গ্রামীনফোন, দেশের যে জায়গায়-ই যান এই একটা ফোন কোম্পানির নেটওয়ার্ক পাবেন এটা মোটামুটি ৯০% নিশ্চিত করে বলা যায়। তাই এই একটা কারনে হলেও আজ অবধি গ্রামীনফোন এর গ্রাহকসংখ্যা বাংলাদেশে অন্য সকল ফোন কোম্পানির চাইতে অনেক বেশী এবং কিছু মানুষ আছে যারা একবার একটা নাম্বার নিয়ে আশেপাশে পরিচিত হয়ে যান এবং সেই নাম্বারটা চাইলেও আর পরিবর্তন করতে পারেন না। আমার ধারণা এই একটা ব্যাপারকে তারা গ্রাহকের দুর্বলতা হিসেবে বিবেচনা করে আর বেশীরভাগ ক্ষেত্রে বাস্তবতা অনেকটা এরকমই। হয়ত মানুষ ভেদে সেটা পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু আমি সেটাকে ধরার বাইরেই রাখলাম।
আমার আম্মা ও একজন জিপি ইউসার এবং তিনি প্রায় আট বছর বা তারও বেশী সময় ধরে ব্যবহার করছেন। যেহেতু এই নাম্বার এই তিনি সবার কাছে পরিচিত তাই অন্যান্য কোম্পানীর লোভনীয় অফার কখনই তিনি ছুয়ে দেখতে পারেননি। তাই গ্রামীনের বিভিন্ন অফার থেকেই নিজের উপোযোগী প্যাকেজটাই বেছে নিলেন, আর সেটা নিয়েই সন্তুষ্ট ছিলেন। আর সেটা ছিল গ্রামীন-গ্রামীন .৭৯ টাকা আর এফ-এন-এফ এ .৪৯ টাকা প্রতি মিনিট।
কিছুদিন আগে তিনি আমাকে ফোন করে জানালেন যে উনার মোবাইলে বেশি টাকা কাটছে এবং হিসেব করে দেখেছেন যে আমার সাথে এফ-এন-এফ করা সত্যেও ১ টাকা প্রতি মিনিট কাটছে। প্রথমে আমি ব্যাপারটা উরিয়ে দিয়েছিলাম পরে একদিন আম্মার কথা চিন্তা করে গ্রামীনফোন কাস্টমার কেয়ার এ গেলাম, তারপর সমস্যাটার কথা জানানোর পর তারা জানাল যে ওটা নাকি মাই-জোন নামক একটা সার্ভিস ব্যাবহারের জন্য হচ্ছিল পরে তারা ঠিক করে দেয়।
পরে বুঝতে পারি আসল ব্যাপারটা কোথায়। আসলে ঢাকায় কিছুদিনের জন্য আম্মা বেড়াতে এসেছিলেন। তখন ঢাকার ফার্মগেট, কলাবাগান, গ্রীন রোড, ধানমন্ডি,নিউমার্কেট সহ আরও বেশ কয়েকটি এলাকায় জিপির কিছু ভাড়া করা সদস্য রাস্তায় বেরিয়েছিল “আচমকা সারপ্রাইজ” নামে একটি প্রোগ্রাম নিয়ে। তাদের কাজ ছিল গ্রামীনফোন ব্যাবহারকারী খুজে বের করা আর তাদের নাম, মোবাইল নাম্বার লিখে রেখে মাইজোন নামক সার্ভিসটা এক্টিভেট করে দেয়া। আম্মাও তাদের খপ্পরে পরেছিলেন।
মাইজোন সার্ভিস্টা ছিল এরকম যে, যখন ফার্মগেট, কলাবাগান, গ্রীন রোড, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট এলাকার নেটওয়ার্কের উপর চাপ কম থাকবে তখন গ্রাহকেরা বিভিন্ন হারে ডিস্কাউন্ট পাবেন। মাইজোন এক্টিভেটেড এলাকায় এই ডিসকাউন্টটা বিভিন্ন সময়ে ১০%-৮৩% পর্যন্ত যেত বা এখনো যায়(আগের চাইতে হারটা কমে গেছে)। ডিসকাউন্টটা fnf নাম্বার এ এক টাকা এবং অন্যান্য নাম্বার এ ১.৫টাকা প্রতি মিনিটের উপর দেয়া হয়। নিসঃন্দেহে একটি ভাল সার্ভিস 🙁
কিন্তু এটা গ্রামীনফোনের সার্ভিস, বিজনেস পলিটিক্স না থাকলে হয় কিভাবে?
এখানে সমস্যা হল আপনার যখন ডিসকাউন্টটা থাকবে না বা আপনি মাইজোন নির্ধারিত এলাকার বাইরে যাবেন তখন আপনার কলের উপর প্রতি মিনিটে নন fnf নাম্বার এ ১.৫টাকা এবং fnfনাম্বার এ ১ টাকা প্রতি মিনিট যা সচরাচর যথাক্রমে .৭৯টাকা এবং .৪৯টাকা প্রতি মিনিট হারে কাটার কথা। ঠিক এই সমস্যাটা আমার মায়ের ক্ষেত্রে হয়েছিল, কারন তিনি কিছুদিন ঢাকায় থেকে তারপর বাড়িতে চলে যান।
তাই আপনাদেরকে বলছি, যদি আপনি মাইজোন নির্ধারিত এলাকার বাইরে বসবাস করেন এবং আমার মায়ের মত ঝামেলা বোধ করেন, তবে *৬৬৬*৯# চেপে এই সার্ভিসটা ডি-এক্টিভেট করে ফেলুন, এ এক নীরব ঘাতক।
আর আপনি যদি মাইজোন নির্ধারিত এলাকার ভিতরে বসবাস করে থাকেন তবে আপনার জন্য একটা ছোট্ট টিপস-
সাধারণত রাত ২টা থেকে সকাল ৯.৩০ পর্যন্ত এবং দুপুর ও বিকেল বেলায় কিছু সময় এইসব এলাকায় ৮৩% ডিস্কাউন্ট পাওয়া যায়। তখন আপনি মাইজোন সার্ভিসটা *৬৬৬*১# চেপে এক্টিভেট করে ফেলুন। যে কোনো গ্রামীনফোন নাম্বার এ .২৫টাকা প্রতি মিনিট এ কথা বলতে পারবেন। কথা শেষে অবশ্যই *৬৬৬*৯# চেপে এই সার্ভিসটা ডি-এক্টিভেট করতে ভুলবেন না যেন।আপনাদের কিছুটা হলেও সাশ্রয় হবে আশা করি।
আমি নীলাকাশ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 16 টি টিউন ও 149 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
দাদা এই খবর আজকে দিচ্ছেন।এটা আরো ৬ মাস আগে চালু হয়েছে।প্রথমে ঢাকার রায়বাজার,ধানমন্ডি এবং বগুড়ায় এই সেবাটি চালু ছিল এখন মোটামুটি বিস্তার করছে।বর্তমানে বগুড়া জেলার ১২টি থানার সব কয়টি গ্রামে এই সেবা বহাল আছে।তবে আপনি *666*9# এর কথা বলেছেন এটা দিয়ে মাঝে মাঝে Service টি বন্ধ হয় না।এ জন্যে *666# এ গিয়ে তার নির্ধারিত মেনু অনুসরন করলেও হয়।এতে চার্জ প্রযোজ্য নয়