং ওয়েব ব্রাউজার। এর এডিটিং ও রিমোট অ্যাকসেস বৈশিষ্ট্যগুলোর সঙ্গেই অন্তর্ভুক্ত আছে ব্রাউজিং সামর্থ্যও। আমায়া নিয়ে কাজ শুরু হয়েছিল আজ থেকে ১৩ বছর আগে, ১৯৯৬ সালে। এর শুরুটা হয়েছিল একটি এইচটিএমএল + সিএসএস স্টাইল শিটস এডিটর হিসেবে। সে থেকে ধীরে ধীরে বিস্তৃত হতে হতে এটিতে বর্তমানে এক্সএমএল, ম্যাথএমএল (MathML) এবং এসভিজি (স্কেলেবল ভেক্টরক্স) সাপোর্টও আছে। আমায়াতে আরো আছে রিসোর্স ডেস্ক্রিপশন ফ্রেমওয়ার্ক (আরডিএফ), এক্সলিংক এবং এক্সপয়েন্টারভিত্তিক একটি কোলাবরেটিভ অ্যানোটেশন অ্যাপিকেশনও।
কম্পোজার (kompozer)
ওয়েব সাইট: http://www.kompozer.net কম্পোজার একটি পরিপূর্ণ ওয়েব অথরিং সিস্টেম যেটিতে অন্তর্ভুক্ত আছে একটি এফটিপি কায়েন্ট, খুবই সুবিধাজনক ইউজার ইন্টারফেস এবং সকল প্রধান অপারেটিং সিস্টেমের জন্য সাপোর্ট। ওয়েব ফাইল ব্যবস্থাপনা এবং মাইক্রোসফট ফ্রন্টপেজ, অ্যাডোব ড্রিমউইভার ও অন্যান্য উচ্চমানসম্পন্ন প্রোগ্রামগুলোর মতই সহজে ব্যবহারযোগ্য WYSIWYG ওয়েব পেজ এডিটিং সামর্থ্য কম্পোজারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এটিকে বিশেষভাবে তৈরিই করা হয়েছে একেবারে নবীন ওয়েব পেজ ডিজাইনাররাও যাতে এটি ব্যবহার করতে পারেন সেদিকে নজর রেখেই। এ কারণে খুব ভাল এইচটিএমএল বা ওয়েব কোডিং না জেনেই কম্পোজার ব্যবহার করে আকর্ষণীয় ও পেশাদারী বৈশিষ্ট্যসম্পনড়ব ওয়েব সাইট তৈরি করা যাবে। কম্পোজারের ভিত্তি হচ্ছে গেকো নামের একটি লেআউট ইঞ্জিন। ওয়েব ব্রাউজার মজিলাকেও শক্তি জোগাচ্ছে এই লেআউট ইঞ্জিন। কম্পোজারের আরেকটি বড় শক্তি হচ্ছে এক্সএমএল, সিএসএস এবং জাভাস্ক্রীপ্ট -এর জন্য সাপোর্ট। বিশেষ করে ড্রিমউইভার ব্যবহারে যারা অভ্যস্ত তাদের কাছে কম্পোজারকে মনে হবে একবারেরই নিজের জিনিস।
আরো অনেক লেখার ইচ্ছা ছিল কিন্তু সময়ের অভাবে তা আর হল না।লেখাটি ভাল লাগলে মতামত দিতে ভুলবেন না।সবাই সুস্থ থাকুন ভাল থাকুন।
আমি খালিদ হাসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 23 টি টিউন ও 66 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
অবসরের একমাত্র সঙ্গী ইন্টারনেট। সময় পেলে বসে পড়ি প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন ব্লগ পড়তে। মাঝে মধ্যে নিজেই শুরু করে দেই ব্লগিং। ব্লগ পড়া ও লেখা দুটোই নেশার মত হয়ে গেছে। আমার সম্পর্কে আরো জানতে চাইলে ঢুঁ মারুন ফেসবুকে।
ভালো টিউন ধন্যবাদ।