ডয়চে ভেলে এবারে নতুন রূপে শুরু করেছে ‘দ্য ববস - বেস্ট অব অনলাইন অ্যাক্টিভিজম’ অ্যাওয়ার্ড। ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’কে ফোকাসে রেখে ১১তম বারের মতো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা সাহসী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এবং ব্যতিক্রমী বিভিন্ন প্রকল্পকে পুরস্কার দিতে যাচ্ছে ডয়চে ভেলে। ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’ ক্যাটাগরিতে এমন এক ব্যক্তি বা প্রকল্পকে পুরস্কার প্রদান করা হবে, যিনি বা যারা বাকস্বাধীনতা এবং মানবাধিকার রক্ষায় সক্রিয় এবং ইন্টারনেটে মুক্ত আলাপ-আলোচনাকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
‘দ্য ববস’-এর অন্য বিভাগগুলোতেও এসেছে পরিবর্তন। সামাজিক পরিবর্তন, গোপনীয়তা ও তথ্য সুরক্ষা, শিল্প ও সংবাদমাধ্যম—এই ক্যাটাগরিগুলোতে বিজয়ীদের নির্ধারণ করবেন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও ডিজিটাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ কর্তৃক গঠিত আন্তর্জাতিক জুরি।
ডয়চে ভেলের মহাপরিচালক পেটাল লিমবুর্গ দ্য ববস-এর পরিবর্তন সম্পর্কে বলেন, ‘আমাদের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ডয়চে ভেলের মূল ইস্যু বাকস্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ বছর তিনটি মিশ্র বিভাগের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার ফলে ‘গ্লোবাল অনলাইন কমিউনিটি’র বাইরেও ববস-এর একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে।’
সমাজের সঙ্গে যুক্ত বিষয় নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তি বা উদ্যোগ ‘সামাজিক পরিবর্তন’ বিভাগে মনোনয়ন পেতে পারেন। এক্ষেত্রে বিষয় হিসেবে থাকতে পারে শিক্ষা, লিঙ্গ বৈষম্য, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, পরিবেশ এবং জলবায়ু। অন্যদিকে তথ্য সংগ্রহ ও শেয়ার করার প্রক্রিয়া, তথ্যের সুরক্ষা, তথ্য সুরক্ষার সফটওয়্যার ও ওয়েবসাইট প্রভৃতি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে পুরস্কার প্রদান করা হবে গোপনীয়তা ও তথ্য সুরক্ষা বিভাগে। আর সমাজ সম্পৃক্ত বিষয়াদি শৈল্পিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে এমন প্রকল্প ‘শিল্প ও সংবাদমাধ্যম’ বিভাগের জন্য আদর্শ। তবে এই শৈল্পিক উপস্থাপনা হতে হবে ডিজিটাল মাধ্যমে। ছবি, ভিডিও, সংগীত, সাহিত্য—সব ধরনের কন্টেন্টই যোগ হতে পারে এই বিভাগে। এ ছাড়া মিডিয়া জগতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে অথবা ‘সিটিজেন জার্নালিজম’-এর মাধ্যমে দুষ্প্রাপ্য তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে—এমন প্রকল্পও এই বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হবে।
‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’ অ্যাওয়ার্ডের বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি। এই বিজয়ী এবং দ্য ববস-এর জুরি বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে আগামী ২৩ জুন, জার্মানির বন শহরে অনুষ্ঠিতব্য গ্লোবাল মিডিয়া ফোরামে।
১৪ সদস্যের জুরি
ডয়চে ভেলের দ্য ববস প্রতিযোগিতা ১৪টি ভাষায় অনুষ্ঠিত হয়—আরবি, বাংলা, চীনা, জার্মান, ইংরেজি, ফরাসি, হিন্দি, ইন্দোনেশীয়, ফার্সি, পর্তুগিজ, রুশ, স্প্যানিশ, তুর্কি এবং ইউক্রেনীয়। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এই ভাষাগুলোতে অনলাইনে তাদের মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন আগামী ২১ মার্চ পর্যন্ত।
http://thebobs.com/BENGALI লিংকে পাওয়া যাবে এই আয়োজনের বিস্তারিত তথ্য। অ্যাওয়ার্ডের জুরি সদস্যরা হলেন—নেইলা নাখাভাটি (আরবি), আলেক্সান্ডার মরোজোভ (রুশ), সানাম দোলাতশাহি (ফার্সি), মাউরিসিও সান্তোরো (পর্তুগিজ), জর্জিয়া পপেলওয়েল (ইংরেজি), ফাল্ক স্টাইনার (জার্মান), হু ইয়ং (চীনা), এরকান সাকা (তুর্কি), রেনাটা আভিলা (স্প্যানিশ), ফ্লোরিয়ান গিমবিস (ফরাসি), ওকসানা রমানইয়ুক (ইউক্রেনীয়), শহীদুল আলম (বাংলা), আলিসা ওয়াহিদ (ইন্দোনেশীয়) এবং রোহিনী লক্ষণে (হিন্দি)।
অনলাইন ভোটে পিপল’স চয়েজ
জুরি অ্যাওয়ার্ডের পাশাপাশি পিপল’স চয়েজ পুরস্কারও থাকছে বরাবরের মতো। অনলাইন ভোটের এই ক্যাটাগরিতে বিজয়ী নির্ধারণ করা হবে। আগামী ৯ এপ্রিল থেকে শুরু হবে এই ক্যাটাগরির অনলাইন ভোটিং। ভাষাভিত্তিক বিভাগগুলোতে ভোটের মাধ্যমে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বীর একজনকে বিজয়ী করতে পারবেন অনলাইন ভোটাররা।
চলতি বছর দ্য ববস প্রতিযোগিতার মিডিয়া পার্টনাররা হচ্ছে—টেরা, ল্য নাচিওন, আইফেক্স, মাডা মাসর, সামহয়্যার ইন ব্লগ, বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকম, গ্লোবাল ভয়েসেস অনলাইন, হোরোমাডস্ক, গোয়া, রাশিয়ান জার্নাল, মাইনেট, মিডিয়াটাভা, চায়না ডিজিটাল টাইমস এবং ওয়াজা।
নিউজঃ দৈনিক ইত্তেফাক