আমরা তো বর্তমানে অনলাইনে দিনের বেশিরভাগ সময় অ্যাক্টিভ থাকি। কিন্তু আপনি কখনো কি ভেবে দেখেছেন যে, কেন আমরা অনলাইনে এত বেশি সময় কাটাই?
এক্ষেত্রে আপনারা কেউ হয়তোবা বলবেন যে, আমি ভিডিও দেখি এবং কেউ হয়তোবা বলবে মোবাইলে ভিডিও গেম খেলি। তবে কথা যাই হোক, আমরা যে অনলাইনে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে থাকি এটি নিশ্চিত। কিন্তু আমরা কখনও এটি নিয়ে অনুসন্ধান করিনি যে, আমরা কেনই বা দিনের বেশির ভাগ সময় অনলাইনে কাটাচ্ছি এবং অনলাইনে আমি ইউটিউব এর এসব ভিডিও না দেখলে বা কি হবে?
আপনি দিনের বেশিরভাগ সময় অনলাইনে কেন কাটান, এটা নিয়ে আপনি চিন্তা না করলেও আমি কিন্তু এটি নিয়ে একটি ধারণা বের করেছি। আজকের এই টিউনটির মাধ্যমে আপনি সেটিই জানতে পারবেন। আজকের এই টিউন টি আমার অন্যান্য টিউন এর চাইতে একটু ব্যতিক্রমধর্মী হতে যাচ্ছে। কেননা আমরা যে অনলাইনে আমাদের ইচ্ছা অনুযায়ী সময় কাটাই, এটি সম্পর্কেও আপনার ভুল ধারণা ভেঙ্গে দেবো। চলুন তবে আজকের এই টিউন টি সম্পূর্ণ শুরু করা যাক।
তবে এখানে আমি আপনাকে আরও একটি কথা বলে নিচ্ছি। আর তা হচ্ছে, অনলাইন প্লাটফর্মে আপনি বেশি সময় ধরে কাটিয়ে থাকলে, এর সহজ এবং সুন্দর একটি প্রতিকার এই টিউনে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আজকে দেখানোর ট্রিকস টির মাধ্যমে আপনি অনলাইনে বেশি সময় কাটানো থেকে কিছুটা হলেও বাঁচতে পারবেন।
আপনি ধরুন, ইউটিউবে কোন ভিডিও দেখছেন। এক্ষেত্রে আপনি ইউটিউবে যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, একের পর এক ভিডিও দেখেই চলেছেন, এটি আপনি কিন্তু আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী দেখছেন না। এখানে ইউটিউবে আপনি ভিডিও দেখছেন ইউটিউব এর জন্য। ইউটিউব আপনাকে বেশি সময় ধরে ভিডিও দেখতে আকৃষ্ট করছে। আপনি যদি কোন একটি প্রয়োজনীয় ভিডিও দেখতে প্রথমে ইউটিউবে এসে থাকেন, তবে ইউটিউব পরবর্তীতে আপনাকে সেই ভিডিও দেখেই যেতে দেবে না।
এক্ষেত্রে আপনি ভুলে যান যে, আপনি কিসের জন্য ইউটিউবে এসেছিলেন। এভাবেই মূলত আপনি একের পর এক ভিডিও দেখতেই থাকেন। কিন্তু এভাবে করে ইউটিউবে এসে একের পর এক ভিডিও দেখার পেছনে রয়েছে ইউটিউব এর কারসাজি। ইউটিউব আপনাকে তাদের প্লাটফর্মে বেশি সময় ধরে রাখতে কাজ করছে। এবার আপনার মনে হতে পারে যে, ইউটিউবে ভিডিও দেখতে এসে আমিই তো একের পর এক ভিডিও তে ক্লিক করে ছিলাম; সেখানে ইউটিউব আমাকে কিভাবে ইউটিউবে ধরে রাখল?
এখানে আপনি হয়তোবা এই বিষয়টি প্রতিদিন লক্ষ্য করেন। কিন্তু এ বিষয়টি আপনি কখনো হয়তোবা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেন নি। চলুন তবে এবার জেনে নেওয়া যাক যে, কেন আপনি ইউটিউবে বেশি সময় ধরে রয়েছিলেন।
ইউটিউবে আপনি কেন বেশি সময় ধরে রয়েছেন এটি আপনি নিজেও জানেন। আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, আপনি যে সমস্ত ভিডিও ভালোবাসেন বা যে সমস্ত ভিডিও বেশি দেখে থাকেন, সে সমস্ত ভিডিও গুলো ইউটিউবে আপনাকে বেশি দেখানো হয়। তো, ইউটিউব আপনাকে কখনোই আপনার পছন্দের বাইরের ভিডিওগুলোকে সাজেস্ট করে না। তবে আপনার পছন্দের বাইরের কোন ভিডিও সাজেস্ট করলেও সেটি খুবই কম পরিমাণে হয়। তো ইউটিউব এটি কিভাবে করে?
মনে করুন, আপনি সালমান খানের গান দেখতে পছন্দ করেন। এবার আপনি কোন কারণে ইউটিউবে গিয়েই দেখলেন যে, ইউটিউব আপনাকে সালমান খানের গান গুলোকে সাজেস্ট করছে। কিন্তু এটি বর্তমানে আমাদের কাছে আজব মনে না হলেও আমাদেরকে তো একটুও ভাবতে পারে। কিভাবে এটি সম্ভব হল? আপনি সালমান খানের গান পছন্দ করেন, আর ইউটিউবে গিয়ে দেখলেন যে সালমান খানের ভিডিও গুলো আপনার হোমপেজে চলে এসেছে।
এখানে আপনাকে সালমান খানের সেই ভিডিও গুলো দেখানোর পেছনে কাজ করেছে মেশিন লার্নিং এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। আপনি কোন বিষয়ে বেশি আগ্রহী সেটি ইউটিউব এতদিনে আপনার থেকে জেনে নিয়েছে। আর বর্তমানেও আপনি যে সব ভিডিও গুলো দেখছেন বা দেখবেন এগুলো ইউটিউব তাদের মেশিন লার্নিং এর মাধ্যমে এনালাইসিস করতেই থাকবে। আপনি কোন ভিডিওতে ক্লিক করছেন, কি বিষয়ে সার্চ করছেন, কোন ধরনের ভিডিও কত সময় ধরে দেখছেন এবং সেসব ভিডিওতে কিরকম Like, Comment করছেন ইত্যাদি এই সমস্ত সকল বিষয়গুলো নিয়ে ইউটিউব বিশ্লেষণ করে।
এবার পরবর্তীতে আপনি যখন আবার ইউটিউবে প্রবেশ করবেন, তখন আপনাকে আর আলাদা করে সালমান খানের গান লিখে সার্চ করতে হবে না। বরং, এক্ষেত্রে ইউটিউব আগে থেকেই আপনার সম্বন্ধে সকল ডাটা গুলো নিয়ে রেখেছিল এবং আপনার প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী হোমপেজে সে সমস্ত ভিডিও গুলোকেই সাজেস্ট করবে। আরে ক্ষেত্রে এটি তাড়া করছে মেশিন লার্নিং এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মাধ্যমে। তবে এবার আপনার এখানে মনে হতে পারে যে, কি এই মেশিন লার্নিং? সমস্যা নেই, আমি এখানে মেশিন লার্নিং নিয়ে সংক্ষেপে আপনাকে কিছুটা ধারণা দিচ্ছি।
মেশিন লার্নিং: মেশিন লার্নিং এমন একটি প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে আগে থেকে কোন প্রোগ্রাম লেখা ছাড়াই কম্পিউটারকে এমন ক্ষমতা দেওয়া হয়, যাতে সে নিজে থেকেই শিখতে পারে। নিজে থেকেই কোন কিছুর ওপর একটি পূর্ণা-ঙ্গ ডাটা তৈরি করতে পারে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে সেই তথ্যকে পরিবর্তন এবং প্রয়োজন হলে নতুন তথ্য যোগ করতে পারে। যেখানে মেশিন লার্নিং এর মূল তত্ত্ব হচ্ছে, বিশাল পরিমাণ ডাটা থেকে নির্দিষ্ট ধরনের তথ্যের প্যার্টান খুঁজে বের করা। এরপর সেসব প্যাটার্নকে শ্রেণীবিন্যাস করা।
যাইহোক, আপনি মেশিন লার্নিং এর এই বিষয়টি বুঝেছেন কিনা সেটিই জানিনা। তবে Youtube-এ এভাবে করে আপনাকে ভিডিও দেখানোর পেছনে যে মেশিন লার্নিং এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কাজ করছে, এটি-তো আপনি নিশ্চিত হলেন। এক্ষেত্রে ইউটিউব আপনার অ্যাক্টিভিটির ওপর ভিত্তি করে একটি মডেল তৈরি করছে। এবার পরবর্তীতে আপনি যখন ইউটিউবে কোন ভিডিও দেখতে যান, তখন আপনাকে সেই সমস্ত ভিডিও গুলোই সাজেস্ট করা হয়, যেগুলোর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ভিডিওগুলো আপনি পূর্বে দেখেছিলেন। আর এভাবে করেই একের পর এক চলতে থাকে।
উপরের এত সমালোচনা থেকে আপনি হয়তোবা ইতিমধ্যে বুঝে গিয়েছেন যে আপনি ইউটিউবে কেন বেশি সময় ধরে রয়েছেন। এখানে আমি এই বিষয়টি আরও সহজভাবে উপস্থাপন করছি। ইউটিউবে আপনি বেশি সময় ধরে থাকার পেছনে কারণ হচ্ছে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং ইউটিউব এর মেশিন লার্নিং। ইউটিউবে আপনি যখন কোন একটি ভিডিও তে ক্লিক করছেন; তার মানে এই যে, আপনি সেই ভিডিওর প্রতি আকৃষ্ট। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে যদি সেই রিলেটেড ভিডিও আপনাকে আবার সাজেস্ট করা হয় তবে অবশ্যই আপনি সেই ভিডিও গুলো না দেখে যাবেন না।
এক্ষেত্রে আপনি সেই ভিডিও দেখলে করার পর অবশ্যই ইউটিউব আপনার পছন্দের বিপরীতে ভিডিওগুলো কে সাজেস্ট করে না। কেননা আপনার পছন্দের বিপরীতে ভিডিও গুলো যদি আপনাকে সাজেস্ট করা হয়, তবে আপনি অবশ্যই সেই সব ভিডিও গুলো দেখবেন না এবং এক পর্যায়ে আপনি হয়তো বা ইউটিউব থেকে বেরিয়ে ও আসতে পারেন। এক্ষেত্রে ইউটিউব কখনোই চাইনা যে, আপনি ইউটিউব থেকে বেরিয়ে আসেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই তারা চিন্তা করবে যে, আপনাকে আরও কিভাবে বেশি সময় ধরে ইউটিউবে আটকে রাখা যায়। এক্ষেত্রে বর্তমানে আপনি যে ভিডিও গুলো দেখছেন, পরবর্তী ভিডিওগুলো টাইটেল এবং থাম্বলেন গুলো দেখবেন আরও বেশি আকর্ষণীয়।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এখানে আপনাকে ইউটিউবে বেশি সময় ধরে রাখার জন্য একটি ভিডিওর পর অন্য একটি ভিডিও আপনার পছন্দ মতোই এনে দিচ্ছে। এছাড়া আপনি খেয়াল করলে দেখবেন যে, একই কিওয়ার্ড লিখে দুইটি মোবাইল বা দুইটি ডিভাইস থেকে ইউটিউবে সার্চ করলে, দুইটি ডিভাইসে ভিন্ন ভিন্ন সার্চ ফলাফল চলে আসে। এখানেও গুগলের মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি কাজ করছে ফলাফল দেখানোর কাজে। একই কিওয়ার্ড লিখে ভিন্ন ভিন্ন ডিভাইস থেকে সার্চ করলে ভিন্ন ভিন্ন ফলাফল আসতে পারে অথবা সার্চ ফলাফল একই থাকে। এখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আপনার অতীতের অ্যাক্টিভিটি উপর ভিত্তি করে ফলাফল দেখায়।
