গত ১২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার পুরাতন সিকিকন ভ্যালীর নতুন অ্যাপেল পার্কের স্টিভ জবস থিয়েটারে অ্যাপেল উন্মোচন করল তাদের নতুন বিপ্লবী কতগুলো ডিভাইসেরর। তারা এই দিনটিতে অবমুক্ত করল অ্যাপেল ওয়াচ (সিরিজ ৩), অ্যাপেল ৪কে টিভি, অাইফোন ৮ এবং সর্বপরি আইফোন ১০। এখানে দিনটিতে আইফোন ১০ টি ছিলো পুরো অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু।
অ্যাপেল এর বিপ্লবী এরকম ধারা চলে আসছে তখন থেকে যখন অ্যাপেল তাদের ম্যাকিনন্টস মিনি উন্মোচন করে, তারপর এক বিপ্লব ঘটেছিল স্টিভ জবসের আইফোন উন্মোচন এর মধ্য দিয়ে, মাঝখানে কতগুলো ব্যার্থতা গেলেও অ্যাপেল আবার হয়ে উঠেছে সংবাদের শিরোনাম, তাদের নতুন আইফোন ১০ এর কারনে। অ্যাপেল গুগল এর মত হতে চায় না। হতে চায় না স্যামসাং এর মত, এমনকি ফেসবুক,-স্ন্যাপচ্যাট এর মতও হতে চায় না - অ্যাপেল হতে চায় অ্যাপেলের মত যেমনটি তৈরি করে রেখে গিয়েছিলেন অ্যাপেল প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস। তিনি আর নেই আমাদের মাঝে।
তবে আছে তার নীতিতে আদর্শ একঝাক কর্মকর্তা। যারা চেষ্ঠা করছে অ্যাপেলকে আবার প্রযুক্তির শিখরে নিয়ে আসতে - দিনরাত এক করে দিয়ে পৃথিবীর সেরা টেকসই স্মার্টফোন তথা আইফোন এর ধারা বজায় রেখে মানুষের মনে এক কোয়ালিটির মডেল হয়ে রয়ে গিয়েছে। আর সে প্রযুক্তি নির্মাতা পরিবারে যুক্ত হল আরও চারটি সদস্যঃ অ্যাপেল ওয়াচ (সিরিজ ৩), অ্যাপেল ৪কে টিভি, অাইফোন ৮ এবং আইফোন ১০।
অ্যাপেল এর বর্তমান CEO টিম কুক এর পরিচালিত সেইদিনকার অনুষ্ঠানটি খুবই উপভোগ করার মত ছিল। সম্পূর্ন অনুস্ঠানটি তিনি দারুনভাবে হোস্ট করেন। যদিও তিনি স্টিভ জবস এর মত অত ডায়নামিক তথা শক্তিসালী বক্তা নন- তবুও তিনি সাধারন কেও নন। তার গলা চেপে আসে যখম তিনি স্মরন করেন এবং বলেন অ্যাপেল প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস সম্পর্কে। এখানে তিনি আামেরিকায় ঘটে যাওয়া ঘূর্নিঝড় হার্ভি এবং ইর্মা এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
অ্যাপেল মূলত তাদের হার্ডওয়্যার এবং সবগুলো ডিভাইসে এই হার্ডওয়্যার এর এত নিখুত ম্যানেজমেন্ট এর জন্যই শীর্ষে এবং মানুষ নিয়মিত অ্যাপেল কিনে। আর ভবিষ্যতে অ্যাপেল বছরের পর বছর এই হার্ডওয়্যার এর কারনেই চির স্মরনীয় হয়ে থাকবে - এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
এখন মানুষ কোন কোম্পানির তথা স্যামসাং,লিনোভো এর রিটেইল স্টোরে কী জন্য যান - কী কী করেন তা সবার থেকে জানা মুশকিল। তবে নিশ্চয়ই প্রোডাক্ট কেনার জন্য, সার্ভিসিং এর জন্য অথবা ঠিক করার জন্য যান, তাই তো?
