টেকটিউনসের সবাইকে স্বাগতম এবং শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আমরা দেখব বিশ্বের সব বিখ্যাত কোম্পানীর CEO রা কেমন ইনকাম করেন। মূলত বিশ্বের যেসব টপ র্যাঙ্কের কোম্পানী আছে তাদের সিইও রাই এর ভেতর অনর্ভূক্ত হয়েছেন। ২০১৪ সালের জরিপ অনুযায়ী দেখা গেছে যে ফক্স (Fox), ডিসনি (Disne), সিবিএস (CBS) এসব কোম্পানীর স্টক দ্বিগুণ পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সেই সাথে জড়িত তাদের কোম্পানীর সিইও (CEO) দের ইনকামও।
TheWrap নামের একটা ওয়েবসাইট বিশ্বের টপ বেতনের সিইও দের একটা লিস্ট প্রতি বছরই তৈরী করে থাকে। তাদের এই জরিপে দেখা গেছে যে লায়ন্সগেট (Lionsgate) এর সিইও জন ফেলদিমার এর ইনকাম এই বছর ৯৭% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তার বর্তমান ইনকাম ১২.৬ মিলিয়ন ডলার এবং ভায়াকম (Viacom) এর চেয়ারম্যান সামনার রেডস্টোন এর ইনকাম দাড়িয়েছে ৯৩.৬ মিলিয়ন। তিনি অবশ্য সিবিএস এর ও সিইও পদে রয়েছেন। এসব জরিপে বিশ্বে টপ ১০ জন ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে যারা তাদের কাজের জন্য সবথেকে বেশী অর্থ পেয়ে থাকেন।
এক্ষেত্রে দেখা গেছে যে বিভিন্ন কোম্পানীর সিইও (CEO) এর বেতন বিভিন্ন হারে বেড়েছে বা কমেছে। এই বিষয়ে তাদের কোম্পানীর পারফরমেন্সও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। কোম্পানীর অর্থনৈতিক অবস্থার উপর ভিত্তি করেও অনেকের ইনকাম কম বেশী হয়ে গেছে।
যেমন অ্যাপেল সিইও টিম কুক এর ইনকাম লায়ন্সগেট (Lionsgate) এর সিইও CEO এর থেকে অনেক কম দেখা গেছে। লায়ন্সগেট (Lionsgate), ভায়াকম (Viacom) ও সিবিএস (CBS) একসাথে ৪.২ মিলিয়ন ডলার প্রোফিট অর্জন করেছে। ফলে তাদের সিইও (CEO) এর ইনকাম ও সেই হারে বেড়েছে। আবার দেখা গেছে ফেসবুকের সিইও (CEO) মার্ক জুকারবার্গের অবস্থান এই লিস্টে সবার নীচে এবং তার ইনকাম দাড়িয়েছে ২১ মিলিয়নের ও কম।
বিভিন্ন কোম্পানীর এক্সিকিউটিভ যেমন কুক, জুকারবার্গ এবং নেটফিক্স এর সিইও রেড হেস্টিং স্টক মার্কেটে প্রচুর পয়সা কামিয়েছেন। জুকারবার্গই শুধু স্টক মার্কেট থেকে পেয়েছেন ২.৩ বিলিয়ন ডলার।
এখানে যেসব এক্সিকিউটিভ অফিসারদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সবক্ষেত্রে তাদের বাৎসরিক বেতনটাই বলা হয়েছে।
প্রথমে ১০ নম্বরে আছেন জুকারবার্গ। তিনি গত বছর মোট ৬৫১১৬৫ ডলার ইনকাম করেছেন যেটা তার আগের বছরের ইনকামের থেকে ২ মিলিয়ন ডলার কম। অবশ্য মার্ক জুকারবার্গ স্টক মার্কেট থেকে একটা হিউজ পরিমাণ ডলার ইনকাম করেন। তিনি স্টক মার্কেট থেকে ৩.৩ বিলিয়ন ডলার ইনকাম করেছেন যেটা ফেসবুকের জন্য যথেষ্ঠ। তাই, ফেসবুকের ইকোনোমিক্যাল স্ট্যাটাস এখনও বেশ ভালই। তার বর্তমান ইনকাম বাংলাদেশের টাকায় ৫ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা।
টীম কুকের বেতন তার মত একটা বিখ্যাত কোম্পানীর সিইও হিসেবে বেশ কমই দেখাবে। কারণ, অ্যাপল হল বিশ্বের সবথেকে বড় একটা টেকনোলজিক্যাল কোম্পানী। কিন্তু, এই অ্যাপেল এক্সিকিউটিভ স্টক মার্কেট থেকে একটা বড় অংকের ডলার ইনকাম করে থাকেন। তার বর্তমান ইনকাম বাংলাদেশের টাকায় প্রায ৩২ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা।
যদিও অ্যাপলের স্টক গত কয়েক বছরে বেশ ধস নেমেছে কারণ তারা গত কয়েকবছরের ভেতর কোন নতুন চমক পাবলিকের সামনে হাজির করতে পারনি। তাদের লাস্ট পো্রডাক্ট ছিল আইপ্যাড। সেটাও ৪ বছর আগের ঘটনা। কুক এই বছর স্টক মার্কেট থেকে খুব একটা বেশী ইনকাম করতে না পারলেও তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা এখনও বেশ ভাল পর্যায়েই আছে।
জন ফেলদিমার এই বছর প্রায় তার আগের স্যালারীর দ্বিগুণ পরিমাণ বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন। তার কোম্পানী লায়ন্সগেট এই বছর ৯৭% প্রোফিট অর্জন করেছে যেটার মূলে ছিল “The Hunger Games” এবং “Twilight” এবং টিভি সেলস। তার মোট ইনকামের ১.৩ মিলিয়ন আসে তার স্যালারী থেকে, ৬ মিলিয়ন বোনাস থেকে, ৩.৬ মিলিয়ন আসে স্টক থেকে এবং ১.৩ মিলিয়ন আসে নন ইকুইটি ইনসেনটিভ থেকে। লায়ন্সগেট এর শেয়র এই বছর ৭০ % বেড়েছে এবং এটাও তার আয়ের একটা বড় উৎস। তার বর্তমান ইনকাম বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ৯৮ কোটি ৭ লক্ষ টাকা।
এই কোম্পানীর সিইও এবং কোম্পানী একটা বড় অংশ লাভ করে তাদের টিভি সো Nashville, ” থেকে। এবং হাঙ্গার গেমস এর রকিং পারফরমেন্সও এই ব্যাপক প্রোফিটের পেছনে অনেকটা দায়ী।
রাপার্ট মারডক এর বিগত বছরের ইনকাম প্রায় ১.১ মিলিয়ন ডলার কমে গিয়েছে যেখানে তার আগের ইনকাম ছিল ২৮.৯ মিলিয়ন ডলার। এটা থেকে দেখা যায় যে তার মোট ইনকাম এই বছর ৩.৬% হারে কমে গিয়েছে। মারডক ২০১২ সালে ৩০ মিলিয়ন এবং ২০১১ সলে ৩৩.৩ মিলিয়ন ডলার আয় করেন। তার বর্তমান ইনকাম বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ২২৪ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা।
এক বছরের নিউজ স্ক্যান্ডালের শেষে তার কোম্পানী বেশ রকিং এই ছিল। ২১ শতকে তার কোম্পানী ফ্লিম, টেলিভিশন সব অনেক সম্পদ এবং ২০ শতকে তার কোম্পানী ফক্স নিউজ সহ অনেক সম্পদের মালিক ছিল এবং এগুলে থেকে কোম্পানীর ইনকামও বেশ ভালই ছিল।
কমক্যাস্টের সিইও হবার পর কোম্পানীর সবকিছু নাটকীয়ভাবে চেঞ্জ হয়ে যায়। এটা বর্তমানে ফ্লিম এবং টেলিভিশন জায়ন্টদের ভেতরে ১০০% ই দখল করে আছে। ক্যামক্যাস্ট অবশ্যএখন টাইম ওয়ার্নার ক্যাবল কিনে নেবার একটা চুক্তি করছে যেটার মূল্য প্রায় ৪৫ মিলিয়ন ডলার।
এই চুক্তির পর কোম্পানীর স্টক প্রআস একটু কমে গিয়েছিল কিনউ তারপর এটা একাধারে বাড়তে থাকে। এই কোম্পানীটি এই বছরই প্রতি শেয়ারে ২৮% বৃদ্ধি এবং আদের আয়ে ৩% বৃদ্ধি করতে পেরেছে।
কমক্যাস্টের অথরিটি বোর্ড এই সাফল্যের জন্য রবার্টকে তার বেতন বৃদ্ধি করে দিয়েছে। তার বর্তমান ইনকাম বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ২৪৪ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।
ডিসনে কোম্পানীর সিইও ইগার এর স্টক স্থির ভাবে বেড়ে চলেছে। কিন্তু, তারপরও ইগারের বেতন কিছুটা কমিয়ে আনা হয়েছে কারণ এই ক্ষেত্রে বোর্ড এমন একটা বক্তব্য দিয়েছে যে আগের বছরের থেকে কোম্পানীর আউট পারফরমেন্স সন্তেষজনক নয়। এককথায় বলতে হয় ইগার কোম্পানীতে তার পজিশন ধরে রাখতে ব্যার্থ হয়েছে।
এই কোম্পানীর ক্যেবল বিজনেস এখনও পর্যন্ত সবথেকে লাভজনক একটা ভাত যেখান থেকে কোম্পানী প্রচুর অর্থ ইনকাম করে থাকে। আর RSPN একটা বড় অংশ যেখান থেকে এটার অনেক ভাল এসে থাকে। এটার ফ্লিম স্টুডিও যেটা গত কয়েক বছর ধরে ডাউন হয়ে রয়েছে, তারপরও এটা কোম্পানীকে একটা লাভ দিয়ে যাচ্ছে। এটার বিভিন্ন মুভি যেমন থর-২, ক্যাপ্টেন আমেরিকা, এইসব মুভিগুলো ব্লকবাস্টার হবার কারণে কোম্পানীর লাভের ঝুলিতে বেশ অর্থকড়ি যোগ হয়েছে।
আর একটা বিষয় যেটা কোম্পানীর লোন এর কিছু বিষয় যেটার কারণে কোম্পানী ২০১৩ সালে কিছু অর্থ হারায় এটার জন্য ইগার এর ভুল ডিসিশনকেই দায়ী করা হয়েছে। তার বর্তমান ইনকাম বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ২৬৭ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা।