যেমন ধরুন, আপনি যদি কোনও ধারাবাহিক নাটক ইউটিউবে প্রতিদিন দেখতে থাকেন, তবে প্রতিদিনের মতো অবশ্যই সেই নাটকের নাম লিখে সার্চ করবেন। কিন্তু সেখানে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, প্রথমদিন সার্চ ফলাফলে প্রথমদিকে আপনাকে সেই নাটকের প্রথম পর্ব দেখিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আপনি যখন সেই পর্বটি দেখা শেষ করেছেন, তখন আপনাকে তার পরবর্তী পর্ব সার্চ রেজাল্টের প্রথমে দেখাচ্ছে। এখানে ইউটিউব জানে যে, আপনি অবশ্যই পরবর্তী পর্বগুলো দেখার জন্যই সার্চ করেছেন। প্রথম দিনের মতো আপনি যদি এখানে সেই প্রথম পর্বটি দেখতে পেতেন, তবে আপনার সেই দরকারি পরবর্তী খুঁজতে গিয়ে হয়তোবা বিরক্তি বোধ করতেন।
তবে এখানে ইউটিউব আপনাকে আপনার মনের মত এবং প্রয়োজনীয় পর্বটি খুঁজে দিয়ে আপনাকে সাহায্য করার পাশাপাশি ইউটিউবে আরও বেশি একটিভ থাকতে উৎসাহিত করছে। যদিও এটি ইউটিউব এর একটি ফিচার বলা চলে। তবে এসব কারণেই যে আপনি ইউটিউবে বেশি সময় ধরে রয়েছেন এটি নির্দ্বিধায় বলা যায়। আপনাকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী ভিডিও সাজেস্ট করা এবং আপনার প্রয়োজনীয় ভিডিওটি খুঁজে দিতে আগে থেকেই প্রস্তুত হয়ে থাকা, এসব বিষয়গুলো কিন্তু আপনাকে ইউটিউবে বেশি সময় ধরে আটকে রাখছে। আসলে আপনার পছন্দের জিনিস দিয়ে আপনাকেই আসক্ত করে ফেলছে।
আপনি উপরের ইউটিউব এর আলোচনা থেকে হয়তো বা কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন যে, কেন আপনি অনলাইনে বেশি সময় ধরে একটিভ। অনলাইনে আপনি যে প্লাটফর্মেই যান না কেন, সকল প্লাটফর্মেই আপনাকে ধরে রাখার জন্য আপনার পছন্দসই জিনিস গুলো দেখাবে। এক্ষেত্রে যেসব প্লাটফর্মে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং মেশিন লার্নিং এর ব্যবস্থা রয়েছে। তারা আপনাকে তাদের প্লাটফর্মে ধরে রাখার জন্য প্রথমে আপনার অ্যাক্টিভিটির রেকর্ড করবে। তারপর তাদের প্লাটফর্মে আপনি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যখন ভিন্ন ভিন্ন বিষয় ইন্টারেস্টিং দেখাবেন, তখন পরবর্তীতে আপনাকে সে অনুযায়ীই সেই প্লাটফর্মে কনটেন্ট দেখানো হবে।
এবার পরবর্তীতে আপনি যখন সেই প্লাটফর্মে প্রবেশ করেন তখন আপনাকে অবশ্যই আপনার পছন্দসই জিনিস সামনে এনে দেয়। তারপর সেই কন্টেন্ট দেখার পর পরবর্তী কনটেন্ট থাকে আরও বেশি আকর্ষণীয়। এভাবে করে আপনি মেশিন লার্নিং এর কারণে সেই প্ল্যাটফর্ম থেকে আর বেরিয়ে আসতে চান না। এছাড়া অন-লাইন প্লাটফর্মে আপনি কোন একটি কনটেন্টে দেখার পর আপনার প্রয়োজনীয় পণ্য বা সেবার বিষয়টিও খুঁজে পেয়ে যান। তো সেটা কিভাবে?
