আধুনিক চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের ভূমিকা-২

টিউন বিভাগ চিকিৎসা বিজ্ঞান
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

প্রিয় টেকটিউনস বন্ধুরা আশাকরি সবাই ভালই আছেন এবং সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের মাঝে  ‘আধুনিক চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের ভূমিকা-২’ এই বিষয় ‍নিয়ে আপনাদের সামনে কিছু কথা বলার চেষ্টা করব। আশা করছি আপনারা বিষয়টি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়বেন ইনশাল্লাহ।

আপনারা জানেন গত সেশনে আমি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে ২টি বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। তাই আজকে আমি তারপর থেকে ধারাবাহিক ভাবে আলোচনা করব ইনশাল্লাহ।

৩। আলট্রাসনোগ্রাফিঃ আমরা সকলে নিশ্চয় অবগত আছি যে আলট্রাসনোগ্রাফি এর আবিষ্কার আধুনিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ চিকিৎসা সেবার যন্ত্র। তাই এর ভূমিকা চিকিৎসা ক্ষেত্রে অপরিসীম।

আলট্রাসনোগ্রাফি সবার শুরুতে ব্যবহার করেন ১৯৩৭ সালে কার্ল ডুসিক এবং তার ভাই ফ্রেডরিখ। তারা ব্যবহার করেন মস্তিষ্ক গহ্বরের টিউমার সনাক্ত করতে। এর দ্বারা সাধারণত শরীরের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, মাংস পেশি ইত্যাদির ছবি তোলা হয়।

এটি আসলে খুব উচ্চ কম্পাঙ্কেরে শব্দ ব্যবহার করে তার প্রতিধ্বনি কে শনাক্ত করা হয়। এর শব্দের কম্পাঙ্ক ১-১০ মেগাহার্টজ হয়ে ‍থাকে এজন্য একে আলট্রাসনোগ্রাফি বলা হয়ে থাকে। এটির ছবি সাধারণত ২ডি অথবা ৩ডি হয়ে থাকে।

আলট্রাসনোগ্রাফি যন্ত্রে  ট্রান্সডিউসার নামে একটি স্ফটিক থাকে। যা বৈদ্যুতিক শক্তি দিয়ে উদ্দীপ্ত করে উচ্চ কম্পাঙ্কের আলট্রাসনিক তরঙ্গ উৎপন্ন করা হয়। আলট্রাসনিক যন্ত্রে এই তরঙ্গকে একটা সরু বিমে পরিণত করা হয়। শরীরের ভেতরের যে অঙ্গটির প্রতিবিম্ব দেখার প্রয়োজন হয় ট্রান্সডিউসারটি শরীরের উপরের সে অংশে বিমটিকে শরীরের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়, রোগী সে জন্য কোন ব্যথা বা অস্বস্তি বোধ করে না।

 

 

 

আলট্রাসনোগ্রাফির কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারঃ

  1. এটি সবচেয়ে বেশী ব্যবহার হয় স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিজ্ঞানে। এর সাহায্যে ভ্রুনের আকার, গঠন, স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক অবস্থান ইত্যাদি জানা যায়।
  2. এর সাহায্যে জরায়ুর টিউমার এবং অন্যান্য পেলভিক মাসের উপস্থিতিও শনাক্ত করা যায়।
  3. পিত্তপাথর, হৃদযন্ত্রের ত্রুটি এবং টিউমার বের করার জন্যও এটি ব্যবহার করা হয়।

হৃৎপিন্ড পরীক্ষা করার জন্য যখন আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করা হয় তখন এই পরীক্ষাকে ইকোকার্ডিওগ্রাফি বলে।

অতএব বলা যায় আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে আলট্রাসনোগ্রাফির গুরুত্ব অপরিসীম।

 

৪। সিটি স্ক্যানঃ সিটি স্ক্যান শব্দটি ইংরেজী কম্পিউটেড টমোগ্রাফি স্ক্যান এর সংক্ষিপ্ত রুপ। টমোগ্রাফি হচ্ছে ত্রিমাত্রিক বস্তুর একটি ফালির বা দ্বিমাত্রিক অংশের প্রতিবিম্ব তৈরি করা। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই যন্ত্রের ব্যবহার অনেক।

১৯৭২ সালে হউনফিল্ড ও করম্যাক সিটি স্ক্যান কৌশল আবিষ্কার করেন। সিটি স্ক্যান যন্ত্রে একটি এক্সরে টিউব রোগীর শরীর কে বৃত্তাকারে ঘুরে এক্সরে নির্গত করতে থাকে ও আরেক পাশে ডিটেকটর প্রতিবিম্ব গ্রহন করতে থাকে। এটি আবিষ্কার করে আমাদের আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে অসামান্য অবদান রেখেছে।

সিটি স্ক্যান এর দ্বারা যে কাজ গুলো করা সম্ভবঃ

  • সিটি স্ক্যান এর সাহায্যে শরীরের নরম টিস্যু, রক্তবাহী শিরা বা ধমনি, ফুসফুস, ব্রেন ইত্যাদির পূর্ণাঙ্গ ছবি পাওয়া যায়।
  • যকৃৎ, ফুসফুস এবং অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার শনাক্ত করার কাজে সিটি স্ক্যান ব্রবহার করা হয়।
  • সিটি স্ক্যান এর প্রতিবিম্ব টিউমারকে শনাক্ত করতে পারে। টিউমারের আকার ও অবস্থান সম্পর্কে বলতে পারে।
  • মাথার সিটি স্ক্যানের সাহায্যে মস্তিষ্কের ভেতর কোনো ধরনের রক্তপাত হয়েছে কিনা, ধমনি ফুলে গেছে কিনা তা জানা যায়।
  • শরীরে রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা আছে কি না তা জানা যায়।

অতএব, সকল দিক বিবেচনা করে দেখা যায় আধুনিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে উপরোক্ত আবিষ্কৃত যন্ত্রের বিকল্প নেই। তো প্রিয় বন্ধুরা আজ এখানেই শেষ করলাম। দেখা হবে আগামী পর্বে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।

Level 1

আমি Abdur Rashid। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস