আসসালামুআলাইকুম,
আমি কিছুই বলবনা সরাসরি পড়ে নিন-
'প্রথম আলো অফিসে গিয়ে দেখি, এমন গুনাহর কাজ বিধর্মীরাও করে না
ভাই, মতিউর রহমান ইসলামের শত্রু, এত দিন শুধু শুনেছি। কয়েক দিন আগে প্রথম আলো অফিসে গিয়ে নিজের চোখে দেখে এলাম। জরুরি একটা কাজে গিয়েছিলাম কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো অফিসের দোতলায়। একপর্যায়ে এস্তেনজা (প্রস্রাব) সারার জন্য টয়লেটে গিয়ে আঁতকে উঠলাম। একি, পেশাবখানাগুলো সব কেবলামুখী! এ ধরনের গুনাহর কাজ তো বিধর্মীরাও করে না।' ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু বকর সিদ্দিক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউয়ের সিএ ভবনে ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় প্রথম আলো কার্যালয়টি। ২০০৬ সালে সেটি নতুন করে ডেকোরেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সময় মূল কার্যালয় দোতলার বার্তা বিভাগে পত্রিকাটির সম্পাদক মতিউর রহমানের কক্ষের পাশে তৈরি করা ওয়াশরুমের প্রস্রাবখানাগুলো আগের নকশা বদলে পশ্চিমমুখী অর্থাৎ কেবলার দিকে মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। কর্মীদের কেউ কেউ তখন এ ব্যাপারে আপত্তি তোলেন এবং মতিউর রহমানকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত বদলানোর অনুরোধ জানান। প্রথম আলো সম্পাদক তাঁদের অনুরোধ উপেক্ষা করে তাঁর কক্ষের পাশের প্রস্রাবখানাগুলো কেবলামুখী করেই নির্মাণের সিদ্ধান্ত দেন। শুধু তা-ই নয়, এ বিষয়ে প্রকাশ্যে আপত্তি তোলা কয়েকজন কর্মীকে একপর্যায়ে প্রথম আলো থেকে বিদায় নিতে বাধ্য করা হয়।
২০০৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন 'আলপিন'-এ মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি এবং তাঁর নাম বিকৃত করে কার্টুন ছাপানোর পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন সারা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তাঁদের বিক্ষোভের মুখে প্রথম আলো সম্পাদক তড়িঘড়ি করে ছুটে যান জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের তৎকালীন খতিব মাওলানা উবায়দুল হকের কাছে। তিনি প্রথম আলো সম্পাদককে পুরো মুসলিম উম্মাহর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেন। কিন্তু ক্ষমা প্রার্থনার নামে পরদিন কয়েকটি মাত্র বাক্যে দায়সারা গোছের একটি লেখা প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়। তবে ধর্মপ্রাণ মানুষ এটা মেনে নিতে পারেননি। যার ফলে তাঁরা সরকারের কাছে পত্রিকাটির প্রকাশনার অনুমোদন বাতিল ও পূর্ববর্তী সব সংখ্যা নিষিদ্ধ করে প্রথম আলো সম্পাদকের শাস্তির দাবিতে প্রথম আলো কার্যালয় ঘেরাও করেন। নিরুপায় মতিউর রহমান আবার ছুটে যান বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিবের কাছে। তাঁর শরণাপন্ন হওয়া প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের সামনে খতিব তখন বলেছিলেন, 'এত বড় গুনাহ, আর এক ইঞ্চি মাত্র ক্ষমা!' তখন প্রথম আলো সম্পাদকের অনেক অনুনয়-বিনয়ের পর জাতীয় মসজিদের খতিব আল্লাহর কাছে তওবা এবং সারা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার শর্তে জনরোষ থেকে মতিউর রহমানকে বাঁচিয়ে দেন। পরদিন ছবিসহ কয়েক কলামজুড়ে তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনার খবর ছাপিয়ে সে-যাত্রা পার পেয়ে যায় প্রথম আলো।
সেই ক্ষমা প্রার্থনার সময় প্রথম আলো সম্পাদক তখন শরিয়তবিরোধী কোনো কাজ করবেন না বলে মুচলেকা দিলেও তাঁর নিজের কক্ষের পাশে তৈরি করা কেবলামুখী প্রস্রাবখানাগুলোর দিক পরিবর্তনের কোনো উদ্যোগ নেননি।
এ ব্যাপারে ইসলামের বিধিবিধান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মোহাদ্দিস মুফতি ওয়ালিউর রহমান খান বলেন, 'কেবলামুখী হয়ে প্রস্রাব-পায়খানা করা সম্পূর্ণ ইসলামবিরোধী কাজ এবং বড় রকমের গুনাহ। এ বিষয়ে সহিহ্ হাদিসে হুজুর পাক (সা.) পরিষ্কারভাবে নিষেধ করেছেন।' তিনি একটি হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, 'হুজুর পাক (সা.) বলেছেন, তোমরা কাবা শরিফের দিকে সম্মুখ কিংবা পেছন ফিরে প্রস্রাব-পায়খানা কোরো না।'
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এ বিষয়ে বলেন, 'কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কেবলামুখী হয়ে প্রস্রাব-পায়খানা করে তাহলে নিশ্চিতভাবেই সে হারাম কাজ করল। এ ব্যাপারে সহিহ্ হাদিসে পরিষ্কারভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।'
ধর্মীয় বিধি-নিষেধ সম্পর্কে বঙ্গভবন জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মো. সাইফুল কবির বলেন, 'কেবলামুখী হয়ে প্রস্রাব-পায়খানা করাকে সহিহ্ হাদিসে ঘোরতর পাপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে- কেবলামুখী অর্থ পশ্চিমমুখী নয়, কাবামুখী। বাংলাদেশ থেকে কাবা শরিফ পশ্চিম দিকে হওয়ায় বাংলাদেশে পশ্চিম দিককে কেবলা ধরা হয়।'
মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের সাংবাদিক আবাসিক এলাকা মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'কেবলামুখী হয়ে প্রস্রাব-পায়খানা করা যে হারাম কাজ, এ ব্যাপারে ইসলামী চিন্তাবিদদের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই। এটা অত্যন্ত গর্হিত অন্যায়।'
কেবলামুখী হয়ে প্রস্রাব-পায়খানা করাকে সামাজিকভাবেও অনৈতিক কাজ বলে মনে করেন বেশ কয়েকজন স্থপতি ও ডেভেলপার কম্পানির কর্ণধাররা। এ বিষয়ে তাঁরা সবাই জানিয়েছেন, একটি বাড়ি বা ভবন নির্মাণের আগে তাঁরা কেবলার বিষয়টি ভালোভাবেই মাথায় রাখেন। কোনো বাড়ি বা ভবনে টয়লেট যেন কোনো অবস্থায়ই কাবামুখী কিংবা কাবার দিকে পেছন ফিরে না হয়, সে ব্যাপারে তাঁরা অতি সতর্কতা অবলম্বন করেন।
এমনকি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণের বাইরে সামাজিকভাবেও খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশে শুধু ইসলাম ধর্মাবলম্বীরাই নন, অন্য ধর্মের অনুসারীরাও বাড়িঘর নির্মাণের ক্ষেত্রে কেবলা অর্থাৎ পশ্চিমমুখী না করে তাঁদের টয়লেটগুলোকে উত্তর-দক্ষিণমুখী করে নির্মাণ করে থাকেন।
প্রথম আলোর এসব ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ এবং তাদের পাঠক মহলও এসব বিষয়ে বিরক্ত। একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রথম আলোর অনেক পাঠকই তাদের কার্যালয়ে ফোন করে এসব ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে মতিউর রহমানকে সরে আসার আহবান জানিয়েছেন।
কাজেই আমাদের মুসলমানদের প্রয়োজন আগে নিজেরা ঠিক হওয়া।
এলেক্সা রেঙ্কিয়ে এখনও গুগল-ফেসবুক আর ইউটিউবই আছে। সুতরাং বিতর্ক নয় চাই সঠিক নেতৃত্ব যে ইসলামকে সঠিক স্থানে নিয়ে যেতে পারবে। আসুন সবাই মিলে আগে নিজের ঘর ঠিক করি।
ধন্যবাদ
সম্পূর্ণ খবরটিদৈনিক কালের কন্ঠের-
আমাদের গ্রুপ- http://facebook.com/marksitbd
আমি আরিফ আহমাদ চৌধুরী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 58 টি টিউন ও 417 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।