উদাহরণস্বরূপ, আপনি যখন ইউটিউবে বা ফেসবুকে কোন ভিডিও দেখেন; তখন সেখানে অবশ্যই আপনি দেখবেন আপনার প্রয়োজনীয় পণ্যের বিজ্ঞাপণ দেখানো হচ্ছে। আপনি কি আপনার প্রয়োজনীয় পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপনটি কেন দেখানো হচ্ছে এটি আপনি হয়তো বা আগে থেকে জানেন। তাই বিজ্ঞাপণ আপনাকে কিভাবে দেখানো হচ্ছে, এটি নিয়ে আমি আর বিস্তারিত আলোচনা করছি না। যেখানে আপনার অতীতের অ্যাক্টিভিটির উপর আপনার চাহিদা তারা নির্ধারণ করেছে এবং সে অনুযায়ী আপনাকে বিজ্ঞাপণ দেখাচ্ছে। আপনি যদি গুগলের সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে কোন একটি পণ্য কেনার জন্য প্রথমে খুঁজতে থাকেন এবং পরবর্তীতে যদি ইউটিউবে যান, তবে অবশ্যই আপনি সেখানে সেই রিলেটেড বিজ্ঞাপণ দেখতে পাবেন।
এবার এখানেও আপনাকে অনলাইন প্লাটফর্মে ধরে রাখার জন্য এবং তাদের সেবাটি সঠিক লোকের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য তারা বিজ্ঞাপনকে বেছে নিয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি অনলাইনে বিচরণ করার ক্ষেত্রে হয়তোবা আপনার প্রয়োজনীয় পণ্যটি খুঁজে পাচ্ছেন। এক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই অনলাইন প্লাটফর্মে আরও বেশি সময় ধরে কাটাবেন আপনার প্রয়োজনীয় সেবাটি খুঁজে পাবার জন্য। অনলাইনে আমরা আমাদের পছন্দসই বিজ্ঞাপণ কেন দেখি, এ নিয়ে আমার আগের একটি টিউন রয়েছে। সেই টিউনটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
আমরা অনলাইনে বেশি সময় কেন কাটিয়ে থাকি? আমরা অনলাইন নিয়েছি কারণে বেশি সময় কাটিয়ে থাকি তা আমরা হয়তো বা ইতিমধ্যেই উদ্ঘাটন করতে পেরেছি। যেখানে আমরা অনলাইনে বেশি সময় কাটিয়ে থাকি এজন্য যে, সেখানে আমাদের পছন্দসই কনটেন্ট গুলো দেখানো হয়। আর এক্ষেত্রে আমরা কোন একটি প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে নিতে এসে হারিয়ে যাই অন্য জগতে। কিন্তু এমন যদি করা যায় যে, এসব প্লাটফর্মে ঢুকলে আমাদের পছন্দ মত কোন কিছু দেখানো হবে না এবং আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় ভিডিও বা কনটেন্ট খুঁজে নিয়ে আবার বেরিয়ে আসতে পারবো, তবে ব্যাপারটি কেমন হয়?
এক্ষেত্রে এটিই হবে আমাদের অনলাইনে বেশি সময় কাটানো থেকে মুক্তির উপায়। যদি আমরা কোন ভাবে অনলাইনে আমাদের অ্যাক্টিভিটি কে ট্র্যাক করা বন্ধ করতে পারি, তবে আমরা পরবর্তীতে আর সেই প্লাটফর্মে পছন্দসই কিছু দেখতে পাবো না। আপনি হয়তোবা ইতিমধ্যেই এই ট্রিকসটি জেনে থাকবেন। আর এটি হচ্ছে, Incognito mode (ইনকগনিটো মোড)। আপনারা হয়তোবা ইতিমধ্যেই জানেন যে, ইনকগনিটো মোড চালু করার ফলে আপনার কোন অ্যাকটিভিটির ট্র্যাক করা হয় না।
আপনি যদি ব্রাউজার থেকে Incognito mode চালু করে ইউটিউবে প্রবেশ করেন, তবে সেখানে অবশ্যই আপনার পছন্দসই কিছু দেখানো হবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে আপনার পছন্দসই জিনিস খুঁজে নেবার জন্য অবশ্যই সার্চ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি যদি ইউটিউবে প্রথমে এসে থাকেন কোন কিছুর ওপর ভিডিও দেখার জন্য এবং সেই ভিডিও দেখেই বের হয়ে যেতে চান, তবে Incognito mode-ই হবে আপনার জন্য উত্তম সমাধান। এক্ষেত্রে আপনি সেই ভিডিওটি ইউটিউব থেকে সার্চ করে নিয়ে দেখে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে আপনাকে সেই সকল ভিডিও গুলোও আর সাজেস্ট করা হবে না এবং যে কারণে Incognito mode চালু থাকা অবস্থায় বেশি সময় ধরে ইউটিউবে আর থাকতে চাইবেন না।
একইভাবে আপনি যদি ফেসবুকেও Incognito mode চালু অবস্থায় ব্রাউজ করেন, তবে এখানেও আপনাকে বেশি সময় থাকতে মন চাইবে না। এক্ষেত্রে আপনি যে কাজের জন্য ফেসবুকে এসেছিলেন, সেটি করেই বেরিয়ে যেতে পারবেন। এছাড়া ব্রাউজার থেকেও আপনি যদি Incognito mode চালু অবস্থায় ব্রাউজ করেন, তবে এক্ষেত্রেও আপনার কোন অ্যাকটিভিটির রেকর্ড করা হবে না। তাই হবে যদি অনলাইন প্লাটফর্মে কম সময় ধরে থাকতে চান, তবে অবশ্যই ইনকগনিটো মোড চালু করে তারপর সেই প্লাটফর্মে ভিজিট করতে পারেন। তবে Incognito mode সকল প্লাটফর্মে থাকে না।
তবে যেসব ওয়েবসাইটে বা যেসব প্লাটফর্মে Incognito mode থাকে, সেগুলোতে আপনি এটি চালু করে ব্রাউজ করতে পারেন। তো বন্ধুরা, আপনারা উপরের আলোচনা থেকে হয়তো বা কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে পেরেছেন যে, কেন আপনি অনলাইন প্লাটফর্মে বেশি সময় ধরে একটিভ থাকেন। আজকের এই টিউনটির আলোচনা মূলত এ পর্যন্তই। যদি টিউনটির মাঝে কোথাও ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকে তবে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সেই-সঙ্গে টিউনটি আপনার কাছে ভাল লেগে থাকলে একটি জোসস করবেন এবং আমার এই টিউনে যদি আপনি নতুন হয়ে থাকেন, তবে অবশ্যই আমাকে ফলো করে রাখবেন এরকমই নিত্যনতুন টিউন দেখার জন্য।
অনলাইন প্লাটফর্মে আমরা যত বেশি সময়ই কাটাই না কেন, এটি যেন অহেতুক সময় নষ্ট না হয়। আমাদের ব্যয় করা সময় যেন কাজে লাগে আমাদের অথবা অন্য মানুষের উপকারের জন্য। অনলাইনে বেশি সময় কাটিয়ে যেন কোনোভাবেই আমরা আমাদের সময় নষ্ট না করি। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমাদের প্রত্যেকটা সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই সময়টিকে আমাদের যথাযথ কাজেই ব্যবহার করতে হবে। তাই সময়কে মূল্যায়ন করে আপনার প্রয়োজনীয় জিনিস টি দেখার জন্য অনলাইনে বিচরণ করুন।
অহেতুক সময় নষ্ট না করে আপনার সময় এর যথাযথ ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়ে আজকের এই টিউনটি এখানেই শেষ করছি। আসসালামু আলাইকুম।
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)
আসসালামু আলাইকুম মোঃ আতিকুর রহমান ভাই। আপনার কনটেন্টগুলোর বিষয়বস্তু খুব সামান্য থাকে কিন্তু একই কথা ভিন্ন আঙ্গিকে ঘুরিয়ে পেচিয়ে এত বড় করে আর্টিকেল তৈরি করেন যে পড়তে পড়তে সময়ের অপচয় হয় তো বটে সাথে বিরক্তি আসে। প্লিজ আরো ছোট করে বেশি তথ্য সমৃদ্ধ আর্টিকেল উপহার আশা করছি। ইনশাআল্লাহ পারবেন। সুদৃষ্টি কামনা করছি ধন্যবাদ।