ডাইম্যান এই কোম্পানীতে এমন একটা সময় জয়েন করে যখন এটার একটা চরম অর্থনৈতিক দূরাবস্থা চলছে। কোম্পানীর স্টক এর অবস্থাও ছিল করুন। তিনি জয়েন করার পর কোম্পানীর ইনকাম যেকোনভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এবং ভিয়াকমের ভাগ্য পরিবর্তনকারী হিসেবে তার বেতনও ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে।
গত কয়েক বছরে ডাইম্যান কোম্পানীর ক্যাবল ডিভিশন এর পারফরমেন্স এর অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হন। যার ফলে কোম্পানীর আয় অনকাংশে বেড়ে যায়। তার ফলে ডাইম্যান ১০ মিলিয়নের ও বেশী স্টক থেকে আয় করেন, স্টক অপশন থেকে ৬ মিলিয়ন আয় করেন এবং ক্যাম বোনাস হিসেবে তার ইনকাম ছিল ১৬.৬ মিলিয়ন। তার বেস স্যালারী ছিল ৩.৫ মিলিয়ন ডলার। তার বর্তমান ইনকাম বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ২৮৯ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা।
সিবিএস করপোরেশনের সিইও লেসলি মুনভেস শেষ বছর অনেক ভাল একটা বছর কাটিয়েছেন। তার ইনকাম ছিল ৬৬.৯ মিলিয়ন ডলার। তার ইনকামের ভেতর ৩.৫ মিলিয়ন আসে স্যালারী থেকে, ২৮.৫ মিলিয়ন আসে বোনাস থেকে এবং ২৬.৫ মিলিয়ন আসে স্টক অ্যাওয়ার্ড থেকে। সিবিএস কপোরএরশনের স্টক গত বছর প্রায় ৭০% বেড়ে গেছে এবং এতে করে কোম্পানীর অর্থনৈতিক অবস্থাও চরমভাবে প্রভাবিত। তার বর্তমান ইনকাম বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ৫২০ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা।
সামনার রেডস্টেন আবারও এই বছর সবাইকে টপকে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। তিনিই ইনকামের দিক থেকে সব কোম্পানীর সিইও দের শীর্ষে রয়েছেন। তিনি একাধারে ২ টা কোম্পানী সিবিএস এর এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান এবং ভিয়াকমের চেয়ারম্যান। ফলে তার ইনকাম অন্যান্য দের থেকে বেশী হওয়াই স্বাভাবিক।
সিবিএএস এ তার আয় ৫৭.২ মিলিয়ন ডলার, এটা বিগত বছরের থেকে ৮৭.২% বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি অবশ্য ভিয়াকম থেকে আবার ৩৬.২ মিলিয়ন ডলার পেয়ে থাকেন। তার বর্তমান ইনকাম বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ৭২৬ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা।
ইহায়ু এর সিইও মারিসা মায়ার তার কাজের জন্য একটা বড় এমাউন্ট নিয়ে থাকেন। এটা হল ১১.৭ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু তিনি এখনই ২৪.৯ মিলিয়ন ডলার ইনকাম করেন। তার বর্তমান ইনকাম বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ১৯৩ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা।
এটা রেপফিক্স এর সিইও রেড হেস্টিং এর ছয় গুণ। এই কোম্পানীটির সিইও তাদের আয় ৪ মিলিয়ন বাড়িয়েছে যেখানে ২ মিলিয়ন স্যালারী এবং বাদবাকীটা আসে স্টক থেকে।
আমরা দেখতে পাই যে ফেসবুকের মত একটা কোম্পানীর সিইও যেখানে লিস্টে সবার শেষে থাকেন সেখানে আসলেই যাদের নাম আসছে তারা নিজিদের পরিশ্রম ও মেধার জোরে এই পর্যন্ত পৌছাতে পেরেছেন। আর পৃথিবীর সবথেকে বেশী মেধাবী ও পরিশ্রমী লোকগুলোই এই তালিকায় স্থান পেয়ে থাকেন।
আজ এই পর্যন্ত। সবাই ভাল থাকবেন। পরবর্তী টিউনে আবার দেখা হবে।
আমি অরিন্দম পাল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 81 টি টিউন ও 316 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 20 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মানসিক ভাবে দূর্বল । কোন কাজই কনফিডেন্টলি করতে পারি না , তবুও দেখি কাজ শেষ পর্যন্ত হয়ে যায় । নিজের সম্পর্কে এক এক সময় ধারণা এক এক রকম হয় । আমার কোন বেল ব্রেক নেই । সকালে যে কাজ করব ঠিক করি , বিকালে তা করতে পারি না । নিজের...
আপডেটেড লিষ্টটা দেখে ভালই লাগল…..মজা পেলাম বেশ 🙂