রেড হেট এবং সেন্টওএস লিনাক্স বাংলা টিউটোরিয়াল-১

বর্তমান আইটি বিশ্বে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম একটি সুপরিচিত নাম। এটি একটি শক্তিশালী অপারেটিং সিস্টেম। বিশ্বের অনেক বড় বড় কম্পানীগুলো তাদের সার্ভারে এই অপারেটিং সিস্টেমটি ব্যবহার করে থাকে। আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে রেড হেট লিনাক্স এর স্বাপেক্ষে টিউটোরিয়াল। আজকের টিউটোরিয়াল এ আমরা জানবো লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম কিভাবে আসলো এবং লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম এর সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে। এর আগে আমরা জেনে নিবো মাইক্রোসফট কর্পোরেশন কর্তৃক উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এর কিছু বিষয়। যেমন উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমকে ২টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি উইন্ডোজ সার্ভার অপারেটিং সিস্টেম আরেকটি উইন্ডোজ ক্লায়েন্ট অপারেটিং সিস্টেম। এক্ষেত্রে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমকে সার্ভার ও ক্লায়েন্ট একটি অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা রিপ্রেজেন্ট করা হয়েছে। চাইলে আমরা একে সার্ভার হিসাবে রিপ্রেজেন্ট করতে পারি আবার ক্লায়েন্ট হিসাবেও রিপ্রেজেন্ট করতে পারি। অপারেটিং সিস্টেমকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি উইন্ডোজ প্লাটফর্ম এ আরেকটি নন-উইন্ডোজ প্লাটফর্ম এ। নন-উইন্ডোজ প্লাটফর্ম বলতে যেটি উইন্ডোজ কর্পোরেশন এর স্বাপেক্ষে কোন ধরনের ডিরেকশনই নাই এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম হলো লিনাক্স।


লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম এর ইতিহাস :-

লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমটি আসার আগে প্রথম যে অপারেটিং সিস্টেম ছিল এর মত সেটা হল ইউনিক্স। ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেম স্বাভাবিক ভাবে নাসাতে ব্যবহার হয়ে থাকে সুপার কম্পিউটার এর মধ্যে এবং যে সকল নভোজান উৎক্ষেপন করা হচ্ছে এদেরকে কন্ট্রোল করার জন্য ব্যবহার হয় এই অপারেটিং সিস্টেম। দেখা যায় ঐ অপারেটিং সিস্টেম এর ক্ষমতা অনেক পাওয়ারফুল। এই পাওয়ারফুল অপারেটিং সিস্টেমকে আমাদের বর্তমান টেকনোলজিতে ব্যবহার করার জন্য নতুনভাবে কাজ শুরু করা হয়, সেটিকে কিভাবে সাধারন ইউজারদের কাছে আনা যায়। সেক্ষেত্রে দেখা গেলো  অপারেটিং সিস্টেমকে আনতে গেলে যে পরিমাণ কম্পিউটার এর পারফর্মেন্স দরকার সেই পরিমাণ পারফর্মেন্স সাধারন কম্পিউটার এ নেই। ফলে ঐ ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেম এর মতো আরেকটি অপারেটিং সিস্টেম আসে যাকে বলা হয় মিনিক্স। আর এই মিনিক্স অপারেটিং সিস্টেম থেকে পরবর্তিতে ২১ বছর বয়সি ফিনল্যান্ডের  ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কি এর লিনাস টোরবাল্ডস নামের এক যুবক প্রথম লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম এর কার্নেল তৈরি করে। যার নাম অনুসারে ঐ অপারেটিং সিস্টেম  এর নাম হয় লাইনাস। পরবর্তিতে সে অপারেটিং সিস্টেমের নাম পরিবর্তন করে বর্তমান রেড হেট  কর্পোরেশন এর  স্বাপেক্ষে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম নাম দিয়ে ডিক্লেয়ার করা হয়েছে। আজকের প্রাপ্ত এই লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম আমরা এখন স্বাভাবিক ভাবে প্রত্যেক কম্পিউটার এ সহজে ব্যবহার করতে পারি।


লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম এর সুবিধা – অসুবিধা
লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করলে যে সকল সুবিধা আমরা পেতে পারি তা নীচে তুলে ধরা হলো :-

. কম খরচঃ-

উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এর তুলনায় লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের খরচ অনেক কম। কারন লিনাক্স একটি ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম, এর জন্য ক্রয় করার কোন প্রয়োজন নেই। যে কেউ চাইলে এটি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করতে পারে। কিন্ত উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ফ্রিতে পাওয়া যায় না। আর পেলেও এটি ক্র্যাক করে নিতে হয় তারমানে একে সিকিউরিটি ব্রেক করে নিতে হয়। কিন্তু এই সমস্ত বিষয় লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে থাকে না। আপনি চাইলে এর লাইসেন্স ভার্সন নিতে পারেন আবার এটি ফ্রিতেও নিতে পারেন। আর সে জন্য বলা হচ্ছে এটি কম খরচ।

. সহজে লাইসেন্স পাওয়া যায়ঃ-

বর্তমানে কিছু মাল্টিন্যাশন কম্পানী আছে যারা তাদের সমস্ত প্রোডাক্ট লাইসেন্স ভার্সন এর স্বাপেক্ষে বিক্রয় করতে চায়। তাদের কিছু এগ্রিমেন্ট সেকশন থাকে যেখানে লাইসেন্স ছাড়া কোন কাজ করলে কিছু প্রতিবন্ধকতার  সমুক্ষীন হতে হয়। সেই সমস্ত সেকশন এর জন্য অবশ্যই লাইসেন্স ভার্সন দরকার পরে। তাই বলা হচ্ছে কেউ চাইলে লাইসেন্স ভার্সন নিতে পারেন। এক্ষেত্রে এখানে বলা হচ্ছে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের স্বাপেক্ষে এর লাইসেন্স অনেক সহজ। কারন আপনি যদি  উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম  এর কোন লাইসেন্স ভার্সন ক্রয় করতে চান তাহলে অনেক বিষয় তাদেরকে উল্লেখ করতে হয় যা লিনাক্স এ করতে হয় না।

. পারফর্মেন্স এবং স্ট্যাবেলিটি :-

পারফর্মেন্স এর দিক দিয়ে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম অনেক শক্তিশালী। সেক্ষেত্রে কোন কম্পানীতে সার্ভার হিসাবে যখন কোন লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমকে ব্যবহার করা হয় তখন এর পারফর্মেন্স অনেক পাওয়ারফুল থাকে। কারন আপনি যদি উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে কোন সার্ভার তৈরি করেন এর জন্য হাই কনফিগারেশন সিস্টেমের এর দরকার পরবে। কিন্তু লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম এর জন্য সার্ভার করতে হাই কনফিগারেশন সিস্টেম এর দরকার পরবে না। আর লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের স্ট্যাবেলিটির কথা বলতে গেলে বলতে হয় যে, একবার যখন লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম রান করে দেওয়া হয় যদি কোন ধরনের ইল্লিগেল অপারেশন না হয় তাহলে এটি দীর্ঘ দিন ধরে সার্ভিস দিতে পারে। কারন এতে কোন ধরনের ভাইরাস অক্রমণ হয় না। যেহেতু লিনাক্স টেক্সট মোডে রিপ্রেজেন্ট হয় ফলে এতে  ভাইরাস অক্রমণ কম হয়। কিন্তু উইন্ডোজ এর স্বাপেক্ষে নিয়মিত ভাইরাস আপডেট করতে হয়। এই ধরনের ঝামেলা লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম এ নেই।

. ইন্টারকানেক্টিবিটি :-

নেটওয়ার্ক এর মধ্যে সার্ভার হিসাবে যখন লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমকে রিপ্রেজেন্ট করা হয় তার সাথে কমিউনিকেশন ব্যবস্থাপনা অনেক স্মোথ হয়। এতে কোন ধরনের যদি সমস্যা হয় সাথে সাথে সে জেনারেট করে এবং বলে দেয় সে কেন কমিউনিকেশন করতে পারছে না। কারন তার ইন্টার কমিউনিকেশন ব্যবস্থা অনেক শক্তিশালী। এক্ষেত্রে উইন্ডোজ যদি কোন কারনে করাপ্টেড হয়ে যায় তাহলে সে কোন ধরনের ইনফরমেশন দেখায় না। কিন্তু  লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম যদি কোন কারনে করাপ্টেড হয়ে যায় তাহলে সে কি কারনে করাপ্টেড হয়েছে সেই ইনফরমেশন দেখায়।


লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম কেন ব্যবহার করা হয়
. Domain Name Service (DNS):-