তবে আমেরিকা,লন্ডন এর হিসেবে অ্যাপেল স্টোর এর কথা বলতে গেলে ব্যাপারটা একটু হাস্যকর লাগে। এসব জায়গায় অ্যাপেল স্টোর একটি টাউন স্কয়ারে পরিনত হয়েছে। প্রতিদিন শহরের মানুষ এখানে গিয়ে ভির করে। এসব জায়গায় মানুষদের দেখে বোঝা যায়, তারা দুটি কারনে অ্যাপেল স্টোরে যানঃ
এছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা অ্যাপেল স্টোরে যান না। এভাবে অ্যাপেল স্টোর কেবল একটি ইলেকট্রনিক্স স্টোর নয়, একটি শহরের মিলনমেলায় পরিনত হয়েছে। অনেকে এসব জায়গায় অ্যাপেল স্টোর এর সামনে তাদের ছোট-খাট দোকান খুলে বসেন ব্যবসা বাড়ানোর জন্য।
পৃথিবীতে যত স্মার্টওয়াচ এবং স্মার্টওয়াচ ম্যানুফ্যাকচারার রয়েছে; তাদের সবার ভেতর অ্যাপেল ওয়াচ এর বিক্রি সবচাইতে বেশি। আর স্মার্টওয়াচ উন্নত বিশ্বে একটি ট্র্যাডিশনাল বস্তু হয়ে গিয়েছে। বেশির ভাগ মানুষই এখন অ্যানালগ থেকে স্মার্টওয়াচ এর দিকে ঝুকছে।
আর যারা আইফোন ব্যবহার কারী তারা তো এই অ্যাপেল ওয়াচ না কেনা পর্যন্ত শান্তিতে থাকতেই পান না হয়ত। স্যামসাং সহ আরো অনেক কোম্পানি স্মার্টওয়াচ তৈরি করলেও অ্যাপেল ওয়াচ এর চাহিদা অন্যরকম। আর মানুষ অ্যাপেল ওয়াচের তুলনায় অন্যসব স্যামসাং বা এন্ড্রয়েড ওয়াচ গুলোকে সাধারন এর চোখে দেখে।
তারওপর অ্যাপেল ওয়াচের জিম ইকুইপমেন্ট ফিচার, হার্ট রেট টুল একে আরও কাজের করে তুলেছে অন্যসব স্মার্টওয়াচের তুলনায়। তবে যারা একান্তই অ্যাপেল প্রেমী তারা অ্যাপেল ওয়াচ কিনতে পারে; আলাদা মৌলিক কাজ গুলো স্মার্টফোন এর মাধ্যমেই করা যাচ্ছে, সেখানে স্মার্টওয়াচের কোন প্রয়োজন আমি মনে করি না।
এখানে অ্যাপেল পুরাতন একটি আবিস্কার কেই তাদের মত করে নতুন করে আবিস্কার করে মানুষের মাঝে উপস্হাপন করেছে। নিশ্চয়ই এটি এটি একটি ৪কে রেকুলেশন এর টিভি এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। আছে HDR কোয়ালিটি এবং Dolby সাউন্ড। এটি অ্যাপেলের তৈরি একটি হাই-এন্ড স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম। এখানে অ্যাপেল নতুন বলতে গেলে তেমন অাশ্চড়য করার মত কিছু আনেনি। এর সবচেয়ে খারাপ যা লাগতে পারে সবার কাছে তা হল এর রিমোটটি।
আইফোনের সবচেয়ে ভালো যে জিনিস হল এটির ডিজাইন,যা কেবল আইফোনেই সম্ভব। বলা যায় প্রতিটি আইফোন দেখতে আইফোনের মত। তবে আইফোন ১০ এ যে জিনিসটি অন্যসব আইফোন থেকে একে খানিকটা আলাদা করেছে তা হল; অ্যাপেল ট্র্যাডিশনাল হোম বাটন বিহীন ডিজাইন। আর প্রথমবারের মতন অাইফোনে সম্পূর্ন গ্লাস বডি। আর যাই হোক এবার অ্যাপেল বাধ্য হয়ে ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তিটি দিয়েই দিয়েছে।
আইফোন ৮ এবং আইফোন ১০ দুটি ডিভাইস এই ওয়্যার লেস চার্জিং প্রযুক্তিটি থাকবে। আর আইফোন ৮ এবং এর আরেকটি ভেরিয়েন্ট আইফোন ৮+ কে অাইফোন ৭ এর মত দেখতে লাগলেও - যে জিনিসটি আলাদা লাগবে তা হল এদের ব্যক গ্লাস প্যানেল। এটিই বলতে গেলে ডিজাইন নতুনত্ব।
তবে আইফোন ৮ এ রেম দেয়া হয়েছে ২ জিবি আর আইফোন ৮ প্লাসে রেম দেয়া হয়েছে ৩ জিবি; তাই প্রথমে মনেই হতে পারে এত কম রেম। তবে চিন্তা নেই এটি আইফোন রেম কে দেখে। নতুন আইফোন মানে আগেরটা থেকে নিশ্চয়ই অনেক ভালো! তবে এবার আইফোন ৮ এবং ৮ প্লাস এর প্রতি তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। তবে অন্যদিকে আইফোন ১০ এর প্রতি যে আগ্রহ এবং প্রি অর্ডার হচ্ছে, মনে হয়না অ্যাপেল আইফোন ১০ এর চাহিদা মেটাতে পারবে।
যাইহোক, এবার নিশ্চিত এবার অ্যাপেল এই প্রোডাক্ট গুলোর মাধ্যমে বাজারে তাদের এক বছর একটি শক্ত পোক্ত রাজত্ব করবে। আপনার টিউনটি কেমন লাগল, টিউমেন্টে জানান। আর টেকটিউনস এর সাথে থাকুন। এমন সব টিউন নিয়ে আমি আপনাদের মাঝে হাজির হব প্রতিদিন। আল্লাহ হাফেজ!!
আমি Touhidur Rahman Mahin। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 326 টি টিউন ও 88 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
ভালোবাসি প্রযুক্তি নিয়ে লিখতে, ভালবাসি প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে।