বিশ্বের পরাক্রমশালী ও মহাশক্তিধর যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এক ভয়ঙ্কর বিপর্যয় অপেক্ষা করছে। আগ্নেয়গিরির প্রচণ্ড অগ্ন্যুত্পাতে কোনো একসময় তাদের সুখের রাজ্য বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়তে পারে। এটা কোনো জ্যোতিষীর ভবিষ্যদ্বাণী নয়, বিজ্ঞানীদের তথ্য-প্রমাণনির্ভর যুক্তি। একদল মার্কিন বিজ্ঞানী ও আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ বলছেন, আমেরিকার ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের অতিকায় আগ্নেয়গিরিটি ধীরে ধীরে তার পেট থেকে লাভা উদি্গরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আগ্নেয়গিরিটির পাথরমিশ্রিত গলিত লাভাগুলো দীর্ঘদিন সুপ্ত অবস্থায় থাকলেও ২০০৪ সাল থেকে সেটা রেকর্ড হারে জেগে উঠছে। রেকর্ড বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত তিন বছরে আগ্নেয়গিরির লাভাস্তর তিন ইঞ্চি করে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছেন, ইয়েলোস্টোন আগ্নেয়গিরির লাভা উদিগরণে যুক্তরাষ্ট্রের দুই-তৃতীয়াংশ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়তে পারে। জ্বলন্ত লাভা ছড়িয়ে পড়বে আকাশজুড়ে। বিষাক্ত ছাইয়ের ১০ ফুট পুরু আস্তরণ তৈরি হবে আশপাশের প্রায় এক হাজার মাইলজুড়ে। কোটি কোটি মানুষকে ঘরবাড়ি ছাড়তে হবে। ভেঙে পড়তে পারে বিমান চলাচল ব্যবস্থা। ইয়েলোস্টোন আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাতের ভয়াবহতা সাম্প্রতিক আইসল্যান্ড আগ্নেয়গিরি উদিগরণকেও বহুগুণে ছাড়িয়ে যেতে পারে। এমনকি ১৯৮০ সালে মাউন্ট হেলেন্স আগ্নেয়গিরির উদিগরণ থেকেও হাজারগুণ বেশি শক্তিশালী হবে ইয়েলোস্টোন আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ।
মানুষের ইতিহাসে ৬ লাখ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো এ ধরনের একটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত না থাকায় এ মুহূর্তে তারা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।
উথাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ইয়েলোস্টোন আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ বব স্মিথ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ‘আগ্নেয়গিরির লাভাস্তর ওপরে ওঠার ঘটনা খুবই আশঙ্কাজনক। প্রথমদিকে আমরা শুধু এটা থেকে উদিগরণ ঘটতে পারে কিনা, সেদিকেই নজর রাখছিলাম। একসময় আমরা দেখলাম, গলিত লাভাটা ১০ কিলোমিটার নিচে আছে। সেজন্য আমরা অত বেশি চিন্তিত ছিলাম না। কিন্তু গলিত লাভার এই স্তরটা যদি দুই বা তিন কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসে, তাহলে সেটা আমাদের জন্য বড় ধরনের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক রবার্ট স্মিথ সম্প্রতি এই আগ্নেয়গিরি নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে ভূগর্ভস্থ স্তরের পুরোটাই গলিত পাথর দিয়ে ভর্তি। কিন্তু আমাদের কোনো ধারণা নেই যে, কবে বা কখন এই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাত ঘটতে পারে অথবা গলিত পাথরগুলোর চঞ্চলতা স্তিমিত হয়ে আগ্নেয়গিরিটা আবার ঘুমিয়ে পড়তে পারে।
[তথ্যসূত্র- এখানে]
আমি এন.সি.। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 46 টি টিউন ও 208 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ভয়ঙ্কর সুন্দর। ঢাকায় হলে ভাল হত।