DNS হলো Domain Name System বা Domain Name Service (DNS) হলো এমন একটি ব্যবস্থাপনা যার মাধ্যমে Globalization  সিস্টেমে  নাম দ্বারা নেটওয়ার্ক এর স্বাপেক্ষে কমিউনিকেশন করতে পারে। যেমন উদাহরণ হিসাবে বলতে পারি yahoo.com, google.com এই ধরনের যত ধরনের নাম এদেরকে যদি আপনি Name এর স্বাপেক্ষে রিপ্রেজেন্ট করতে চান বা Name এর স্বাপেক্ষে World এ তাদের সাথে কমিউনিকেশন করতে চান, এর জন্য মাঝখানে যে ম্যাকানিজম টা সহযোগিতা করে সেটাই হলো DNS। তার মানে প্রত্যেকটি Domain এর সাথে কমিউনিকেশন করতে গেলে মাঝখানে DNS সহযোগিতা করে।  আর এই DNS সার্ভার টি লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা করা যায়।

. ডাটাবেস সার্ভার:-  

অনেক কম্পানীতে দেখা যায় সফটওয়্যার তৈরি করে, যে সফটওয়্যার এর একটি ডাটাবেস থাকবে যেখানে তার ডাটা গুলো সংরক্ষণ হবে। সেক্ষেত্রে ঐ ডাটাবেস তৈরি হওয়ার জন্য আপনি লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমকে ব্যবহার করতে পারেন। যার মাধ্যমে ঐ লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম এর স্বাপেক্ষে থাকবে একটি ডাটাবেস সার্ভার। যেমন ওরাক্যাল, এখানে লিনাক্স কর্পোরেশন বিশেষভাবে ওরাক্যাল এর জন্য আলাদা অপারেটিং সিস্টেম ডেভেলপ করেছে যার নাম ওরাক্যাল ভার লিনাক্স সেই ক্ষেত্রে আপনি চাইলে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমকে ব্যবহার করতে পারেন।

. সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্লাটফর্ম :-

যারা সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এ থাকতে চান, সেক্ষেত্রে আপনারা চাইলে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্লাটফর্মটাতেও লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমকে ব্যবহার করতে পারেন। যেমনটা আমরা উইন্ডোজ প্লাটফর্ম এ C & C+ এই প্রোগ্রামিং এর কাজ গুলো করে থাকেন। এই কাজ গুলো আপনারা লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে করতে পারেন।

. ওয়েব সার্ভার:-

মনে করি yahoo এর একটি সাইট আছে, এই সাইটটি কোন না কোন একটি সার্ভার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। যেখানে ঐ yahoo এর কন্টেন গুলো স্টোর করা আছে, এই সার্ভার কেই বলা হয় ওয়েব সার্ভার। আর এই ওয়েব সার্ভার হিসাবে আপনারালিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমকে ব্যবহার করতে পারেন।

 . লার্নিং অ্যানভারোমেন্ট:-

আপনারা চাইলে লার্নিং অ্যানভারোমেন্ট এ লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমকে ব্যবহার করতে পারেন। যেমন দেখা যায় আমাদের এশিয়া রিজন এর স্বাপেক্ষে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমটি বেশি ব্যবহার হয় কিন্তু আমরা যদি ইউরোপ এর দিকে তাকায় তাহলে দেখতে পারি বেশির ভাগই ব্যবহার হয় লিনাক্স অ্যানভারোমেন্ট। আর এই জন্যই লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম এ ইউরোপীয়ান দের Behavior কিছুটা পরিলক্ষিত হয়। লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম এছাড়াও আরো অনেক কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে।

বন্ধুরা আজকের টিউটোরিয়ালটি ছিল এপর্যন্তই। আমরা পরবর্তি টিউটোরিয়ালে শিখবো কিভাবে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল দিতে হয়। এরকম অনেক টিউটোরিয়াল পেতে অাপনারা চাইলে আমাদের অফিসিয়াল ওয়েব সাইট টি ভিজিট করতে পারেন আর এর জন্য এখানে ক্লিক করুন আর এই  টিউটোরিয়াল গুলোর ভিডিও দেখতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ভিজিট করতে পারেন এখানে ক্লিক করে। ধন্যবাদ সবাইকে

Level 1

আমি আব্দুল্লাহ-আল-রোমান। , Tech 16 BD বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস